ভুল করেছি,প্রায়শ্চিত্য করবো না, তা তো হয় না ১১. চাইনিজ ডুপ্লেক্স হাউজ: যাদের সাধ্য নাই কিন্তু ডুপ্লেক্স হাউজে থাকতে মনে বড় সাধ জাগে তারা চাইনিজ সিস্টেম অনুসরণ করে ডুপ্লেক্স বাড়ি বানাতে পারেন।
বাড়ির ভিতরের বর্ণনা: পূর্ব দিক থেকে সদর দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখবেন বিশাল ড্রয়িং রুম উত্তর দক্ষিণে লম্বা। দক্ষিণ পাশে বারান্দা তাতে নানা ধরনের ফুল ফুটে আছে টবের মধ্যে, মনে হবে যেন একটা ছোটোখাটো নার্সারী। ড্রয়িং রুমের দক্ষিণ পশ্চিম কোণার দিকে বেশ বড় শোবার ঘর। উত্তর পশ্চিম কোণার দিকে রান্না ঘর এবং বাথরুম।
আর এই দুয়ের মাঝে মানে ড্রয়িং রুমের পশ্চিম দিকের মাঝখানটায় ছোটো একটা ডাইনিং স্পেস।
ড্রয়িং রুমে মাথার উপর দিকে তাকালে সেখানে সোনালী কালারের ঝারবাতি ঝুলছে।
ড্রয়িং রুমের উত্তর দিকে একটা সিড়ি সাপের মত পেঁচিয়ে উপর দিকে উঠে গেছে, সিঁড়ি পেরুনোর পর হাতের বাঁ দিকে একটা শোবার ঘর আর ডানদিকে মোড় নিতেই প্রথমে চোখে পড়বে বাথরুম এরপর একটা শোবার ঘর।
অর্থাৎ একটা ডুপ্লেক্স হাউজে যা থাকার সবই এখানে আছে; বড় ড্রইং স্পেস, ড্রইং রুম থেকে দোতলায় যাওয়ার সিঁড়ি তাহলে প্রশ্ন মনে অবশ্যই জাগছে সাধারন ডুপ্লেক্স হাউজের সাথে চাইনিজ ডুপ্লেক্স হাউজের তফাৎ কোথায় !!!
এখানেই হল চাইনিজ বুদ্ধি যা প্রয়োগে কম খরচে ডুপ্লেক্স হাউজের মালিক হওয়া যায়।
আপনি পূর্ব দিকের যে দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন ঐ দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসুন দেখবেন সিঁড়িকোঠা, নরমাল ফ্ল্যাট বাসা গুলি যেমন হয় তেমনি।
সিঁড়ির দুদিকে দুটো ফ্ল্যাট। কাহিনী পুরোপুরি বোঝার জন্য আপনাকে কেচি গেট [কলাপছেবল গেট] দিয়ে বাইরে বের হয়ে আসতে হবে। বাইরে বের হলে দেখবেন আপনি তিন তলার ছাদের উপর দাঁড়িয়ে আছেন
চায়নাতে সব জমি সরকারের তাই অঢেল টাকা থাকা সত্বেও শহরাঞ্চলে কেউ নিজের ইচ্ছামত মনের রঙ মাখিয়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি বানাতে পারে না। আর তাই সরকারী হাউজিং কোম্পানীগুলো পাবলিকরে অল্প পয়সায় ডু্প্লেক্সের স্বাদ দিতে তিন তলা বিশিষ্ট একটা মার্কেট বানাবে এরপর তিন তলার ছাদে চারদিকে খানিকটা জায়গা ফাঁকা রেখে মাঝখানে ফ্ল্যাট বাড়ি বানাবে। আর ফ্ল্যাটর ভিতর দিকে ডু্প্লেক্সের অবয়ব দিতে ৪র্থ তলার ফ্ল্যাটের মূল স্পেসের তিন ভাগের দুই ভাগে ড্রয়িং রুম, বারান্দা, একটা বড় শোবার ঘর, রান্না ঘর, একটা বাথরুম আর ছোটো একটা ডাইনিং স্পেস।
আর ৫ম তলার মূল স্পেসের তিন ভাগের এক ভাগ ব্যাবহার করা হয়েছে ২টা শোবার ঘর আর ১টা বাথরুম বানাতে।
৪র্থ এবং ৫ম দুইটা তলা মিলিয়ে যে স্কয়ার ফিট জায়গা ব্যবহার করা হয়েছে তা ১টা পুরো ফ্ল্যাটের জায়গার সমান, একটুও বেশি নয়।
একই ভাবে ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা মিলিয়ে আর একটা ডুপ্লেক্স, ৬ষ্ঠ ও ৭ম মিলিয়ে আর একটা। এই সিস্টেমে শুধু নিচের ফ্ল্যাটের ১/৩ এবং একদম উপরের ফ্লোরের ২/৩ অংশ জায়গা ডুপ্লেক্সের কাজে ইউজ হয় না ওখানে নরমাল ফ্ল্যাট বাসার মত ছোটো আকারে ফ্ল্যাট করা হয়।
এই হল চাইনিজ ক্যারিশম্যাটিক প্রযুক্তি ডুপ্লেক্স হাউজের।
আর ওখানকার ৭ম তলার ডুপ্লেক্স হাউজের মালিক সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামে কারন চাইনিজ সরকার সাধারনত ৭ম তলা বিশিষ্ট ভবনে লিফটের ব্যবস্হা করে না। আর এরা সরকারের কাছ থেকে ৪০ বছরের জন্য ফ্ল্যাট লিজ নেয়, এরপর আবার তাদেরকে পুনরায় লিজ নিতে হবে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে একটা সাধারন ফ্ল্যাটের খরচেই ডুপ্লেক্স বাড়ি কিনতে পারছে শুধু একটু তফাৎ সাধারন ফ্ল্যাটগুলোর উচ্চতা হয় ১০ ফিট সেখানে এগুলো ১২ ফিট ঝাড়বাতি লাগানোর জন্য আর বাকি সব একই।
আমার মনে হয় বাংলাদেশী ডেভলপার কোম্পানিগুলো এই ধরনের চাইনিজ ডুপ্লেক্স বাড়ি বানালে বিক্রি কম হবে না বৈ কি !!! কেননা বাংলাদেশে অনেকেরই সাধ হয়, মন চায় ডুপ্লেক্স হাউজে থাকার শুধু সাধ্য না থাকার কারনে বানাতে পারে না!!! ঢাকা শহরে জায়গা স্বল্পতার কারনে
আমি পরে এক সময় আমার সুযোগ মত চাইনিজ ডুপ্লেক্স বাড়ির ডিজাইন করে ছবিগুলো আপলোড করে দেব।
মনের খায়েশ মেটানোর জন্য, আভিজাত্যের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য চাইনিজ বুদ্ধির অভাব নাই
যেমন- বিয়েতে বর-কনে চড়বে লিমুজিন গাড়িতে, ভিডিও হবে,ছবি তোলা হবে, এই খবর ফলাও করে প্রচার করার জন্য ফেসবুকে আপলোড করে পরিচিতদেরকে ট্যাগ করা হবে।
এর জন্য আছে চাইনিজ লিমুজিন কার ; একটা চাইনিজ বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখেছি, ছেলে উঠল লিমুজিন গাড়িতে- চাইনিজ লিমুজিন গাড়ি আউটলুকিং হুবহু অরিজিনাল লিমুজিন গাড়ির মত কিন্তু ভিতরে এয়ার কন্ডিশনারই নাই। বর স্যুট পরা- ঘেমে অবস্হা কাহিল। তবু ভাল যে বরের মুখে মেকআপ নাই কিন্তু কনের পারলারে সেজে আসা মেকআপ শেষ, এদেরতো ব্রু নাই তাই আইব্রু দিয়ে পেন্সিলের মত দাগাইয়া কালো রং করে দিছে, চোখে লাগানো আগলা পাপড়ি, আর শরীরের হলুদ চামড়ারে পাউডার দিয়ে ঘইষা সাদা বানানো সব শেষ এই লিমুজিন গাড়ির ভিতরে ঢুইকা তয় বাইরে থেকে দেইখা কারো বোঝার সাধ্য নাই ভিতরে কি ঘটনা ঘটতেছে
আভিজাত্যের প্রতীক সব উপাদানকেই চাইনিজরা কম পয়সায় সহজলভ্য করার জন্য জটিল জটিল টেকনিক খাটিয়েই যাচ্ছে
পর্ব-১
পর্ব-২ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।