সুত্র: অনুগল্প
একটা সাদামাটা প্রেমের গল্প
:আপনার সাথে কথা বলতে পারি?
:নিশ্চয়ই
:আপনার নাম কি?
:আকাশ
:আপনি কি আকাশের মতো উদার?
:মানে
:মানে আপনার মন কি আকাশের মতো উদার
:জানিনা
:কেনো!
:বাহ! আমি কেমন করে জানবো আমার মন আকাশের মতো উদার কি না আল দেওয়া জমিনের মতো সংকীর্ণ।
:আপনি কি আমাকে ভালোবাসবেন ?
:ভালোবাসা প্রকৃতিভাবে সৃষ্টি হয়।
:ভুল বললেন। আপনার বেলায় কথাটা খাটেনা।
:মানে!
:মানে আমি দেখছি ক্লাসের প্রথমদিন থেকে আপনি আমার দিকে চেয়ে থাকেন।
এমন কি ক্লাস শেষে সবাই বেরিয়ে গেলেও আমি থাকলে আপনি আমার দিকে চেয়ে থাকেন অপলক দৃষ্টিতে। একথাগুলো কি মিথ্যে বলতে পারবেন?।
আমি থতমত খেয়ে গেলাম। আসলে মেয়েটা তো মিথ্যে বলছেনা। সেই ক্লাসের প্রথম দিনটাতেই মেয়েটা আমার নজর কেড়েছিলো।
আমার ধারনা ক্লাসের সব চাইতে রুপবতী মেয়ে সে। সরল তার চোখের চাহনি। অরুপ মায়াবী মুখ । যে মুখ আমি চোখ বুজলে অনুভব করি আমার অস্তিত্ত্বে। আমার প্রানে।
আমি বুজতে পারি তাকে দেখার পর আমার ভীতর ঘটে গেছে প্রলয়ংকারী এক ঘুর্নিঝর। যে ঘুর্নিঝরের তান্ডবলীলা কেউ শুনেনি। সেই প্রলয়ংকারীর ঝরের মাতাল ঘুরে সেদিন রাতে কাঁচা হাতে লিখে ফেলিছিলাম একটা কবিতা। সেদিন মনের সমস্ত রঙতুলি দিয়ে দরদ দিয়ে লিখেছিলাম-
তুমি যতবার ফিরে তাকাও
আমি ততবার বিমুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকি
তুমি যতবার চোখের ইশারায় ডেকে যাও
আমি ততবার সুবোধ বালকের মতো হেটে যাই তোমার পিছনে।
আমার স্বপ্নের বিসৃত সুনীল আকাশে
সূর্য্যের ন্যায় জ্বলে থাকো তুমি
কি রাত!
কি দিন!।
আমাদের মধ্যে কি এক ব্যাকুল তৃষ্ণায়
বারংবার ঘটে দৃষ্টির নির্মোহ বিনিময়
সেই দৃষ্টির সরল সংজ্ঞা
জানে ক্লাসরুমের রঙচাটাহীন জড় দেয়াল
জানে ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া-অশোক
শুধুই জানোনা তুমি
শুধুই বুঝোনা তুমি !!! \
মনের ভীতর প্রবল ইচ্ছে ছিলো কবিতাটা থাকে শুনাবো। কিন্তু সে সৎসাহসই বলি আর দুঃসাহস বলি তা দীর্ঘ ছয় মাসে ও আমার হয়ে উটেনি।
তার পর শুধু দৃষ্টির অবাধ বিনিময়। নামটা আর তার মুখ থেকে শুনা হয়নি। অবশ্য তার এক বান্ধবীর কল্যানে জেনেছিলাম তার নাম রুপা।
আহ কি চমৎকার নাম। তাকে দেখে মনে হয় যেনো আমার প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের অমর সৃষ্টি একটি চরিত্রের সেই রুপা। আমি এতক্ষন জড়পদার্থের মতো দাড়িয়ে। কোনো বাকশক্তি নেই। শুধু ভীতরে অনুভব করেছিলাম আনন্দের হিল্লোল।
যে হিল্লোলে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে এক স্বপ্ন-সুখের দেশে। যে দেশের রাজকুমার-রাজকুমারী আমরা দুজন। বসে আছি তার সদ্য মেহেদি রাঙানো হাত ধরে। তার দীঘল কালো কেশ দক্ষিনা বাতাস উড়িয়ে নিয়ে আসছে আমার চোখে মুখে। আমি সেই চুলের ঘ্রানে শুকে শুকে নিচ্ছি স্বর্গের অমৃত ভেবে।
:কি হলো কথা বলছেননা যে?
আমি তার কথায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম।
:আমি স্বপ্ন দেখছিনাতো।
:না আপনি বাস্তবেই আছেন। আর আমি বাস্তবে তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমার হাতটা ধরতে পারি?
:নিশ্চয়ই।
তোমারইতো একচ্ছত্ব অধিকার এই হাতের উপর।
আমি রুপার হাতের উপর আমার হাতটা বাড়িয়ে দিলাম। আমরা দুজন হাটতে লাগলাম ক্যাম্পাসের দীঘি পাড়ের সবুজ ঘাষ মাড়িয়ে দিগন্তের পথে। যে পথ কখনো শেষ হবার নয়। যে পথ অসীম অনন্ত।
যে পথ দিয়ে চলে গেছে আমাদের দুজনের অনন্ত অসীম অজানা সুখের দেশে \
বিদ্র: আজ নয়াদিগন্তের প্রিয়জনে প্রকাশিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।