হেফাজতে ইসলাম গত ৫ই এবং ৬ই মে, ২০১৩ তারিখে আপনারা যেই ঘটনা ঘটাইয়াছিলেন তার নিন্দা জানাবার ভাষা এবং দম্ভ আমাকে অর্জন করতে হইবে । একটি গনতান্ত্রিক দেশে অগনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগনের ভোটে নিবর্াচিত একটি সরকার পরিবর্তনের ব্যার্থ চেষ্টা । একটা সিভিল কু্য । ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করিলে বুঝিতে পারিবেন আপনাদের অপরাধের মাত্রা । সেনা কু্য-এর ক্ষেত্রে যেই অপরাধের একমাত্র শ্বাস্তি কোর্ট মাশর্াল ।
ঠিক একমাস পরে মনে পরে গেল ৫ এবং ৬ই মে, ২০১৩ তারিখে আপনাদের রক্তের হলি খেলার নমুনা । টেলিভিশন সংবাদে দেখেছিলাম, সংবাদপত্রে পড়েছিলাম সমাবেশের মাঝখানে লইয়া গিয়া একটা পুলিশকে সাপের ন্যায় পিটিয়ে হত্যা করার নমুনা । ৮/১০ ঘন্টা অতিবাহীত হবার পরেও মৃতদেহ ফেরত দেন নাই । পুলিশ কারও না কারো সন্তান, কারো পিতা, কারও স্বামী । সেই মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল যৌথ বাহীনির অভিযানের পরে ।
নইলে কেউ জানতেও পারতো না । এমন নিষ্ঠুর মুসলমান জাতীরা কি হতে পারে ? যদি জেহাদ মনে করে এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটাইয়া থাকেন তাহলে বলতে হয় জেহাদের ডাক কি পুলিশের বিরুদ্ধে ছিলো । জেহাদ হয় ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে । পুলিশ কি ইসলামের শত্রু ছিলো ? জেহাদের মধ্যে দফা আসে কেন ? তাছাড়া ১৩ দফা দাবীর কয়টা দাবী পুলিশ সংশ্লিষ্ট ছিলো ?
আরও দেখেছি মুসলমান হয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মিথ্যা প্রচারের নমুনা । মুসলমানদের জন্য মিথ্যা বলা হারাম ।
যৌথ বাহীনির অভিযানে হাজার হাজার মৃত্যুর মিথ্যা প্রচারের সম্পুর্ণ অপরাধ অবশ্যই আপনাদের উপরে বর্তায়না । এই অপরাধ অন্য কেউ বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল করেছ । কিন্তু তারা একটিও মৃতদেহ পদ্মা, যমুনা এবং তুরাগ নদী হইতে উদ্ধার করিতে পারে নাই । এমন কি তারা বিদেশী বড় বড় কোম্পানীর অটোমেটিক কোদাল হায়ার করে বাংলাদেশের মাটির কোথাও একটা গর্ত করে মৃতদেহ খোজার চেষ্টা করে নাই । খোজা খুজি করে না পেলেও একবার চেষ্টাতো করে দেখা উচিৎ ছিলো ।
সেটা পর্যন্ত করলো না অথচ চাপা বাইড়াইয়া জিতে যেতে চাইছিলো । হয়তো উনারা ইচ্ছা করলে ৩০ দিনে ৩০ টা হেফাজত ইসলামের কমর্ীর লাশ খুজে খুজে বের করতে পারতো । যদি ৩০ টা লাশ বের করে দিতে পারতো তবে বাকী ২৪৭০ টা(১৮ দলীয় সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যানুযায়ী যদি সেদিন রাত্রে মৃতের সংখ্যা ২,৫০০ ধরা হয়) লাশ খুজে বের করার জন্য হেফাজতে ইসলামকে ততটা দায়ীত্ববান না হলেও চলতো । প্রশ্ন না তুলে তাদের এই বিখ্যাত মিথ্যাকে সকলে সহজ ভাবেই মানিয়া লইত । কারন উনারা ইসলামের লোক উনাদের সকলেই বিশ্বাস করে ।
ভাগ্যিস সেদিন ২,৫০,০০০ লাশ গায়েব হওয়ার কথা বলেন নাই । কিন্ত এই একটি মাসের মধ্যে যদি উনারা শুন্য হাতে ফিরে আসেন তবে কিভাবে পাবলিক তাদের বিশ্বাস করবে ? আবার যদি ৫ই জুন,২০১৩ মতিঝিলে আরেকটা সমাবেশ করতো এবং যদি বলতো মতিঝিল আমাদের বাপদাদার সম্পত্বি আমরা মতিঝিল দখল করলাম । ১১৩ দফা(আফগান, তালেবান মুজাহিদদের ১০০ দাবী সহ) দাবী না মানলে মতিঝিল দখল ছাড়বো না । সরকারকে দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে মতিঝিল দখল মুক্ত করতে যৌথ বাহীনিকে আবার বল প্রয়োগ করতে হলে তখনতো সত্যি সত্যি ২,৫০০ লাশ ফালাইয়া কইতো মাত্র ৪ জন মারা গেছে তখন কি করতেন ? এই ভয়েইতো হেফাজতে ইসলাম সাড়া বাংলাদেশের কোথাও আজ পর্যন্ত একটা ছোট খাট বা মাঝারী সমাবেশও করতে সাহস যোগাইতে পারে নাই । অভিযানের পূবর্ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে হেফাজতে ইসলামের জন্য চিল্যাইয়া চিল্যাইয়া মাইকে বুক পেতে দাড়িয়ে থাকার ঘোষনা প্রদানকারী বাকী হেফাজতকারীরা কোথায় ? তারাইতো ইচ্ছা করলে একটা দূইটা সমাবেশ করে সরকারী দলকে আরেকটু ভয় দেহাতে পারতো আর বিরোধী দলকে আনন্দ দিতে পারতো ।
সাথে জাতীয়তাবাদী বিরানী আর জাতীয় পাটর্ির কোমল পানিয় এবং মিনারেল ওয়াটার দূইই খাইতে পারতো । আবার কবে না কবে এমন সুযোগ আসে কে জানে । এমনওতো হইতে পারে ইলেকশনের আগে দিয়া বিরিয়ানী আর কোমল পানিয়র পিছনে কোন দলের এতো খরচাপাতি করার ইচ্ছা নাও থাকিতে পারে । সুযোগ থাকতে থাকতে এই সুবিধাগুলি হেফাজতে ইসলামের কাজে লাগানো উচিৎ ছিলো । একটা নিবর্াচিত সরকারকে ক্ষমতাচূ্যত করার কত খায়েস ? তাদেরকেই আবার বিরিয়ানী পানি খাওয়াইয়া সাহায্য করে কারা, যারা সেই সরকারের সাথেই নিবর্াচিত কিন্তু সরকার গঠন করতে পারে নাই ।
একটা কথা আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, আজ যদি হেফাজত ইসলামের পরিবর্তে ভারতের কোন উগ্রপন্থী সংগঠন সরকার পতনের এমনই একটা উদ্দ্যোগ গ্রহন করে এবং হেফাজতে ইসলামের মত এত লোকজন(বাংলাদেশের) একত্রিত করিয়া মতিঝিল দখল করে তবে তাদেরকে বিরিয়ানী আর কোমল পানিয় পান করাইয়া আত্মতৃপ্তি লইবার মত দলের বা সংগঠনের অভাব হইতে পারে ? মনেতো হয়না বিরিয়ানী, মিনারেল ওয়াটার আর কোমল পানীয় দ্বারা আপ্যায়ন করিতে কেউ পিছ পা হইবে কারন উভয় ক্ষেত্রেই উভয়ের উদ্দেশ্য, অভিপ্রায় আর অভিসন্ধি সব কিছু প্রায় একই । কম বুদ্ধির (কমবুদ্ধির কারন ইসলামী বই ছাড়া আর কোন বই পুস্তক পড়িয়া জ্ঞ্যানের শাখা প্রশাখা বিস্তার বা বৃদ্ধি করিবার এখতিয়ার তাদেরকে দেয়া হয় না । এমনকি দৈনিক পত্রিকাও) হেফাজতের কান্ধে বন্দুক রেখে সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলো । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।