১
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের হুমকি সত্ত্বেও আসছে জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি শুরু করবে সরকার। জনশক্তি রপ্তানির চূড়ান্ত চুক্তি হতে যাচ্ছে আগামী ৯ নভেম্বর। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে হবে ওই চুক্তি স্বাক্ষর।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিসহ জনশক্তি রপ্তানির জন্য এরই মধ্যে প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার। অন্যদিকে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সদস্যদের বাদ দিয়ে মালয়েশিয়ায় সরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানি করলে সব দেশে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার যে হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি সে বিষয়টিও আমলে নিচ্ছে না সরকার।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বায়রার উচিত অকারণ বিরোধিতা না করে সরকারকে সহযোগিতা করা। সরকার ও বায়রা কখনই প্রতিপক্ষ নয়। সরকারিভাবে কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্তে নাখোশ জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান বলেন, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি প্রেরণের
ক্ষেত্রে এরই মধ্যে বেশ প্রস্তুতি নিয়েছে দুদেশের সরকার। আগামী ৯ নভেম্বর এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি হবে।
কেউ অকারণ বিরোধিতা করলে দেশেরই ক্ষতি। সবার উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা। তিনি বলেন, সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল। মালয়েশিয়া সরকারের শর্ত অনুযায়ী সরকারি পর্যায়ে লোক পাঠানো ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের আর কোনো গত্যন্তর নেই।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের কিছু অসাধু জনশক্তি রপ্তানিকারকের অতি লোভ আর প্রতারণার কারণে ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশী কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘ চেষ্টার পর সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। মাত্র ৪০ হাজার টাকায় অভিবাসনের জন্য চুক্তির পর রেজিস্ট্রেশন শুরু করবে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।
সরকারের এমন ঘোষণার ফলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া আবারো খুলে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে। প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এস সুব্রামানিয়ামের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসে খসড়া প্রস্তাব সই করে গেছে মাসখানেক আগে।
দুদেশের মন্ত্রিসভাও সরকারিভাবে কম খরচে কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এখন শুধু চূড়ান্ত চুক্তির অপেক্ষা। চুক্তি স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৫ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারবে বলে মনে করছে সরকার।
২
বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ব্যাপক বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে জাপান। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা।
রোববার নরসিংদীর ডাঙ্গায় বেসরকারি খাতের নির্মিতব্য একটি অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল ও শিল্প এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি একথা বলেন। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে একে খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের এ প্রকল্পটি হবে বেসরকারি খাতে অভ্যন্তরীণ বাংলাদেশের প্রথম কন্টেইনার টার্মিনাল।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মুসায়ুকি তাগা, জাইকার সিনিয়র প্রতিনিধি হিরোয়ুকি টোমিতা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়লা ইয়াসমিন, একে খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এ কে সামসুদ্দিন খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন কাশেম খান, জেনারেল ম্যানেজার আকতার হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। পরে জাপানি রাষ্ট্রদূত একে খান এন্ড কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে জাপানি রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা এ প্রকল্পে জাপানের অর্থায়নের ব্যাপারে গভীর আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই শিল্পাঞ্চল নির্মাণকে জাপান স্বাগত জানায়। এ প্রকল্পে জাপান সরকার অর্থায়ন করবে। একইসঙ্গে জাইকা ও জেটরোকেও এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান বলেন, এ অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পাঞ্চল উপকৃত হবে। এ শিল্পাঞ্চল থেকে আমার এলাকার জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হবে।
বর্তমান সরকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি। একে খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এ কে সামসুদ্দিন খান উন্নত প্রযুক্তিসহ যৌথ বিনিয়োগের জন্য বিশেষ করে জাপানি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। এ শিল্পাঞ্চলে পশ্চাৎপদ জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। একে খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন কাশেম খান বলেন, এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০ একর জমির ওপর নির্মিতব্য টার্মিনাল ও শিল্প এলাকায় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।