ইট-পাথরের এই নগরী ছেড়ে, সমাজের সব পংকিলতাকে পেছনে ফেলে, প্রকৃতির খুব কাছে, দূর দিগন্তে ডানা মেলে উড়তে চাই আমার ভ্রমনে হাতখড়ি বান্দরবানকে দিয়ে। উদ্দেশ্য বান্দরবানের নাফাখুম।
সময়: অক্টোবর, ২০১০
প্রথম দিন:
আমরা ৮ জনের একটা গ্রুপ, তারমধ্যে ২ জন মেয়ে (আমি আর আমার এক কলিগ) আর ৬ জন ছেলে (আমার ছোট ভাই আর ওর ৫ জন ফ্রেন্ড)। আমাদের যাত্রা শুরু কলাবাগান থেকে। রাত সাড়ে ১০ টায় বাসে উঠলাম, ছোট ভাইয়ের ফ্রেন্ডদের সাথে পরিচিতি পর্বশেষে আড্ডাশুরু।
১ম প্রশ্ন: আপু, আমরা কোথায় যাচ্ছি?
উত্তর: কেন? পড়াশোনা করে আসতে বলেছিলাম না!
যাই হোক, আমাদের বান্দরবান পৌছানোর কথা ৬ টায় থাকলেও গিয়ে পৌছালাম সোয়া ৭ টায়। তাড়াতারি রিকশা করে থানচির বাসের দিকে রওয়ানা দিলাম। পৌছে দেখি শেষ বাসটাও ছেড়ে দিচ্ছে। হুড়মোড় করে ২ জন বাসে উঠলাম, ৪ জন টিকেট কাটতে গেল আর ২ জন গেল নাস্তা আনতে।
প্রশ্ন: আপু, থানচি কেন যাচ্ছি? ওখানে কি আছে?
উত্তর: কেন? গেলেই দেখতে পাবে!
বাস ছেড়ে দিল, পাহাড়ি পথ বেয়ে, মেঘের রাজ্য দিয়ে বাস চলছে।
আমার দলবল তখন শান্ত, ওদের চোখ জুড়ে বিস্ময়।
বলাবাহূল্য, এই টিমে আমাদের সবারই এটা প্রথম ভ্রমন।
বাস এসে থামল চিম্বুক পাহাড়ের চূড়ায়। ফটোসেশন চলল, ছেলেপুলেরা এত ছবি তুলে নিজেদের আগে জানতাম না।
এবারে বাস চলা শুরু করলো আরও ভয়ংকর রাস্তা ধরে।
১ টা নাগাদ থানচি এসে পৌছলাম, নৌকা করে শংখ নদী পাড়ি দিয়ে বাজারে গিয়ে খেয়ে নিলাম।
শংখ নদী : থানচি বাজারের কাছে
খাওয়া শেষ না হতেই মুষলধারে বৃষ্টি, এবার বৃষ্টি শেষ হলে দেখি নদীর যা অবস্থা কোনমতেই আজ সামনে যাওয়া সম্ভব না। অগ্যতা থাকার জায়গা খুজতে হল, স্হানীয় বিডিআরের সহযোগিতায় থানচি চেয়ারম্যান এর গেস্ট হাওজে থাকার ব্যাবস্হা হল। আমাদের যায়গা দিতে গিয়ে স্হানীয় এক আদিবাসী, যিনি ওখানে ভাড়া থাকেন, নিজের রুম ছেড়ে দিলেন। আর এভাবেই পরিচিত হলাম মং হ্লা নু এর সাথে।
রাতের খাবার শেষ করে নৌকা ঠিক করতে গেলাম। নৌকা ঠিক করার কিছু টিপস: বর্ষায় ইন্জিনের নৌকা আর শীত হলে ছোট নৌকা (যা বুঝতে আমাদের সময় লেগেছিল)। নানাললোকের নানা মন্তব্য করার ফলে আমরা যখন হাল ছেড়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছিলাম তখন হঠাৎ করেই পরিচয় মং খাই এর সাথে। (মং খাই নাফাখুমে মূসা ইব্রাহিমের সাথে ছিলেন, প্রথম আলোতে সেই ভ্রমন নিয়ে একটা লেখাও ছিল, যেটার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের এই ভ্রমন)। যাই হোক, পরিচিত হওয়ার পর আমরা তাকে আমাদের গাইড হওয়ার অনুরোধ জানালাম, কিন্তু এখানেও বিধি বাম, মং খাই জানালেন যে উনি একটি দল নিয়ে এখানে এসেছেন।
আমরা ফিরে গেলাম রেস্ট হাওসে। পরে জানলাম আমাদের জন্য যিনি রুম ছেড়ে দিলেন, মং খাই তারই দুলাভাই, তখন মং খাই নিজেই আমাদের হয়ে তার শ্যালককে অনুরোধ আমাদের গাইড হওয়ার। উনি রাজি হলেন। অবশেষে রাতে স্পেশাল পানি (দুচু্য়ানি মনে হয়) খেয়ে সুন্দর সকালের আশায় ঘুম দিলাম। :
আমার প্রথম ভ্রমন : বান্দরবান (২য় পর্ব)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।