ইদানিং কিছু অতি মানবতাবাদী/মানব দরদীদিগকে গজিয়া উঠিতে দেখা যাইতেছে যাহারা প্রকাশ্য গরু জবেহ তথা কোরবানী লইয়া পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করিতেছেন। শত সহস্র শতাব্দী ধরিয়া চলিয়া আসা এই কোরবানীর মধ্যে তেনারা বর্বরতা খুঁজিয়া ফিরিতেছেন। প্রকাশ্য দিবালোকে পশু জবেহ নাকি উনাদের আদরের দুলালদের জন্য ভয়ানক দুশ্চিন্তার কারন হইয়া দাড়াইয়াছে।
কেহবা আবার ইহার জন্য বিশেষভাবে অজ্ঞদের(বিশেষজ্ঞ) পরামর্শ লইয়া ইহার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের পথ বাতলাইয়াছেন। অতি উচ্চমার্গের এই সকল মানব দরদীয়াদের মানবতার জন্যে মায়াকান্না সত্যি তাহাদের প্রতি আমার করুণার উদ্রেক করিতেছে।
বস্তুত, তাহারা সমাজের কল্যাণ চিন্তায় এতই মশগুল যে দুনিয়ার তাবৎ কল্যাণকর্ম সম্পন্ন করিয়া অত:পর তেনারা ধর্মের ভুল ত্র“টি লইয়া মনোনিবেশ করিয়াছেন। এইবার উনারা ধর্মের যত প্রকারের কু-সংস্কার, কু-ব্যবস্থাপনা, কু-দর্শণ রহিয়াছে তাহা নাশিবার নিমিত্তে আদাজল খাইয়া উঠিয়া পড়িয়াছেন। এক সময় উনারা হয়ত মুসলমানদের কুরবানি, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে বলিদানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মাচার সংস্কারের লাগি ইনিয়ে-বিনিয়ে দাবি দাওয়া উত্থাপন করিবেন ইহাতে সন্দেহের লেশমাত্র অবকাশ নেই।
এই ধারার মানবতাবাদীরা তাহাদের চিন্তায় যাহা আসে তাহাই প্রকাশ করিয়া দেন। তাহাদের এই মত প্রকাশকে আবার “মুক্ত চিন্তা দর্শণ” নামে নামকরণ করা হইয়াছে।
ইহার অপর না প্রগতিবাদ। প্রগতির ধারক বাহকগণ মুক্ত চিন্তার নাম করে ইনোসেন্স অব মুসলিম তৈরী করিয়া যুদ্ধাবস্থা তৈরী করিয়া থাকেন। অত:পর, সেই যুদ্ধের নামকরণও তাহারাই করিয়া থাকেন। নাম দেওয়া হইয়া থাকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, ধর্মীয় অন্ধত্ববাদ, উগ্রবাদ ইত্যাদি কত কি? ইনারা নিজেদেরকে জনসম্মুখে এমনরুপে তুলিয়া ধরেন, মনে হইবে যেন ইহারা একাদিক্রমে শিাবিদ, দার্শনিক, মানবহিতৈশী, সাহিত্যক, ধর্মবিশারদ, মনস্তত্ববিদ।
এইসকল মনস্তত্ববিদেরা চিন্তার জগতে নিজেদেরকে এতখানি স্বর্ণশিখরে আরোহন করাইয়াছেন যে পশ্চিমারা যাহা করে তাহাই তাহাদের অতীব মনমুগ্ধকর স্বত:সিদ্ধ বলিয়া বিবেচিত হয়।
নিজেদেরকে সম্পূর্ণ ধর্মনিরপে প্রমাণিত করিবার তরে ধর্মাচারীদের পেছনে উঠিয়া পড়িয়াছেন। ধর্ম যেন তাহাদের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি হইয়া উঠিয়াছে। সমাজ থেকে রাষ্ট্র থেকে ইহাকে বিতাড়ন না করিলে তাহাদের আয়েশী জীবনের ব্যাঘাত ঘটিবে। মূলত: এখানে ধর্ম বলতে তাহাদের উদ্বেগের মূল কারন ইসলাম নামক ধর্মটি। ইহারা এমনই সাধু যে, ধর্মের যেসকল বিষয়াদিকে তাহাদের অনুকুলে ভাবিবেন কেবল সেইগুলি ব্যতিরেকে বাদ বাকি সবকিছুর মধ্যেই তাহারা দূর্গন্ধ খুঁজিয়া ফেরেন।
সেই দূর্গন্ধই এখন তাহারা কোরবানির মধ্যে খুঁজিতেছেন। যদি কেহ সত্যিকার ঘুমের ঘোরে থাকে তাহা হইলে আশা থাকে যে এ কোন এক সময় জাগিবেই। কিন্তু যেইজন জাগিয়া ঘুমান তাহার ব্যাপারখানা বিজ্ঞজনমাত্র জ্ঞাত।
ইহাদেরকে প্রতিরোধ করিতে না পারিলে একসময় তাহারা প্রগতির অন্তরায় মনে করিয়া হয়ত বলিবে বিবাহ প্রথা তুলিয়া দেওয়া হউক। ইহা সমাজে অনাচার সৃষ্টি করিয়া চলিয়াছে।
ইহা স্বামী নামক কীট আর স্ত্রী নামক পরজীবীর সৃষ্টিকারী। সূতরাং আইন করিয়া বিবাহ নিষিদ্ধ করা হউক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।