াংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: ‘ভবনের ৪ তলায় দু’জন মা বাচ্চা প্রসব করেছে। মা ও বাচ্চা দু’জনে ভালো আছে। ’ হাউ মাউ করে কাঁদতে কাঁদতে এ কথা বলেন ধসে যাওয়া রানা প্লাজার চতুর্থ তলায় ঢুকে ফিরে আসা উদ্ধারকর্মী সুজন।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, “আমি রাত ১১টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত দু’টো কক্ষে ওই দুই মা এবং বাচ্চা ছাড়াও ৫ শতাধিক জীবিত ও মৃত মানুষ দেখেছি। যারা জীবিত আছে তাদের কারো হাত, কারো পা ভেঙে অর্ধমৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
”
সুজন জানান, বুধবার সকাল ৯টার দিকে ‘রানা প্লাজা’ ধসের খবর শুনে কামারাঙ্গীর চর থেকে ছুটে আসেন তিনি। তার এক বন্ধু চারতলার গার্মেন্টস কর্মী।
বিকেলে এসে পৌঁছানোর পর এত মানুষের প্রাণহানি দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেন নি সুজন। জীবন বাজি রেখে নেমে পড়েন উদ্ধার কাজে। সন্ধ্যা ছ’টায় ভবনে প্রবেশের চেষ্টা শুরু করে রাত এগারটায় তিনি চারতলায় একটি কক্ষে পৌঁছান।
সেখানে দুই রুমে ৩ শতাধিক গার্মেন্টসকর্মীকে আটকা পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
অক্সিজেনের অভাবে অনেককেই চোখের সামনে মারা যেতে দেখেছেন সুজন।
তিনি বলেন, ‘‘একটি রুমের এক কোনায় বড় দু’টো খণ্ডের মাঝখানে দু’মা বাচ্চা প্রসব করেছেন। সেখানকার দৃশ্য বলে বোঝানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমি দশ মিনিট বসে বসে কেঁদেছি।
কিন্তু আমি যে ছিদ্র দিয়ে ঢুকেছি সেখান দিয়ে মা ও বাচ্চাকে বের করা সম্ভব নয়। ”
সুজন আরও বলেন, “অনেক কষ্টে রাত সাড়ে চারটার সময় বাইরে খবর দিতে পেরেছি যে, এখানে অনেকেই আটকা আছেন। আমিও মরে যাচ্ছিলাম অক্সিজেনের অভাবে। পরে অনেক কষ্টে বের হওয়ার সময় আরও কয়েকজনসহ মোট ৪০-৫০ জনকে উদ্ধার করেছি আমি। ”
উদ্ধারকর্মী কামাল ইসলাম বলেন, ‘‘আমিও পাঁচ তলায় এক মৃত নারীর পাশে বাচ্চা দেখেছি।
বাচ্চাটি অনেক ছোট ছিল। আমার অক্সিজেনও শেষ হয়ে যায়। পরে দেওয়ালের একটি খণ্ড পড়ে আমার চোখের সামনে বাচ্চাটি মারা যায়। এত নিষ্ঠুর পৃথিবী হতে পারে বলে আমি জানতাম না। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৩
আরইউ/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম ও রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর/জেডএম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।