গত রাতে Rtv'র ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ গোলটেবিল বৈঠক’ অনুষ্ঠান যারা দেখেননাই তারা বিশাল কিছু মিছ করছেন। এইডা আছিল বাংলাদেশী রাজনীতিবিদদের মাস্তানীর গ্রেট টেলিভিশন লাইভ শো। এখানে অন্যান্য আলোচকদের সাথে উপস্থাপক রুবাইয়াত ফেরদৌস দুই দলের দুই মাস্তানকেও আমন্ত্রণ জানাইছে। একজন আওয়ামী লীগার মন্ত্রী যিনি জল, স্থল ও অন্তরীক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে। সে হচ্ছেন বিশালদেহী ও হৃষ্টপুষ্ট জনাব শাহজাহান খান সাহেব।
অন্যজন হচ্ছেন জাতীয়তাবাদী আইন বিশারদ এবং তুলনামূলক ক্ষীণদেহী ও বয়সাক্রান্ত জনাব রফিকুল ইসলাম মিয়া সাহেব। আলোচনা ও সমালোচনার এক পর্যায়ে এই দুই বিশিষ্ট ক্রোধান্বিত রাজনীতিবিদ পরস্পর আক্রমণাত্মক হয়ে ‘আপনি নিজেকে কী মনে করেন, আপনার চেয়ে আমি কমনা, চুপ করেন, বেয়াদপ’ জাতীয় সংলাপ ব্যবহারের পর শারীরিক ভঙ্গিতে যুদ্ধংদেহী ভাব লন। হয়তো রুবাইয়াত ফেরদৌস বাঁশি না ফুঁকাতেই Rtv’র দর্শকরা একটা অসম কিন্তু বিস্ময়কর ও অভূতপূর্ব মল্লযুদ্ধ উপভোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হইলেন।
টেলিভিশন সম্প্রচার নীতিতে দর্শক অধিকার সংরক্ষণ আইন বলে কিছু থাকা উচিত বা আছে বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। সেই আলোকে কোনও অনুষ্ঠানের নামে কেউ যদি অশালীন শব্দ, কথাবার্তা ও আচরণ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দর্শক-শ্রোতার মন, মনন ও রুচিবোধে আঘাত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে? তাছাড়া আমাদের তরুণ দর্শক শ্রেণী এবং তৃণমূল পর্যায়ের দলীয় নেতা-কর্মীরা এইসব অনুষ্ঠান এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ নেতাদের কীর্তি-কলাপ দেখে কী শিখছে বা মেসেজ নিচ্ছে?
রুবাইয়াত ফেরদৌস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক হিসাবে হয়তো টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে টক’শো উপস্থাপন করার আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন।
টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ বা প্রযোজকদের কাছে প্রচার ও বাণিজ্যিক ব্যাপারটা প্রাধান্য পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসাবে রুবাইয়াত সাহেবের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে দর্শকদের উপর এইসব অনুষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাববার। উপস্থাপনা যদি করতেই হয় তাহলে এজাতীয় অনুষ্ঠান নয়। তারচেয়ে বরং পোষ্য পশু-পাখিদের নিয়ে সার্কাস অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার পরামর্শ উনাকে দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের (!) উপর অন্তত তার নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে। কেননা গতকালের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদদের অসহিষ্ণু কথাবার্তা ও আচরণ নিয়ন্ত্রণে তার অসহায়ত্ব ও অপারগতা ভীষণভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে।
তিনি বার বার নির্দেশনা ও আকুতি জানিয়ে শেষ পর্যন্ত সমর্থ হয়েছেন সম্ভাব্য মল্লযুদ্ধের সরাসরি সম্প্রচার থেকে প্রযোজক ও ক্যামেরাম্যানকে অন্তিম মুহূর্তে কিছুক্ষণের জন্য বিরত রাখতে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।