গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী এফবিআই এজেন্ট কর্তৃক নিজেকে সন্ত্রাসী কাজে আগ্রহী পরিচয় দিয়ে কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া এবং তাকে সে কাজে উসকে দিয়ে জড়িত হতে সহায়তা করা এবং শেষে তার ওপর দোষ চাপানো কতটা নৈতিক- এ প্রশ্ন এখন অনেকের মাঝে। নিরপেক্ষ বিশ্লেষকদের মতে, যদি নাফিস সত্যিকার অর্থে এ ধরনের কাজে নিজ থেকে আকাঙ্ক্ষী হয়েও থাকে, তবু এফবিআই তাকে সে কাজ বাস্তবায়নে পুরো সহায়তা করেছে এবং এফবিআই দোষ এড়াতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আতঙ্কিত বাংলাদেশীদের দাবি- এ ঘটনা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার সাথে তদন্ত করতে হবে।
মাত্র ৯ মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশাল ও সম্পূর্ণ অচেনা একটি দেশে গিয়ে মাত্র এক থেকে দু’জন সহযোগী নিয়ে এত বড় একটি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে অগ্রসর হওয়া কারো পক্ষে সম্ভব কি না- সে প্রশ্নও সামনে এসেছে।
নাফিসের মতো নম্র, ভদ্র ও মেধাবী ছেলে কখনোই উগ্রপন্থী বা সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত থাকতে পারে না।
কোনো অশুভ স্বার্থ হাসিল করতে কৌশলে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন নাফিসের পরিবারসহ প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন। সরেজমিন নাফিসের বাসা উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গিয়ে সবার কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায়। এলাকার মুদি দোকানি থেকে শুরু করে নাফিসকে যেই চেনেন, তার একই বক্তব্য- ‘নাফিস অত্যন্ত ভালো ছেলে। সে এ কাজ করতে পারে না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
তবে সবারই প্রত্যাশা, আমেরিকা সুষ্ঠু তদন্ত করলে নাফিস নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। আর আমেরিকার সব সংস্থার তদন্তই সুষ্ঠু হয় বলে তারা জেনে এসেছেন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ছেলে রেজওয়ানুল আহসান নাফিস (২১)। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি ছিলেন অত্যন্ত মনোযোগী। মেধার বিকাশ ঘটাতে নাফিস ঢাকার সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোয় লেখাপড়া করেছেন।
পড়াশোনা নিয়ে এতই মনোযোগী ছিলেন তিনি যাতে কখনো কোনো রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেননি। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সে জড়িত বলে জানালেন নাফিসের খালাতো ভাই আরিফ। ছোটবেলা থেকে এই আরিফই ছিল নাফিসের বন্ধু। তার সাথেই সব ধরনের কথা হতো নাফিসের। নাফিসের মামা আবু নাসের আরিফ আরো জানান, রেজওয়ানুল আহসান নাফিসের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কাজীবাড়ি।
তবে নাফিসের জন্মস্থান উত্তর যাত্রাবাড়ীর ১০৭/৪ নম্বর নানাবাড়িতে। আবু নাসের জানান, উত্তর যাত্রাবাড়ীর ওই ভবনটি তার বাবা আবু বকর সিদ্দিকের। মৃত্যুর আগে তিনি ভবনের দু’টি ফ্ল্যাট দুই মেয়ের (তার বোন) নামে লিখে দেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নাফিসের মা ছোট। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর কাজী মো: আহসান উল্লাহর সাথে নাফিসের মায়ের বিয়ের পর থেকে তারা ওই ভবনেই থাকতেন।
আহসান উল্লাহর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে নাফিস ছোট। নাফিসের বড় বোন ফহরিয়া বিলকিস নুশা সিলেট মেডিক্যাল থেকে ডাক্তারি পাস করে প্র্যাকটিস করছেন। নুশার স্বামীও ডাক্তার। তিনি বলেন, অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে নাফিস। তার বড় চাচা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।
ছোট চাচা মাহবুব উল্লাহ ও তার স্ত্রী দু’জনই সেনাবাহিনীর কর্নেল (মেডিক্যাল কোর)। নাফিসের ফুফু-ফুফাও ডাক্তার। তারা বর্তমানে জার্মানিতে অবস্থান করছেন। নাফিসের মেঝো মামা ব্যবসায়ী আবু নাসের আরো বলেন, নাফিসের বড় মামা আবুল বাশার অস্ট্রেলিয়া সেটেল্ড। পরিবার নিয়ে তিনি সেখানেই থাকেন।
যদিও সম্প্রতি তিনি দেশে বেড়াতে এসেছেন। মেঝো মামা তিনি নিজে। আর ছোট মামা আবু জাফর সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনিও পরিবার নিয়ে সেখানেই অবস্থান করছেন।
নাফিসের বাবা আগে উত্তরা ব্যাংকে চাকরি করতেন।
সেই সময় তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। মেয়েকে ডাক্তারি পড়ানোর মতো ক্ষমতাও তার ছিল না। কিন্তু নাফিসের নানার সহযোগিতায় দুই ছেলেমেয়েকে ভালোভাবে লেখাপড়া করাতে পেরেছেন। সম্প্রতি আহসান উল্লাহ জনতা ব্যাংকে যোগ দিয়েছেন।
নাফিসের পিতা কাজী আহসানউল্লাহ
নাফিসের বাবা কাজী আহসানউল্লাহ তার ছেলেকে নির্দোষ বলে দাবী করেন।
একটি বেসরকারী ব্যাংকের পদস্থ কর্মকর্তা মি: আহসানউল্লাহ তার ছেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, 'যে ছেলে একা বাসার ছাদে যেতো না , সে এই কাজ কিভাবে করতে পারে? নাফিস ঢাকায় থাকতে কোন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল না। পড়াশোনা করার জন্যই সে যুক্তরাষ্ট্রে গেছে'।
নাফিসের বোন ফারিয়া বিল্কি নিসা বলছিলেন, তার ভাইকে নিউইয়র্কে আটকের পর পুরো পরিবার এখন বিধ্বস্ত। আমেরিকায় যাবার পর তার ভাই নাফিস তাদের আত্নীয় একটি পরিবারের সাথে বসবাস করত।
প্রায় প্রতিদিনই তাদের সাথে যোগাযোগ হতো। '
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত দশটায় নাফিসের সাথে কথা হয়েছে বলে জনান তার বোন নিসা। তিনি বলেন, 'রাতে নাফিসের সাথে কথা বলে ঘুমিয়েছি। সকালে উঠে দেখি এই অবস্থা। '
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন
নিসা বলছিলেন, এখন তাদের পরিবার কি করবে সেটি তারা কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না।
২১ বছর বয়সী নাফিসকে আটকের পর আজ নিউইয়র্কের একটি আদালতে তোলা হয়েছে। এবার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য তার আইনি লড়াইয়ের পালা।
নাফিসের বাবা মি: আহসানউল্লাহ আবেগতাড়িত কন্ঠে বলেন, 'আমি বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করব আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য। '
খালাতো ভাই আরিফ জানান, ২০০৬ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে নাফিস। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে জিপিএ ৪.৮৮ পেয়ে এইচএসসি পাস করে ২০০৯ সালে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয় সে।
এরপর নিজের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করতে উচ্চশিক্ষার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নাফিস আমেরিকার মিসৌরি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে। এর আগে নাফিসরা ১০ বন্ধু মিলে আমেরিকায় পড়ার আবেদন করে। কিন্তু ১০ জনের মধ্যে থেকে মাত্র চারজন আমেরিকার যাওয়ার জন্য সিলেক্ট হয়। তিনি আরো জানান, আমেরিকায় নাফিসের থাকার জায়গা ছিল না, যে কারণে সে আমার (আরিফের) ফুফাতো বোন সোনিয়ার বাসায় পেইংগেস্ট হিসেবে থাকতে শুরু করে। সোনিয়ার স্বামী শামিম কয়েক বছর আগে ডিভি লটারি জিতে আমেরিকায় যান।
এরপর তিনি সোনিয়াকেও সেখানে নিয়ে যান। আরিফ জানান, এফবিআইর হাতে গ্রেফতার হওয়ার দুই দিন আগে নাফিস সেখানে মুসলিম পিৎজা হাউজ নামে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেছিলেন।
এ দিকে বিস্ফোরকসদৃশ হাজার পাউন্ড সামগ্রী নিয়ে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক উড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট বলে দাবি করেছেন নাফিসের স্বজনেরা। নাফিসের নানী, খালা, মামা, মামী সবাই বলছেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র। যে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে নিরীহ নাফিস।
মামা আবু নাসের বলেন, নাফিসের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। জুলুম আল্লাহ সহ্য করেন না। জুলুমকারীকে অবশ্যই আল্লাহ শাস্তি দেবেন। তিনি বলেন, নিজের বোনের ছেলে বলে বলছি না, প্রকৃতপক্ষে নাফিস ভালো ছেলে। সে এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত থাকতে পারে না।
নাফিস গাড়ি চালাতে জানে না। তাহলে কিভাবে গাড়িতে করে বোমা বহন করে নিয়ে যাবে এটি বোধগম্য নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাড়ির সামনের তিন-চারজন দোকানদার জানান, জন্মের পর থেকে নাফিসকে দেখছি। তারা বলেন, আমেরিকা তো সব কিছুর নিরপেক্ষ তদন্ত করে। আমরা আশা করব নাফিসের বিষয়টিও আমেরিকা নিরপেক্ষ তদন্ত করবে।
আর নিরপেক্ষ তদন্ত করলে নাফিস নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে বেরিয়ে আসবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।
বাসায় নেই নাফিসের বাবা-মা :
গতকাল উত্তর যাত্রাবাড়ীর বাড়িতে গিয়ে নাফিসের বাবা ও মাকে পাওয়া যায়নি। বাসার অন্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতেই তারা পুলিশের সাথে বাসা থেকে বের হয়েছেন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। আবু নাসের জানান, রাতে একবার ফোন দিয়ে বলেছিলেন, আমরা ভালো আছি।
নাফিস ও আমাদের জন্য দোয়া করো। এরপর সারা রাত তাদের জন্য অপেক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তারা বাসায় ফেরেনি। তিনি আরো বলেন, গতকাল সকালেও একবার ফোন করেছিল। তখনো বলেছিল, আমারদের জন্য চিন্তা করো না, আমরা ভালো আছি।
তারা কোথায় রয়েছেন জানতে চাইল নাসের বলেন, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে অপর একটি সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ডিবি পুলিশের একটি দল নিরাপত্তার কথা বলে তাদের নিয়ে যায়। এরপর আরে ফিরে আসেনি।
তীব্র সমালোচনার মুখে এফবিআই
রেজওয়ানুল আহসান নাফিস
যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী যুবক কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিসকে ফাঁদে ফেলা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। পশ্চিমা গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভয়ঙ্কর এক ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়া নাফিসের গ্রেফতার নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন প্রশ্ন। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রভাবশালী পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থা নাফিস বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থা এপি (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস) নিউ ইয়র্ক থেকে গত শুক্রবার নাফিস বিষয়ে একটি খবর প্রচার করেছে। খবরে নাফিসের যুক্তরাষ্ট্রের এক শিক্ষক ও দু’জন সহপাঠীর সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। নাফিসের এক শিক্ষক ও দু’জন সহপাঠী এপিকে জানান, নাফিস এ ধরনের কাজ করতে পারে বলে তারা কেউ বিশ্বাস করেন না।
আলাপকালে নাফিস তাদেরকে জানান, একজন সত্যিকার মুসলমান কখনো সন্ত্রাসী কাজে বিশ্বাস করে না।
জিম ডাউ নামে নাফিসের একজন শিক্ষকের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে এপির প্রতিবেদনে। ৫৪ বছরের ঝানু এ সামরিক কর্মকর্তা সপ্তাহে দুই দিন ক্লাস নেন নাফিসের। তিনি জানান, আমি নাফিস বালকটির সাথে কয়েকবার আলাপ করেছি। তার সাথে আমার বেশ কথাবার্তা হয়েছে।
যে অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটি তার চরিত্রের সাথে মিলছে না।
সেন্ট লুইসের ডিয়ন ডানকান নামে নাফিসের এক সহপাঠী এপিকে বলেন, নাফিস খুব ভালো ছেলে। সে আমেরিকাবিদ্বেষী কোনো মনোভাব কখনো প্রকাশ করেনি বা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ এ-জাতীয় কথাও কখনো বলেনি। সে একজন বিশ্বাসযোগ্য ও সৎ ছেলে।
ডিয়ন ডানকান আরো বলেন, নাফিস ভদ্র ও সৌজন্যবোধসম্পন্ন।
সে পরোপকারী মনোভাবাপন্ন। একজন ভালো মুসলমানের যে বৈশিষ্ট্য তা তার মধ্যে ছিল। সে দিনে পাঁচবার নামাজ আদায় করত।
ডাউ নামে মিসৌরির আরেকজন সাবেক সহপাঠী এপিকে জানান, নাফিস মাঝে মধ্যে লাদেনের প্রশংসা করত। সে বলত লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলার সাথে জড়িত এটি সে বিশ্বাস করে না।
কারণ লাদেন একজন ধার্মিক। আর একজন ধার্মিক এ ধরনের কাজ করতে পারেন না।
ডাউ বলেন, আমার কাছে যেটি সবচেয়ে বেদনার, তা হলো নাফিস আমাকে খুবই স্পষ্ট করে বলেছে, একজন সত্যিকারের মুসলমান কখনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না।
এ রকম বিশ্বাসের একজন লোক এত বড় একটি সন্ত্রাসী অভিযানে জড়িত হওয়ার বিষয়টি এপি সাংঘর্ষিক হিসেবে উল্লেখ করেছে তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে।
এপির প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নাফিসের বাবারও উদ্ধৃতি প্রচার করা হয়েছে।
তার ব্যাংকার বাবা ফুপিয়ে কেঁদে উঠে বললেন, নাফিস এতই ভদ্র ও ভীতু যে সে একা ছাদে যেতেও ভয় পায়। আমার ছেলে এ কাজ করতে পারে না। এপির রিপোর্টে বলা হয়েছে, নাফিসের মা-বাবার দাবি- সে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারে।
এপির রিপোর্টে আরো বলা হয়, এফবিআই তদন্তকারীদের ব্যাপারে প্রায়ই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মানুষকে ফাঁদে ফেলার অভিযোগ করেন। নাফিস এ বোমা হামলা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত কি না সেটি তদন্তাধীন ও বিচারাধীন বিষয়; কিন্তু এফবিআই যে এ বোমা হামলা নাটকে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে, তা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
গত জানুয়ারি মাসে অধ্যয়নের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের যান নাফিস। সর্বশেষ তিনি মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। বাস করতেন নিউ ইয়র্কের কুইন্স সিটির জামাইকা এলাকায়।
দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে মরিয়া প্রথম আলো ও আ.লীগ: দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত(
আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দাবি গোপালগঞ্জের আওয়ামী পরিবারের ছেলে নাফিস উগ্রপন্থী ছিলেন না। অথচ দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নাফিসকে উগ্রপন্থী প্রমাণে মরিয়া প্রথম আলো ও আ.লীগ।
এফবিআইয়ের সিএইচএস বিভাগ তাঁদের সব ধরনের কথাবার্তা রেকর্ড করত। তাঁরা ইসলামি আইনের শাসন নিয়ে আলোচনা করতেন। রেজওয়ানুল ফেসবুকে জানান যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে চান। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আরেক বাংলাদেশি তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এটা করতে পারেন।
নিউইয়র্কে একই অভিযোগে আরেকজন গ্রেপ্তার নাফিস ধরা পড়ার সাথে সাথেই বাংলাদেশের নাফিস ধরা পড়েছে, এরকম সংবাদ প্রচারের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে গেছে।
অথচ একই অভিযোগে সান ডিয়েগো থেকে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হলেও, তার দেশের নাম খবরে প্রচার করা হল না। এটা কিসের ইংগিত? পোস্টটি লেখার সময়েই প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে নাফিসকে জঙ্গি হিসেবে প্রমাণের পক্ষে তিন তিনটি খবর শোভা পাচ্ছে!
নাফিসের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততা ক্ষতিয়ে দেখা হবে- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ
হানিফ বলেন, ‘জামায়াত সারা দেশে জঙ্গি তৈরি করে দেশের মধ্যে ও দেশের বাইরে তাদের ছড়িয়ে দিয়েছে। নাফিসের সঙ্গে তাদের (জামায়াত) কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ’ নাফিসের গ্রেপ্তারের ঘটনা জাতির জন্য দুঃখজনক, লজ্জাজনক। এটা কখনো কাম্য ছিল না।
কেন এই ঘটনা ঘটল, এর গভীরে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই সহকারী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাঁর জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত নই। সে বাংলাদেশি হতে পারে, আবার মার্কিন নাগরিকও হতে পারে। এমনকি তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্বও থাকতে পারে। তাঁর নাগরিকত্বের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর আমাদের সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।
’
দৈনিক নয়া দিগন্ত কিংবা আমার দেশের মত হাতে গোনা ২/১টি দৈনিক ছাড়া দেশের ভাবমর্যাদার অনুকূলে কোন প্রচেষ্টা নেই।
গোপালগঞ্জের আওয়ামী পরিবারের ছেলে নাফিস উগ্রপন্থী ছিলেন না- আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দাবি
দেশে কি আর কোন কাজ নেই? আ.লীগ আর প্রথম আলো বিশ্বদরবারে দেশকে আর কত ছোট করবে?
চট্টগ্রাম আদালতে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার শুনানির ফাঁকে জোহরের নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী
১০ ট্রাক অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলা: নিজামী-বাবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রথম আলো
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা : ২৯ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ: নিজামী-বাবরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলে ১৯৭৫ সাল থেকে ভারতের অভ্যন্তরে শান্তিবাহিনীর সংগঠন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। Click this link...
মূল ঘটনা যাই হোক না কেন, জাতীয় স্বার্থে অনেক কিছুই রাষ্ট্রীয়ভাবে করা হয়ে থাকতে পারে। আজকে যদি বুশ ওবামাদের যক্তরাষ্ট্রের জনগণ প্রশ্ন করেন আমাদের ২ জন রাষ্ট্রদূতসহ কেন পাকিস্থানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হককে মেরে ফেলা হয়েছিল? তাহলে উত্তর দেয়া হবে It had to do only our national interest. তাহলেই যুক্তরাষ্ট্রের সভ্য! মানুষগুলো বলবে ঠিক আছে। গোয়েন্দা প্রধানদের রিমান্ডে নেয়া বিশ্ব দরবারে নিজেদের পরনের কাপড় নিজেরাই খুলে ফেলার নামান্তর।
অস্ত্র চালানের সাথে সংশ্লিষ্ট চীন কিংবা অন্য কোন দেশ কি তাদের গোয়েন্দা প্রধানদের রিমান্ডে নিচ্ছে?
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে অনুরোধ করব রাজনৈতিক হীন স্বার্থে দেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট, দামবৃদ্ধি, দুর্নীতি, অদক্ষতা, বিরোধী দমন, বাঁশি ইস্যুর মুলো ঝুলিয়ে সীমাহীন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে জনকল্যাণে একটি নজর দিন। পৌনে ৪ বছর পরাশক্তির ষোলআনা স্বার্থ উদ্ধার ও বাঁশি ইস্যুর মুলো ঝুলানো ছাড়া আর জনগণের জন্য কি করলেন?
যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের নয়, এ ছবি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম ভাঙ্গিয়ে আওয়ামী চেতনায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশের! কোথায় আজ মানবতা?
বাসে পাশের সিটে বসা একজন অফিসগামী অনেক কষ্টের ও আপসোসের সাথে বলছিলেন, দাম বাড়ার কারনে ২০ টাকার ভাড়া ৩৫ টাকা নিল। মরে যাওয়া ছাড়া আর পথ দেখছিনা। কারা শুনবে এই কষ্টের কথা!? সরকার তো ব্যস্ত রয়েছেন জনগণের সাথে সম্পর্কহীন দশ-ট্র্যাক অস্ত্র, যুদ্ধাপরাধ মামলা ও পরা শক্তির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অকাজ নিয়ে!!! দেশ ও সাধারণ জনগণের কথা ভাববার সময় কোথায়?
তথ্যসূত্র- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।