আমি একা মাঝে মাঝে অবাক হই। আশেপাশের ঘটনা দেখে। লিখবো না কিছু ভাবি। কিন্তু মনকে মানাতে পারিনা। বাধ্য হয়ে লিখতে বসি।
হয়তো আমার শুধু টাইমটাই নষ্ট করা হয়। কতটুকু হুজ্জতি, মাতলামির হুশ ভাঙ্গবে তা সঠিক জানিনা। কারণ হুজ্জতি, মাতলামিদের বেহায়া উক্তি-” ইনজয় করো,দুনিয়ার টাইমটা নয় বড়”। পরকাল ওদের কাছে কোনও ব্যাপার না। দুনিয়াটাই ওদের কল্পনার জান্নাত।
(নাউযুবিল্লাহ)
বাংলাদেশ। কি সুন্দর একটি নাম। যাকে সুবাসিত করেছে ইসলাম। এখানকার ৯৭% মানুষ ইসলাম উনাকে নিজ ধম হিসাবে স্বীকার করে। কিন্তু বাস্তবে চায় মডারেট ইসলাম।
আর এখানেই ফিতনার দ্বার উন্মোচিত। তারা নামটা শুধু রাখতে চাই ইসলাম মাফিক। কিন্তু প্রতিটা ক্ষণে প্রতিটা কাজে থাকতে চাই এ্যান্টি ইসলাম। যে যতটা অমুসলিম সংস্কৃতি মানতে পারে সে ততটাই নিজেকে কথিত সভ্য মানুষ, আবার কেউ একধাপ এগিয়ে সভ্য জাতি ভাবতে পারঙ্গম। রীতিমত প্রতিযোগিতাও করছে।
হায়রে মুসলিম নামক ১০০% মুনাফিক্ব। তোদের এতোই যদি অমুসলিম সংস্কৃতি ভালো লাগে তাহলে অমুসলিম ঘোষনা দিয়েই কর। মুসলিম দাবি করে ইসলাম উনাকে কষ্ট দিস কেন? মুসলিম নাম গুলো কলংকিত করার অধিকার তো তোদের নেই।
যাইহোক। আমার ভাষা হয়তো একটু কড়া হয়েছে।
অনেকের গায়ে ব্যাথা লাগতে পারে। তারপরও লিখলাম। মূল ঘটনাই আসা যাক এখন।
প্রেম। একটি মানসিক ব্যাধি।
ব্যাধিটির মূল পাশ্চাত্য সংস্কৃতি। অসভ্য জাতির একটি নমুনা। অপবিত্রতাই এর গতি। পরিনাম অনবরত যন্ত্রনা। ইতি ঘটে মরণদিয়ে।
আক্রান্ত হয় মানুষ। ভোগে ব্যাক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ এমনকি পুরো জাতি। ছোট একটি ঘটনাই হতে পারে উচিত শিক্ষা। যদি মানুষরুপি পশু না হয়। আসা যাক ঘটনাটিতে…
দিনটি শনিবার।
অন্যদিনের মতো সেদিনও ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। একটা ক্লাস করলাম। তারপর ক্যান্টিনে গেলাম। সকালে খাইনি ওইদিন। তাই খুদাই টেনে নিয়ে যায় সেখানে আমাকে।
নরমালি যাই না। মনটা টানেও না এতটুকু। হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠে। রিসিভ করলাম। কন্ঠটা খুব পরিচিত ।
সে আমার এক পুরাতন বন্ধু মিজান। ভাব বিনিময় হলো। ভালোই আছে ও । কথায় বোঝা গেলো সে কিছু্একটা বলতে চাচ্ছে। আমি বললম তুই কি কিছু বলবি? তোকে খুব বিচলিত মনে হচ্ছে।
উত্তরে সে বললো তোর হাতে কি বেশকিছু সময় আছে ? বললাম আছে কিন্তু কেন?তেমন কিছুনা। তোকে একটা বিষয় জানাবার ইচ্ছা হলো তাই। সময় খুব একটা বেশি ছিলোনা। ক্লাসে যেতে হবে। তার পরও বললাম ,বল দেখি কি বলতে চাস।
সে বলল হয়তো একটু সময় লাগতে পারে। আমি বললাম আচ্ছা বল। তাহলে শোন। বলা শুরু করলো ঠিক এভাবেই…
গ্রামের মেয়ে নিতু(ছদ্বনাম)। দেখতে খুব একটা খারাপ না।
ভালোই বলে লোকজনে। আর দশটা মেয়ের মতো উশ্খৃলও নয়। সুনাম আছে তার। সাদাসিদে চলাফিরা। পড়ালেখাও ভালো।
ক্লাসে বরাবরই প্রথম হয়। এভাবেই দশম শ্রেনীতে পদচারণা। নিতু এখন বড়। যথেষ্ট বুদ্বি হয়েছে। এলোমেলো কাজ করবে বলে কেউ ভাবে না।
মাঝে মাঝে ফোন রিসিভ করা আরম্ভ হয় নির্বিঘ্নে। কেউ কিছু মনেও করে না।
একদিন বিকালবেলা। বসে আছে ছাদে। সাথে বাসার ফোনটিও আছে।
হারাম গেম খেলছে মোবাইলে। হঠাৎ একটি অপরিচিত কল আসে। কলটি রিসিভ করে। শুনতে পাই একটি ছেলে কন্ঠ। বলে-” হাই আপু কেমন আছো তুমি”।
আপু? আপনাকে তো চিনলামনা- বলে মেয়েটি। আরে আমি তোমার ভাইয়া অনুপ(ছদ্বনাম)। চিনছো না? ও আচ্ছা । যাইহোক কেমন আছো ভাইয়া? জানতে চাই মেয়েটি। নট ব্যাড-ছেলেটি উত্তর দেয়।
তো কি কর আপুটা? জানতে চাই ছেলেটি। এভাবে কথা হয় ১৫ মিনিট। শেষ কথাটা ছিলো এমন, আচ্ছা কিউট আপুটা তোমাকে মাঝে মাঝে ফোন দিলে কি বিরক্ত হবা? না, উত্তর দেয় মেয়েটি।
ফোনটা ওইদিনের মতো রেখে দেয় ওরা। মেয়েটি হারিয়ে যায় চিন্তায়।
কে ছেলেটি? কন্ঠও সুন্দর। সবকিছু গুছিয়ে বলছে। খুব স্মাট কথা গুলো। ওর চমৎকার কথায় ফোনটা রাখতেও পারলাম না। কিন্তু মন কোনও উত্তর পেলোনা।
এভাবেই চলে যায় ৫টি দিন।
দিবা গড়িয়ে রাত হয়েছে। ছাত্ররা স্বাভাবিকভাবেই পড়তে বসে। নিতুও বসেছিলো পড়তে। হঠাত একটি মিস কল।
পরক্ষণেই পুরো কল। ফোনটা নিতুর কাছেই ছিলো। তাই রিসিভ করতে দেরি হলো না। রিসিভ করেই বললো নিতু, ভাইয়া কেমন আছো তুমি? উত্তর আসলো, ভালোই। তবে তোমাকে খুব মনে পড়ছিলো।
বললো অনুপ। এভাবে কথা বললো ওরা এক ঘন্টা প্রায়। ধীরে ধীরে সম্পক গভীর হয়। এর মধ্যে নিতু খানিকটা অনুপের উপর দুবলও হয়ে যায়। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অনুপ।
কিন্তু বাসা আবার নিতুদের পাশের উপজেলা চাঁপাইনবাবগনজ। ।
পরেরদিন। বিকালবেলা। নিতু বসেছিলো ছাদে।
ফোনটা টিপতে টিপতে মিস কল দেয় অনুপকে। অনুপতো বড়ই খুশি। নিতুর প্রথম মিস কল পেয়ে। কল ব্যাক করলো অনুপ। কথা শুরু হলো ওদের।
এভাবে কেটে গেলো দশটি মাস। একদিন কথার এক পযায়ে অনুপ নিতুকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। নিতু কিছু ভেবে পজেটিব উত্তর দেয়। শুরু হলো মানসিক ব্যাধির চলা। ঠিক এর আট মাস পর আক্রান্ত হলো বডি।
বুঝলোনা কারও পরিবার। নিতু এইচএসসি পাস করে রাজশাহী যায়। মেডিকেল কোচিং এ ভতি হয়। থাকা শুরু করে রাজশাহী জাদুঘরের একদম পাশেই একটি মেসে।
রমজান শরীফ।
গত রমজান শরীফ/১৪৩৩ হিজরী উনার সময়কার কথা বলছি। অনুপ ঈদ পালন করে ঢাকা চলে গেছে। দুজনে দেখাও করেছে। ঠিক যাওয়ার পাঁচদিন পর । আবার দেখা করবে বলে নিতুকে জানায়।
দেখাও করে। এভাবে পাঁচদিন, সাতদিন পরপর দেখা করতে চাই অনুপ। কিন্তু সন্দেহের জাল বাধে নিতুর হৃদয়ে। জানতে চাইলে বলে তোমাকে ছাড়া খুব কষ্ট হয়। তাই চলে আসি।
তারপরও সন্দেহ কাটেনা নিতুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অনুপ। তাহলে কি তার ক্লাস ঠিকমতো হয়না? আর যাওয়া-আসার এত টাকা পাই কোথায় থেকে? সে তো টিউশনি করায় না বলেছে। খোজ নিতে শুরু করে নিতু। ঝগড়াও চলে মাঝে মাঝে।
পড়ালেখায় ভাটা পড়ে কিছুটা।
এ্যাডমিশান। ফরম তুলে জমাও দিলো নিতু। স্কোর ভালো। দুইটাতেই প্লাস।
কিন্তু ইদানিং পড়ায় মন জোগাতে পারছেনা। এদিকে পরিবার সহ আত্মীয়রা সবাই স্ব্প্ন দেখছে নিতু অবশ্যই চান্স পাবে। এখন কি করবে নিতু ভেবে পাচ্ছেনা?
অনুপ। একটা বদচরিত্র ছেলে। পড়ে রাজশাহী কলেজে।
নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গাজা টানে। টাকা না থাকলে বন্ধুদের বই বা অন্যকিছু চুরি করে বিক্রি করে। জুটে যায় গাজার টাকা। এর মধ্যে রাজশাহীতে নিতুকে একটি ব্যাগ ও ডাইরি দিয়েছে।
সেগুলোও চুরি করা। সব অনুসন্ধানে বের হয়ে আসলো। প্রেম নামক মানসিক ব্যাধির সমাম্পতি ঘটালো নিতু।
মেডিকেল। স্বপ্নের কলেজ ।
চান্স দিতে পারলো না নিতুকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও দুরে ওয়েটিংয়ে থাকায় চান্স আর হলো না। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরম তোলা হলেও এক্সাম দেয়া হলো না। কারণ ঘটনা ফ্যামিলি জেনে গেছে। কষ্টে ও দু:খে অজ্ঞানও হলো একবার।
চলে যেতে হলো নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগনজে।
পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নিতুকে একটি প্রতারিত স্মৃতি এবং কুমারিত্ব হারানোর বেদনা উপহার দিলো। যা তাকে বহন করতে হবে আজীবন। কুড়ে কুড়ে মারছে এবং মারবে নিতুকে অনবরত। পরিবার ও আত্মীয় সবারই কাছে ঘৃনিত একটি নাম এখন নিতু।
পাঠক। কিন্তু এধরণের ঘটনা কি শুধু এটাই অথবা একটি??? না। লাখ-লাখ। কোটি-কোটি। তারপরও কি পশুত্বের জাল থেকে বের হয়ে আসবে নিতু ও অনুপ নামক কোটি-কোটি যুবক-যুবতী? আর কত দিন নিজ হাতে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নামক বিষ পান করবে নিতু ও অনুপ নামক কোটি-কোটি বাংলার তরুণ-তরুণীরা এবং ভোগাবে ব্যাক্তি,পরিবার, সমাজ, দেশ এমনকি পুরো জাতিকে? বের হবে কি ইসলাম উনার আমল দেখে নাক ছিটকানী নামক মাতলামী থেকে?
এখনি সময়।
ইসলাম উনাকে ১০০% অনুসরণ করার কোশেশ করা। নইলে আল্লাহ পাক উনার গযবে ধ্বংস হয়ে যেতে হবে। কাঁদতে হবে রাস্তায় বসে বসে। রক্ষা করতে পারবেনা কেউ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।