শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই কিছুটা অবাক হয়েছেন। ব্যাপারটা আসলে এতটাই বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ যে একে সাহিত্য পর্যায়ে না ফেললে এর প্রতি অপমান করা হবে। টয়লেট সাহিত্যের সাথে সবাই কম বেশি পরিচিত। এর সাথে আমার প্রথম পরিচয় ক্লাস ৭ এ থাকার সময়।
টয়লেট সাহিত্য নিয়ে কথা বলার আগে নিজের কিছু কথা না বললেই নয়।
আমার স্কুল জীবন এর শুরু সেন্ট গ্রেগরীজ হাই স্কুলে। স্কুলটা পুরাই ছেলে প্রধান। তাই টয়লেট সাহিত্য সেখানে দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নাই। ক্লাস ৭ এ মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। প্রথম দিন ক্লাসে সাধারনভাবেই টয়লেটে গেলাম।
ওমা!একি এটা কি টয়লেট না রাস্তার ড্রেন?আমি চুড়ান্ত হতাশ। কোন স্কুল এর টয়লেটের এতটা বাজে অবস্থা হতে পারে!আর টয়লেট এ ঢুকে সামনের ওয়ালের অবিশ্বাস্য Erotic লেখা দেখে আমার বমি আসার মত অবস্থা। তখনও আমার Adult বিষয় গুলার দিকে interest জন্মায়নি। সেই টয়লেট সাহিত্যের দ্বারাই আমি স্কুলের তৎকালীন এক ম্যাডামকে চিনতে পাই। যার দেখা আমি আমার সারা স্কুল জীবনে পাই নাই।
তবে ওই শেষ!এর পর একান্ত প্রয়োজন ছাড়া আমি মনিপুর স্কুলের টয়লেটের দিকে আর পা বাড়াইনি।
আমার কলেজ জীবনে ক্লাস করেছি খুব কম। তবে কলেজ জীবনে আমি এই সাহিত্যের দেখা পেয়েছি বলে মনে পরে না।
আমার কলেজ জীবন শেষ করার পর কিংবা আর ভাল করে বললে স্কুল জীবনে এতটুকু বুজতে পেরেছিলাম যে ছেলেদের স্কুল/কলেজে টয়লেট সাহিত্য খুব সাধারণ ব্যাপার। কেমন সাংঘর্ষিক হয়ে গেল তাই না।
একবার বললাম সেন্ট গ্রেগরীজ ছেলে প্রধান স্কুল তাই টয়লেট সাহিত্যের দেখা পাই নাই আবার এখন বলছি ছেলেদের স্কুল কিংবা কলেজ এ এটা সাধারণ ব্যাপার। আসলে সেন্ট গ্রেগরীজ জীবন টা অনেক আনন্দের ছিল তাই erotic/adult চিন্তা মাথায় আসেই নাই। তাই টয়লেট সাহিত্য দেখেছি বলে মনে পরে না। হয়তো ওখানেও ছিল আমার দেখা হইনি।
টয়লেট সাহিত্যের চূড়ান্ত রুপ যাকে বলে সেটার পরিচয় আমার হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্যে।
তাদের পরীক্ষা দিতে গতবার আমার দেশের নারী শিক্ষার অগ্রদূত ইডেন কলেজে ঢুকবার সুযোগ পাই। আমার আবার কোন পরীক্ষার আগে একবার টয়লেটে যেতে হবেই নাইলে পরীক্ষা ভাল হয় না!যথারীতি ইডেন কলেজের টয়লেট এ ঢুকলাম। ধুকেই আমার সেই ক্লাস ৭ এর বিভীষিকার কথা মনে পরে গেল!এটা নাকি একটা মেয়েদের কলেজ!How can it possible???নিজেকেই আমি এই প্রশ্ন করলাম!প্রথমত টয়লেটে একটা গেটেরও ছিটকিনি নামক বস্তুটা নাই উপরন্তু সেই টয়লেট সাহিত্য(!)। এই কলেজএই কলেজে যদি কোন ছাত্র ঢুকতে চায় তাদের অবশ্যই পরীক্ষার জন্যই ঢুকতে হবে। পরীক্ষা দিতে এসে কেউ নিশ্চয় টয়লেট সাহিত্যে মনোনিবেশ করবে না!
টয়লেট সাহিত্যের সাথে আমার সর্বশেষ সাক্ষাৎ আজকে।
স্থানঃলালমাটিয়া মহিলা মহাবিদ্যালয়। উপলক্ষ সেই ঢাবি পরীক্ষা। আমি যথারীতি টয়লেটে গেলাম। ঘটনার পুনরাবৃত্তি............
এই স্কুল আর কলেজ থেকেই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বের হবে!হায়রে আমার প্রজন্ম। সব থেকে বাজে ব্যাপার হচ্ছে আমার ২ নারী প্রধান কলেজ এর টয়লেট সাহিত্য দেখে মনে হইসে এটা একজন নারীরই লেখা।
কোনভাবেই একজন ছেলের পক্ষে এইভাবে লেখা সম্ভব না।
ব্যাপারটা মূলে যে কারণটা আমার কাছে প্রধান বলে মনে হইসে সেটা হল বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে মেয়েদের erotic/adult বিষয়ের প্রতি যে আগ্রহটা জন্মায় সেটাকে আমরা তাদের কাছে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারি না। আমাদের অভিভাবকরা সবসময় এই বিষয়টাকে নোংরা বিষয় বলে ignore করে। এতেই যে তাদের সন্তানদের ওই নোংরা জিনিসটার প্রতি আদম্য কৌতূহল সৃষ্টি হয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই কৌতূহল থেকেই আমার মনে হয় ছেলে মেয়েদের মধ্যে টয়লেট সাহিত্যের সূচনা হয়।
আর এরপর থেকেই তাদের মধ্যে বিকৃত ধ্যান ধারণা এবং কার্যকলাপের বৈশিষ্ট্য দেখা যাওয়া শুরু করে।
আমার কাছে এটা প্রতিকার করার একটাই উপায় আছে। সেটা হচ্ছে পারিবারিকভাবেই ছেলে মেয়েদের এই adult বিষয়টা সম্পর্কে ধারণা দেয়া। একজন বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলে কিংবা মেয়ে যদি family counseling এর মাধ্যমে এ ব্যাপারে অবগত হয় তবেআমার মনে হয় না সে টয়লেট সাহিত্য কিংবা এধরনের বিকৃত কাজের প্রতি আগ্রহবোধ করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।