আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ শহরে টয়লেট নেই আছে এটিএম বুথ

দেড় কোটি লোকের এই ঢাকা শহরে প্রায় কোন টয়লেটই চোখে পড়ে না। কোথায় যে এই সকল লোক প্রাকৃতিক কর্ম সমাধান করে এক বিরাট প্রশ্ন! আমি না হয় এই শহরের পথে-ঘাটে দীর্ঘ দিন হাঁটাহাটি করার কারনে জানি কোথায় কোথায় ফ্রিতে মুতে আসা যায়। কিন্তু প্রতিদিন গ্রাম, আশেপাশের শহর আর দুরদরান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ লোক ব্যবসা, চিকিৎসা নানা কারনে আসে। তারা কি জানে কোথায় টয়লেট আছে? তবে তারা কোথায় টয়লেট করে! সবচেয়ে জঘন্য লাগে একুশে বইমেলার সময়। টিএসসি দিয়ে ঢোকার পথেই প্রস্রাবের উৎকট গন্ধে টেকা দায়।

অথচ এই পথ দিয়েই দেশের সবচেয়ে মেধাবী, মননশীল লোকগুলো যাতায়াত করে। মেয়েদেরে দেখেছি মুখে কাপড় চেপে, পা টিপে টিপে পার হতে। এখানে কি স্থায়ী টয়লেট হতে পারে না? এ বছর অবশ্য ভ্রাম্যমান টয়লেট চোখে পড়েছে। কিন্তু ভ্রাম্যমান টয়লেটগুলোর ধারন ক্ষমতা সীমিত। তাছাড়া অনেক খরচের ব্যাপার ।

আমি যতদূর জানি প্রতিদিন একটি টয়লেটের জন্য ৩০০০ টাকা দিতে হয়। আজিজ সুপারের দিকে যেতে, কাটাবনের কাছের ফুটপাথটি একটি স্থায়ী প্রস্রাবের জায়গা। ছোট-বড়, ভিআইপি, গলি যত রকমের সড়ক আছে এ শহরে প্রায় দেখা যায় কেউ না কেউ প্যান্টের জিপার খুলে শিশ্নটি বের করে ছেড়ে দিয়েছে। আর পেছন দিয়ে অবলীলায় হেঁটে যাচ্ছেন অফিসের সাহেবেরা। তাদের কী দোষ! আশেপাশে কোথাও কী পায়খানা আছে? বাংলাদেশেরই কোন শহরে এ রকম নোংরা অবস্থা কল্পনাও করা যায় না।

প্রায় দেখা যায় ফুটপাথে মানুষের গু চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে আছে। এ শহরে দশ লাখ ভাসমান জনসংখ্যা আছে। তারা কোথায় যাবে? ঠিক এভাবেই তারা নিজের অজান্তেই প্রতিশোধ নেয়। আর মহিলারা যেতে পারে এমন কোন পাবলিক টয়লেট কি আছে ঢাকায়? যতগুলো এটিএম বুথ আছে ততগুলো পাবলিক টয়লেটও যদি পাশাপাশি করে দিতো ব্যাংকগুলো তাহলে সিএসআর-এর পুরো দায়-দায়িত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে দিতাম। মজার বিষয় হল ঢাকায় নাকি ব্যবহার যোগ্য টয়লেটের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি! ডেইলি স্টারের দি স্টার এপ্রিল সংখ্যার খবর।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তার হিসাবে বর্তমানে ঢাকায় পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা ৬২টি। সিটি কর্পোরেশেন মোট ৬৯টি পায়খানা তৈরি করেছিলো। ২ টি ভেঙ্গে ফেলা হয় ফুটপাথের উপর তৈরি করার কারনে। থাকলো ৬৭টি। এর মধ্যে ১০টি একেবারেই অব্যবহারযোগ্য।

থাকলো ৫৭টি। এর মধ্যে আর ১০টির কেবল মাত্র কাঠামোটাই আছে। আর ৪৭টি আংশিক ব্যবহারযোগ্য, কিছু দরকারী সেবা নেই। যাই হোক, রিপোর্টে একটা আশার কথা লিখেছে যে সিটি কর্পোরেশন ৯২টি নতুন টয়লেট নির্মান করতে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্র“পের সহায়তায়। আমার মনে হয় পাবলিক হেলথ নিয়ে কাজ করে যে সকল এনজিও তাদের এ বিষয়ে কর্মসূচি হাতে নেয়া উচিত।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।