আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিনেমা সেন্সর নয়, চাই রেটিং

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই একটা সুখবর হয়তো অনেকে পেয়েছেন। সিনেমার সেন্সর বোর্ড থাকছে না। কেন এটাকে সুখবর বলছি সেটা বলি। বাংলাদেশের সিনেমা হলে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে হলে সেন্সর বোর্ডে জমা দিয়ে সেন্সর সার্টিফিকেট নেয়া বাধ্যতামূলক। সেন্সর বোর্ড যে কোন সিনেমা আটকে দিতে পারে।

তারা সিনেমার যে কোন অংশ সেন্সর করতে পারে মানে কেটে বাদ দিতে পারে। তারা কোন সিনেমার সেন্সর সার্টিফিকেট না দিতে পারে। ফলে সেই সিনেমা কখনও প্রদর্শনী হতে পারবে না। এগুলো হল সেন্সর বোর্ডের ক্ষমতা। কিন্তু সেন্সর সার্টিফিকেট পাওয়া সেই সিনেমাটি কারা দেখতে পারবে, কারা দেখতে পারবে না, সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আমাদের সেন্সর বোর্ড।

কারণ, আমাদের সেন্সর বোর্ড সিনেমাকে রেটিং দেয় না। সিনেমাতে কোন দৃশ্য কে দেখতে পারবে, তার ভিত্তিতে সারা বিশ্বে সিনেমাকে রেটিং দেয়া হয়। সাধারণত শিশুদেরকে বড়দের সিনেমা দেখা থেকে বিরত রাখার জন্যই এই রেটিং সিস্টেম। যতটুকু জানি বাইরের দেশে সিনেমা হলগুলোতে বড়দের কোন সিনেমা দেখতে শিশুরা ঢুকতে পারে না। রেটিং সিস্টেম কড়াকড়িভাবে পালন করা হয়।

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সিনেমাতে রেটিং সিস্টেম বিদ্যমান। মূলত খোলামেলা দৃশ্য ও ভায়োলেন্সকে বিবেচনা করে সিনেমাকে রেটিং করা হয়। সিনেমা রেটিংএর সাধারণ ধরন অনেকটা এই রকম। ০১) শিশুদের উপযোগী সিনেমা ০২) সকল দর্শকদের উপযোগী সিনেমা ০৩) তার শিশুর উপযোগী কিনা সেটা বাবা মা নির্ধারণ করে দেবেন। (প্যারেন্টাল গাইডেন্স) ০৪) কিশোরদের উপযোগী সিনেমা (১২ বছরের উপরে যাদের বয়স) ০৫) প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী সিনেমা (১৮ বছরের উপরে যাদের বয়স) এই রেটিং সিস্টেম অবশ্য দেশে ভেদে ভিন্ন ভিন্ন।

ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের দেশে কোন রেটিং সিস্টেম নাই। আমাদের দেশে কোন ছবি শুরু হওয়ার আগে বলে দেয়া হয় না এই সিনেমাটি কোন বয়সের দর্শকের জন্য উপযুক্ত। ফলে শিশুরা আজেবাজে সিনেমা দেখছে। আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো মাঝে মাঝে এমন সব সিনেমা প্রদর্শন করে যা পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার অনুপযুক্ত।

সারা পৃথিবীর মতো আমাদের সিনেমারও একটা রেটিং সিস্টেম তৈরি করা দরকার। আমাদের দেশে যারা এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ তারা একটা গাইড লাইন তৈরি করে দিতে পারেন। সিনেমা সেন্সর বলে কোন বিষয় থাকবে না, কেবল সিনেমাকে রেটিং দেয়া হবে। সিনেমা হলগুলোতে এই রেটিং সিস্টেমের ভিত্তিতে দর্শক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আরেকটা কথা মনে রাখা দরকার বড়দের জন্য উপযোগী সিনেমা হলেই কিন্তু সেটা অশ্লীল সিনেমা হয় না।

বরং অশ্লীল সিনেমা সেটাই যেটা কাহিনী ও পরিস্থিতি বহির্ভুত সুড়সুড়ি মার্কা দৃশ্যসহ তৈরি করা হয়। আমরা কোন নীতিমালা তৈরি করি নি বলেই আমাদের সিনেমা হলগুলোতে অশ্লীল কাটপিস চলে, সেই কাটপিস সম্বলিত সিনেমা শিশু কিশোররা দেদারসে দেখে। ফলে তারা নানারকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে অশ্লীল কাটপিস থাকে বলেই অনেক ভদ্রলোক পরিবারসহ সিনেমা হলে যায় না। অনেক মানুষ এই সব সিনেমা দেখা ছেড়ে দিয়েছে।

ভালো গল্প ছাড়া ভালো সিনেমা হয় না। সিনেমা প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে অশ্লীল কাটপিস ব্যবহার আমাদের সিনেমা শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। কাটপিস ব্যবহার করার চেয়ে বড়দের সিনেমা তৈরি করা অনেক ভালো। কাটপিসকে পরিহার করে রেটিং সিস্টেম আমাদের সিনেমাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে। এবার খরবটা পড়ুন।

সেন্সর বোর্ড আর থাকছে না, জানালেন তথ্যমন্ত্রী ============================= সেন্সর বোর্ডের মাধ্যমে চলচ্চিত্র মুক্তি দেয়ার নিয়ম আর থাকছে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সেন্সর বোর্ড তুলে দিতে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মধ্যে সেই দাবি পূরণের ইঙ্গিত দিলেন ইনু। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, “চলচ্চিত্র মুক্তি দেয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সেন্সর বোর্ডকে বদলে ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন করা হবে। ” এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।

প্রেক্ষাগৃহের বিনোদন কর কমানোর বিষয়েও সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, “বিনোদন করের কতটুকু রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হচ্ছে, সেটা দেখা প্রয়োজন। যদি দেখা যায়, এই করের কারণে হল মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে কর কমানোর বিষয়েও সরকার বিবেচনা করবে। ” বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) চলচ্চিত্র প্রিন্ট করতে যে এক লাখ টাকা ভ্যাট দিতে হয়, তাতে যেন নির্মাতাদের ওপর দ্বৈত কর আরোপ না হয়, সে বিষয়েও সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। চলচ্চিত্র বিষয়ক একটি নীতিমালা তৈরির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন হবে।

আপনারা আপনাদের পরামর্শ দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। ” সরকারি উদ্যোগে একটি চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট স্থ্াপনের পরিকল্পনার কথাও জানান ইনু। এফডিসিকে আধুনিক করে গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “ভুতের বাড়িকে মানুষের বাড়িতে পরিণত করতে হলে আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। ” ‘চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সারাহ বেগম কবরী, চাষী নজরুল ইসলাম, কাজী হায়াৎ, মোরশেদুল ইসলাম সেলিম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হান্নান, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিশা সওদাগর প্রমুখ। একই বিষয়ে পুরোনো আরেকটা লেখা : কাটপিস বনাম সিনেমার রেটিং চলচ্চিত্র বিষয়ক আমার অন্যন্য পোস্ট : ০১।

বাংলা সিনেমাকে অনর্থক পচাচ্ছেন : আপনি কারো দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছেন না তো ? ০২। সিনেমা পিপলস নেটওয়ার্ক - আমার দেখা সিনেমা বিষয়ক একটা দারুণ প্রচেষ্টা ০৩। চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে কিছু প্রস্তাব (বহু দিন পর একটা কপি পেস্ট) ০৪। মাননীয় এফডিসি কর্তৃপক্ষ, মেধাবীদের খুঁজে বের করুন, মেধা কাজে লাগান ০৫। কিভাবে প্রদর্শন করা হয় ডিজিটাল চলচ্চিত্র ? ০৬।

টিউটোরিয়াল : কিভাবে আপনার প্রথম চলচ্চিত্রটি বানাবেন ? - ০১ ০৭। একটি গোপন যাদুমন্ত্র ০৮। মনপুরা, সিনেমার গান ও আমাদের সিনেমার মার্কেটিং ০৯। ৩৮ বছর কাটল একটি ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের অপেক্ষায় ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.