১) জিম্বাবুয়ের জার্সি নিয়ে আমার ভয়ানক আপত্তি। ওদের জাতীয় পতাকা পাঁচটা রংয়ের সমষ্টি। লাল, সাদা, হলুদ, সবুজ এবং কালো। অথচ বেছে বেছে ঠিক বাংলাদেশের ট্রেডমার্ক লাল এবং সবুজ নিয়ে জার্সি বানিয়েছে। শুধু লোগোটা হলুদ।
উল্টোদিকে বাংলাদেশের জার্সিতে লাল-সবুজ বাদে অল্প হলেও ওদের পতাকার বাকি তিনটা রং- হলুদ, কালো এবং সাদা আছে। ইন্টারেস্টিং!
২) টস হারার ভালো দিক কোনটা? ডিসিশন নেওয়া লাগে না। সুতরাং সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা হওয়ার ভয় নেই। টসে হেরে ব্যাটিংটাই সাপেবর হয়ে গেছে। বুলাওয়েতে প্রথম ম্যাচ, কিছু ময়েশ্চার তো থাকবেই।
পেস দিয়ে শুরুতেই কিছু উইকেট নিয়ে নেওয়া গেলে.…এই চিন্তা থেকেই সম্ভবত: টেইলর বোলিং নিয়েছিলো। হারারের মত সুইং নেই বুলাওয়েতে। শুরু থেকেই বল তেমন মুভই করেনি। টেইলরের সিদ্ধান্ত তাই বুমেরাং হয়ে গিয়েছে।
৩) দল সিলেকশন পছন্দ হয়েছে।
হ্যা, ভালো পারফর্ম করার পরও সোহাগ গাজীর বাদ পড়তে হয়েছে। কিন্তু এ ছাড়া আর কোনো অপশন খোলা ছিলো না। তিন পেসার খেলাতে হলে রাজ্জাক এবং গাজীর মধ্যে একজনকে স্যাক্রিফাইস করতেই হতো। জিম্বাবুয়ে দলে শেন উইলিয়ামস বাদে বাকি দশজনই ডানহাতি ব্যাটসম্যান হওয়ায় সিদ্ধান্তটা রাজ্জাকের পক্ষেই গেছে। আর অফ স্পিনের দরকার হলে তা মাহমুদউল্লাহ, নাসির বা আশরাফুলকে দিয়েও চালানো যাবে, এটাও সিদ্ধান্তটা সহজ করে দিয়েছে।
তাছাড়া রাজ্জাক শুধু পরিসংখ্যানেই বাংলাদেশের সেরা বোলার না, জিম্বাবুয়ের সাথেও ওর রেকর্ডটা বেশ ভালো। আজকের মহামূল্যবান টেইলরের উইকেটটাও রাজ্জাক নিয়েছে ওর বিখ্যাত আর্মারে।
৪) জিম্বাবুয়ের স্কোয়াড দেখে কিছুটা অবাক হয়েছি। জার্ভিস নেই, ভিটোরি নেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দারুণ লেগ স্পিন করা মুতোমবোদজি নেই। তবে তিনাসে পানায়াঙ্গারাকে দেখলাম অনেক বছর পরে।
শেষ সম্ভবত: দেখেছিলাম আট-দশ বছর আগে। বোলিং অ্যাকশনটা একই রকম রয়ে গেছে।
৫) ভালো খেলতে খেলতে দূর্ভাগ্যজনক আউট; বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপারটা তামিমের সমার্থক হয়ে গেছে। আজকেও তাই। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের একটা ওয়াইড বলে পোক করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড।
আশরাফুলের একটা সমস্যা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে। ও আগে থেকে মারবে বলে মাইন্ডসেট করে সেটা ভালো বল হলেও মেরে দেয়। আজ অবশ্য একটা মারার বলেই মেরেছিলো। মুশফিকের আউটটাও খানিকটা দূর্ভাগ্যই বলবো। তবে মমিনুল ইসলামকে নিয়ে কিছু কথা আছে।
আমি কখনোই ওর বড় ফ্যান না। স্কিলের না যতটুকু, অ্যাপ্রোচের মোটেই না। শ্রীলংকাতে টেস্ট খেলার সময় লিখেছিলাম, মমিনুলের রানিং বিটুইন দ্যা উইকেট খুব জঘন্য মানের। আজও তার প্রমান মিলেছে সাকিবকে রান আউট করার সময়। ঠিক এক বল পরেই, ৯৪ রানে চার উইকেট পড়ে যখন চাপে বাংলাদেশ, তখনই উতসেয়াকে স্লগ করে যে সুইসাইডাল শটটা খেলতে গেছিলো মমিনুল তার ব্যাখ্যা ও সারা জীবনেও দিতে পারবে না।
৬) নাসির 'কন্সিসট্যান্ট অ্যান্ড স্পেশাল' হোসেন তার মতই খেলেছে। ওর সম্পর্কে লিখতে লিখতে সব বিশেষণ মোটামুটি শেষ। তাই আর লিখছি না। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের রানে ফেরা দেখে ভালো লেগেছে। রাজ্জাক সারাজীবন দাবী করে গেছে ও একসময় ওপেনার ছিলো।
ভালো ব্যাট করতে পারে। কিন্তু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি, কয়েকটা বল খেলার পর দাম মুখ খেঁচে একটা শট করে ছক্কা মারার জন্যে আর বলটা ত্রিশ গজের মধ্যেই ক্যাচ হয়। আজ কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলো।
৭) আমি অনেক বড় বড় ব্যাটসম্যানকে দেখেছি প্রসপার উতসেয়াকে মারতে পারে না। এই ধুম ধারাক্কা ক্রিকেটের যুগেও তাই একশ'র উপরে ম্যাচ খেলে উতসেয়ার ইকোনমি রেট মাত্র ৪.৩০।
বাংলাদেশ আজ ওর দশ ওভারে নিয়েছে ৪৮ রান।
৮) ব্যাটিং পাওয়ার-প্লে তে বাংলাদেশ সবসময়ই খারাপ। কখনোই স্পেশাল কিছু করতে পারে না। তবে সে তুলনায় আজ মোটামুটি ভালোই ছিলো। ভালো বলতে চলার মত আর কী।
৯) 'স্টিভেন ফিন সমস্যা' ভর করেছে বাংলাদেশের উপর। নন-স্ট্রাইক প্রান্তের উইকেট ভাঙায় প্রথম নো বলের শিকার হয়েছেন শফিউল ইসলাম। জিয়াউর রহমানও একবার ভাঙলেন। আচ্ছা, এর আগে শফিউল বা জিয়া কোনোদিন বল করার সময় উইকেট ভেঙেছে? নাকি, ইতিহাসে নাম উঠাতে ট্রয়াল দিলেন?
১০) ৫ উইকেট বলে দেবে জিয়ার বোলিং কতটা ভালো ছিলো। জিম্বাবুয়ান আম্পায়ার চাতারার নিশ্চিত এলবিডাব্লিউটা না দেওয়াতেই হ্যাটট্রিকটা পেলেন না জিয়া।
তবে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ পুরষ্কারটা জুটেছে। দলে একজন আনসেটেলড প্লেয়ারের জন্য সেটা অনেক কিছু।
১১) সম্ভবত: উৎপল শুভ্রদা'র একটা লেখায় পড়েছিলাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দর্শকরা নাকি দল হারার সময়ও এনজয় করে। এনজয় করতেই গ্যালারিতে আসে ওরা। আজ দেখলাম জিম্বাবুয়েও করে।
বাংলাদেশের দর্শকরা হয়তো ১২১ রানের পরাজয় দেখলে মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকতো। এটাই ওদের সাথে আমাদের ক্রিকেটাবেগের পার্থক্য। বাই দ্যা ওয়ে, আশরাফুলের ড্যান্সটা ভাল্লাগছে।
১২) জাহানারা ইমাম আম্মা, আপনার জন্মদিনে ১১ রুমী মিলে একটা বিজয় উপহার দিলো। উপর থেকে দেখেছেন তো? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।