আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুড্ডির পাইলটের একটা বান্ধবি ছিলো যাকে সে অনেক বিশ্বাস করে ।

সামুর এক মাত্র সর্বাধীক বানান ভুল সম্পন্য ব্লগ ! মনে রাখবেন আপ্নে সামুর সবচাইতে বিপজ্জনক ও বদ ব্লগারের ব্লগে প্রবেশ করেছেন , আপ্নি দুষ্টু প্রকৃতির না হলে এখানে সময় নষ্ট কইরেন না । আমি তখন অনার্স এ পড়ি , প্রচুর দুষ্টু প্রকৃতির হওয়া তে কলেজের সবাই আমাকে চেনে। আমাদের সাথে একটা মেয়ে পড়তো নাম শান্তি (দেখতে সুন্দর আছিলো ) খুব কম কথা বলতো । সে শুধূ সবার কথা শুনতো আর হাসতো কিন্তু নিজে কোন কথা বলতো না, তবে হ্যা কোন প্রশ্ন করলে সে উত্তর দিতো। অই সময়ে আমার লেটেষ্ট দুস্টামি ছিলো , বন্ধুদের সবাইকে মিষ্টি পান খাওয়ায় অসক্ত করা।

এবং আগের দিনের রাজা , বাদশাহ গন পান খাইতেন এই ধরনের স্লোগান প্রচার করা। আর এই পানের বিভিন্ন রেসিপি আমিই সাপ্লাই দিতাম। এই ভাবে আমি একটা পান খাওয়া গ্রুপ তৈরি কইরা ফালাইলাম। শান্তি কখনোই পান খাইতে চাইতো না , এই কারনে ওর উপ্রে আমি একটু বিরক্ত ছিলাম। আমি কতোটা পাজি ছিলাম শুনেন , একদিনের ঘটনা বলি, আমি গেছি কলেজের ওয়াশ রুমে , দ্রুত ফ্রেশ হইয়া ক্লাসে যাইতে হইবো।

কিন্তু ওয়াসরুমের প্রতিডা চেম্বার ই দেখতাছি এনগেজ্ড মনে হইলো পুলা পাইন ভিতরে ঢুইকা বিরি টিরি খাইতাছে , আমি বিরক্ত হইয়া একটা চেম্বার এর ছিটকিনি বাইরে দিয়া লাগাইয়া দিলাম, আর কলেজের পিছনের জংগলে গিয়া ফায়ার সার্ভিসের মহরা দিয়া ক্লাসে ফিরা আসলাম। অনেকক্ষন ধইরা আমরা সবাই ক্লাসে বইসা আছি স্যার আসতে লেইট করতাছে। ঠিক ঘন্টা পড়ার দশ মিনিট আগে স্যার আসলেন , মুখে বিরক্তির ছাপ , সর্ট টাইম একটা ছোট লেকচার দিয়া ক্লাস শেষ করলেন, দেরিতে আসার জন্য দু:ক্ষ প্রকাশ করলেন, আর কারন হিসাবে বললেন উনি নাকি টয়লেটে আটকা পরছিলেন। আমাদের কলেজের মধ্যে একটা নতুন ভবন তৈরি হচ্ছিলো, এই খানে একটা বাঁস দিয়া তৈরি লিফ্ট ছিলো। এটা দিয়ে মিস্তিরিরা ভারি মালামাল উপরে উঠা নামা করতো।

আমার আরেকটা মহান কাজ ছিলো এই লিফ্ট এর উপরে বন্ধুদের ভুলাইয়া ভালাইয়া বসাইতাম আর হঠাৎ রসি ধইরা টাইনা লিফ্ট এর লক খুইলা দিতাম, তাতে লিফ্ট নিজে নিজে অনেক উপরে উইঠা যাইতো আর আমার দোস্তরা দ্রুত উন্নতি লাভ কইরা, উচুতে শুন্যের উপরে, লেফ্ট এ আটকা পইরা থাকতো। পরবর্তিতে মুক্তিপনের মাধ্যমে উন্নতি হইতে অবনতি করাইতাম । মুক্তিপন হিসাবে , প্রান জুস, ঝালমুরি , দেরলিটার এর কোকাকোলা ,বাদাম ইত্যাদি ছিলো। আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর এক স্যারের ভাইয়ের একটা ফলের দোকান ছিলো, স্যার প্রায়ই আমাদের জন্য আপেল , কমলা ইত্যাদি নিয়া আসতেন । ডিপার্টমেন্টের সবাইকে একটা দুইটা কইরা দিতেন।

আমার পান খাওয়া গ্রুপের বিরোধীতা কারিনি শান্তিরে একটা ডর দেখাইতে হইবে। তারে যেমনেই হউক আমাদের পান খাওয়া গ্রুপের সদস্য বানাইতে হইবে। তাই শান্তিরে ভালো ভালো কথা বইলা সেই লিফ্ট এর কাছে ডাইকা নিয়া গেলাম । শান্তি খুব সুন্দর কইরা লিফ্ট এর উপ্রে বইসা মনোযোগ দিয়া আমার কথা শুনতাছে , হঠাৎ শান্তি আমার কথা থামাইয়া দিলো, সে তার ব্যাগ থেকে একটা কমলা বের করে বললো >স্যার আজকে সবাইকে কমলা দিছে। কিন্তু এটাই লাস্ট ছিলো, তুই ছিলি না তাই আমারটা তোর জন্য রেখে দিছি।

শান্তির চোখে ছিলো বিশ্বাসের ছাপ আর বন্ধুর জন্য নিখাদ ভালোবাসার প্রমান । কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে । আমি লিফ্ট এর রসিটা খুইলা দিছি ! আর আমি রসি ছাইরা সইরা গেলেই শান্তি দ্রুত উন্নতি লাভ কইরা শুন্যে ভাসমান হবে। শান্তি তখনও বুঝে নাই আমি ওর সাথে কি প্রতারনা করছি। এখন কিছুই করার নাই , সেকরিফাইস হতেই হবে ! নিজেকে খুব অপরাধি মনে হতে লাগলো ।

আমি একটা সিদ্ধান্ত নিলাম শান্তিকে লিফ্ট হতে সরে দারাতে বললাম। ও কিছু না বুঝে সরে দারালো , চোখের পলকে বিপরীত দিকের ওজনে আমার হাতে ধরা রসির টানে আমি উন্নতি লাভ করে নিজেই শুন্যে ভাসমান হলাম। প্রায় পনেরো থেকে বিশ মিনিট ঝুলে থাকার পরে কলেজের পিয়নদের আর মিস্ত্রি দের প্রচেষ্টায় আমি পুনরায় অবনতী লাভ করলাম। শান্তির সরলতার কাছে সবসময় আমার দস্যিপনা হার মানতো , তাই তার সাথে আর কোন দিন দুষ্টামি করি নাই। শান্তি গুলবাগের ইন্দ্রপুরি এলাকায় থাকতো ।

শান্তির সাথে আমার কোন প্রেম ট্রেম ছিলো না তবে আমাদের বন্ধুত্ব এখন ও আছে । দেশের বাইরে থেকে মেইল করে। আমার সব বন্ধুদের মধ্যে আমি বেশি বিশ্বাস করি শান্তিকে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.