অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা ধর্মের সামাজিক প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে ধর্ম নিষ্পেষনের হাতিয়ারে পরিণত হয়। সভ্যতার একটা পর্যায়ে সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতাবোধ নির্মাণে হয়তো কাঠামোবদ্ধ ধর্মের প্রয়োজন ছিলো, ধর্ম সে সময় একটি গোত্রের আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও সামাজিক রীতি-নীতি নির্ধারণে মূখ্য ভুমিকা পালন করতো। গোত্রভিত্তিক সংঘবদ্ধতার যুগ পেরিয়ে সভ্যতায় নগরায়ন ঘটেছে, নগর রাষ্ট্রের হাত ধরে রাজ্য প্রসারিত হয়েছে, ভৌগলিকভাবে নিরবিচ্ছিন্ন ভূখন্ড নিয়ে সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন সেইসব সম্রাজ্যের নিজস্ব দেব দেবীও সম্রাজ্যের সাথে প্রসারিত হয়েছে, সম্রাজ্যের বিভিন্ন দুরবর্তী অঞ্চলে এভাবেই দেবমুর্তি ও টোটেম ছড়িয়ে পরেছে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধেও গোত্রতন্ত্র সক্রিয় ছিলো।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় ফেরআউন সম্রাজ্যে দাস ও বন্দী জীবনযাপনকারী আরবের বাসিন্দারা কখনও চিন্তায় ফেরআউনের দেবত্ব মেনে নেয় নি, তারা নিজেদের গোত্রবিশ্বাস ঠিকই আঁকড়ে ধরে ছিলো, তারাই স্থানীয় পর্যায়ে ফেরআউনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো। মিথের মুসা কিংবা মোজেস আর মিথের আব্রাহাম কিংবা একত্ববাদী ইব্রাহিম কতটুকু কল্পনা এবং কতটুকু ঐতিহাসিক চরিত্র এটা নিয়ে চলমান বিতর্ককে পাশ কাটিয়ে বলা যায় মুসা কিংবা ইব্রাহিমের ঐতিহাসিক চরিত্র এবং তাদের মিথিক্যাল চরিত্রের ভেতরে স্পষ্ট তফাত বিদ্যমান।
প্রায় হাজার বছরের লোক-পালাগানে তাদের চারিত্রিক গুনাবলী নির্মিত হয়েছে, তাদের ঐতিহাসিক উপাখ্যানে নতুন নতুন ঘটনা যুক্ত হয়েছে, এভাবেই একজন ব্যক্তি যখন ঐতিহাসিক চরিত্র থেকে মিথিক্যাল চরিত্রে রূপান্তরিত হন তখন তার সাথে এমন সব ঘটনা সংযুক্ত হতে থাকে যার অধিকাংশই কবির কল্পনা। ভক্তের কল্পনারসে জারিত এইসব দেবচরিত্র নির্দিষ্ট একটি প্রেক্ষপটে স্থানীয় সংস্কৃতিতে উপস্থাপিত হন এবং সেখানেই নন্দিত হন।
মানুষ বিভিন্ন দুর্বিপাকে এদের ঘটনা স্মরণ করে প্রতিরোধের উদ্দীপনা খুঁজে পান। ঐতিহাসিকতা মুছে এভাবেই একটি নাম একটি সংস্কৃতির অংশ হয়ে যেতে পারে, একটি নির্মিট ঘটনাও পরবর্তী প্রজন্মে লড়াইয়ের উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে। ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে যেকোনো জাগতিক দুর্বিপাকে কেউ একজন ইহুদিদের সংঘবদ্ধ করে লড়াইয়ে উদ্দিপ্ত করবে এবং সেই ত্রাতা যুগে যুগে ইহুদিডের রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে এই ধারণাটুকুই সম্বল করে ইহুদি ধর্মে সময়ের সাথে বিভিন্ন নবীর আগমন হয়েছে।
ইহুদীর জাগতিক সংকটমুহূর্তে আগত সেসব নবীদের উপরে আস্থা স্থাপন করেছে তারা।
জাগতিক সংকটে, ভীষণ দুর্বিপাকে ত্রাতা হিসেবে কেউ একজন এসে হাল ধরবেন, সময়ের সাথে ধমবিশ্বাসে যেসব জঞ্জাল জমেছে সেসব কলুষতা থেকে ধর্মকে মুক্ত করবেন তিনি, শুভের সাথে অশুভের লড়াই হবে এবং চুড়ান্ত বিবেচনায় সত্য বিজয়ী হবে সেই মেসিয়াহর নেতৃত্বে এই বিশ্বাস সকল সেমিটিক ধর্মের ভেতরেই বিদ্যমান। মুসলমানদের ইমাম মাহদী এবং ইহুদী খ্রীষ্টানদের শেষ ত্রাতার বিশ্বাস বিবেচনায় কোনো তফাত না থাকলেও জাগতিক গুরুত্ব বিবেচনাবোধে প্রবল পার্থক্য বিদ্যমান।
যুগে যুগে সম্ভবত গোত্রপতি কিংবা পারিবারিক নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার বাসনা থেকে এ ধরণের পারিবারিক নবুয়তের প্রথা প্রচলিত হয়েছে। বাংলাদেশে যেভাবে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে পরিবারতন্ত্র বিদ্যমান, কয়েক হাজার বছর আগে এমনই পরিবারতন্ত্র প্রচলিত ছিলো, সে সময়ের উজ্জ্বল সম্রাটদের ইশ্বরের দুত হিসেবে মেনে নেওয়ার মানসিকতাও ছিলো তৎকালীন মানুষদের ভেতরে।
৫০০০ বছর আগের ব্যাবিলনের মিথ কিংবা এসিরিয় মিথের ইশ্বর ও দেব-দেবী চরিত্রগুলো গোত্রের একজন। নগর সভ্যতায় এরাই পরিজন ও সভ্যসমেত উপস্থিত থাকেন, ন্যায় বিচার করেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময়ের ইশ্বর দুতদের ভেতরে এক ধরণের রাজতান্ত্রিক আবহ ছিলো। ইব্রাহিম পূর্ববর্তী সময়ে নগরসভ্যতা রাজতন্ত্রে পরিবর্তিত হয়ে যায়, বংশলতিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে, একই সাথে সেইসব প্রাচীন মিথের রাজা কিংবা দেবদুত কিংবা ইশ্বরের প্রতিরুপের সাথে সামাজিক কিংবা গোত্রীয় সম্পর্ক উদ্ভাবন করতে বাধ্য হয় পরবর্তী নেতারা। এই পরিবারতা্ন্ত্রিক ভাবনা থেকে ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস লেখকেরাও মুক্ত হতে পারেন নি।
মুহাম্মদকে বনী ইসরাইলের সদস্য করেছেন তারা ।
নগরের ধর্ম এবং গোত্রের ধর্মে চরিত্রগত পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক, নগরের স্থাপনা এবং নগর কাঠামোর ভেতরে প্রাচীন গোত্রদেবতাদের স্থান দিতে গিয়ে তাদের উপাসনালয়ের সাথে গেঁথে দেওয়া হয়েছে। উপাস্যকে উপাসনালয়ে বন্দী করলে উপাসনালয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় আর পুরোহিত হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানের কর্তা। পুরোহিতকেন্দ্রীক ধর্ম শান্তি ও সামাজিক শৃঙ্খলার বদলে এক ধরণের স্থাপনার সাথে সংযুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সব সম্রাজ্যেই এভাবে দ্বৈতশাসনের সূচনা হয়, ইহলৌকিকতা এবং পরলৌকিকতার ভেতরে একমাত্র সংযোগসূত্র হয়ে দাঁড়ায় পরম শক্তিশালী পুরোহিত।
তার আধ্যাত্মিক নির্দেশনায় জনতা উদ্বেলিত সম্রাটঅনুগত হয় কিংবা পুরোহিতের ব্যক্তিগত উচ্চাশায় সম্রাটবিরোধী হয়ে উঠে। এভাবে ইসলৌকিক এবং পরলৌকিক মাস্তানদের ভেতরে এক ধরণের সংঘর্ষ ও মীমাংসার ইতিহাসের সাথে মানুষের প্রগতিশীলতা ও পরাধীনতার বোধগুলো পরিবর্তিত হয়।
ধর্ম কিংবা ধর্ম প্রতিষ্ঠানের পুরোহিতদের এই রাজনৈতিক গুরুত্ব, ক্ষমতাকেন্দ্রে কার কি পরিমাণ অংশীদারিত্ব থাকা প্রয়োজন এসব বিষয়ে অব্যহত সংঘাতের বিভিন্ন বয়ান পাওয়া যায়, ধর্মজীবীদের বয়ানে সেসব পুননির্মিত হতে পারে, ক্ষেত্র বিশেষে একেবারে ধর্মবিরোধী অবস্থান গ্রহন করতে পারে।
ঐতিহাসিক বাস্তবতা এবং মিথিক্যাল বাস্তবতার তফাত এখানেই, মিথিক্যাল বাস্তবতায় স্থান-কাল-পাত্র গুরুত্বহীন, সেখানে বক্তার আবেগ এবং উপস্থাপন কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষ্যে ইতিহাস পুন:নির্মিত হয়ে যায়, কল্পনার মত ভয়াবহ আর কিছু নেই, মানুষ কল্পনায় অলৌকিক ঘটনাকে বাস্তবে পরিবর্তিত করতে পারে।
রাজতন্ত্র-সামন্ততন্ত্রের যুগ পেরিয়ে যে রাষ্ট্র ধারণা বিকশিত হয়েছে সে রাষ্ট্রধারণায় গোত্রীয় ধর্ম অপ্রয়োজনীয়, পরলৌকিক প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত নাগরিক ধর্ম সংশোধিত হচ্ছে, যুগের প্রয়োজনীয় সংস্কারসমেত সেইসব সংশোধিত ধর্মবোধ সামাজিক প্রয়োজনে কিংবা রাষ্ট্রের প্রয়োজনে প্রচারিত হচ্ছে।
সেই প্রয়োজনটুকু মানবতাবিরোধী কোনো অবস্থানে চলে গেলে রাষ্ট্র অপরাপর বিধি সংস্কার করে মানবতার প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে ধর্মকে মানবিক হতে বাধ্য করে। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের রাষ্ট্র ধর্ম সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে নি, তারা ধর্মীয় ভাবনাকে রাষ্ট্রাদর্শের আদতে কেটে ছেঁটে আধুনিকায়ন করতে পারে নি, ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে ফলে ধর্মে অমানবিকতাই প্রশ্রয় পেয়েছে।
ধর্ম সকল ইশ্বরকে স্বীকৃতি দেয় না, বরং বিরুদ্ধ বিরোধী ইশ্বরগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে মেনে নিতে বলে। ধর্ম নিজের সীমাবদ্ধতা জানে, জানে জোর করে মানুষের ভেতরের ভাবনাগুলোকে বন্দী করা কিংবা এক পথে চালানো সম্ভব না।
যারা ধর্ম প্রচলন করেছিলেন তারাও অন্য একটি ধর্মকাঠামোকে সংস্কার করে নতুন ধরণের ধর্মের আবির্ভাব ঘটিয়েছিলেন বলে তারা জানতেন যতই আধিনিকতা কিংবা অভিনভত্ব থাকুক না কেনো পুরোনো মতের অনুসারীরা থেকেই যাবে, সুতরাং তাদের সাথেও সমঝোতার পথ খোলা রাখতে হবে।
যা ধর্ম প্রচারক নিজ প্রজ্ঞায় উপলব্ধি করেছেন তার অনুসারীরা সেই প্রজ্ঞাটুকু অর্জন করতে ব্যর্থ। তারা আপনধর্মের শ্রেষ্ঠতার মোহ ভুলতে পারেন না। তারা বাধ্য করতে চান, অপরাপর ধর্মীয় সংস্কারকে দমন করতে চান এবং এক ধরণের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। অপরাপর বিশ্বাসকে মেনে নিতে অনুনয় করা ধর্মগুলোতে মানুষের অন্য বিশ্বাসকে প্রলোভনে পরিবর্তিত করার নির্দেশনাও দেওয়া আছে।
সুতরাং পরবর্তী প্রজন্মের ধর্মবিশ্বাসীদের ধর্মাচারণে এক ধরণের বৈপিরীত্ব, বৈচিত্র ও দ্বিধা প্রকট হয়ে উঠে। তারা নিজেদের অন্তর্গত স্ববিরোধটুকু উপলব্ধি করলেও সেটার যৌক্তিক সমাধানের পথ না খুঁজে এক ধরণের অন্ধচক্রে ঘুরতে থাকেন।
সাম্প্রতিক সময়ে রামুতে ঘটে যাওয়া ঘটনার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যারা প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন তাদের ভেতরে ধার্মিকরা ছিলেন না এমনটা বলবো না, তবে যারা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিরোধের আকাঙ্খা জানিয়েছেন তাদের বড় একটা অংশই প্রচলিত ধর্মমতের অনুসারী নন। তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে তারা ধর্মের অসারতা নিয়ে অনেক ধরণের বিতর্কের মুখোমুখী হন কিন্তু তাদের ভেতরে একটা অন্যতম দাবি থাকে, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখবার দাবি। এই অন্ধযুগে সেটাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দাবি।
মানুষ হিসেবে মানুষের স্বীকৃতিটুকুর দাবি জানানো এই মানুষগুলো ব্যক্তিগত জীবনে ধর্ম মানেন না কি মানেন না সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তারা মানুষকে মানুষ ভাবতে সক্ষম না কি সক্ষম নন। যদি তারা সে জায়গাটাতে ব্যর্থ হন , যদি তারা অপরাপর ধর্মবিশ্বাসী মানুষের প্রতি অহেতুক বৈরিতা পোষণ করেন তাহলে তাদেরকে আরও সহনশীলতার চর্চা করতে হবে। এখানে প্রতিপক্ষ ধর্মকাঠামোর ভেতরের স্ববিরোধ এবং মানবতাবিরোধীতা , ধর্মের অযৌক্তিকতা এবং মানবিক ইস্যুতে ধর্মের অহেতুক অসারতা যা পক্ষান্তরে নির্মমতারই পরিচায়ক।
ধর্মের এইসব অহেতুক রীতি-নীতি সংস্কারের যৌক্তিক লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হলে ধর্মপালনকারী মানুষ নিজের প্রয়োজনেই তার ভাবনাকে সংস্কার করে নিবে। সংস্কার সব সময়ই নিজের চেতনার ভেতর থেকে উঠে আসতে হয়, চাপিয়ে দেওয়া সংস্কার অন্য একটি প্রেক্ষাপটে অন্য এক ধরণের বিশ্বাসের আগ্রাসন, সেই আগ্রাসী মনোভাব পরিত্যাগ করলে হয়তো স্বেচ্ছায় ধর্মচ্যুত মানুষদের
এক ধরণের সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা তৈরি হবে।
আমাদের মেনে নিতে হবে রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতায় আমাদের ধর্ম নিষ্পেষণের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে এবং এই আগ্রাসী ধর্মের হাতে মোটামুটি কেউই নিরাপদ নন। যারা ধর্মে বিশ্বাসী তারা নিজের ধর্মবিশ্বাসের উপরে আস্থা রেখে আশা করছেন আগ্রাসী ধর্মবাদীদের হাত থেকে তারা নিরাপদ, কিন্তু বাস্তবতা হলো মানবিকতা যেখানে বিপন্ন সেখানে ধর্মবাদী এবং ধর্মবিরোধী কেউই আগ্রাসী ধার্মিকদের হাতে নিরাপদ নন। আজ ধর্মবিরোধীদের নিজস্ব উপলব্ধিতে তারা প্রত্যক্ষ প্রতিরোধ গড়েতোলারআহ্বান জানিয়েছেন, আশা করবো অপরাপর মানবিক ধার্মিকেরা আগ্রাসী ধর্মবাদী জল্লাদদের প্রতিরোধ মঞ্চে নিজেকে সামিল করবেন। এখানে ধর্মের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো মানবিকতা। মানবিকতা ধর্ম অধর্ম বিবাদের উর্ধ্বে, সেটাকে সকল বিবাদের উর্ধ্বে রেখে দেওয়াটাই যুক্তিসংগত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।