্যা হয় কপালে-কি হবে আর ভেবে ।
শৈশব মানে মাঠের ধুলোবালির সঙ্গে গড়াগড়ি আর ফলবৃক্ষের ডালে দুঃসাহসিক লম্ফ-ঝম্প। শৈশব মানে চাঁদ হাতে দেওয়ার মতো অবাস্তব আবদার, কখনোবা সারা দিনমান বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর নিয়ে ঘরে ফেরা অথবা খেলাচ্ছলে চেঁচামেচি করে পুরো গ্রামকে মাথায় তোলা। শিশুদের এমন দুরন্তপনায় ঘর, বাড়ি, পাড়া, মহল্লা এমনকি গ্রামও যেন বিরক্ত হয়ে যায়, তবু শিশুদের দুরন্তপনা থামে না।
কিন্তু আফগান শিশুদের কাছে শৈশবের এমন গল্প ‘শুধুই পরিভাষা’।
দুরন্তপনা দূরে থাক, প্রত্যেক আফগান শিশু যেন যুদ্ধের ময়দানেই জন্ম নেয়। মুখ থেকে মাতৃদুগ্ধের গন্ধ না যেতেই এ শিশুদের হাতে উঠছে ভয়ংকর সব মরণাস্ত্র। ‘ধর্মরক্ষা’ আর নিজের প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ের নাম করে কোমলমতি শিশুদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে আত্মঘাতী অন্ধকার জগতে।
taliban-22
অনলাইনে প্রকাশিত তালেবান জঙ্গিদের একটি ভিডিও ক্লিপের উদ্বৃতি দিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য সান’ জানায়, ‘লিটল কমান্ডোস’ (ক্ষুদে সেনা) শিরোনামে প্রকাশিত এই ভিডিওচিত্রে লোমহর্ষক সব দৃশ্য দেখা গেছে।
ভিডিও চিত্রের একটি অংশে দেখা যায়, বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হবে, এ বয়সের একটি শিশুকে হাতে পিস্তল নিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে গুলি ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ভিডিও চিত্রের আরেকটি অংশে দেখা যায়, একই বয়সের ৪ জন শিশুর হাতে পিস্তল দিয়ে যুদ্ধের পজিশন নিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে গুলি ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, আর এসব ভয়ংকর দৃশ্য স্বচক্ষে দেখছে অন্য শিশুরা।
আরেকটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, একে-৪৭ হাতে যুদ্ধের পজিশন নিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ২০ জন কোমলমতি শিশুকে।
মেশিনগানের মতো ভারি ও বিপজ্জনক সমরাস্ত্রেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এসব অবুঝ শিশুদের।
taliban-120
শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি ১২ বছরেরও কম বয়সী শিশুদের কিভাবে শত্রুর শিরশ্ছেদ করতে হয় এ বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দ্য সান জানিয়েছে, প্রকাশ্যে আত্মঘাতী হামলা চালানোর কৌশল হিসেবে ওই ভিডিওচিত্রে কিছু শিশুর ছবি ঝাপসা করে প্রকাশ করেছে তালেবানরা।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইনে বলা আছে, যেকোনো পরিস্থিতিতেই নারী ও শিশুরা সহিংসতার শিকার হবে না। এই আইনটি যেমন মার্কিন মোড়লদের হাতে লঙ্ঘিত হয়েছে, তেমনি ‘শিশুদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া যাবে না’- এই আইনটিও ভঙ্গ করে চলেছে তালেবানরা।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সদ্য পৃথিবীতে পা রাখা এসব শিশুকে মৃত্যু কিংবা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য যারাই দায়ী হোক, খুব শিগগির এ পথ রুদ্ধ করা না গেলে তার দায় বিশ্বের কর্তা ব্যক্তিরা এড়াতে পারবেন না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।