হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি সম্পর্কে আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্ববিরোধী ও পাশ কাটিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। আজ রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে কোনো রকম বিভ্রান্তির শিকার না হয়ে পূর্ণ উদ্যম ও প্রস্তুতি নিয়ে আগামী রোববার ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলা হয়েছে। তবে, সাভার দুর্ঘটনায় লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, উদ্ধার তত্পরতায় নিয়োজিত সব ধরনের যান, দেশি-বিদেশি পরিদর্শকদের গাড়িসহ এ জাতীয় যানবাহন অবরোধের আওতা মুক্ত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
দীর্ঘ বিবৃতিতে হেফাজতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সব বক্তব্যের জবাব দেন আহমদ শফী।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে কাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে লালবাগে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
বিবৃতিতে আহমদ শফী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে হেফাজতের ১৩ দফা দাবি সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য কোনো মত ও দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। বরং বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বক্তব্যে স্ববিরোধী ব্যাখা ও পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাই ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। সে কারণেই আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি যথারীতি বহাল রাখার প্রত্যয় ঘোষণা করছি। ’
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্ব-বিরোধিতার বহু নজির ফুটে উঠেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বারবার ‘সংবিধানবিরোধী’ ও ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলার পরও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দফার সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রচলিত আইনে কী কী ধারা-উপধারা রয়েছে তাও উল্লেখ করেছেন। আবার সংবিধানে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপনের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে ‘রাষ্ট্র ধর্ম’ ও ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ উল্লেখ থাকার কথা বলে ওই মৌলিক বাক্যটি পুণঃস্থাপন করা নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। ইসলামের অবমাননা ও কটূক্তির বিষয়ে প্রচলিত ‘ধর্ম অবমাননা আইন’ ‘স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ এবং ‘তথ্য প্রযুক্তি আইনের’ ধারায় বর্ণিত শাস্তির কথা তুলে ধরলেও সর্বোচ্চ শাস্তির আইন প্রণয়ন বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। গ্রেপ্তার করা চারজন ব্লগারের বিরুদ্ধেও বিদ্যমান আইনে কঠোর কোনো ধারায় মামলা করা হয়নি।
বলা হয়, আলেম উলামা, ইমাম, খতিব ও মাদরাসার ছাত্রদের হয়রানি, হুমকির বিষয়টির সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী অজ্ঞতা প্রকাশ করলেও বাস্তবতা হচ্ছে, এ পর্যন্ত আন্দোলনরত প্রায় দশ জন আলেমকে হত্যা করা হয়েছে।
বহু আলেম খতিবকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, বহু মাদ্রাসা বাধ্যতামূলক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে ব্যবধান তৈরি করে প্রধানমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তার সঙ্গে ইসলামের অবস্থান ও নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এক্ষেত্রে কোনো কোনো আরব দেশের উদাহরণ টেনে ইসলাম ভাস্কর্যকে উত্কর্ষ দান করেছে বলে যে কথা বলা হয়েছে, তা ইসলামের শিল্পনীতি সম্পর্কে একটি ভুল ব্যাখ্যা।
নারীনীতি, নারী-অধিকার, অশ্লীলতা, ব্যভিচার ইত্যাদি বিষয়ে ইসলামী অনুশাসনের প্রশংসা করে আবার নারীনীতির ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধারার বিষয়গুলো পাশ কাটিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।