আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাসিরুদ্দিন হোজ্জার যত জোকসগুলি

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) ১) কে বেশি পেটুক নাসিরুদ্দিন হোজ্জার বাড়িতে তাঁর কিছু বন্ধু এসেছেন। অতিথিদের তরমুজ দিয়ে আপ্যায়ন করলেন হোজ্জা। বন্ধুদের সঙ্গে খেতে বসলেন হোজ্জা নিজেও। হোজ্জার পাশেই বসেছিলেন তাঁর এক দুষ্টু বন্ধু। তরমুজ খেয়ে খেয়ে বন্ধুটি হোজ্জার সামনে তরমুজের খোসা রাখছিলেন।

খাওয়া শেষে দেখা গেল, হোজ্জার সামনে তরমুজের খোসার স্তূপ। দুষ্টু বন্ধুটি অন্যদের বললেন, ‘দেখেছেন কাণ্ড? হোজ্জা কেমন পেটুক? তার সামনে তরমুজের খোসার স্তূপ হয়ে গেছে’! হোজ্জা হেসে বললেন, ‘আর আমার বন্ধুটির সামনে দেখছি একটা খোসাও নেই! উনি খোসাশুদ্ধ খেয়েছেন! এখন আপনারাই বলুন, কে বেশি পেটুক!’ ২) স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য ওষুধ হোজ্জা একবার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য এক হেকিমের কাছ থেকে ওষুধ নিয়েছিলেন। কয়েক মাস পর হোজ্জা তাঁর হেকিমের কাছে গেলেন ওই ওষুধ আনার জন্য। ‘আচ্ছা, গতবার তোমাকে কী ওষুধ দিয়েছিলাম, একেবারেই মনে করতে পারছি না। ’ ‘তাহলে ওই ওষুধ এখন থেকে আপনি নিজেই খাবেন’, হোজ্জা বিনীত গলায় বললেন।

৩) তুমি কি আমাকে চেনো হোজ্জা একবার উটের গাড়িতে চড়েছেন মাত্র। গাড়িচালক হোজ্জার কাছে ভাড়া চাইল। শুনে হোজ্জা হুড়মুড় করে গাড়ি থেকে নেমে যেতে উদ্যত হলেন। চালক বাধা দিয়ে বলল, ‘ভাড়া না দিয়ে আপনি যাচ্ছেন কোথায়?’ ‘আমি হলাম বাদশার খাস বন্ধু। আমার কাছে তুমি ভাড়া চাইছ!’ ‘ঠিক আছে, আপনিই যে হোজ্জা, তার প্রমাণ কী?’ হোজ্জা বললেন, ‘তুমি কি আমাকে গাড়িতে উঠতে দেখেছ?’ ‘নিশ্চয়ই দেখেছি।

’ ‘তুমি কি আমাকে চেনো?’ ‘না, চিনি না। ’ ‘তাহলে কী করে জানলে যে আমি গাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছি?’ ৪) তাহলে জানলে কী করে হোজ্জা তাঁর বন্ধুকে চিঠি লিখছিলেন। একজন উৎসুক প্রতিবেশী চুপিচুপি হোজ্জার পেছনে এসে চিঠিতে কী লেখা হচ্ছে, তা পড়তে থাকে। এদিকে হোজ্জার সামনে ছিল একটা আয়না। ওই আয়নাতেই হোজ্জা লোকটাকে দেখতে পেলেন।

তিনি পুরো ব্যাপারটা পাত্তা না দিয়ে চিঠি লিখতে লাগলেন: ‘অনেক কিছুই লেখার ছিল। কিন্তু পারলাম না। ঠিক এই মুহূর্তে একজন অভদ্র ও নির্লজ্জ লোক আমার পেছনে দাঁড়িয়ে চিঠি পড়ছে—’ লোকটা রেগেমেগে অভিযোগ করল, ‘হোজ্জা, আপনি এসব কী লিখছেন? আমি কখন আপনার পেছনে দাঁড়িয়ে চিঠি পড়েছি?’ জবাবে হোজ্জা বললেন, ‘তুমি যদি আমার পেছনে দাঁড়িয়ে চিঠি না পড়তে, তাহলে জানলে কী করে চিঠিতে আমি কী লিখেছি?’ ৫) তুমি একটা নেকড়ে হোজ্জার এক প্রতিবেশী শিকারে গিয়ে নেকড়ের কবল থেকে এক ভেড়াকে বাঁচিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে, পালবে বলে। শিকারির যত্নে ভেড়াটি দিন দিন নাদুস-নুদুস হয়ে উঠল। একদিন শিকারির লোভ হলো ভেড়ার মাংস খাওয়ার জন্য।

তাই জবাই করতে উদ্যত হতেই ভেড়াটি ভয়ে বিকট শব্দে চিত্কার জুড়ে ছিল। ভেড়ার চিত্কারে হোজ্জার ঘুম গেল ভেঙে। ব্যাপারটা বোঝার জন্য সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীর বাড়িতে ছুটে গেলেন হোজ্জা। হোজ্জাকে দেখে শিকারি প্রতিবেশী লজ্জিত গলায় বললেন, ‘এই ভেড়াটার প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলাম একবার। ’ ‘তাহলে ও তোমাকে গালি দিচ্ছে কেন?’ ‘গালি দিচ্ছে?’ ‘ভেড়া বলছে, “তুমি একটা নেকড়ে”।

’ ৬) দেখতে বাধ্য একদিন বাদশা হোজ্জাকে বললেন, ‘হোজ্জা, কাল থেকে আমি আর আয়নায় নিজের চেহারা দেখব না। আমার চেহারা যে এত বিচ্ছিরি, তা এত দিনে জানলাম। ’ জবাবে হোজ্জা বললেন, ‘হুজুর, মাফ করবেন, আয়নায় নিজেকে দেখে বলছেন আপনি দেখতে বিচ্ছিরি। কিন্তু এই এত দিন সবাই আয়না ছাড়াই আপনাকে দেখতে বাধ্য হয়েছে। ’ ৭) পরের প্রশ্ন হোজ্জা একটা স্টল খুলে ওখানে নোটিশ টাঙিয়ে দিলেন।

‘যেকোনো বিষয়ে দুই প্রশ্নের জবাবের বিনিময়ে পাঁচ পাউন্ড। ’ একজন পথচারী হন্তদন্ত হয়ে তাঁর কাছে এসে টাকাটা হাতে দিয়ে বলল, ‘দুটো প্রশ্নের জন্য পাঁচ পাউন্ড, একটু বেশি নয় কি?’ ‘হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন’, হোজ্জা বললেন, ‘এর পরের প্রশ্ন?’ ৮) যমজ হোজ্জার গ্রামে যমজ ভাই ছিল। একদিন শোনা গেল, ওই যমজ ভাইদের একজন মারা গেছে। রাস্তায় ওই যমজ তাদের একজনকে দেখে হোজ্জা দৌড়ে গেলেন তার দিকে। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কোন জন মারা গেছে-তুমি না, তোমার ভাই?’ ৯) খুঁজছি মধ্যরাতে হোজ্জা রাস্তা দিয়ে একা একা হেঁটে যাচ্ছিলেন।

গার্ড তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘এত রাতে রাস্তায় কী করছেন, হোজ্জা?’ ‘আমার ঘুম হারিয়ে গেছে, তাকে খুঁজতে এসেছি। ’ ১০) স্কুল হোজ্জা এক বিধবাকে বিয়ে করলেন, বিয়ের পাঁচ দিন পর নতুন বউ একটি ছেলেসন্তান জন্ম দিল। হোজ্জা তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে বাজারে গিয়ে স্কুলের ব্যাগ, বই থেকে শুরু করে সব কিনতে শুরু করলেন। মানুষজন তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি এসব কিনছেন কেন?’ জবাবে হোজ্জা বললেন, ‘আমার বাচ্চা যদি নয় মাসের সফর পাঁচ দিনে শেষ করতে পারে, তাহলে তো সে স্কুলে যাওয়ার জন্য যেকোনো সময় প্রস্তুত হতে পারে। ’ ১১) লবণ একদিন হোজ্জা গাধার পিঠে লবণ বোঝাই করে বাজারের দিকে রওনা দিলেন।

পথে একটা নদী পড়ল। গাধাসহ নদী পার হলেন। কিন্তু নদীর পানিতে লবণ গলে একাকার। পণ্য হারিয়ে হোজ্জা বিরক্ত। গাধা তো মহা খুশি বোঝা থেকে বেঁচে গিয়ে।

এর পরেরবারও হোজ্জা ওই পথ দিয়ে গেলেন, তবে এবার তুলা বোঝাই করে। গাধা যখন নদী পার হলো তখন তুলা ভিজে ওজন বেড়ে গেল। গাধা ওজনদার মাল নিয়ে টলমল পায়ে এগিয়ে যেতে লাগল। ‘হাহ্‌!’ হোজ্জা চেঁচিয়ে বললেন, ‘ভেবেছিলি প্রতিবার পানি দিয়ে গেলে পিঠের ওপরের মালের ওজন কমে যাবে, তাই না? ১২) দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার এক সন্ধ্যায় হোজ্জা হঠাৎ দেখতে পেলেন একদল ঘোড়সওয়ার তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে। তিনি দিব্যদৃষ্টিতে যেন দেখতে পেলেন তাঁকে ধরে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে কিংবা সেনাবাহিনীতে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হোজ্জা লাফ দিয়ে দেয়াল টপকে গোরস্থানে গিয়ে একটা খালি কবর দেখে শুয়ে পড়লেন। তার আচরণে কৌতূহলী হয়ে ঘোড়সওয়াররা গোরস্থানে ঢুকে পড়ল। দেখল হোজ্জা একটা খালি কবরে শক্ত কাঠ হয়ে শুয়ে আছে। ‘কবরের ভেতর কী করছেন আপনি? আমরা কি সাহায্য করতে পারি?’ ‘প্রশ্ন করেছেন বলেই সব প্রশ্নের সোজাসাপটা জবাব দেওয়া যায় না’, হোজ্জা বললেন। ‘পুরো ব্যাপারটা আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করছে।

যদি বলি আপনাদের জন্য আমার এখানে আসা আর আমার জন্যই আপনাদের এখানে আসা-তাহলে কি কিছু বুঝবেন?’ ১৩) অশুভ রাজার মেজাজ খারাপ। রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে শিকারে যাওয়ার পথে হোজ্জা সামনে পড়ে গেলেন। ‘শিকারে যাওয়ার পথে হোজ্জার সামনে পড়ে যাওয়াটা আমার ভাগ্যের জন্য খারাপ’, প্রহরীদের রাগত গলায় বললেন রাজা। ‘আমার দিকে ওকে তাকাতে দিয়ো না-চাবুকপেটা করে ওকে পথ থেকে সরিয়ে দাও। ’ প্রহরীরা তা-ই করল।

শিকার কিন্তু ভালোই হলো। রাজা হোজ্জাকে ডেকে পাঠালেন। ‘আমি সত্যি দুঃখিত, হোজ্জা। ভেবেছিলাম তুমি অশুভ। কিন্তু তুমি তা নও।

’ ‘আপনি ভেবেছিলেন আমি অশুভ!’ হোজ্জা বললেন। ‘আপনি আমাকে দেখার পর ভালো শিকার করেছেন। আর আমি আপনাকে দেখে চাবুকপেটা খেয়েছি। কে যে কার অশুভ, বুঝলাম না। ’ ১৪) চোরাচালান গাধার পিঠে চেপে হোজ্জা প্রায়ই ইরান, গ্রিস চলে যান।

প্রতিবারই গাধার পিঠে দুই বোঝা খড় চাপিয়ে নিয়ে যেতেন এবং ফিরে আসতেন পায়ে হেঁটে। প্রতিবার তাঁকে তল্লাশি করা হতো বেআইনি সামগ্রীর খোঁজে। কিছুই পাওয়া যেত না। ‘কী নিয়ে যান আপনি, হোজ্জা?’ ‘আমি একজন চোরাচালানি। ’ কয়েক বছর পর হোজ্জার অবস্থা আরও রমরমা।

মিসরের উদ্দেশে রওনা দিলেন। সেখানে একদিন এক সীমান্তরক্ষী তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। ‘বলুন হোজ্জা, কী করে গ্রিস ও ইরানের আইন ফাঁকি দিয়ে গেলেন আর এখানেও বেশ ভালোই আছেন, কী চোরাচালান করতেন যে কখনোই ধরা যেত না?’ ‘গাধা। ’ ১৫) চেষ্টা একদিন এক গার্ড দেখল হোজ্জা তাঁর শোয়ার ঘরের জানালা খুলে বেরিয়ে আসতে চাইছেন। তখন ছিল গভীর রাত।

‘কী করছেন আপনি হোজ্জা? এভাবে বাইরে আসতে চাইছেন কেন?’ ‘হিস্‌স্‌স্‌! ওরা বলে আমি নাকি ঘুমন্ত অবস্থায় হাঁটি। সেটা দেখার জন্যই চেষ্টা করে যাচ্ছি। ’ ১৬) তুর্কোমানের ষাঁড় এক তুর্কোমানের ষাঁড় হোজ্জার বাগানের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢুকে তছনছ করে দিয়ে মালিকের কাছে ফিরে গেল। হোজ্জা পুরো ব্যাপারটা লক্ষ করলেন, তারপর একটা বেত নিয়ে বেরিয়ে এসে ষাঁড়টাকে পেটাতে শুরু করলেন। ‘কোন সাহসে আমার ষাঁড়কে আপনি পেটাচ্ছেন!’ তুর্কোমান চেঁচিয়ে বলল।

‘কিছু মনে করবেন না আপনি’, হোজ্জা বললেন, ‘ও পুরো ব্যাপারটা জানে। এটা ওর আর আমার ব্যাপার!’ ১৭) অতিথিপরায়ণ একদিন এক চায়ের স্টলে হোজ্জা সবাইকে বললেন, ‘আমি একজন অতিথিপরায়ণ ব্যক্তি। ’ ‘বেশ, তাহলে আজ দুপুরে আমাদের সবাইকে খাওয়ান’, সবচেয়ে চতুরজন কথাটা বলল। হোজ্জা তাদের নিয়ে নিজ বাসার দিকে রওনা দিলেন। বাড়ির কাছে এসে হোজ্জা বললেন, ‘আমি আগে আগে বাসায় গিয়ে স্ত্রীকে বলি আর তোমরা আসতে থাকো।

’ খবরটা শোনার পর স্ত্রী রেগে আগুন, ‘ঘরে কোনো খাবার নেই, ওদের ফিরে যেতে বলো। ’ ‘তা পারব না, আমি যে অতিথিপরায়ণ, তার একটা সুনাম আছে। ’ ‘বেশ, তাহলে তুমি ওপরের তলায় গিয়ে বসো; আমি ওদের বলছি তুমি বেরিয়ে গেছ, বাড়িতে নেই। ’ এক ঘণ্টা পর অতিথিরা এসে দরজায় ধাক্কা দিল আর বলতে লাগল, ‘আমাদের ভেতরে ঢুকতে দাও হোজ্জা। ’ হোজ্জার স্ত্রী দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন।

‘হোজ্জা তো বাড়ি নেই। ’ ‘সেকি আমরা তো তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেছি আর দরজার দিকে লক্ষ রেখেছি তার ঢোকার পর থেকে। বের তো হয়নি। ’ স্ত্রী চুপ করে গেলেন। ওপরতলার জানালা দিয়ে হোজ্জা পুরোটাই দেখছিলেন।

নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে জানালা দিয়ে ঝুঁকে বললেন, ‘আমি কি পেছনের দরজা দিয়ে বাইরে যেতে পারি না?’ ১৮) দৌড় ‘আমি যখন মরুভূমিতে গিয়েছিলাম তখন আমার কারণে একটি বেদুইন গোষ্ঠী দৌড়ের ওপর ছিল। ’ একদিন হোজ্জা বললেন সবাইকে গর্বের সঙ্গে। ‘কিন্তু কীভাবে?’ ‘একেবারে সহজ। হঠাৎ ওদের সামনে দিয়ে যেই দৌড় লাগিয়েছি, অমনি পুরো দলটা আমার পিছু পিছু দৌড় লাগাল, ব্যস। ’ ১৯) আজকে সপ্তাহের কোন দিন হোজ্জাকে একদিন একজন রাস্তায় থামিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘আজকে সপ্তাহের কোন দিন?’ ‘বলতে পারব না’, জবাবে হোজ্জা বললেন, ‘আমি এই এলাকায় নতুন।

জানি না এখানকার মানুষেরা সপ্তাহের কোন দিনটি মেনে চলে। ২০) বাঘ তাড়াতে একদিন হোজ্জা তাঁর বাড়ির চারপাশে শুকনো খাবারের টুকরো ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। ‘কী করছেন হোজ্জা?’ একজন জিজ্ঞেস করল। ‘বাঘকে দূরে সরিয়ে রাখছি। ’ ‘কিন্তু এ এলাকায় কোনো বাঘ তো নেই।

’ ‘ঠিক বলেছ, খুবই কার্যকর পদ্ধতি, তাই না?’ ২১) বাজপাখি একদিন হোজ্জা বাজার থেকে কলিজা কিনে বাসায় যাচ্ছিলেন। এদিকে তাঁর এক বন্ধু তাঁকে কলিজার পাই বানানোর প্রণালী দিয়েছিলেন, যাতে বাসায় গিয়ে কলিজার পাই রান্না করতে পারেন। কিন্তু হঠাৎ একটি বাজপাখি উড়ে এসে কলিজা ছিনিয়ে নিয়ে একেবারে নাগালের বাইরে উড়ে চলে গেল। ‘বোকা কোথাকার!’ চেঁচিয়ে হোজ্জা বললেন, ‘কলিজা নিয়ে গেছ ঠিক আছে, কিন্তু প্রস্তুত প্রণালী তো আমার কাছে!’ ২২) সে ভালো বোধ করছে একদিন হোজ্জার স্ত্রী খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং চিকিৎসক ডাকতে বলেন। হোজ্জা তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন।

তিনি ছুটে গেলেন চিকিৎসক ডেকে আনার জন্য। কিন্তু রাস্তার দিকের জানালার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্ত্রী জানালা দিয়ে গলা বের করে চেঁচিয়ে বললেন, ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ! ব্যথাটা চলে গেছে, চিকিৎসকের দরকার নেই। ’ হোজ্জা স্ত্রীর কথা শুনলেন এবং চিকিৎসকের বাড়ির দিকে দৌড়ে গেলেন। বললেন, ‘ডাক্তার, আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ ছিল এবং আপনাকে ডেকে আনার জন্য বলেছিল। কিন্তু আপনাকে ডেকে আনতে বের হওয়ার সময় বলল সে সুস্থ বোধ করছে, আপনাকে ডাকার দরকার নেই।

তাই আপনাকে পুরো ব্যাপারটা বলতে এলাম এই জন্য যে তাকে দেখতে আসতে হবে না। ’ ২৩) কুর্তার ভিতর তো আমিও ছিলাম একরাতে হোজ্জার প্রতিবেশী হোজ্জার বাসা থেকে ভারী কিছু পড়ার শব্দ পেল। পরদিন সকালে তাদের দেখা হলে প্রতিবেশী হোজ্জাকে জিজ্ঞাস করলেন। ‘ভাই সাহেব, গতকাল আপনার বাসা থেকে ভারী কিছু পতনের শব্দ শুনলাম, কি হয়েছে?’ ‘আর বলবেননা, কালকে আমার বিবি রাগ করে আমার কুর্তা উপর থেকে নীচে ফেলে দেয়’। ‘কুর্তা ফেলে দিলে এত শব্দ হয়’ প্রতিবেশী অবাক।

‘কুর্তার ভিতর তো আমিও ছিলাম’, হোজ্জার ত্বরিত উত্তর। ২৪) কোন অভিযোগ নাই বিবির পিড়াপিড়িতে নাসিরুদ্দিন হোজ্জা একটা গরু কিনল। কিন্তু গরু ও গাধার জন্য গোয়াল ঘরে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায়, একটা ঘুমাইলে আরেকটাকে দাঁড়ায় থাকতে হতো। প্রিয় গাধার এই দুরবস্থা দেখে হোজ্জা একদিন খোদার কাছে প্রার্থনা করছে: “হে আল্লাহ, দয়া করে গরুটাকে মেরে ফেল যাতে আমার গাধাটা একটু আরাম করে ঘুমাইতে পারে” পরদিন সকালে সে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখে যে গাধাটা মরে পরে আছে। প্রানপ্রিয় গাধার মৃত্যুতে হতাশ হয়ে হোজ্জা বিরস বদনে আকাশের দিকে তাকায়ে বলল: “কোন অভিযোগ করবনা, খোদা, কিন্তু তুমি এতদিন ধরে সারা দুনিয়ার মালিক হয়েও, কোনটা গরু কোনটা গাধা এইটা চিনলানা!” ২৫) বিবি তোমার কথাই ঠিক নাসিরুদ্দিন হোজ্জা তখন কাজী।

বিচার আচার করেন। একদিন বিচারে বসেছেন। ফরিয়াদি আসামির সম্পর্কে তার অভিযোগের বয়ান দিতেছে। হোজ্জা মনযোগ দিয়া তার কথা শুনছেন। বাদীর বলা শেষ হয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললেন, ‘তোমার কথাই ঠিক’।

এইবার আসামি বলে উঠল, ‘হুজুর, আমার দুইটা কথা ছিল’। হোজ্জা বললেন, ‘ঠিক আছে তুমি তোমার বক্তব্য বল’ আসামির বক্তব্যও মনযোগ দিয়া শোনার পর হোজ্জা বললেন, ‘তোমার কথাই ঠিক’। হোজ্জার স্ত্রী পর্দার আড়ালে এতক্ষণ সব কথা শুনছিলেন। বিরক্ত হয়ে স্বামীকে তিনি বললেন, ‘দুইজনই ঠিক হয় কিভাবে? হয় আসামির কথা ঠিক অথবা ফরিয়াদির কথা ঠিক’। হোজ্জা স্ত্রীর দিকে ফিরে সমর্থনসূচক হাসি দিয়ে বললেন, ‘বিবি তোমার কথাই ঠিক’।

২৬) চিঠি পড়া একবার এক লোক হোজ্জার কাছে একটা চিঠি নিয়ে এসে পড়ে দেওয়ার অনুরোধ করল। হোজ্জা পড়ার চেষ্টা করে বিফল হয়ে বলল, ‘লেখাটা দুষ্পাঠ্য তাই পড়া যাইতেছেনা। ’ লোকটা খেপে গিয়ে বলল, ‘একটা সাধারণ চিঠি পড়তে পারনা আবার মাথায় পাগড়ি পরছ’ হোজ্জা তাড়াতাড়ি নিজের পাগড়ি খুলে লোকটার মাথায় পরিয়ে দিয়ে বলল, ‘এইযে এখন তোমার মাথায় পাগড়ি আছে, এইবার তুমি দেখোতো চিঠিটা পড়তে পারো কীনা?’ সুত্রঃ ইন্টারনেট ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.