আয়কর ফাঁকির মামলায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিচারক জহুরুল হক অভিযোগ গঠন করে আগামী ১ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন। এর আগে মানি লন্ডারিং আইনে গত বছরের ২৩ জুন কোকোকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। কোকোর বিরুদ্ধে মামলাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় মামলায় বিচারকাজ শুরু হলো।
আজ আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
এ মামলায় গত ৫ আগস্ট কোকোকে পলাতক দেখিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন আদালত। ৩০ আগস্ট গেজেট প্রকাশসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর আদালত আজ অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।
এই আইনে সাজা: আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ধারায় তিন বছর এবং ১৬৬ ধারায় এক বছরের সাজার বিধান রয়েছে। উভয় ধারায় সাজা ও অর্থদণ্ড করারও বিধান রয়েছে।
আজ কোকোর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতকে বলেন, আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
আসামির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আপসযোগ্য। তাই আরাফাত রহমান কোকোর পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়কর অধ্যাদেশের ১৭০ ধারায় টাকা পরিশোধের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এনবিআর থেকে ওই আবেদনের বিষয়ে কোনো জবাব না দিয়ে এ মামলা করেছে। এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করার আবেদন করেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আবু এর বিরোধিতা করে আদালতকে বলেন, এ মামলায় আসামি আরাফাত রহমান কোকোকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তাই পলাতক আসামির পক্ষে এ ধরনের আবেদন করার সুযোগ নেই।
আবদুল্লাহ আবু বলেন, ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রদর্শিত আয়কর বিবরণীতে ৫২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আয়ের তথ্য গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য কর ফাঁকি দেন কোকো। এই অভিযোগে আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায় ২০১০ সালের ১ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ মামলা করে। তিনি আরও বলেন, এ মামলায় আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু আসামি আদালতে হাজির হননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধা নেই। এরপর বিচারক আসামি আরাফাত রহমানকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যর জন্য দিন ধার্য করেন। আবু আবদুল্লাহ আবুকে শুনানিতে সহায়তা করেন অতিরিক্ত পিপি শাহ আলম তালুকদার।
কোকোর আরেক আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, মানি লন্ডারিং আইনে গত বছরের ২৩ জুন কোকোকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোজাম্মেল হোসেন।
এ ছাড়াও কোকোর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, আয়কর ফাঁকি, চাঁদাবাজি, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা রয়েছে। বাকি মামলাগুলোর কার্যক্রম উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া ‘দৈনিক দিনকাল’-এর প্রকাশনা নিয়ে একটি মামলা ছিল, তা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। কোকোর বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে বিচার শুরু হওয়া এটি দ্বিতীয় মামলা।
২০১০ সালের ১ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ-কর কমিশনার শাহীন আক্তার হোসেন আয়কর ফাঁকির অভিযোগে এ মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, কোকো ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রদর্শিত আয়কর বিবরণীতে ৫২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আয়ের তথ্য গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য কর ফাঁকি দিয়েছেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।