অরুণালোক সম্প্রতি ঢাকা পোস্ট সম্পাদক, বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক ওমর ফারুক পবিত্র ওমরা সম্পন্ন করে দেশে ফিরে এসে ওমরা ও হজ্বের উপর একটি বই লেখেন। বইটি পড়ে আমি আবেগে আপ্লুত হই এবং এ কবিতাটি প্রসব করি। পাঠকের উদ্দেশ্যে আমার এবারের নিবেদন এ কবিতা
রাসুলের দেশে
রাসুলের দেশে মুসাফির বেশে ঘুরি পথে পথে আনমনে
একদা তিনি এই পথ ধরে হেঁটে গেছেন পূত চরণে।
এই তো সে কা’বা! আরাফাত! হেরা!
স্নিগ্ধা নগরী মদীনা মনওয়ারা-
তাঁর স্মৃতিচিন্ বুকে ধরে ওরা কাঁপন জাগায় আমার প্রাণে।
সাফা মারওয়া পার হতে শুনি হাজেরার পদধ্বনি!
ইব্রাহীম আর ইসমাইলের কণ্ঠও যেন শুনি-
ঐ তো ওখানে আব জমজম
ত্রস্তে হাঁটি বাড়িয়ে কদম
প্রতি পদক্ষেপে ইতিহাস যেন কথা কয়ে উঠে আমার সনে।
ঐ তো ওখানে শয়তান খাড়া! কঙ্কর ছুঁড়ে মারি-
দূর হয়ে যা; ওরে পাপাত্মা, অভিশাপ দিই ভারি।
এই মিনা’রই বিরান বিভুঁয়ে
চরম পরীক্ষা দিয়েছিলো দু‘য়ে
আল্লাহ প্রেমের, সেই সে কথা মনে পড়ে এসে এ স্থানে।
হে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ মোহাম্মদ
রাসুল আমার; প্রিয় নবী। নসীব আমার বদ
তোমাকে সামনে পাইনি দেখতে
অথচ আমায় প্রতি ওয়াক্তে
তোমার ছবিই আঁকিয়ে নেয়, আড়ালে যে জন; নিরজনে।
হায় আফসোস! যদি চাক্ষুস দেখতে পেতাম তোমায়
জুড়াতো দু'চোখ; ভরে যেত বুক শুনে খুৎবা জুমায়।
আজ নামাজে বসে না যে মন
মসজিদে নববী কাঁদালো কখন!
এ কোন স্মৃতির ছায়া খেলে যায় উদ্বেল মম হৃদ গগনে!
এই আরবের অজেয় বুকে আদম, -ইব্রাহীম,
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ! অতুল যে অসীম
পা রেখেছিলো একদা এখানে
আমিও আজকে দাঁড়িয়ে সেখানে
এ কী রোমাঞ্চ! এ কী আনন্দ! বুঝাতে পাবো না কোন জনে।
পথ হাঁটি আর ভাবি মনে মনে- ধন্য আরব জমিন
রাসুল চরণ চুম্বিতা তুমি, ছিলো যে শ্রেষ্ঠ মুমিন!
দুনিয়ার যত দেশ-মহাদেশ
তোমার কাছে তুচ্ছ অশেষ।
স্বর্ণ কমল বুকে ধরে নিতি গর্বিতা তুমি প্রতি ক্ষণে।
শ্রদ্ধেয়,
আসসালামু আলাইকুম। আপনি পবিত্র নগরী মক্কা মদিনা ঘুরে এসেছেন, ওমরা হজ্ব করেছেন।
সুবহান আল্লাহ! আমার খুব ভাল লেগেছে। ওখানকার প্রতিটি অঞ্চল, বিশেষ করে যে সব জায়গায় রাসুল (সাঃ) স্মৃতি বিজড়িত; সেসব মুসলমানদের কাছে খুবই পবিত্র এবং প্রিয়। এ কারণেই আমাদের বাঙালি মুসলমান ভাইবোনেরা যখন ঐ নামগুলো শুনতে পান, তখন শরীরে ও মনে একটা ঝঙ্কার অনুভব করেন। এ অনুভূতি থেকে আপনিও দূরে নন। তাই পবিত্র ওমরা পালন করে ফিরে এসে হজ্বের উপর লেখা বইটিতে আপনার এ রোমাঞ্চকর অনুভূতির কথা তুলে ধরেছেন বিভিন্ন স্থানে।
এটিও আমার ভাল লেগেছে। প্রতিটি হাজির মনেই সম্ভবত রাসুলের দেশে গেলে এ অনুভূতি হয়। আপনার সৌভাগ্য হয়েছে রাসুল (সাঃ) এর দেশ দেখার, ওমরা করার। খাস দোয়া করি, যেন আল্লাহ আপনাকে হজ্ব করারও তৌফিক দেন। আমাদের জন্যও দোয়া করবেন, আমরাও যেন পারি।
আসলে আপনার লেখা বইটা পড়ে আমার মনে হয়েছে আমিও কখন যেন হারিয়ে গেছি ওখানে। অবশ্য কল্পনায় আমি সব সময়ই এ ছবি দেখি।
যা হোক, ঐ যে বললাম- আমিও যেন হারিয়ে গেছি ওখানে। হারিয়ে গিয়েই হয়েছে যতো জ্বালা। কিসের যেন একটা খোঁচা লাগছে বারবার, ঘুচিয়েই চলেছে।
যখন বুঝলাম এটা কবিতার খোঁচা, কবিতা আমায় খোঁচা মেরে চলেছে, জ্বালিয়ে চলেছে তখনই আপনাকে বলে দিয়েছি। মনে আছে নিশ্চয়ই, সেদিন বাংলাবাজার থেকে ফেরার পথে আপনাকে বলেছিলাম যে, আপনার অনুভূতি থেকে আমি একটি কবিতা লিখছি! কিন্তু অবাক কা-! আমি কিছুই লিখতে পারছি না। সত্যিই তো, আমি আপনার অনুভূতি থেকে কেমন করে লিখবো! কেউ কি তার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে! পারে না। এমনিভাবে অন্য কেউও অপরের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না। হায় আল্লাহ, একী হলো! তাহলে কেন রাসুল (সাঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত নামগুলো বারবার মগজে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে! এখন কী উপায় করি? মাথায় জট বেঁধে গেছে! ভাব মিলছে তো ছন্দ মিলছে না, আবার ছন্দ ঠিক রাখতে পারছি তো ভাব তালগোল পাকিয়ে দিচ্ছে।
মহাজ্বালা! অবশ্য আমি ভাল লিখি না, এটা আমি স্বীকার করতে লজ্জাও পাই না। লিখতে পারছি না, এটাই হচ্ছে জ্বালা। এ ক’টা দিন এ জ্বালায় জ্বলেছি। জ্বালাটা যখন তুঙ্গে, তখন মোবাইলটিও সাইলেন্ট করে দিয়েছি, কারও সাথে কথা বলিনি, বলতে পারিনি। সেজন্য মার্জনা চাইছি।
মাথার পুরো জট এখনও ছাড়েনি, তাই কবিতাটি অর্ধ সমাপ্ত এবং কবিতার ভাষাও অগোছালো রয়ে গেলো। অনেক কিছু মাথায় আসছে কিন্তু লিখতে পারছি না। তবে এটুকুই যদি আপনার কোন কাজে লাগে তবে তা আমার জন্য আনন্দের হবে।
ভাল থাকবেন
তৈয়ব খান
২৫-০৯-২০১২
মিরপুর, ঢাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।