আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসেন! চুমুক দেন কয়েক পদের ককটেইলে!!!

লিখব, একটু পরে....... এই লেখাটির মূল উদ্দেশ্য বহুল প্রচলিত এবং জনপ্রিয় কয়েকটি ককটেইল (আজকাল অবশ্য “শুটার”ও বলা হয়) ড্রিংকস্ এর সংগে পরিচিত হওয়া, যেটা আসলে একজন প্রফেশনাল বারটেন্ডার কিংবা মিক্সোলজিস্ট এর কাজ এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি এ দুটোর কোনটিই না। তারপরও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে লেখার সূচনা এবং যারা হয়তোবা ভাবছেন ভবিষ্যতে ইউরোপ, আমেরিকা পাড়ি জমাবেন তাদের কাজে লাগতেও পারে। যদি জানতে চান কত ধরণের ককটেইল আছে? উত্তর এক কথায় আনলিমিটেড কারণ আসলে প্রতিদিনই নতুন নতুন ব্লেন্ড এবং নতুন নতুন চয়েজ তৈরী হচ্ছে, তাছাড়া এটা একজন বারটেন্ডার এবং কাস্টমারের মুডের উপরও নির্ভর করে। সত্যিই ব্যাপারটা পুরোপপুরি “আর্ট অফ কেমিস্ট্রি”। আর নামকরণ সেটাও অনেক মনকাড়া (কিস্-ইন-দ্য-ডার্ক, লীভ-ইট-টু-মী, মিডনাইট স্নোস্টর্ম,...)এবং কিছু নাম আছে যেগুলো শুনলে হয়তবো আপনার নেশা কেটে যাবে।

চলুন তাহলে একে একে সিপ করা যাক….. স্ক্রড্রাইভারঃ এটি খুবই জনপ্রিয় এবং ক্ল্যাসিক্যাল একটি ককটেইল বিশেষ করে যখন আপনি উপভোগ করতে চান কমলা-লেবু স্বাদের চনমনে একটি পাঞ্চ এবং কোন প্রকার হ্যাংগওভার ঝামেলা ছাড়াই। রেসিপিঃ উপকরণঃ ১। ভদকা ২। আরেঞ্জ জুস্ ৩। ৫/৬টা আইস কিউব ৪।

১টা অরেঞ্জ স্লাইস মিক্সিং প্রণালীঃ এটি আসলে খুব সহজেই তৈরী করা যায় এবং চাইলে ঘরে বসেও তৈরী করা যায়। শুরুতেই একটি হাইবল গ্লাসে (লম্বা গ্লাস) অর্ধেকের বেশী পরিমাণ আইস ঢেলে নিতে হবে, তারপর যোগ করতে হবে ৬০ মিলি. ভদকা সাথে ১৫০ মিলি. ফ্রেশ আরেঞ্জ জুস্। ব্যাস তৈরী হয়ে গেলো চমৎকার স্বাদের একটি সামার ড্রিংক। যদিও এর অনেক ভেরিএন্টও রয়েছে যেমন ধরুন ইলেকট্রিক স্ক্র, স্লো(এক ধরণের ছোট নীল ফল) স্ক্র, ফাজি স্ক্র, হাই-ফাই স্ক্র, সী-ব্রীঝ আরও আনেক। আসলে এই নামকরণ আর ইনগ্রিডিএন্টস্ (বিশেষ করে ফ্রুট জুস্) মিক্সিং এর ব্যাপারটা আনেকাংশে নির্ভর করে একজন বারটেন্ডারের লিকার সেন্স আর সৃজনশীলতার উপর।

মার্টিনিঃ বিভিন্ন হলিউড ফিল্মে নিশ্চয়ই দেখেছেন হিরো-হিরোইন বারে গিয়ে মার্টিনি অর্ডার করতে। আসলে এর মূল উপকরণ হলো জিন এবং দ্বিতীয় উপকরণটি হলো ড্রাই ভারমূথ (এক ধরণের হোয়াইট ওয়াইন)। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হলো ড্রিংকটাকে ফ্যাশনেবল এবং আকর্ষণীয় করার জন্য ১/২ টা বাছাইকৃত জলপাই(কখনওবা পেঁয়াজ) টুথপিকে গেঁথে ড্রিংকের ভিতর ডুবিয়ে সার্ভ করা হয়। রেসিপিঃ উপকরণঃ ১। বেইস ড্রিংক যেমন- বেস্ট কোয়ালিটি জিন ২।

যে কোন একটি হোয়াইট ড্রিংক যেমন- ভদকা, ভারমূথ ইত্যাদি ৩। টুইস্টার যেমন-অলিভ/পেঁয়াজ/কমলার খোসা ইত্যাদি মিক্সিং প্রণালীঃ প্রথমেই একটি ককটেইল গ্লাসে (ত্রিকোণাকার গ্লাস) ৭ পার্ট জিন ঢেলে নিতে হবে, তারপর যোগ করতে হবে ১ পার্ট ভারমূথ। আসলে দ্বিতীয় ড্রিংকটার উপর ভিত্তি করে মার্টিনির অনেক ডেরিভেটিভস্ তৈরী হয়েছে, যেমন ধরুন ভদকা মেশালে হবে ভদকা মার্টিনি, তারপর ধরুন একটা ড্রিংকের সাথে আরেকটা ড্রিংক হালকা নাঁড়লে তৈরী হবে এক ধরণের ককটেইল আর ঝাঁকালে তৈরী হবে আরেক ধরণের ককটেইল (যেমন- ব্রাডফোর্ড)। ভদকা মার্টিনির সাথে লেবু/কমলার খোসা যোগ করলে হবে ক্যাঙ্গারু, পেঁয়াজ যোগ করলে হবে সম্পূর্ণ নতুন একটা ড্রিংক গিবসন্। যদিও এই নামগুলা নিয়ে লোকেশনভেদে অনেক মতভেদ রয়েছে।

মার্গারিটাঃ এটি লাইম ব্লেন্ডের নিরীহ কিন্তু চমৎকার মাইন্ড-রিফ্রেশিং একটা সামার ককটেইল। রেসিপিঃ উপকরণঃ ১। টাকিলা ২। যে কোন একটি অরেঞ্জ লিকার (যেমন- ট্রিপল সেক, কনট্রাউ) ৩। লাইম জুস ৪।

সল্ট/সুইটেনার (অপশনাল; ড্রিংকারের পার্সোনালিটির উপর নির্ভর করে) মিক্সিং প্রণালীঃ নামের মতোই এর প্রস্তুত প্রণালীতে রয়েছে সহজ মাদকতা। টাকিলা, অরেঞ্জ লিকার এবং লাইম জুস এই ৩টি উপকরণ(ঠান্ডা) মোটামুটি ৩:২:১ অনুপাতে মিশালেই মার্গারিটা রেডী হয়ে যাবে আপনাকে পরিতৃপ্তি দিতে। বাকী যে জিনিষটা সেটি হলো লেবুর এসিডিটিটাকে নিউট্রাল করতে চাইলে গ্লাস রিমে রাউন্ড করে লবণ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। ম্যানহাটানঃ এটি মূলতঃ স্ট্রং কিক্ দেয়া হুইস্কি বেইজড প্রফেশনাল এবং অভিজাত একটি ককটেইল। ম্যানহাটান সাধারনত রাতে ডিনারের আগে খাওয়া হয় এবং খাওয়া পরবর্তী গাড়ী চালানো থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়।

রেসিপিঃ উপকরণঃ ১। ২ আউন্স হুইস্কি ২। ১ আউন্স ড্রাই/সুইট ভারমূথ (ভারমূথ হলো বিশেষ ধরণের এ্যারোমেটিক ওয়াইন) ৩। ২/৩ ড্যাস (১ড্যাস =১/৩২ আউন্স) এ্যারোমেটিক বিটারস্ (বিটারস্ হলো গাছ থেকে প্রাপ্ত এক ধরণের স্পিরিট) ৪। সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য চেরী মিক্সিং প্রণালীঃ প্রথমে উপরের সবকটি উপকরণ একটি মিক্সিং গ্লাসে ঢেলে ৩/৪টা আইস কিউব মিশিয়ে হালকা নেড়ে নিতে হবে।

এরপর মিশ্রণটাকে আগে থেকে ঠান্ডা করা একটি ককটেইল গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করতে হবে। চাইলে গ্লাসের মধ্যে একটি লাল টসটসে চেরী ডুবিয়ে দিতে পারেন। মোহিত: এটি (mojito) মূলতঃ রাম বেইজ কিউবান আফিসিয়াল এ্যালকোহলিক বেভারেজ। এর বিশেষত্ব হলো পুদিনা পাতার চিল্ড রিফ্রেশিং ফ্লেভার, আর সাথে যদি থাকে বার-বি-কিউ তাহলেতো কথাই নেই। চলুন তাহলে চুমুক দেয়া যাক! রেসিপিঃ উপকরণঃ ১।

১ আউন্স হোয়াইট রাম ২। ৪- ৬ আউন্স কিউবা সোডা ৩। লাইম স্লাইস ৪। ফ্রেশ পুদিনা পাতা, বরফ কুঁচি ৫। ১ আউন্স সিরাপ মিক্সিং প্রণালীঃ প্রথমে একটি ঠান্ডা গ্লাসে ১ স্তর পুদিনা পাতা এবং লেবু স্লাইস বিছিয়ে নিতে হবে।

তারপর সিরাপটা ঢেলে নিতে হবে এবং ১ স্তর বরফ কুঁচি বিছিয়ে নিয়ে উপর থেকে আস্তে রাম ঢালতে হবে। আর সবার উপর থাকবে ক্লাব সোডা। সবশেষে আবার পুদিনা পাতা বিছিয়ে পরিবেশন করতে হবে। আজ এই পর্যন্তই, আনেক রাত হয়েছে! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.