সততাই সবসময় রাখা চাই,বাচিবার তরে । মোটরসাইকেল রপ্তানি করতে যাচ্ছে দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রানার অটোমোবাইলস। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি ভারতের কয়েকটি রাজ্য ও নেপালে এই মোটরসাইকেল রপ্তানি শুরু হতে পারে।
‘ডায়াং’ এবং ‘ফ্রিডম’—এ দুটি ব্র্যান্ড নামে ২০০০ সাল থেকে মোটরসাইকেল বাজারজাত করে আসছে রানার। তবে সামনের দিনগুলোতে রানারের তৈরি মোটরসাইকেল বাজারজাত হবে ‘ডায়াং-রানার’ ব্র্যান্ড নামে।
আর রপ্তানি হবে ‘রানার’ ব্র্যান্ড হিসেবে।
এ লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার চীনের মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডায়াং অটোমোবাইলসের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি একটি কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে রানার। চুক্তির আওতায় ডায়াং এখন থেকে মোটরসাইকেল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কারিগরি, প্রযুক্তিগত এবং গবেষণা ও উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রানারের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘ভারত, নেপালসহ কয়েকটি দেশে আমরা রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছি।
সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়াও পাচ্ছি। আশা করছি ২০১৩ সাল নাগাদ আমরা রপ্তানিতে যেতে পারব। ’ তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে মোটরসাইকেল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি হয় বছরে ৩০ কোটি ডলারের। মোটরসাইকের রপ্তানির মাধ্যমে আগামী দিনে রানারই ৩০ কোটি ডলার আয় করবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী, ডায়াংয়ের মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান নির্বাহী লিউ বো থাও, রানারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুজ্জামান বক্তব্য দেন।
হাফিজুর রহমান খান বলেন, দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্পকে উৎসাহী করতে হলে প্রয়োজন এ খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা, যে নীতিমালা দেশে মোটরসাইকেল আমদানিকে নিরুৎসাহী করবে ও দেশীয় উৎপাদনকে সহায়তা করবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি শিল্পনীতি নিয়ে দেশের শিল্পায়ন হতে পারে না। এ জন্য অঞ্চলভেদে এবং শিল্পের সমস্যা চিহ্নিত করে আলাদা আলাদা শিল্পনীতি করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে রানার। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ডায়াং থেকে আমদানি করা মোটরসাইকেল এ দেশে বাজারজাত করত।
এ ছাড়া চীনের আরও দু-তিনটি প্রতিষ্ঠানের মোটরসাইকেল আমদানি করে তা ‘ফ্রিডম’ নামে বাজারজাত শুরু করে। পরে পূর্ণাঙ্গ মোটরসাইকেল আমদানির পাশাপাশি এ দেশে সংযোজন করে তা বাজারজাত শুরু করে।
তবে ২০০৭ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় সরঞ্জাম তৈরির কারখানা করার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করে রানার। ২০১১ সালে ওই কারখানায় পানচিং, ওয়েল্ডিং, পেইন্টিং, টেস্টিং করার সরঞ্জাম স্থাপন করে এসব কাজও শুরু করে। স্বীকৃতি হিসেবে ওই বছর মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী হিসেবে সরকারি অনুমোদন পায় রানার।
কারখানাটিতে এখন প্রতিদিন ২০০ মোটরসাইকেল তৈরি হচ্ছে। এই কারখানা থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বছরে তিন লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে প্রতিষ্ঠানটি। দেড় কোটি টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করা রানার অটোমোবাইলসের পরিশোধিত মূলধন এখন ৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
রানারের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি মোটরসাইকেল তৈরিতে প্রায় ৩০০ ধরনের সরঞ্জাম লাগে। প্রাথমিকভাবে রানার বড় ধরনের ছয়টি সরঞ্জাম নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল।
এখন সিট, হেডলাইট, বেকলাইট, চেইনসহ অনেক সরঞ্জামই আমরা তৈরি করছি। বলা যায়, এখন ইঞ্জিনটাই আমাদের আমদানি করতে হয়। ’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুজ্জামান বলেন, দেশে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন তৈরি করতে হলে সে প্রযুক্তি আমদানি করতে হবে। ডায়াংয়ের সঙ্গে চুক্তির ফলে সেসব প্রযুক্তি পাওয়ার পথ সহজ হলো।
হাফিজুর রহমান খানের দাবি, শিগগিরই নিজস্ব ডিজাইনে মোটরসাইকেল প্রস্তুতের কাজ শুরু হবে।
২০১৪ সালের মধ্যে তা বাজারজাত করা হবে।
দেশীয় চাহিদা: ২০০০ সালে রানার দেশে দুই হাজার ৯০০ মোটরসাইকেল বিক্রি করে। তবে ২০১১ সালে বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ হাজারে।
উপমহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদের দাবি, দেশে যত মোটরসাইকেল বিক্রি হয়, তার ১৫ শতাংশের চাহিদা মেটায় রানার। রানার ৫০ সিসি, ৮০ সিসি, ১০০ সিসি, ১৩৫ সিসি মোটরসাইকেল বাজারজাত করে থাকে।
এর মধ্যে ৫০ সিসির মোটরসাইকেলের ৯০ শতাংশ এবং ৮০ সিসির ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ বাজারই রানারের দখলে।
কপি করা হয়েছে মাত্র। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।