[ (৪) খফীঃ- হালাল -হারাম, পাক-নাফাকী ইত্যাদির সংমিশ্রণ যেখানে দুনিয়ার সর্বত্র বিস্তৃত,সেখানে মান্দের বর্জন তথা অপছন্দনিয় কাজ হটে বিরত থাকা খুবই শক্ত; অথচ পবিত্র জীবন-যাপনের জন্যে ক্ষতিকর বস্তু হতে পরহেজগারির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দেখা গেছে, পীর প্রদত্ত তাওয়াজ্জুর বরকতে লতিফায়ে খফী জারিকৃত ও নুরান্নিত হতে পারলে মন্দ থেকে বাঁচার সক্ষমতা বা তাকওয়া অবলম্বন সহজসাধ্য হয়; ফলে আল্লাহর নিকটও বান্দা মর্যাদা সম্পন্ন ও সম্মানিত হয়ে যায়। কোরআন পাকে এরশাদ হয়েছে-নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ঐ ব্যক্তি,যিনি সর্বাধিক মুত্তাকী, (সুরা-হুজুরাত;১৩)। বস্তূত; আল্লাহতায়ালার নিকট সম্নানিত হতে পারলে ইসলামী কানুনসমূহ ও সম্নানের সাথে প্রতিপালিত হয়; জিল্লতিমুক্ত পবিত্র জীবন যাপন সহজলব্দ হয়। সমাজ এমন কি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ও প্রতিফলিত হয়।
তাকওয়ার মকাম অর্জিত হয় এখানে। খফীর অবস্থান হল- কপালের মধ্য ভাগে।
(৫) আখফাঃ- উপকারির উপকার অস্বীকার করলে কিংবা অনুগ্রহের প্রতিদানে বিগ্রহ পেলে সমাজে সৃষ্টি হয় তিক্ততাও ফ্যাসাদ। অনুরূপভাবে, আল্লাহতায়ালার অগণিত, অফুরন্ত নেয়ামতের শোকর গুজারী না হলে, আল্লাহও ঐ বান্দার প্রতি হন অসন্তুষ্ট। অকৃতজ্ঞ বান্দার পরিণাম সম্পর্কে আল্লাহতায়ালার সতর্কবাণী- “অবশ্যই যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও,অবশ্যই আমি বাড়িয়ে দেবো; আর অবশ্যই যদি নিমখহারামী করো, নিশ্চয়ই আমার শাস্তি অতীব কঠিন-(সুরা ইব্রাহিমঃ ৭)।
হাদিছ শরীফে এসেছেঃ ‘তুমি যখন আমার যিকির কর, তখন (বস্তুত) আমার শোকরগুজারিই করে থাকো; আর যখন ভুলে থাকো, তখন আমার নাফরমানীই করে থাকো’। তরিকত বিজ্ঞানীর মতে, পীর প্রদত্ত তাওয়াজ্জুহর ফয়েজ লতিফায়ে আখফা ‘আল্লাহ-আল্লাহ’ জিকির দ্বারা জারীকৃত হওয়ার মাধ্যমে তা’আলোকোদ্দীপ্ত হতে পারলে শোকর গুজারীর কাইফিয়ত অর্জিত হয়। আর এ অবস্থা খুবই উঁচু মর্তবায় নির্দিষ্টকৃত। এ মকাম ‘শোকর’ এর মকাম। এই মকামের অধিকারীদের প্রতি আল্লাহতায়ালা তাঁর মহব্বতের হস্ত প্রসারিত করেন।
আখফার অবস্থান হল- মাথার মধ্য ভাগে।
(৬) নফসঃ- কোরআন পাকে এরশাদ হয়েছে- “যে ব্যক্তি নফসের অভিলাস থেকে রয়েছে মুক্ত, তারই জন্যে জান্নাতুল মাওয়া অবধারিত” (সুরা-নাযিয়াতঃ৪০,৪১)। জীবনে চলার পথে আত্নবিশ্বাস একটি মুল্যবান সম্পদ। যার নেই আত্নবিশ্বাস, সে দুনিয়ার কাউকে করতে পারেনা বিশ্বাস। তাই সে সর্বদা অবিশ্বাস ও সন্দেহের দোদুল্যতায় করে হা-হুতাশ।
এমন কি অনেক সময় অপরকে অহেতুক সন্দেহ করে নিজেই হয়ে পড়ে গুনাহগার। এভাবে আত্নবিশ্বাসের অভাবে সে আল্লাহর উপরও ভরসা করতেও হয়ে পড়ে সন্দিহান। হায়াত-মওত-ধন-জন-মাল রিজিকের একচ্ছত্র অধিপতি আল্লাহ জাল্লা শানুহুর উপর ভরসা হারায়ে সে হয়ে পড়ে বেসামাল। এটাও এক প্রকার শয়তানী ধোকার কাজ; অথচ আল্লাহতায়ালার উপর তাওয়াক্কুল করতে পারলে যেখানে অনেক ঝামেলা চুকে যায়।
প্রমানসিদ্ধ হয়েছে যে, পীর প্রদত্ত নূরে ইলাহির ফয়েজে লতিফায়ে নফস পরিশোধিত হতে পারলে আল্লাহর উপর নিখুঁত তাওয়াক্কুল অর্জিত হয় এবং পরিণত হয় যায় নফসে মুৎমাইন্না।
শয়তানের ঘাটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। কোরআন পাকে এরশাদ হয়েছে-“নিশ্চয় নফসে আম্মারাই মানুষকে বিপদ্গামী করে” (সুরা-ইউসুফঃ ৫১)।
এরশাদ হয়েছে, “ওহে নফসে মুৎমাইন্না, প্রত্যাবর্তন করো তোমার প্রভুর দিকে যিনি তোমার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তুমি ও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। অতঃপর আনুগত বান্দায় হয়ে যাও পরিণত এবং প্রবেশ করো জান্নাতে” (সুরা-ফাজরঃ ২৮)। নফসের অবস্থান হল- দুই স্তনের মধ্যবর্তী অংশে।
(চলবে)
১ম অংশ এখানে দেখুন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।