আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিশুখাদ্য (দুধ) থেকে বৃদ্ধখাদ্য (পান-সুপারী) কোথায় ভেজাল নাই!

আমি গত চার-পাঁচ বছর দেশের বাহিরে থাকি। আশ্চর্য হলেও সত্য এই পাঁচ বছরে আমার কোন অসুখ হয়নি। সামান্য সর্দি-কাশিও না! কখনো পেট খারাপও হয়নি। অথচ, যখনি আমি বাংলাদেশে কারো সাথে কথা বলি তখনি শুনি কারো জ্বর। কারো মাথা ব্যাথা।

কারো পাতলা পায়খানা! (ডাইরিয়া) আবার কারো সমস্যা আরো ভয়াবহ। ডাক্তার বলেছে লিভারের আশেপাশে ইনফেক্সন হয়েছে। ডাক্তার বলেছে কিডনির অবস্থা বড়ই খারাপ। আবার কারো কারো অসুখ ডাক্তার ধরতেই পারছেনা! (আমার এক বন্ধু অসুস্থ। তাঁর রোগ নাকি ডাক্তার এখনো ধরতে পারেনি।

বন্ধুর সুস্থতা কামনা করছি। ) একটি পরিসংখানে দেখা গেছে বাংলাদেশে শুধুমাত্র কিডনি জটিলতার রুগীই দুই কোটি! আমার মনে হয় দেশের অর্ধেকেরও বেশী মানুষ শরীরে কোননা কোন জটিল রোগ বয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁরা নিজেরাও জানতে পারছেনা সেই রোগের কথা। প্রায় সকল বড় অসুখের প্রাথমিক সিনড্রমগুলি একই ধরনের। জ্বর, মাথা ব্যাথা, দুর্বলতা ইত্যাদি।

এসবের জন্য কেউ আর ডাক্তারের কাছে যায়না। পাড়ার ফার্মেসি থেকে হাই পাওয়ারের এ্যান্টিবায়েটিক খেয়ে রোগ ভাল করে ফেলে! দেশের মানুষের গড় আয়ু পুর্বের তুলনায় বেড়েছে। উনিশ শতকে বাংলাদেশের পুরুষের গড় আয়ু ছিল চল্লিশ। আর মহিলাদের ৩৫-৩৮। তার প্রধান কারন ছিল অশিক্ষা, অসচেতনতা, অপুষ্টি আর দারিদ্রতা।

বর্তমান সময়ে এসবের শতভাগ না হলেও অধিকাংশই পূরণ হয়েছে। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির ফলে কৃষিতে বিপ্লব এসেছে। চাষ করা মাছ, মাংস খেয়ে পুষ্টির চাহিদাও পূর্ণ করছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবটা থেকেই গেল।

যেভাবে দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছিল, সেভাবেই আবার কমে যাচ্ছে। সচেতনতার অভাবে আগামী প্রজন্মকে আমরা একটি অন্ধকার ভবিষ্যত উপহার দিতে যাচ্ছি। জন্মের পর পরই ভেজাল খাদ্য শিশুর মুখে তুলে দিয়ে ফরমালিন এবং বিষাক্ত কিটনাশকের রাজ্যে তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। শিশু খাদ্য থেকে শুরু করে বৃদ্ধ খাদ্য (পান সুপারি) পর্যন্ত কোন জিনিষে ভেজাল নাই? প্রাণ কোম্পানির এ্যাডে একটা কথা ছিল " দেশি পন্য কিনে হোন ধন্য" এরকম। হাজারো বিদেশী পন্যের ভীড়ে আমাদের দেশী পন্য প্রাণ এর জন্য খুব গর্ব হতো।

প্রয়োজন না থাকলেও ডলার খরচ করে বাঙালী দোকান থেকে ওসব কিনতাম। কিছুদিন আগে কোন একটা চ্যানেলের প্রাণের উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে একটা রিপোর্ট দেখে আমার সকল গর্ব, অহংকার মাটিতে মিশে গেছে। লেখাটা শুরু করেছিলাম ভেজাল নিয়ে কিছু লিখব বলে। অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে বলে আজ আর লিখলাম না। আসুন আজ থেকে আমরা সচেতন হই।

ওয়াদা করি ভেজাল পন্য বিক্রয় করবনা। পন্য ভেজাল করার ক্যামিকেল (ফরমালিন সহ অন্যান্য যা আছে) উৎপাদন, সরবরাহ করবনা। ভেজাল বিরোধী অভিযানে সরকারকে সাহায্য করব। (শাহজাহান আহমেদ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.