শনিবার রাতে সাভারে অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বামীর লাশ সনাক্তের পর মাঠে বসে বুক চাপড়ে বিলাপ করছিলেন সোনিয়া আক্তার।
স্বামী তোফাজ্জল হোসেনকে (২২) সোনিয়া সনাক্ত করেছেন পরনের শার্ট দেখে, যেটি রানা প্লাজা ধসে পড়ার আগের দিন কেনা হয়েছিল।
রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর ধংসস্তূপ থেকে হাসপাতাল সবখানেই স্বামীকে খুঁজতে পাগলের মতো ছুটেছেন সোনিয়া। পরে জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে লাশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অধর চন্দ্র স্কুল মাঠে।
স্বামীকে সনাক্ত করার পর সোনিয়ার কান্নায় স্কুল মাঠে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
কান্নাজড়িত কন্ঠে সোনিয়া বলেন, "এখন আমার কি হবে, আমি কি নিয়ে বাঁচবো। "
সোনিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তোফাজ্জল ৮ম তলায় ‘আয়রন ম্যান’ পদে কাজ করতেন।
ভবনে ফাটল দেয়ায় ছুটি হওয়ার পর তিনি বাসায় চলে আসেন। বিকালে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শার্টটি কিনে আনেন।
সোনিয়া বলেন, "কিন্তু পরদিন সকালে কারখানা থেকে ফোন এলে নতুন শার্টটি পরেই কাজে যায় তোফাজ্জল।
বিকালে ছুটির পর আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল তার। "
প্রায় ১১ দিন অপেক্ষার পর শনিবার রাত ৮টার দিকে একটি মৃতদেহ স্কুল মাঠে এলে দৌঁড়ে দেখতে যান সোনিয়া। কিন্তু লাশটি পঁচে গলে যাওয়ায় চেহারা চেনার উপায় ছিল না। কিন্তু পরনে নতুন শার্টটি দেখেই কেঁদে উঠেন তিনি।
তারপর স্কুল মাঠে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা লাশের পকেট থেকে মোবাইল ফোনসেট ও পরিচয়পত্র বের করে আনে।
তোফাজ্জলের চাচাতো ভাই বাউল শিল্পী আলমগীর সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তাদের কোনো সন্তান নেই। তারা দু’জন দু’জনকে খুব ভালবাসতেন বলেও তিনি জানান।
তিনি জানান, তোফাজ্জল হোসেনের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার চকমিরপুর এলাকায়। তারা বাবার নাম কামাল উদ্দিন মোল্লা।
দুই মাস আগে সাভারে পৌর এলাকার সোবাহানবাগ মহল্লায় বাসা ভাড়া নিয়ে রানা প্লাজার অষ্টম তলার পোশাক কারখানায় চাকরি নেয় তোফাজ্জল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।