আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একাকীত্ব !! ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর, কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারন।

যথেষ্ট ভালোবাসা বা সহানুভূতির অভাব থাকলে মানুষের মনে সমস্যা দেখা দেয়। সামাজিকতা থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে কিংবা কারও সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত থাকতে না-পারলে সেই কষ্টের বোঝা এক সময় ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে। জীবনযাত্রার গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পারিবারিক বন্ধন দিন দিন আলগা হয়ে পরছে। মানুষ হয়ে পরছে নিঃসঙ্গ, একাকী। একা থাকাটা কিছু মানুষের প্রবণতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতা।

সম্প্রতি এক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে এবং গবেষকদের দাবি, এ সব ক্ষেত্রে নিঃসঙ্গ মানুষটির রক্তচাপ বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউন সিস্টেম) দুর্বল হয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা। তারা সহজে অবসাদ কিংবা ডিমেনশিয়ার (স্মৃতিভ্রংশ বা ভাবনা-চিন্তায় অসঙ্গতির মতো স্নায়বিক রোগ) শিকার হতে পারেন, এমনকি হৃদরোগেও আক্রান্ত হতে পারেন। বস্তুত বৃদ্ধ বয়সে যারা একা থাকেন, পরিবারের সঙ্গে থাকা একই বয়সীদের তুলনায় তাদের মধ্যে হৃদরোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জে ডেভিড ক্রেসওয়েলের দাবি, ধূমপানের কুপ্রভাবের তুলনায় নিঃসঙ্গতার বিপদ কোনো অংশে কম নয়। “তবু একাকীত্বের ব্যাপারটাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না।

” গবেষণা-রিপোর্টে আক্ষেপ করেছেন ক্রেসওয়েল। পশ্চিমী দুনিয়ায় না-হয় অসুখটা চেনা। এ দেশের সামাজিক গঠনের প্রেক্ষিতেও কি একাকিত্ব এতটা চিন্তার খোরাক দিতে পারে? সমাজতত্ত্ববিদ থেকে চিকিৎসকদের অধিকাংশ মনে করছেন, সমস্যাটা এ দেশেও ক্রমে বাড়ছে। কেউ দায়ী করছেন যৌথ পরিবারের ভাঙনকে। কারো মতে, সাধারণভাবে মানুষের সম্পর্কের দায়িত্ব নেয়ার ইচ্ছে কমে গিয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রে অল্পবয়সীরাও কাছাকাছি কাউকে পাচ্ছেন না, যাকে নিজেদের সুবিধা-অসুবিধের কথা বলে হাল্কা হতে পারেন। এই মানসিক চাপ থেকে শারীরিক বিপদের আশঙ্কা ঘিরে শহরের চিকিৎসক, মনোবিদ, সমাজতাত্বিকেরা কতটা চিন্তিত? একজন হৃদরোগ-বিশেষজ্ঞের মতে, বিদেশের তুলনায় আমাদের সমস্যাটা আরো মারাত্মক। “কারণ, এখানে মানুষে মনোবিদের কাছে যেতেই চান না, পাছে লোকে পাগল বলে! উপরন্তু বয়স্কদের দেখাশোনার ব্যবস্থাও তেমন পোক্ত নয়। ” একাকীত্বের যন্ত্রনায়- ০১. রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে ০২. কমতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ০৩. হার্টের রোগ, ডিমেনশিয়া হতে পারে ০৪. গ্রাস করতে পারে ডায়াবেটিস, অবসাদ ০৫. বয়স্কদের হঠাৎ মৃত্যু ঘটতে পারে। (সূত্রঃ এখানে ) নিঃসঙ্গতা মানুষকে শুধু অসুখীই করে না, মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়।

ব্রিটেনে পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। (সূত্রঃ এখানে ) নিঃসঙ্গতা মানুষকে যেমন মানসিকভাবে অসুস্থ করে তোলে, তেমনি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার মতো নানা রোগে আক্রান্ত করে। নিঃসঙ্গতা সমস্যার সমাধানে কাজ করছে, এমন কর্মসূচি ক্যাম্পেইন টু অ্যান্ড লোনলিনেসের পরিচালক লরা ফার্গুসন বলেন, নিঃসঙ্গতা একটি জনস্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যা। দ্রুত এ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেয়া উচিত। তিনি বলেন, নিঃসঙ্গতার সঙ্গে অল্প বয়সে মৃত্যুর বিষয়টি যুক্ত।

আর এটি মুটিয়ে যাওয়া সমস্যার চেয়েও খারাপ বলে অভিমত তার। দিন দিন বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ায় নিঃসঙ্গতা আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে হাজির হচ্ছে বলে দাবি ডেভিড ম্যাককাললাফের। তিনি উইমেনস রয়্যাল ভলান্টারি সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা ব্রিটেনে ৪০ হাজারেরও বেশি প্রবীণ ব্যক্তির কল্যাণে কাজ করছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে চালানো বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের ১০ শতাংশ সব সময় একাকিত্ব বা খুব নিঃসঙ্গবোধ করে।

যুক্তরাজ্যে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে নিঃসঙ্গতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। বিষন্নতা প্রতিরোধ করার উপায়। (সূত্রঃ এখানে ) পাচটি নিয়ম মেনে চললে বিষন্নতা কেটে যায়। ১। নিজেকে সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না।

২। যখন আপনার মন বিষন্ন হয়ে উঠবে তখন একজন বন্ধু কিংবা অন্য কাউকে খুঁজে নিন যার সাথে কথা বলে আপনি সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং তাকে আপনার বিষন্নতার কারণ জানান। ৩। সক্রিয় থাকুন, কাজে নিমগ্ন থাকুন। গবেষণা থেকে দেখা যায় নিয়মিত শরীর চর্চা করলে মন ভালো থাকে।

৪। যথেষ্ট সময় নিয়ে ঘুমাবার চেষ্টা করুন। ৫। সুষম খাদ্য আহার করুন। প্রয়োজনে মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।