আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার শোনা কয়েকটি ভৌতিক ঘটনা-২

আমার শোনা ভৌতিক ঘটনা-১ এবারে দ্বিতীয় ঘটনাটি লিখছি। এই ঘটনা আমার বড় মামার জীবনে ঘটা। ঘটনাটি লিখবার আগে মামার একটা পরিচয় দিয়ে নেই। মামা পেশায় মাস্টার মেরিনার ( মেরিন একাডেমী হতে পাস করে যারা জাহাজের ক্যাপ্টেন হয়, ওনার কাজও তাই, তবে এই পোস্ট টা ক্যাপ্টেন থেকেও উপরে কারণ মাস্টার মেরিনার হতে হলে বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় পাস করতে হয়)। এখন চাকরি করেন একটি জাপানি জাহাজ এ ক্যাপ্টেন হিসেবে।

আর এই পেশায় যারা থাকেন তারা খুবই সাহসী হন। মামা বাসায় আসলে আমরা বলতাম, “ মামা আপনার জীবনে কোন ভৌতিক অভিজ্ঞতা আছে নাকি?” মামা সবস ময় ব লতেন, “ নাহ্‌, ভৌতিক অভিজ্ঞতা আবার কিসের?” তো সেই মামা একদিন নিজে থেকেই বললেন, “এতদিন আমি এসব খুব বেশি বিশ্বাস করতাম না, তবে একটা ঘটনা আমার জীবনে ঘটছে, শুনবি নাকি?”ঘটনাটি বলার সময় আমি খেয়াল করেছি মামাকে এবং আমি স্পষ্ট দেখেছি মামা এই ঘটনা যেভাবে সিরিয়াসলি বলেছেন তাতে ঘটনাটি মিথ্যা হবার কথা নয়। ৮-১০ বছর আগে মামা একটা ট্রেনিং এ যান কলকাতায়। একটা পুরণো জমিদার বাড়ীকে এখন ট্রেনিং সেন্টার বানানো হয়েছে। ঐ ট্রেনিং এ আরও এসেছিল বিভিন্ন দেশের ক্যাপ্টেনরা যার মধ্যে কয়েকজন ভারতীয়ও ছিল।

মামাদের এক এক রুমে থাকতে হত চারজন করে। তো প্রথমদিন সন্ধ্যায় মামাকে তার রুমমেট্ রা বলল ,”জানালার কাছে মহিলার কান্নার শব্দ শুনতে পারবে, কিন্তু দেখবে কেউ নাই”। মামা বিশ্বাস করলেন না এবং যথারীতি কিছু শুনলেনও না সেদিন। সুতরাং এটা বলার কোন উপায় নেই যে মামাকে এই কথা প্রভাবিত করেছিল। ঘটনা ঘটল পরের দিন।

মামা সারাদিন ট্রেনিং করে রুমে ফিরল। শীতের রাত, ৮ টার মতো বাজে। হঠাৎ মামার কাছে মনে হল, জানালার কাছে কেঊ একজন কাঁদছে। উনি মনে করলেন ভুল শুনছেন। না, ঠিকই শুনছেন।

রুমে আরও একজন ছিল যে আগেও এবং তখনও এই আওয়াজ শুনেছে। দুজনেই দৌড়ে গিয়ে জানালা দিয়ে উকি দিয়ে দেখলেন কেউ নেই, এমন কি কার্নিশেও না। ঘটনা যদি এখানে শেষ হয়ে যেত, তাহলেও বলা যেত হয়ত বা দুজনেই ভুল শুনেছেন। রাত ১০ টার দিকে মামা খেতে যাবেন, তার আগে একটু বাথরুমে যাবেন ভাবলেন। বাথরুম ছিল ঘরের বাইরে।

মামা বাথরুম এর বাইরে থেকে শুনলেন শাওয়ার এর শব্দ । তাই আর দরজা ধাক্কালেন না। একটু পরে আর কোন শব্দ না আসাতে ভাব লেন, “ কি ব্যাপার?” দরজাতে ধাক্কা দিয়ে দেখলেন দ রজা খোলা!!! ভিতরে কেউ নেই, এমনকি বাথরুম শুকনো খটখটে। মামা ওখানে ছিলেন ৪/৫ দিন, মামার সাথে শুধু প্রথম দিন আর মাঝখানে একটা দিন ছাড়া প্রতিদিন এই ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনি কিছু দেখেন নাই।

এই ঘটনা সম্বন্ধে জানার জন্য মামা ঐ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এর মালিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে কিছু কখনও দেখেছে কিনা। মালি যা বলেছিল তা এরকম- সে নাকি মাঝে মাঝে এক মহিলাকে দেখে (চেহারা চুল এ ঢাকা থাকে) কাঁদতে কাঁদতে পুকুর ঘাটের দিকে যায়, মহিলা বেশ লম্বা-এলোমেলো ভাব, শাড়ি পরা। ঐ সময় এ নাকি ট্রেনিং ইনস্টি টিউট এ থাকা কুকুরও কুই কুই ক রে আওয়াজ ক রে। প রে জানতে পারা যায়, ট্রেনিং ইন স্টি টিউট অনেকআ আগে ছিল এক জমিদার বাড়ি আর মামারা যেখানে থাকত, তার নিচেই নাকি ছিল নাচঘর। মামা যেদিন চলে আসবে, সেই ফ্লাইট টি ছিল স কাল বেলা, মামার হঠা ৎ খেয়াল হ ল সেদিন তিনি রুম এ একা, কারণ ঐ রুমে থাকা বাকি ৩ জন এর একজন ছিলেন নেপালী, আর বাকি ২ জন ভারতীয়।

তারা চলে গিয়েছিল। ঐ স ময় মামার ভয় লেগে উঠল। ট্রেনিং ইন স্টিটিউট এ থাকা আরেকজন ক্যাপ্টেন মামাকেই বললেন একা না থাকতে বরং তার সাথে থাকার জন্য। ঐ দিন তারা সারা রাত গল্প করেই কাটিয়ে দেন। কিন্তু ঐ দিন ওনারা কিছু শোনেননি।

ঐ ক্যাপ্টেনের অবশ্য একটা ঘটনা ঘটেছিল আগে যখন তিনি আগেও একবার এই ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এ এসেছিলেন। এটা তিনি মামার সাথে শেয়ার করেছিলেন। এক রাতে ঘুমানোর স ময় তার মনে হয়েছিল অদৃশ্য কেউ একজন হাঁটু গেড়ে তার বুকের উপ র গেঁড়ে বসে ছে, এরপর তাকে থাপ্পড় দিয়েছিল কয়েকটা। এটা এক টি সত্যি ঘটনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।