আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়েরা ছেলদের থেকে বেশি বুদ্ধিমতী কিন্তু তারপরও কেন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এই ধরনের বিষয়ে মেয়েরা পিছিয়ে

ছোটবেলা থেকে একটা কথা শুনে এসেছি মেয়েরা নাকি অংকে ভাল হয়না। আর একটু বড় হয়ে শুনলাম ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি মেয়েদের জন্য না। কথাগুল কখনই সজভাবে মানতে পারিনি আমি। তো যাহোক সারাদিন ইন্টার্ন এর নামে পিসি গুতাগুতি করে বাসায় এসে ক্লান্ত(??) চোখে যখন নেট এ কিছু ঘাটাঘাটি করছিলাম হঠাৎ একটা আর্টিকেল চোখে পড়ল , আর্টিকেলটি হল "একটি গবেষণা তে দেখা গেছে শিক্ষা জীবনের শুরুতে (বয়স ৭-৮) মেয়েদের আইকিউ ছেলেদের থেকে বেশি । ৭ বছর বয়সী মেয়েদের আইকিউ ১০১ যেখানে সমবয়সী ছেলের আইকিউ ৯৯ দশমিক ৫ ।

" (ছবি-১) ছবি =১ ছবিটা দেখেই আমার মাথায় প্রশ্ন উঠল তাইলে মেয়েদের বুদ্ধি শুরুতে যদি বেশীই থাকে তাইলে পরে বুদ্ধিটা যায় কোথায় ? সমস্যাটার শুরু কোথায়? যেমন ভাবা তেমন কাজ, সারারাত নেট এ ঘাটাঘাটি করে যেটা পেলাম সেটা হল ধীরে ধীরে মেয়েরা যখন বড় হতে শুরু করে তাদের মধ্যে ভয় বা নিজের উপর অবিশ্বাস বাড়তে থাকে। কারন আমাদের সুশীল সমাজে মেয়েদেরকে উঠতি বয়সেই হাজার ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু হয়। হঠাৎ করেই আসা এসব নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা তার উপর বিরুপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে যার কারনে মেযেরা নিজের উপর আত্মবিশ্বাস হারাতে শুরু করে। মেয়েদের মনে বার বার দ্বিধা আসতে থাকে "আমি মনেহয় পারবনা"। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ষষ্ঠ শ্রেণীতে থাকা মেয়ের আত্মবিশ্বাস ৭২% আর দশম শ্রেণী পর্যন্ত যেতে যেতে সে আত্মবিশ্বাস ৫৫% এসে ঠেকে।

আর এই অবিশ্বাস এর ফলে তারা পড়ালেখাতে সেভাবে মনযোগী হতে পারেনা। যে কোন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার সাহস হারাতে থাকে। কিন্তু যেসব মেয়েদের উপর এরকম অবিশ্বাসী মনোভাব প্রভাব ফেলতে পারেনা তারা ঠিকই তাদের লেখাপড়াতে ভাল ফল করতে থাকে। একবার এক গবেষনায় দুইদল ছেলে ও মেয়েদের ১ টি কাজ করতে বলা হয় , প্রথম ছেলেমেয়েদের গ্রুপ কে বলে দেওয়া হয়ই যে এই কাজটি সচরাচর ছেলেরা ভাল করে আর দ্বিতীয় ছেলেমেয়েদের গ্রুপটিতে এরকম কোন কিছুই বলা হয়না। ফলাফলে দেখা যায়, প্রথম গ্রুপটিতে মেয়েদের সাফল্যের হার ৪৫% আর ছেলেদের সাফল্যের হার ৫৫%।

কিন্তু দ্বিতীয় গ্রুপটিতে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের সাফল্যের হার প্রায় ৫০%। এরকম আরও একটি এক্সপেরিমেন্ট এর ফলাফল এ এরকম দেখা যায় (ছবি-২) ছবি-২ ধীরে ধীরে মেয়েরা যতই সামনে যেতে থাকে তার নিজের প্রতি অবিশ্বাস ততই বাড়তে থাকে । বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছানর পর খুব কম সংখ্যক মেয়ের আত্মবিশ্বাস রাখে যেখানে তারা ম্যাথ ও সায়েন্স এর সম্পর্কিত বিষয়ে আগ্রহী। সাধারনত ২৫% ছেলে এবং মাত্র ১৫% মেয়েরা ইঞ্জিনিয়ারিং বা এর সম্পর্কিত বিষয়ে ভর্তি হয়। আর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে এমন মেয়েদের মধ্যে ১/৫ মেয়ে মনে করে তারা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্য নয় কারন তারা মেয়ে।

সমস্যার শেষ এখানেই নয়। যে কয়জন মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশুনা শেষ করে তার মধ্যে মাত্র ১৬% মেয়ে তার ইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্পর্কিত বিষয়ে চাকরি করে। কারন ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রচুর পরিমানে ফিল্ড ওয়ার্ক করতে হয় । আর খুব কম সংখ্যক পুরুষ আছেন যারা তার স্ত্রী এর এহেন কর্তব্যজ্ঞানহীন(!!!??) চাকরি করতে অনুমতি দিবে। ফলে বাধ্য স্ত্রী এর মত অন্য কোন চাকরি তাকে করতে হয়।

শেষমেশ এসে আমরা দেখতেপাই, একদল ইঞ্জিনিয়ার বা কোন কোম্পানিতে যখন ২০-২৫ জন ইঞ্জিনিয়ার আসে তার মধ্যে মাত্র ২-৩ জন মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার থাকে। আর এই চিত্র সমাজের সাধারন মানুষেরা দেখে সুন্দর করে বলে দেন " আরে মশাই ইঞ্জিনিয়ারিং কি আর যা তা কথা , এ সব কিছু মেয়েমানুষের(!!??) কম্ম নয়" বি দ্রঃ ব্লগ এ এটা আমার দ্বিতীয় লেখা জানিনা কতটা সহজ করে লিখতে পেরেছি । যদি ভুল হএথাকে কথাও প্লীজ ভুলটা ধরিয়ে দিয়েন। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.