আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈমানদার ও মুসলমানের মধ্যে পার্থক্য।

সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা। একটি আয়াত দিয়ে কোরআনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগকে যদি প্রমাণ করা না যায় তাহলে কিন্তু সম্পূর্ণ কোরআন দিয়েও তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। যেমন কেউ যদি একটি আয়াত দিয়ে কোরআনের পৃথিবীর ঘুর্ণনকে থামিয়ে দিতে না পারে তাহলে কিন্তু সম্পূর্ণ কোরআন দিয়েও সেটা করা সম্ভব নয়। অনুরূপভাবে, একটি আয়াত দিয়ে কোরআনের পৃথিবীর আকারকে ডিস্কের মতো সমতল বানানো না গেলে সম্পূর্ণ কোরআন দিয়েও কিন্তু তা সম্ভব নয়। অথচ কোরআনের বিরুদ্ধে প্রায় প্রত্যেকটি অভিযোগকে প্রমাণ করার জন্য একাধিক আয়াতের সাথে হাদিস পর্যন্ত নিয়ে এসে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে লেখার কলেবড় বাড়ানো হয়।

আর এগুলোই অসচেতন পাঠকদেরকে বিভ্রান্ত করে। আবার কেউ কেউ সারা জীবনে সম্পূর্ণ কুরআন বুঝে পড়েই না উল্টো দুটা একটা আয়াত পড়ে মহান সৃষ্টিকর্তাকে দোষরোপ করতে থাকে। তাদের প্রতি আমার প্রশ্নঃ একটা জিনিস আপনি সম্পূর্ণ না জেনে সামান্য একটু অংশ জেনে মন্তব্য করেন কোন সেন্স-এ? যদি আমরা সচেতন হইতাম অর্থাৎ একজন মুসলিম হিসেবে যদি সম্পূর্ণ কুরআনটা জানতাম তাহলে কোন নাস্তিক অথবা কোন ভন্ড লোক আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারতনা। কিন্তু আফসোস!!! বেশির মুসলিম সম্পূর্ণ কুরআন জানেনা অথচ নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করে। একবার ভাবুনতো আল্লাহ্‌ তায়ালা এই কুরআন কি শুধু খতিব-মাওলানাদের জন্যই নাজিল করেছেন? আল্লাহ্‌ তায়ালা এই কুরআনকে সমগ্র মানব জাতির জন্য নাজিল করলেন কিন্তু আমরা কুরআন ছুয়েও দেখিনা! কুরআন হল একজন মুসলিমের সম্পূর্ণ জীবন-বিধান।

যে ব্যক্তি কুরাআনই জানেনা সে কিভাবে সেই জীবন-বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করবে? আবার নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেয় ঠিকই! কোন ব্যক্তি ন্যূনতম জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার পর এই বিশ্ব-জগৎ সম্পর্কে চিন্তা করবে। এই চিন্তার ফলাফলের উপর নির্ভর করে- হয় সে আস্তিক হবে, না হয় নাস্তিক। যখন কেউ ভাববে যে বিশ্ব-জগৎ আপনা-আপনি সৃষ্টি হয়নি কেউ একজন সৃষ্টি করেছেন। কেউ একজন এইসব পরিচালনা করছেন। অর্থাৎ একজন সৃষ্টি-কর্তা আছেন।

যিনি বিশাল ক্ষমতার অধিকারী। এটাই হল সৃষ্টি-কর্তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। তখনই একজন হবে আস্তিক/বিশ্বাসী/ঈমানদার। এই কথা ভালভাবে বুঝে নিতে হবে যে, সে কিন্তু সবে মাত্র আস্তিক/বিশ্বাসী/ঈমানদার হয়েছে। এখনো কিন্তু সে মুসলমান হয়নি।

এরপর যখন সে চিন্তা করবে আমার সকল কার্যকলাপ এবং জীবনের সকল রীতি-নীতি হতে হবে সৃষ্টিকর্তার মনের মত, যাতে সৃষ্টি-কর্তাকে আমি সন্তুষ্ট করতে পারি, তখন যদি সে তা করে অর্থাৎ সৃষ্টি-কর্তার আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী নিজের জীবন পরিচালনা করতে চায় তখন সে খুজবে কোথা থেকে সৃষ্টি-কর্তার আদেশ-নিষেধ সমূহ পাওয়া যাবে। আর আমাদের জন্য সৃষ্টি-কর্তার আদেশ-নিষেধ সম্বলিত বইটি হচ্ছে আল-কুরআন। এরপর যখন সে সৃষ্টি-কর্তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলবে তখন সে হবে মুসলিম। এখন সৃষ্টি-কর্তার আদেশ-নিষেধ মানবনা অথচ নিজেকে মুসলিম বলে ঠিকই পরিচয় দিয়ে বেড়াব এটা তো নেহাৎ ভন্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই সফলতা পেতে হলে শুধু আস্তিক/বিশ্বাসী/ঈমানদার হলেই চলবে না হতে হবে মুসলিম।

সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা বলেনঃ "হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। " [সুরা আলে ইমরানঃ১০২]। তিঁনি আরো বলেনঃ "নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যাবস্থা একমাত্র ইসলাম। " এই কথা থেকেই বোঝা যায় শুধু ঈমানদার/বিশ্বাসী হলেই চলবে না, হতে হবে মুসলিম।

তা না হলে আল্লাহ্‌ বলতেন না যে- হে বিশ্বাসীগণ তোমরা অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। তা না হলে আমাদের জন্য বিশ্বাসী হওয়াই যথেষ্ট ছিল। আল্লাহ্‌ তায়ালা আরো বলেনঃ "হে রসূল, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না, যারা দৌড়ে গিয়ে কুফরে পতিত হয়; যারা মুখে বলেঃ আমরা মুসলমান, অথচ তাদের অন্তর মুসলমান নয়" (সুরা আল-মায়দাঃ ৪১) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.