আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুটি সত্য ভৌতিক ঘটনা (পর্ব-২)

মানুষ কিছু জানত না বলে সে জানার আগ্রহে ছিল ভরপুর,এখন মানুষ কিছু জানে বলেই সে অজানাকে পাঠিয়েছে বহুদূর ঘটনা-৫। অবস্থানঃআমার নিজের বাস আসলে এটা ঠিক ভূত দেখা সঙ্ক্রান্ত কোন ঘটনা না। অনুভূতি সঙ্ক্রান্ত যেটা আমার এবং আমার মায়ের হয়েছে। এই ঘটনার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে আগে একটু বলে নেই। রেডিও ফূর্তিতে ভূত এফএম নামের যে শো টা হয় তাতে সুমন ভাই একবার তার একটা অগিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে একটা বই এর নাম বলেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন এই বইটা যাদের কাছে থাকে তারা নানান ধরনের প্যারানরমাল অনুভূতির মুখোমুখি হন। তিনি নিজেও হয়েছিলেন। আগ্রহের বশে আমিও নেটে সার্চ দিয়ে ডাউনলোড করার চেষ্টা করি। কিন্তু কেন জানি তিন পৃষ্ঠার বেশি নামাতে দেয় নি। ওই তিন পৃষ্ঠা পড়ে যা বুঝলাম যে এতে জ্বীন আর শয়তানদের সম্পর্কে নানা প্রকার তথ্য দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার দিন রাত্রে বেলা প্রায় তিনটার দিকে আমি আমার টেবিলে বসে বই পড়ছিলাম। আমার বাবা-মা তাদের নিজেদের ঘরে আর আমার বড়ভাই গেষ্ট রুমে ঘুমাচ্ছিলেন তাই তার নিজের রুমটা ফাকা ছিল। রাত প্রায় সোয়া তিনটার দিকে আমি হঠাত একটা পায়ের আওয়াজ পাই। কেউ জোড়ে জোড়ে পায়ের আওয়াজ ফেললে যেমন হয় তেমন। একটু পর আমি আমার ভাইয়ের রুমের দরজায় ঝুলানো ঝুনিঝুনির আওয়াজ পাই সেই সাথে ঠাস করে দরজা লাগানোর আওয়াজ পাই।

বুঝতে পারলাম কেউ আমার ভাইয়ের রুমে গেছে। আমার ভাই নিজেই হয়ত রুমে গেছে এই ভেবে নিজেকে সান্তনা দেই কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল আমি কোন লাইটের আলো দেখতে পাই নাই। খটকা লাগে এখানেই। ভাইয়া সাধারনত রুমে ঢুকলে লাইট জ্বালায়। ব্যাপারটা দেখতে আমি ভাইয়ার রুমের দিকে যাই।

গেষ্ট রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি ভাইয়া সেখানে ঘুমাচ্ছে। তার মানে ভাইয়া তার রুমে যায়নি। বাবা-মার রুমের সামনে গিয়ে দেখি তারাও ঘুমাচ্ছে। অথচ ভাইয়ার রুমের দরজা তখন বন্ধ ছিল। আমি বেশ ভয় পেয়ে যাই।

কে গেল তাহলে সেই রুমে? আমি আবার আমার টেবিলে ফিরে গিয়ে পড়তে বশি। ভাবি যে হয়ত না ঘুমানোর কারনে এমন হয়েছে। হঠাত আবার রুমের দরজা খোলার শব্দ। আমি আমার রুমের বাইরে তাকিয়ে কান খাড়া করে রাখি। শুনলাম কে জানি ধপ ধপ করে এগিয়ে আসছে।

একটু পর পাক ঘরের পর্দা উড়তে দেখলাম তার মানে কেউ একজন পাক ঘরে ঢুকেছে। কিন্তু কোন লাইট জ্বলল না আবার কোন আওয়াজ ও হল না। আমি সময় নষ্ট না করে ঘুমিয়ে পড়ি ওইদিন আমার মা তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের জন্য তাড়াতাড়ি ওঠেন,তার একটা অভ্যাস হল ঘর অন্ধকার করে নামাজ পড়া। তিনি আমার ভাইয়ার রুমে নামাজ পড়েন। নামাজ পড়তে দাঁড়িয়ে আম্মু যখন নাকি সেজদা দিতে যায় তখন তিনি নাকি মাথার সামনে পায়ের স্পর্শ পান।

কিন্তু মা সেজদা শেষ করেই ওঠেন। আবার সেজদা দিতে গিয়ে একই রকম পায়ের স্পর্শ পান। যেন তার মাথার সামনে কেউ বসে আছে। তিনি জানতেন তাহাজ্জুদের নামাজ যারা পড়েন তারা এমন অবস্থায় পড়েন। তাদেরকে নাকি ভয় দেখানো হয়।

মুনাজাতের সময় হঠাত তার কানে বাইরের দরজায় টোকা দেওয়ার আওয়াজ আসে। তিনি মুনাজাত শেষ করে গিয়ে দরজা খুলে দেখেন কেউ নেই। তিনি সামান্য ভয় পেয়ে কুরয়ান শরীফ পড়তে বসেন আর আবার সেই টোকার আওয়াজ পান। এবার বেশ জোড়ে জোরে। কিন্তু এবার তিনি উঠে যাননি।

চুপচাপ কুরয়ান পাঠ চালিয়ে যান। কুরয়ান পাঠ প্রায় শেষ দিকে এমন সময় তিনি পাকঘরের দরজার সামনে একটা কালো বিড়াল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। বিড়ালটা তার দিকে এক নাগাড়ে তাকিয়ে ছিল। মা সেটাকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন কিন্তু সেটা যায় না। তিনি যা বুঝার বুঝে যান।

এটা কোন স্বাভাবিক বিড়াল না। মনে হয় যেন সেটা মার কুরয়ান তিলাওয়াত শোনার জন্য বসে ছিল কেননা কুরয়ান পাঠ শেষ হবার সাথে সাথেই সেটা চলে যায়। মা সেটার পিছু নিয়ে পাকঘরে ঢুকে দেখেন পাকঘরের জানালা বন্ধ। ভিতরে ঢোকার সামান্যতম জায়গা নেই। সেদিনি আমি আমার কম্পিউটার থেকে নেট থেকে নামানো সেই বই এর তিন পৃষ্ঠা ডিলিট করে দেই।

ঘটনা-৬ অবস্থানঃমতিঝিল এখন যে ঘটনাটা বলব সেটা আমার এক বন্ধুর বাসায় ঘটা। তারা যে বাসাটিতে থাকত সেখানে আগে একটা পরিবার থাকত তা প্রায় ১০-১২ বছর আগে। এক ঈদে পরিবারের যিনি কর্তা তিনি বিশেষ প্রয়োজনে কুমিল্লায় যান। যাবার পথে তার বাস এক্সিডেন্ট করে। এতে ওই বাসের সবাই মারা যায়।

লোকটাকে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যান। তার শরীরের প্রায় সবগুলো হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল। মাথা পুরো থেতলে গিয়েছিল। কোমড়ের নিচের অংশটুকু ছিলনা বললেই চলে। তিনি যে বাসাটিতে থাকতেন সেখানে তার লাশ নিয়ে আসা হয়।

কিন্তু তার দেহটি সেই বাসা ছেড়ে গেলেও তার আত্মা সেই বাসা এখনও ছেড়ে যায়নি। এই বাসাটিতে কোন ভাড়াটিয়াই ২-৩ মাসের বেশি থাকতে পারে না। বাড়ির মালিকও বাসা ভাড়া দেবার সময় কিছু বলেন না। আমার বন্ধুর পরিবার যখন ভাড়া নিতে যায় তখন বাড়িওয়ালা শুধু এটুকুই বলেন যে এই বাসা এক বছরের আগে কোন অবস্থাতেই ছাড়া যাবে না। তারা তা মেনে নেয়।

কিন্তু বাসায় ওঠার কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটনা ঘটা শুরু হয়। আমার বন্ধুটির রাত জেগে পড়ার অভ্যাস। একবার রাত তিনটার দিকে সে পড়ছিল। হঠাত তাদের বারান্দার শেষ মাথায় ধপ ধপ দুইটা আওয়াজ হয়। ভুল শুনেছে ভেবে বন্ধুটি আবার পড়ায় মন দেয়।

আবারও একই ঘটনা। এবার সে বারান্দায় তাকায়। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে সে দেখতে পায় সাদা আলখেল্লার মত পড়া কি যেন একটা মাটিতে লাফাচ্ছে। মাথার নিচের অংশটুকু স্বাভাবিক কিন্তু মাথা অস্বাভাবিক রকমের বড়। চোকের অংশটুকুতে যেন আগুন জ্বলছে।

হঠাত সেই ছায়াটা তার রুমের দিকে সেভাবে লাফাতে লাফাতেই আসতে থাকে। আমার বন্ধুতে ভয়ে তার বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। এমন সময় সে টের পায় সেই ছায়াটা দরজা দিয়ে তার রুমে ঢুকেছে। তার সামনে একটা গ্লাস রাখা ছিল। সেই গ্লাসে ঠিক তার পিছনে সেই ছায়ার প্রতিবিম্ব দেখতে পায়।

এক পর্যায়ে সেই ছায়াটা দক্ষিন দিকের একটি জানালায় গিয়ে মিলিয়ে যায়। তার বাসার সবাইকে জানালেও কেউ তা বিশ্বাস করে না। সেদিন রাত্রে গায়ে কাটা দেওয়া আরেকটি ঘটনা ঘটে। আমার ওই বন্ধুটি পড়ছিল কেননা পরেরদিন তার এইচএসসি পরীক্ষা ছিল। এমন সময় সে পায়ের আওয়াজ পায়।

সে বুঝতে পারে কিছু একটা রুমে ঢুকেছে। এবার সে সাহস করে পিছনে তাকায়। দেখতে পায় তার বিছানা অর্ধেক হুট করে দেবে গেছে। একটু পর মাথার বালিশও দেবে যায়। ঠিক যেন কেউ বিছানায় শুয়েছে।

আরও অদ্ভুত ব্যাপার হল তার বিছানাটা একটু পর পর কাপছিল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। সে সাহস জোগাড় করে তার আলমারির উপর রাখা কুরআন শরীফটা বিছানার একটি কোনায় রেখে দেয়। হঠাত কি হল সে বুঝতে পারল না। হুরমুর করে বিছানা থেকে কেউ যেন গায়ে কাটা দেওয়া কানে তালা লাগানো আওয়াজ করে জানালা ভেদ করে পালিয়ে যায়। কয়েকদিন পরে তার এক বন্ধু বাসায় বেড়াতে আসে।

সে ওই বাসার ঘটনাগুলো সম্পর্কে জানত। রুমে ঢুকেই সেই ওই আত্মাটাকে উদ্দেশ্য করে একটা গালি দেয়। রাত ঠিক দশটার দিকে তারা বসে কম্পিউটারে গেমস খেলছিল। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে গেল। ধোপারা কাপড় ধোয়ার স্ময় যেভাবে কাপড়কে মাটিতে আছাড় মারে ঠিক সেভাবে কে জানি ওই বন্ধুটিকে আলমারির সাথে বসা অবস্থাতেই একটা আছার মারে।

এতে চেয়ারটি ভেঙ্গে যায়। উঠে দাঁড়ানো মাত্রই আবার তাকে মাটিতে আছাড় মারা হয়। আমার বন্ধুটি কোন মতে সাহস জুগিয়ে সামনে রাখা কুরয়ান শরীফটি সেই বন্ধুর কোলের উপর রেখে দেয় আর তারপরই বন্ধুটির শরীর আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায়। আরও কিছু ঘটনা ঘটে। এই যেমন রাতের বেলা নামাজ পড়তে দাড়ালে কে যেন পিছন থেকে সে ধাক্কা দেয়।

রাতে ঘুমানোর সময় কে যেন পা ধরে টেনে মাটিতে ফেলে দেয়। ঘুমানোর সময় কানের সামনে এসে ফিসফিস করে কথা বলে। শেষ যে খবর পেয়েছিলাম তা হল ঘরটি বান্ধানো হয়েছে। বলে দেওয়া হয়ে দক্ষিন দিকের জানালা যাতে কখনও খোলা না হয় ভূত সংক্রান্ত কোন রম্য গবেষনার ফলাফল জানতে চাইলে নিচের লিঙ্ক আ ক্লিক করুনঃ Click This Link আর আরও চারটি ভৌতিক ঘটনা শুনতে চাইলে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করুন Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।