আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুটি বই

কিশোর মনের তলকুঠুরীর সন্ধানে মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের কিশোর উপন্যাস ‘নন প্লেয়িং ক্যাপটেন’ মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের শুরুটা হয় গল্প দিয়ে। প্রকাশিত হয় গল্পগ্রন্থ ‘দৈশিক’(২০০৯) ও ‘কৈরবীলগ্নে’(২০১০)। বই দুটির মধ্য দিয়ে সম্ভাবনাময় গল্পকার হিসেবে মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের প্রকাশ ঘটে। তরুণ আত্মপ্রত্যয়ী এই গল্পকার উপন্যাস লিখেও পাঠকদের মাঝে হৈচৈ ফেলে দেন। ফলত..তার প্রথম উপন্যাস ‘জোছনায় পুড়েছিল যারা’(২০১১) প্রকাশের কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।

একুশে বইমেলা ২০১২ তে প্রকাশিত হয়েছে মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের কিশোর উপন্যাস ‘নন প্লেয়িং ক্যাপটেন’। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা প্রকাশনী। প্রকাশের পরপরই বইটি কিশোর পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। মিতু,সিফাত,চঞ্চল ও গিট্টু...চার কিশোর বন্ধু – স্বপ্নবিলাসী,সুন্দর ও সত্যের পূজারি । তবে আলোচ্য উপন্যাসে সবাইকে অবাক করে দেয় লিমন নামক অক্ষম বালকটি ।

মেধা ও শ্রম দিয়ে সে তার দারিদ্র ও শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করতে সক্ষম হয়। সেই আলোচ্য গল্পের "নন প্লেয়িং ক্যাপটেন" । এই পাঁচজন কিশোর একত্রিত হয়ে সাঁঝবাতি গ্রামের একজন মুক্তিযোদ্ধার লালিত স্বপ্নকে রক্ষা করে । তাদের কাছে পরাজিত হয় তথাকথিত মুখোশধারী দেশদ্রোহীরা। উপন্যাসটি এডভেঞ্চারধর্মী ।

কিশোর মন স্বভাবতই এডভেঞ্চার প্রিয় । তাদের মনের তলকুঠুরী সন্ধান করেই মুহাম্মদ মেহেদী হাসান এই কিশোরধর্মী উপন্যাসটি রচনা করেছেন। তিনি আলোচ্য উপন্যাসের মধ্য দিয়ে কিশোরদেরকে তাদের ভেতরের শক্তি সম্পর্কে সজাগ করে তুলেছেন । সেই সাথে তারাই যে আগামী দেশ গড়ার কারিগর তার একটা স্পষ্ট ঈঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন। বইটি শিশু-কিশোর নির্বিশেষে সকলের জন্য সুখপাঠ্য সে কথা বলায় যায়।

‘বিশুদ্ধ মানব’ : তরুণ কথাসাহিত্যিক মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের সায়েন্স ফিকশন। মুহাম্মদ মেহেদী হাসান তরুণ প্রজন্মের নীরিক্ষাধর্মী লেখক। ইতোমধ্যে গল্প ও উপন্যাস লিখে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। বইমেলা ২০১২ তে কিশোর উপন্যাসের পাশাপাশি তার প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স ফিকশন ‘বিশুদ্ধ মানব’। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা প্রকাশনী।

বাংলাদেশে মুহম্মদ জাফর ইকবাল ছাড়া সায়েন্স ফিকশন লিখে সেইভাবে কেউ সফল হতে পারেনি । তার কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের গল্প মৌলিক নয় । বিদেশী কোনও গল্প অনুকরণে লেখা । যতদূর জানি, মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের গল্পটা মৌলিক , ব্যতিক্রম এবং চমকজাগানীয় । মুহাম্মদ মেহেদী হাসান এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করেন ।

এই বইটিতেও সে প্রবনতা লক্ষ্য করা যায় । সাধারণ সায়েন্স ফিকশনের থেকে এই বইটা কিছুটা হলেও ভিন্ন । সভ্যতা যেভাবে টেকনোলজি নির্ভর হয়ে পড়ছে এবং যেভাবে প্রকৃতি তার আচরণ পাল্টাতে শুরু করেছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে বিশুদ্ধ মানবের অস্তিত্ত্ব রক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়বে । তখন হয়ত তাদেরকে অন্য কোন গ্রহে সংরক্ষণ করে রাখা হবে । এমনই একটি ধারণা নিয়ে এগিয়ে যায় মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের সায়েন্স ফিকশনের কাহিনী ।

যে গ্রহে বিশুদ্ধ মানবদের রাখা হচ্ছে, সেখানে আবার দুষ্ট চক্রের নজর পড়ে । বিশুদ্ধ মানব সংরক্ষণে দুইটি পক্ষ তৈরি হয়ে যায় । এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এলিয়েন গ্রহগুলো । এভাবেই এগিয়ে যায় গল্পটি। সাধারণভাবে তরুণরা সায়েন্স ফিকশন লেখার সাহস দেখায় না ।

শিশু-কিশোরদের বইমুখী করার জন্যে সায়েন্স ফিকশনের বিকল্প হয় না । সুতরাং মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের এই সাহসী উদ্যোগকে প্রশংসা করতেই হচ্ছে। যারা সায়েন্স ফিকশন পড়তে পছন্দ করেন, তাদের যে বইটি বেশ ভাল লাগবে সে কথা নির্দিধায় বলা যায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।