আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শর্ট ডিস্টেন্স রিলেশনশিপ !!!

I like to hear complain from my readers about my lacks.............................................আমি এক পরী যার ডানাও নেই, আকর্ষনও নেই গত পর্ব- Click This Link আপু আবার টেক্সট পাঠালো, 'জেন, আমি প্রেগনেন্ট, এখন কি করা যায় বলত? আমি ভাবছি অ্যাবরশন করব, এই সন্তান আমার চাইনা!' আমার মনে হল আমার সমস্ত শরীরে একটা অন্যরকম অনুভুতি আসল, আপু আবার টেক্সট পাঠিয়েছে, আমি কি বলব ভাবছি, কিছু বলতেই হবে! আমার বলাটা এখন জরুরী! আমি বাসায় এসে আপুকে দেখে অবাক হলাম, আমার বোনকে এতটা অসুস্থ কখন মনে হয়নি। আপুটা বদলে যাবার পর থেকে আমিও ওর দিকে আর লক্ষ করতাম না। ওকে একটু একটু করে ভুলেই গিয়েছিলাম, অথচ দিন রাত ও আমার সামনেই ছিল। আমার এই বোন না থাকলে আমার আজকের অবস্থানটাই বদলে যেত! আমার মনে অনেক দৃড় একটা অপরাধবোধ জেগে উঠল। নাহ, আর কেয়ারলেস হওয়া যাবেনা।

যেভাবেই হোক আমার বোনকে সুস্থ করে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে হবে! রে'কে টেক্সট করব ভাবছিলাম বাসে বসেই, পরে মনে দ্বিধা তৈরি হয়ে গেল, কিছুক্ষন ভাবলাম এই নিয়ে! কিন্তু না, ও আমার বন্ধু, ওর অধিকার আছে জানার, সুতরাং জানালাম ওকে, ফোন করে সব বলেছি আসার পথে। ও আসছে, আমিও আপুর পাশে এখন, আমরা দুজনেই আপুকে সাহায্য করব! আপু আমার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে অবাক হয়ে গেল, আমাকে জিজ্ঞেস করল এভাবে তাকিয়ে আছি কেন এলিয়েনদের মত, আমি অনেক কষ্টেও হাসলাম! আমার মনের ভেতর তখন কষ্টগুলো দুমড়াচ্ছে, আমি নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টায় ছিলাম। আপুকে বললাম, 'আপু, এসবের জন্য দায়ী কে? নামটা অন্তত বল!' আপু ফ্লোরে অনেকক্ষন তাকিয়ে রইল, আমি ওকে সময় দিলাম, নিজেকেও প্রস্তুত করে তুললাম পরের সব কিছু সহ্য করার জন্য। ওই সময়টুকু আমার জন্য অনেক দুঃসহভাবে কাটল! আপু আমাকে বলল নামটা, অনেক চেনা একজন মানুষ। প্রথমে আমি কল্পনাও করতে পারিনি, পরে আপুর মুখ থেকেই শুনলাম সেদিন আপু সেদিন ড্রাঙ্ক ছিল, তাই এট কিছু হতে পেরেছে।

তারপর অনেকদিন হয়ে গেল। আপুকে জিজ্ঞেস করলাম আমি, 'এতদিন কিছুই বুঝনি? কোন সিম্পটম?' আপু উত্তর দিল 'না!' আমি আর কথা বাড়ালাম না, কিন্তু একটু বোঝানোর চেষ্টা করলাম ওকে, বাচ্চাটার তো কোন দোষ নেই, কিন্তু আপু আমাকে আজ একটা অনেক বড় ঘটনা শোনাল। আপু বলতে শুরু করল, 'জেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, একদিন পাপি আর মাম্মির কথা শুনেছিলাম। আমার আসলে বয়স কমিয়েছিল মাম্মি, কেন জানিস? আমি যখন মাম্মির গর্ভে, তখন মাম্মি অনেক ইয়াং, আর মাম্মির পরিবার পাপিকে মেনে নিবেনা, তাই তারা পালিয়ে বিয়ে করে ফেলে। আর তারা চায়নি আমরা এসব জানি, তাই তারা এসব করেছিল।

আমার বয়স আসলে এখন ২৭, ২৬ নয়! তারা বিয়ে করলেও দুজন দুজনকে ভালবাসেনি। দুজন মানুষ যুদ্ধ করে একসাথে থাকত। একটা সময় ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেল, ডিভোর্স করল। আমি ছোটবেলায় অনেক দেখেছি, মাম্মি পাপি ঝগড়া করেছে, আমি চুপচাপ দেখতাম। অনেক কেদেছি একটা সময়, আর ভালো লাগতনা।

আমি একবার সুইসাইড করব ভেবেছিলাম, কিন্তু তখন তোর জন্ম হবার কথা শুনি, আমি একটা নতুন আশা দেখছিলাম। তোকে নিয়ে আমার যে কত স্বপ্ন ছিল। আমি প্রতিদিন প্রে করতাম আমার যেন একটা বোন হয়। আমার সেই আশা পুর্ন হয়। কিন্তু তারপর তোকে মাম্মি পাপির ঝগড়া থেকে আড়াল করে রাখতে আমার অনেক কষ্ট হত, কিন্তু তোকে নিয়েই আমার সব ছিল।

তারপর মাম্মি পাপি ডিভোর্স করলে আমি তোকে নিয়ে এখানে আসি, ভেবেছিলাম তোকে একটা সুস্থ পরিবেশ দিব বড় হতে, পারলাম না। অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে কিন্তু তুই এখন ভালো মেয়ে আছিস, তাই আমার কোন দুঃখ নেই। এই বাচ্চা আমার চাইনা, কেননা ওকে আমি একটা সুন্দর পরিবেশ দিতে পারবনা বাড়তে, আমি যেমন মাম্মি পাপিকে হেইট করেছি, ও বড় হয়ে আমাকে হেইট করবে, ভাবলেই আমার প্রচন্ড খারাপ লাগে। তাই আমি অ্যাবরশন করবরে, তবে ভাবিসনা আমি আবেগতাড়িত হয়ে কিছু করছি, আমি ভেবেই সব করছি। ' আপু বারবার হাপিয়ে উঠছিল কথা বলতে বলতে, আর চোখ দিয়ে অনেক অশ্রু ঝরছিল, আমি কাছে গিয়ে ওর অশ্রু গুলো মুছে দেবার চেষ্টা করলাম।

একটা প্রশ্ন মনে আসল হটাৎ, আপুকে বললামও কথাটা। অনেক আগে, একবার এক ডাক্তারকে তার লাইসেন্স হারাতে দেখেছিলাম, একটা বাচ্চা অ্যাবরশন করার পরও বেচে থাকে। সেই বাচ্চাটার মাকে না পেয়ে পরে বাচ্চাটাকে ফেলে দেয়, কিন্তু বাচ্চাটা ভুমিষ্ট হবার কারনে ও এখানের সিটিজেন হয়ে যায়। তাই সেটা এক ধরনের মার্ডারে পরিনত হওয়ায় ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়! আপুকে সব খুলে বলি, আপু বলে, সেটা হলে নিশ্চয়ই অ্যাবরশন করবনা, কিন্তু অন্যথায় করবে। তাছাড়া একটা বয়সের পর বাচ্চা অ্যাবরশন করা যায়না।

সুতরাং সেটার জন্যও প্রস্তুত হয়ে উঠল ও! রে বাসায় আসলো, আমাদের সুন্দর বেলটা বাজলো, অনেকটা অনেক বিরহের পর মধুর শব্দ বেজে উঠল যেন। আপু তৈরি হয়ে গিয়েছিল, ততক্ষনে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্টও নেয়া হয়ে গিয়েছিল। আমরা একসাথে বের হলাম, পথে কেউই তেমন কিছু বললনা। আমি পরিবেশ হালকা করার জন্য কথা বললাম। হসপিটালে গিয়ে আপুকে চেকআপ এর জন্য পাঠালাম।

রে আমার দিকে আবার গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে রইল। আমি হাসলাম, আর বললাম, 'কি হয়েছে?' 'জানি এটা এসব বলার সময় না, কিন্ত তুই তখন আমাকে অর্নির সাথে রেখে আসলি কেন?' আমি ওর মুখটা দেখলাম, কি সৌম্য চেহারা। বুঝায় যায়না অনেক দুষ্টামী করতে পারে ছেলেটা, মাতিয়ে রাখতে পারে সবাইকে। কিন্তু এখন যে ও দুষ্টামী করছিল না তা আমি টের পাচ্ছিলাম। আমার ভেতরে আজ একটা আলোড়ন হয়েছে সকালের ওর সাথে কথার পর।

আসার পথে অনেক ভেবেছি, যদিও আপুর টেক্সটগুলো সব ভুলিয়ে দিয়েছিল কিছুক্ষনের জন্য, তবে ভাবনাগুলো আবার উকি দিচ্ছে মনে! আমি ওর হাতটা ধরলাম, বললাম, 'তোকে পরীক্ষা করলাম। ' ও আমার চোখের দিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে কিছুই বললনা। হটাৎই বলে উঠল, 'জো' এর কি হবে তাহলে?' আমি হেসে ফেললাম। ওর অস্থিরতা ও লুকাতে পারেনি, আমার কাছে কখনই পারবেনা সেটা আমি জানি। হেসে বললাম, 'ভালোলাগা আর ভালবাসা এক না, আমার জো'কে ভালো লাগে, ও স্মার্ট ছেলে, ওকে ভালো লাগতেই পারে।

কিন্তু ভালোলাগা আর ভালবাসায় পার্থক্য আছে। ' 'তাহলে তখন ঐ নাটকটা না করলেও পারতি, তুই জানিস মেয়েদের সাথে এভাবে আমাকে কথা বলানোর চেষ্টাটা তোর খুব অশোভন, আমি নিজ থেকে যার সাথে ইচ্ছা কথা বলব, কিন্তু তুই এমন সিচুয়েশন তৈরি করিস কেন?' বলেই মুখটা আবার অন্যদিকে ফেরালো রাগে রে! 'আমি তোকে ভালবাসি, তোর যায়গা আমি কাউকে দিব না, সে যেই হোকনা, আর এটা জেনেও তুই আর এমন করতে পারবিনা। ' বলল ও কিছুক্ষন পর, আমার চোখে চোখ রাখল ও। 'তুই আমাকে ভালবাসিস জানতাম, কিন্তু ভালবাসা যে অনেক রকম হয়! আমিও একটা সময় পর্যন্ত তোকে ভালবেসেছিলাম কিন্তু সে ভালবাসা ছিল বন্ধুর মত, এখন সেই ভালবাসাকে নিয়ে আমি অনেক দুর এগিয়ে গেছি, ভালবাসা আছে, তার ভিন্নতা আমি বুঝতে পারছি। তোকে আমি যতটা বিশ্বাস করি, আর কাউকে করিনা।

অনেক ট্রাস্ট করি তোকে, তাই তোকে আমার পাশে সবসময় চাই, থাকবিনা তুই আমার পাশে?' আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মনের কথাটা বলে ফেললাম। একটা প্রশান্তি দেখলাম ওর মুখে। 'থাকবো, তোকেও রেখে দিব' বলে ও অনেক জোরে হাসলো। আমার হৃদয়ের ঘরে অনেক বড় একটা আলোড়ন জাগলো আবারো। 'জানিস, হাইস্কুলের রিলেশনশিপ কিন্তু বেশিদিন টিকেনা, আর চার পার্সেন্ট লাইফটাইম রিলেশন হয়ে দাড়ায়, তাই বলে পরিসংখ্যানে!' বলে আমি মুচকি হাসলাম।

ও হেসে বলল, 'দেখিস, ঐ চার পার্সেন্টে আমরা যায়গা করে নেব, আর তোকে আমি কষ্ট দিতে পারবনা, তোকে কষ্ট দিলে আমার কষ্ট লাগবে, নিজেকে কোন পাগলও কষ্ট দেয়না! আর কোনদিন যদি ভুল করে দেই, আমাকে যত কষ্ট দেবার ইচ্ছা, দিস, আমি তোকে নিষেধ করবনা!' আপুকে বের হতে দেখলাম, ততক্ষনে আমি রে'কে আপুকে নিয়ে যা প্ল্যান আছে, সব খুলে বলেছি। আপু আমাদের পাশে এসে বলল, 'জেন, আমি ঠিক করেছি আমার বাবুটাকে বাচিয়ে রাখব, ও হবে আমার ভালো কাজ করার প্রেরণা, আর ওকে আমি একটা সুন্দর জীবন দিব। কি, সাহায্য করবিনা আমাকে?' আমরা দুজন হেসে মাথা নাড়লাম, এবং আমি জানি আমাদের সামনে এখন অনেক কাজ, সুন্দর একটা ভবিষ্যত করা সবার জন্য, পিচ্চি বাবুটার জন্য একটা সুন্দর জীবনের পথের শুরু করা, অনেক কাজ! শুরু করছি সব কাজ এখনই, একটুও দেরী নয় আর, আর আমার সথে এই কাজে সাহায্য করবে রে! (সমাপ্ত) গল্পটায় অনেকটা বাস্তবতা দিতে চেষ্টা করেছি। গল্পটা ব্লগার কি নাম দিব ও সায়েম মুন কে উৎসর্গ করলাম। অনেকদিন ব্লগে আসিনি, লেখাও স্থগিত ছিল সেই সময়টুকুতে।

সেদিন ব্লগে এসে ব্লগার সায়েম মুনের একটা লেখা পড়লাম, অনেক ভালো লেগেছিল, সত্য বলতে আবার লেখালেখির ইচ্ছাটা জেগে উঠেছিল লেখাটা পড়ে। কি নাম দিব আপুর লেখাও শুরু থেকেই পড়েছি, আপু আমাদেরকে নিয়মিত অনেক ভালো লেখা দিবেন আরো আশা করি। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগজীবন অনেক সুন্দর করে তোলার জন্য। ভালো থাকুন! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।