আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শর্ট ডিস্টেন্স রিলেশনশিপ !!

I like to hear complain from my readers about my lacks.............................................আমি এক পরী যার ডানাও নেই, আকর্ষনও নেই গত পর্ব- Click This Link বললাম কোথায় যাচ্ছিস আমাকে নিয়ে? ও আমাকে আবার সেই চাহনি দিল যাতে লেখা ছিল, 'আমাকে বিশ্বাস কর!' কিন্তু পারলামনা, ফ্রন্ট মিররে অনেকক্ষন ধরেই লক্ষ করলাম একটা কালো গাড়ি আমাদের ফলো করছে, রে'র মুখের দিকে তাকালাম, সেই মুখে এখন অচেনা রহস্যময় হাসি! আমরা ডাউনটাউনের পাশদিয়ে চলে গেলাম। রে'র মুখে কিছুটা চিন্তার ছাপ দেখলাম, আমি কিছুই বললাম না, আমার বলার মত অবস্থা ছিলনা তখনও। নিজের মনটাকে শক্ত করতে চাইলাম। রে'কে কোন কারনে অশান্ত মনে হল। খুব মনযোগ দিয়ে ড্রাইভিং করছে।

আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, 'আমরা কোথায় যাচ্ছি না বললেও কেনো যাচ্ছি সেটা বল'। ও আমার অধৈর্য মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল, ওর হাসিটা আমার খুব প্রিয়। আমার হাসতে অনেক ভালো লাগে, আমি অনেক বেশি হাসি সবসময়! তবুও ছোট বেলায় যখন আমি মন খারাপ করে থাকতাম, তখন ও হাসি এনে দিত, যেভাবেই হোক। ও বলল, 'আমাদের ফলো করছে যারা, তারা কিন্তু সাংবাদিক। ' 'কি বলিস?' আমি পেছনে ফিরতে ফিরতে বললাম, আমার মাথায় এতক্ষন এটা আসেনি।

'তোর আজ কোন কিছুতেই মন নেই, তাই খেয়াল করিসনি!' রে বলল। 'হুমম, আজকে কোন কিছুই লক্ষ করছিনা করলে,' কথাটা আমাকে যদিও শেষ করতে দিলনা ও, থামিয়ে বলল 'আবার শুরু করিসনা, ওটা তোর দোষ ছিলনা। আর এক্সিডেন্টতো মানুষেরই হয়। এখন বল কোথায় যাবি? আমাদের অবশ্য কিছুটা সময় হাতে আছে পথে ঘোরার জন্য, ওদের পিছন থেকে সরাতেঘবে, কোন দিকে যাবো বল?' আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম, মুখে কোন দুশ্চিন্তার চিহ্ন দেখলাম না এবার, তাহলে কি শেষবার ভুল দেখেছিলাম? নিজেকে নিজেই জিজ্ঞেসা করলাম। 'কিরে, কি দেখেই যাচ্ছিস, আমাকে সুন্দর লাগছে বলতেও ঈর্ষা হচ্ছে নাকি আজকে,' বলেই হাসতে শুরু করল রে।

আমার চিন্তার সুতা ছিড়ে কয়েক খন্ড হল ওর কথা শুনে, হাসি চাপিয়ে রাখতে পারলাম না! আমার মুখে হাসি দেখে ও মনে হয় সস্তি পেল, একটু হেসে নিয়ে বলল 'যাক, ওরা আর ফলো করতে পারছেনা, এরা একেবারে সুপার-গ্লু এর মত পেছনে আটকে থাকে!' 'কিন্তু তুই কিভাবে বুঝলি ওরা সাংবাদিক?' অবাক হয়েই আমি বললাম, আমার ব্রেইন কাজ করছিলনা মনে হচ্ছিল, তাই ভাবনার ভারটা না নিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করে ফেললাম! ও হেসে বলল, 'আমরা গাড়িতে ওঠার পর অনেকক্ষন ধরেই ওরা পিছলে লেগে ছিল, তখনই বুঝতে পারলাম সাংবাদিকের গাড়ি, কেননা ওইরকম একটা গাড়ি আমাদের পিছনেই বের হয়েছিল। সুতরাং বুঝা উচিত!' আমি অন্যপাশে তাকালাম, আজ বাসায় ফিরে যাবার পর কি হবে জানিনা। গাড়ির প্রয়োজন এখন অনেক, তাছাড়া আপুর মানসিক অবস্থাও ভালো হবার কথা না। 'শায়ানপুকে ফোন দিয়েছিলি?' আমাকে জিজ্ঞাসা করল। 'না' একটা শব্দই আমি বললাম, বিতৃষ্ণা নিয়েই বললাম।

আপুকে ফোন করে কোন লাভ নেই, পরোক্ষভাবে সেটা জানে রে, তবুও প্রশ্নটা করল, আমি বিরক্ত হয়ে অন্য দিকে মুখ ফেরালাম। বহুক্ষন আমরা কেউ কথা বলিনি। উত্তাল সুরের গান শোনা ছেলেটা আজ বিরহের গান শুনছে, অবাক হলাম না। মানুষ বিরক্ত হলে, দুঃখ পেলে অনেক কিছু করে। আমি শুধু শুনে গেলাম গানের কথাগুলো।

ধিরে ধিরে আমাদের ক্লিয়ার লেকের পাশের রোডে চলে আসলাম। লেকের পানিতে তখন রৌদ্র ঝলমল করছে, বাতাস জড়িয়ে ধরল আমাকে গাড়ি থেকে নামতেই। ওকে দেখলাম আগের চেয়ে একটু বেশি সহজ হয়ে উঠছে। আমরা লেকের উপরে তৈরি করা ছোট ব্রীজটার মাঝে দাড়িয়ে ছিলাম। চারপাশে তেমন কেউ ছিলনা।

সামনে অনেক বিশাল একটা লেক, তার পাশে কয়েকজন মানুষ, পিপড়ার মত মনে হচ্ছিল নিজেদের। রে আমার দিকে 'তাকিয়ে বলল, তোকে অনেক কিছু বলার আছে। ' আমি ওর দিকে তাকালাম, দেখে মনে হল অনেক সিরিয়াস কিছু বলবে, তাই হাসি পাচ্ছহিল। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি সবকিছুতেই ওর একটা তাচ্ছিল্য ভাব, আর ও চাইলেও কেনো যেনো সিরিয়াস হতে পারেনা। তাই আজ এই সিরিয়াসনেস খুব হাস্যকর লাগলো।

আমি হাসি চাপাতে পারলাম না, তবে নিঃশব্দে হাসছিলাম। ও প্রথমেই আমাকে জিজ্ঞেসা করল 'আচ্ছা আমাকে তোর কেমন লাগে?' আমি ওর প্রশ্ন শুনে একটু গম্ভীর্য আনার চেষ্টা করলাম মুখে, পারলাম না। রে আমাকে দেখছিলনা বলেই রক্ষা, নাহলে ক্ষেপে যেত হাসি দেখে। খুব পাগল স্বভাবের ও, কেউ সিরিয়াসলি কথা বললে হেসে উড়িয়ে দিবে, অথচ ও সিরিয়াস হয়ে কথা বলার সময় কেউ হাসলে রেগে যায়! আমি বললাম, 'তোকে ডিভা মনে হয়, খুশি?' ও আমাকে উদ্দেশ্য করে আরো সিরিয়াসলি বলল, 'আচ্ছা, বলত তুই আমাকে ভালবাসিস নাকি? মিথ্যা বলবিনা একদম!' আমি হাসলাম আবার নিঃশব্দে, বললাম, নিশ্চয়ই বাসি, কে বাসবনা বলত?' পাগলটার প্রশ্নের ধরন দেখে অনেক মজা পেলাম। কি বোকার মত প্রশ্ন করছে, বন্ধু কি বন্ধুকে ভালবাসবেনা? এটা আবার জিজ্ঞেসা করার কিছু হল? বন্ধুত্বটাইতো ভালবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ, কেয়ার এইরকম হাজারো আইডিয়ার সমন্বয়! ও আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে থাকলো, ওর চোখে তৃপ্তি দেখলাম।

কেমন যেন অবাক লাগলো, মনে হল আমি যা ভাবছি, ওকি ভাবছে? প্রশ্নটা করতে যাবার আগেই দেখলাম ও কি বলতে উদ্যত, ওকে তাই সুযোগ দেবো ভাবছিলাম। ওকে প্রশ্নটা করলাম না। বললাম, 'আচ্ছা বলত ছেলেদের কি ভালো লাগে?' রে হাসলো আমার অজ্ঞতা দেখে। আমিও হাসলাম, তবে সশব্দে। রে বলল, 'হটাৎ এই প্রশ্ন করছিস কেনো?' আমি হেসে জো এর কথা বললাম।

জোকে আমার অনেক ভালো লাগতে শুরু করেছে, কিন্তু কি করে ওকে বলব বুঝতে পারছিলাম না। জো খুব চুপচাপ স্বভাবের ছেলে! কিন্তু রে কিছুই বলছেনা যা! ও অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আছে, আমি ভাবলাম হয়ত আমার পাগলামি দেখে হাসছে। তখনই ফোনটা বেজে উঠল, আপুর ফোন! আপু বলল 'জেন, বাসায় তারাতারি আস, আমার অনেক দরকার তোকে এখন!' আমি আর অপেক্ষা করলাম না, রে'কে বলেই চলে আসলাম। রে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু লেকের পাশেই অর্নিকে দেখে আমি ওকে বললাম আমি বাসে চলে যাব। অর্নি মেয়েটা খুব ভালো, অনেক ফ্রেন্ডলি আর রে'কে অনেক পছন্দ করে।

ওদের মধ্যে কথা হওয়া উচিত, তাই রে'কে ওর সাথে রেখে চলে আসলাম। আমার বাডিটের একটা কেউ থাকা উচিত যাকে নিয়ে ভাবা যায়, যেমন আমার আছে জো! কিন্তু রে'কে জীবনে এই প্রথমবার কেন যেন এক্সাইটেড মনে হলনা! হয়ত আমার বোঝার ভুল, ও হয়ত এক্সাইটমেন্ট প্রকাশ করতে পারছেনা লজ্জায়! আপু আবার টেক্সট পাঠালো, 'জেন, আমি প্রেগনেন্ট, এখন কি করা যায় বলত? আমি ভাবছি অ্যাবরশন করব, এই সন্তান আমার চাইনা!' আমার মনে হল আমার সমস্ত শরীরে একটা অন্যরকম অনুভুতি আসল, আপু আবার টেক্সট পাঠিয়েছে, আমি কি বলব ভাবছি, কিছু বলতেই হবে! আমার বলাটা এখন জরুরী! (চলবে) ভালো থাকুন! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।