আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০১২

ছোটবেলা থেকেই ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করি। একটু বড় হয়ে এর সাথে যুক্ত হ’লো পড়া ও লেখালেখি, তারপর ফোটগ্রাফি। আর মাত্র সাত মাস, তারপরই ভয়াবহ মৃত্যু। হ্যাঁ পাঠকবৃন্দ, প্রাচীন মায়া সভ্যতার মায়ানদের কথা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বরই হচ্ছে অত্যাধুনিক এই যুগের সমাপ্তি। জ্যোতির্বিদ হিসেবে মায়ানদের সুখ্যাতি ছিলো, আর তারাই ভবিষ্যত বাণী করেছে পৃথিবীর শেষ দিন অর্থাৎ end of the world হচ্ছে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর; এইদিন পৃথিবীতে নেমে আসতে পারে এক মহাবিপর্যয়।

তারও আগে ২০১২ সালেরই ৩ আগস্ট সারা পৃথিবীতে ৩টি ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১২ সালের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক ধরনের যুক্তি পাওয়া যায়। যদিও এর পক্ষের যুক্তির পরিমাণটাই বেশি। আসুন জেনে দেখে নিই এর পক্ষের ও বিপক্ষের যুক্তিগুলো। তবে মনে প্রাণে প্রার্থনা করছি যেন এই ভবিষ্যত বাণী ভুল প্রমাণিত হয়।

কেননা এত তাড়াতাড়ি মরে যাবার ইচ্ছে আমার নেই। পৃথিবীতে বরফ যুগের ম্যামোথ থেকে শুরু করে ডাইনোসোর এরা প্রত্যেকেই ধ্বংস হয়েছে। পৃথিবীতে কোনো কিছুই স্থায়ী নয় এমনকি আমরাও না। ২০১২ নিয়ে আমরা অনেকেই কম বেশি জানি। অনেকেই জানি সুপার হিট ফিল্ম ২০১২ এর কথা।

কিন্তু এই ফিল্মও ২০১২ এর সতর্ক বাণী স্বরূপই তৈরি করা হয়েছিল যা কিনা পরে মুভি ইন্ড্রাস্ট্রিতে ফিল্ম হিসেবেই প্রকাশ পায়। কী সর্বনাশ ! ২০১২ এর তৈরির পিছনে মায়ান ক্যালেন্ডার এর ভূমিকা ছিল। সম্প্রতি মায়া সভ্যতার চান্দ্রবর্ষ পঞ্জিকার সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। গুয়েতেমালার ঘন জঙ্গলে লতাপাতার নিচে চাপা পড়া একটি ছোট বাড়ির দেয়ালে লেখা ওই পঞ্জিকা পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে অঙ্কনচিত্র এবং জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক আঁকিবুকিও দেখতে পাওয়া গেছে দেয়ালে।

এই অঙ্কনশিল্প এবং পঞ্জিকা নবম শতাব্দির শুরুর দিকে মায়া সভ্যতার সবচেয়ে পুরনো নিদর্শন বলে ধারণা করা হচ্ছে। । মায়া সভ্যতার পঞ্জিকায় ২০১২ সালে পৃথিবীর অবসান ঘটার পূর্বাভাস রয়েছে এমন দাবির প্রেক্ষিতে এ পঞ্জিকাগুলো সম্প্রতি গুরুত্ব পাচ্ছে। অনেকেই বলে থাকেন পৃথিবী শেষের দিনটি হচ্ছে ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর। ঠিক এমন একটি সময়েই গুয়েতেমালার জুলতানে মায়া সভ্যতার সবচেয়ে পুরোনো পঞ্জিকা আর অঙ্কনশিল্পের নতুন এই ভাণ্ডারের সন্ধান মিলল।

এ পঞ্জিকাটিতে ৭ হাজারেরও বেশি সময় পরের হিসাব-নিকাশ করার চেষ্টা চলেছে চক্রাকার জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক চিহ্ন দিয়ে। সংশ্লিষ্ট গবেষকদের মতে, ২০১২ সালের ডিসেম্বরের ওই দিনটি মায়াদের নতুন একটি বর্ষপঞ্জি শুরুর দিন। যাকে মায়ানদের ভাষায় ‘বাকতুন’ বলা হয়। তারা বলছেন, মায়াদের বর্ষপঞ্জিতে ব্যাপক সময়ের ধারণা দেওয়া আছে। মায়ারা শত কোটি, লক্ষ কোটি ও কোটি কোটি ভবিষ্যৎ বছরের উল্লেখ করেছেন যা আমাদের মাথায় ঠিক ধরে না।

মায়ান ক্যালেন্ডারে ২০১২ এর পর আর ২০১৩ আসে নি, তারা আবার ১, ২, ৩ এভাবে গুনে গিয়েছে। তারা ২০১২ এ বিশাল ধ্বংসের কথা বলেছেন যাতে কিনা সভ্যতার ধ্বংস হবে এবং নতুন সভ্যতার উত্থান হবে। অনেকেই বলেন ২০১২ তে নাকি পৃথিবী ধ্বংস হবে. এটা একটা ভুল ধারণা। ২০১২ তে যদি কিছু হয় তাহলে বড় রকমের বিপর্যয় হতে পারে যার ফলে পৃথিবীর ৯০% মানুষই মারা যাবে। মায়ানরা যেটা দেখেছিল তা ছিল একটি গ্রহ।

তারা দেখেছিল এই বিশাল গ্রহটি তাদেরকে আচ্ছাদিত করছে। এর তুমুল গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স এর প্রভাবে সুনামি আঘাত হানার ফলে ওদের সভ্যতা ধ্বংস হল। তাই তারা এই গ্রহটির নাম দিয়েছিল নিবিরু (nibiru) বা ধ্বংসকারী। খুব ছোট অংকের মাধ্যমে তারা গ্রহের আসা যাওয়ার গণনা করতে পারত। ওরা এতটাই উন্নত ছিল যে ওরা জানত পৃথিবীর কক্ষপথ অনেকটা গোলাকার।

তারা আরো জানত পৃথিবীর সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে আসতে ৩৬৫ দিন লাগে যা আমরা কয়েক শতক আগেও জানতাম না। ওদের মধ্যে যে কেউ ভবিষ্যত গণনা করতে পারত। স্বল্প সংখ্যক যারা বেঁচেছিল তারাই তাদের ভবিষ্যত গণনা করে বলেছিল এই নিবিরু আবার ২০১২ তে আসবে যার ফলে ভয়াবহ দুরাবস্থার দেখা দিবে। অনেকে ধারণা করেন এই আদিম মায়ানরাই হল পবিত্র কুরআন এ বর্ণিত নুহ নবীর উম্মত যাদেরকে মহাপ্লাবন দ্বারা ধ্বংস করেছিলেন। যাই হোক এ নিয়ে বলতে শুরু করলে সারা দিন লেগে যাবে।

এখন আধুনিক সভ্যতার প্লানেট এক্স আবিষ্কার এবং নাসা আমেরিকা ইউরোপ এর ষড়যন্ত্রের কথা বলব. প্ল্যানেট এক্স (নিবিরু) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১৯৮৩ এর গোড়ার দিকে সৌর সিস্টেম এর বাইরের দিকে আবিষ্কার করে। ১৯৮৩ সালে নাসার ইরাস (IRASও-ইনফ্রা অ্যাস্ট্রোনমিকাল উপগ্রহ) সৌরজগত এর শেষ দিকে বৃহস্পতি এর মত বড় কিছুর উপস্থিতির কথা বলে । যা ১৯৮৩ এর টাইমস পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়। সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জোসেফ ব্র্যাডি আবিষ্কার করেন কোনো অপরিচিত গ্রহ (প্ল্যানেট এক্স) হ্যালির ধুমকেতুর কক্ষপথের মহাকর্ষিক সমস্যার কারণ। জোতির্বিজ্ঞানিদের গাণিতিক হিসাব এটা প্রমাণ করে যে, এই অপরিচিত গ্রহের ভর পৃথিবীর ৫ গুণ বেশি।

এ সম্পর্কে মহাকাশ বিজ্ঞানী যেচারিয়া সিচিন (zecharia sitchin) এর একটি বক্তব্য না বললেই নয় ১৯৭৮ সালে তিনি বলেন, “আমাদের সৌরজগতে ৯টি গ্রহ নয় যা সর্বজন কর্তৃক গৃহীত বরং ১০ টি গ্রহ। ” মূলতঃ বিশাল এই বস্তুর কারণেই যে প্লুটোর অরবিট পরিবর্তিত হয় এবং প্লুটো তার গ্রহের মর্যাদা হারায়। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা তা কোনো অজানা কারণে আংশিক প্রকাশ করেন (বর্তমানে প্লুটোকে kuiper beltএর অংশ বলা হয়) অনেকে একে বাদামি তারা বলেছে, অনেকে বলেছেন ব্যর্থ তারা, অনেকে বলেছেন ধুমকেতু। অনেকে বলেছেন ১০তম গ্রহ, অনেকে ১২তম গ্রহ। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল এর ভর বৃহস্পতির চেয়েও বেশি।

এর অরবিটও অন্য ধরনের। এর এক অরবিট সম্পন্ন হয় প্রায় তিন হাজার ছয়শ বছরে। ধর্মীয় ইতিহাস অনুযায়ী সত্যি সত্যি যদি তিন হাজার ছয়শ বছর আগে নুহ এসে থাকেন তাহলে এর পরের বার পৃথিবী ভ্রমণ অতি নিকটেই। আবারো বলছি যে এটি এর আগেও কখনো পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষ করে নি এই বার আসলেও করবে না। মূলতঃ এর তুমুল গ্র্যাভিটির কারণেই পৃথিবীর নর্থ পোল আর সাউথ পোল ঘুরে যাবে ফলে সূর্য পশ্চিম দিকে উঠবে যা ইসলাম ধর্মে ১৪০০ বছর আগেই বর্ণিত হয়েছে।

এর ফলে পৃথিবীর ৯০% মানুষ মারা যাবে বলে ধারণা করা হয়। নর্থ পোল ও সাউথ পোল ইতিমধ্যে সরতে শুরু করেছে। ২০০৪ সালে সূর্যে বেশ কয়েকটি সৌরকলঙ্ (dark spot) সৃষ্টি হয় যার ফলে যে সৌরঝড় (sun storm) এবং যে পরিমাণ রেডিয়েশন হয়েছিল তা আমাদের ম্যাগনেটিক পোলগুলো সহ্য করতে পারে নি। আর ঐ দিন পৃথিবীর সুমাত্রাতে ৯.২ রিকটার স্কেলের ভয়াবহ সুনামিসহ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছিল, ঐ দিন ইন্দোনেশিয়াতেও সুনামি হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায় সৌরকলঙ্কের সাথে পৃথিবীর ভূমিকম্পের সম্পর্ক রয়েছে।

এই রেডিয়েশন আমাদের মাটির অভ্যন্তরের আন্দোলনকে সক্রিয় করে। এবার আসুন আমেরিকার নাসার এবং ইউরোপ এর ষড়যন্ত্রের কথা জানি। প্ল্যানেট এক্স আবিষ্কার- এর পর নাসা ও ইসা (esa-european space agency ) প্রথমে নিবিরু-এর সত্যিকারের ছবি প্রকাশ করলেও তারা এখন এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। এখন গুগল স্কাই এ নিবিরু তথা প্ল্যানেট এক্স এর অবস্থান কালো অংশ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। যে কেউ দেখলে বুঝবে এখানে এমন কিছু ছিলো যা তারা দেখতে দিচ্ছেন না।

কেউ কি ভেবে দেখছেন ওরা কী লুকাতে চাচ্ছে ? ওরা ভাবছে মহাবিপর্যয়ের এই তথ্য প্রকাশ পেলে পৃথিবী জুড়ে যে বিশৃঙ্খলা তা সামলানো ভীষণ মুশকিল হয়ে পড়বে। অথচ না জানালে বিশৃঙ্খলা যে আরো বাড়বে এইটা ওরা বুঝতে পারছে না। ইদানীং আমেরিকা এবং বিভিন্ন এলাকার গোপন বাজেট এর কথা শোনা যাচ্ছে। আমেরিকা তাদের অনেক নিরাপদ জায়গায় আন্ডারগ্রাউন্ড বেস (যার সংখ্যা আনুমানিকভাবে ১৩২ এর চেয়েও বেশি) বানাচ্ছে। নিরাপদ এই কারণে ভাবছে কারণ এই সব এলাকায় ভূমিকম্প বা যে কোনো দুর্যোগ মুক্ত বলে তাদের ধারণা।

এটি একটি গোপন প্রজেক্ট। এমনকি আমেরিকান মানুষদেরও সেখানে প্রবেশাধিকার নেই। এর নাম হলো ডামবস প্রজেক্ট (D.U.M.Bs- deep underground military bases )। এই বেসগুলোতে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার মজুদ রাখাসহ সেখানে বৈজ্ঞানিকভাবে মাটির নিচে খাবার যাতে উৎপাদন করা যায় তার ব্যবস্থা করছে। এটি একটি সম্মিলিত প্রজেক্ট।

বিভিন্ন উন্নত দেশ এর সাথে গোপনভাবে যুক্ত। রাশিয়া-আমেরিকা চিরন্তন শত্রু হওয়া সত্ত্বেও ওরাও এটার সদস্য। সাথে আছে ইউরোপ এর বিভিন্ন দেশ। ওরাই বলেছে “আমরা আসন্ন মহাদুর্যোগ-এ সবাইকে বাঁচাতে পারব না, আমরা শুধু তাদেরকেই বাঁচাব যাদেরকে আমাদের দরকার ”। এমনকি SPT (south pole telecope ) এর সব উপাত্ত গোপন রাখা হয়েছে।

যদিও সত্যিকারের বিপর্যয় শুরু হওয়ার আগ-মহূর্ত পর্যন্ত আমি নিজেও কখনও ১০০% বিশ্বাস করবো না যে, ২০১২-ই হবে পৃথিবীর শেষ, তবুও এটা বিশ্বাস করি যে একটি মহা বিপর্যয় অতি সন্নিকটে, ঘটবেই, এতে কোন সন্দেহ নেই। সত্যিই সবাই হারিয়ে যাবো, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ভূ-ভাগ। দেখতে ভালো লাগবে অন্ততঃ আসন্ন মৃত্যুর কথা মাথায় রেখে এই পৃথিবীর সব দুর্নীতি- সন্ত্রাস, মামুলি ধন-সম্পত্তি নিয়ে হানাহানি-চক্রান্ত, খুন-রাহাজানি বন্ধ হয়ে যাবে, ধ্বংস-পূর্ব এই বসুন্ধরা আবারো নিঃষ্কলঙ্কময় হয়ে উঠবে। সূত্র : ইন্টারনেট ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.