আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আস্তিকতা না নাস্তিকতা ঃ বুদ্ধিমানদের কোনটা !!! ???

আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে পাড়ি জমিয়েছি বিদেশে জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে। আসলেই কি জ্ঞান বাড়ছে, নিজেকেই প্রশ্ন করি মাঝে মাঝে !! নাস্তিকরা তো বটেই, মাঝে মাঝে আস্তিকরাও না বুঝে কথা বলে। একটা বিষয় আস্তিক-নাস্তিক সকলকেই মানতে হবে যে মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে সমাজ গঠন, সামাজিক নিয়ম কানুন পালন সর্বোপরি সমাজের আর দশ জনের মাঝে মিলে মিশে থাকার মত একটি সুন্দর ও সমাধানমূলক জীবনচিত্র আছে শুধুমাত্র ধর্মে। সৃষ্টিকর্তা আছেন বা নেই তার উত্তর তিনি নিজেই দিবেন বলেছেন যা আমরা কয়েকটি ধর্ম গ্রন্থের (কুরআন ও বাইবেল এই দুটিতে) মূল আলোচনায়ই পাই।

পরকালে সৃষ্টিকর্তার আত্বপ্রকাশে ইতিবাচক উত্তরও দিচ্ছে ধর্মগ্রন্থগুলো। সুতরাং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোন প্রয়োজন আছে কি ? প্রতিটি ধর্মেই আছে মিথ্যা না বলার কথা, হিংসা না করার কথা, অহংকার না করার কথা, মানুষের কল্যানে নিবেদিত হওয়ার কথা, ঝগড়া-ঝাটি না করার কথা, মানুষকে উপকার করা-উপকার করতে না পারলে ক্ষতি না করার নির্দেশনা, দরিদ্র/গরীব মানুষ দান করার কথা, বাবা মা-কে শ্রদ্ধা করা-মান্য করা, মুরুব্বীদের মান্য করা, মা বোনদের সম্মান করার কথা, আপন মা আথবা বোনের সাথে যৌন কর্মে লিপ্ত না হওয়ার নিদেশনা ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। কোনটি ভাল, কোনটি মন্দ এই শিক্ষাও মানুষ ধর্ম থেকে পায়। যা সবদিক বিবেচনায় সমাজের কল্যান ছাড়া সামান্যতম অকল্যানও করছে না। কিন্তু ধর্মীহীন নাস্তিকদের মতবাদে মঙ্গলময়, কল্যানকর কোন আলোচনা থাকে না, আন্তত আমি কখনোই শুনিনি।

ধর্ম আমাদের ভাল থাকতে বাধ্য করে শেষ বিচারের কথা বলে (বৌদ্ধ ধর্ম ও এ জাতীয় কয়েকটি ধর্ম বাদে)। শেষ বিচার হোক বা না হোক এটা অবশ্যই অবশ্যই প্রশংসনীয়। অন্যথায় মানুষ একটা আন্যায় কাজ করতে দ্বিধা করবে না, একজন আরেকজনকে ক্ষতি করতে পরোয়া করবে না। মানুষ হত্যাকেও মানুষ ভয় পাবে না। আর্থ্যাৎ সমাজে একটা বিশৃংখলা সৃস্টি করার জন্য ধর্মীহীনতাই যথেষ্ট।

অন্য কোন কারণ দরকার নেই। ধর্ম আছে বলে বিয়ের প্রথা আছে। আমরা সন্তানরা বাবার পরিচয় পাই, আদর ভালবাসা মায়া পাই, বাবার যত্ন পাই। আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে বাবার আর্থিক, মানসিক, এক কথায় সার্বিক সহযোগীতা পাই। ওয়ারিছ সূত্রে বাবার সম্পদ পাই।

অন্যদিকে অসভ্য সমাজের মেয়েরা/জংলী মেয়েরা/ধর্মহীন সমাজের মেয়েরা বিয়ের প্রথা না মানায় সন্তানকে তার বাবার পরিচয় দিতে পারে না। শুধুমাত্র জন্মতেই কি মানুষের সার্থকতা ?? তার কি আর কিছুই প্রয়োজন নেই ?? লিখতে গেলে অনেক আলোচনা করা দরকার, যা পাঠকদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। যা হোক, সকলের স্বচ্ছ চিন্তাকে উদ্দেশ্য করে বলছি ধর্ম মানুষকে একটি নিয়মের মাঝে রাখে, একটি সুশৃংখল জীবনের পথ দেখায়। ধর্ম একটি গুছানো জীবন ব্যবস্থা। ধর্মহীনতা শুধুই অন্ধকার।

সেখানে কোনই নিয়ম নেই, কোন জীবন নেই। ধর্ম অস্বীকারকারী নাস্তিকরা কোন ধর্মই মানে না, ধর্মীয় নিয়ম কানুনও মানে না, ধর্মীয় আইনও মানে না-সেমতে চলেও না। আবার তাদের নিজস্ব কোন নিয়ম কানুনও নেই। এক কথায় সমাজবিজ্ঞানের থিউরী অনুযায়ী একটি অসামাজিক, বর্জিত মতবাদের নাম ধর্মহীন নাস্তিক মতবাদ। সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর একটি মতবাদের দোহাই দিয়ে সমাজ ত্যাগ, সামাজিক নিয়ম কানুন ত্যাগ সুস্পস্ট বোকামী ছাড়া আর কি হতে পারে !! ধর্মহীন নাস্তিকতা নিয়ে তখনি চিন্তা করা যেতে পারে যখন অন্য কোন সমাধান না থাকলেও অন্তত গ্রহনযোগ্যতার সাথে সমাজে মিশে থাকার স্পস্টতা এই মতবাদে থাকবে।

এর আগে ধর্মহীনতার চিন্তা শুধুই একটি বিকৃত মস্তিস্কের ভ্রান্ত চিন্তা। আমি প্রাথমিক জীবনে শিক্ষাগত ও পরবর্তীকালে পেশাগত কারনে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ধর্মের লোকদের সাথে মিশেছি বর্তমানেও মিশছি। শুধু যে বাংলাদেশেই তা নয় উন্নত প্রায় অনেক দেশের আস্তিক-নাস্তিকদের সাথে মিশতে হচ্ছে। আমি যেটা পেয়েছি তা স্পস্ট, ৯০ ভাগ ধর্মই একটি নিয়মে বাঁধা। অন্যদিকে নাস্তিকদের সাথেও মিশতে হয়েছে অনেক।

তারা ধর্ম মানে না বলে তাদের কোন নিয়ম নেই, তারা যে কিভাবে কি করবে তা তারা নিজেরাও বুঝে না। কোন সৃস্টিকর্তা মানে না বলে তারা সৃস্টিকর্তা প্রদত্ত ধর্মীয় আইনও মানে না। সকলের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে যে ধর্মকে মানুন, শ্রদ্ধা করতে শিখূন। প্রায় প্রতিটি ধর্মেই জন্মের পর থেকে মৃত্যূ পর্যন্ত প্রতিটি নিয়ম গাথা আছে। একজন নাস্তিক মারা গেলে তাকে কি কবর দেয়া হবে, না পুড়িয়ে ফেলা হবে তার উত্তর সে দিতে গেলেই তাকে ধর্মের আওতায় চলে আসতে হবে।

কেননা তাদের মতবাদে এর কোন উত্তর নেই। প্রতিটি গুরুত্বপর্ণ জিজ্ঞাসায় তাদের এই একই আবস্থা হবে। তারা যে কতটা অসহায় একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায়। সমাজে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা আস্তিক নাস্তিক দু'ধরণের সমাজ বিজ্ঞানীদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সকলের প্রতি আমার অনুরোধ ধর্মীয় নিয়ম-কানুন পরিপূর্ণ পালন করতে পারেন বা না পারেন ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন।

একটি নিয়ম একটি বিধান একটি সমাজব্যবস্থা আপনাকে, আপনার পরিবারকে ছায়া দিবে। আপনার সন্তানরাও একটি নিয়মের মাঝে বড় হবে। সন্তানদের ধর্মহীনতা শিক্ষা দিলে হয়তো সে ধর্মহীনতার দোহাই দিয়ে তার আপন মা বা বোনের সাথেও যৌন মিলনে যেতে চাইবে (উন্নত বিশ্বের ধর্মীহীন সমাজে এটা সচরাচর দেখা যায়। ) শুধুমাত্র ধর্মই এ ধরণের ঘৃনিত-বর্জনীয় হাজারো কাজে বাধা দিবে। ধর্মহীনতা পরিহার করুন।

আর সৃষ্টিকর্তা আছেন কি নেই এটা সময়েই দেখা যাবে। যেহেতু ধর্মগ্রন্থ বলছে সৃষ্টিকর্তা শেষ বিচারে নিজেকে প্রকাশ করবেন; তাই এই সিদ্বান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সৃস্টিকর্তা থাকলে নাস্তিকরা কঠিন কঠিন বিপদগ্রস্থ, আর সৃষ্টিকর্তা না থাকলে আস্তিকদেরও কোন সমস্যা নেই নাস্তিকদেরও কোন সমস্যা নেই। তাই কোন ভাবেই ধর্মহীন হওয়া যাবে না। ধর্মহীনতা মানে নিজেকে সমাজহীন করা, নিজেকে নিয়মহীন করা, একটি অনুমান নির্ভর মতবাদে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়া, নিজ সন্তানদের পরিত্যজ্য আবস্থায় সমাজে ফেলে যাওয়া।

সর্বোপরি নিজেকে একটি অমীমাংসিত বিষয়ের উপর ছেড়ে দেয়া। "নিউট্রিনো" "সমাধানহীন আস্তিকতা-নাস্তিকতা" "হাজার বছর পরের বিজ্ঞান" ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.