আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি কনডমের আত্ন কাহিনী (কিঞ্চিত আঠারো প্লাস)

যদিও তুমি ধ্রুবতারা তবুও আমি দিশেহারা হেলো এভরিওন!!! আমি একজন কনডম ছিলাম। এখন আর পরিপূর্ন নই। আমার অস্তিত্ব বিলিনের পথে তাই অন্তিম সময়ে নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছে করছে ভিষন। আমার জন্ম হয় বাংলাদেশের যশোরে, আমি একজন ল্যাটেক্স বংশোদ্ভুত হিরো প্রজাতির কনডম। জন্মের পরে পৃথিবীর একটুখানি আলো দেখিয়েই আমাকে একটা অন্ধকার ঘরে নিয়ে ফেলা হয়।

কিছুক্ষন পরেই স্থান্নতরিত হলাম। সম্ভবত একটা বড় ঘরে আমাকে আমার আরো কিছু সহোদরের সাথে রাখা হল। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছিলাম বটে, তবে বাইরের জগত থেকে বিছিন্ন ছিলামনা, শব্দ শুনতে পেতাম। পৃথিবীকে শুনতে পেতাম। সময়ের হিসেব জানিনা, একসময় গুঞ্জনের মধ্যে এসে পড়লাম, হরেক রকম আওয়াজ, হরেক রকম কথা।

এরপর আমাদের ঘরটা কেউ একজন উঠিয়ে নিল, তারপরে বলল, “ মে বাই এই গুলা আমার ভাগের তুমি ওইডি ন্যাও। কেউরে কইওনা কইলাম। এক কানেরতোন পাচ কান, শ্যাষে ঝামেলা” উত্তর আসল “আরেহ না ওই নিয়া ভাবিস না, যাউকগা, তুই দিবি কার কাছে?” আমিতো দিমু উপল ডাক্তারের দুকানে। ওই সবচাইতে ভাল দাম দেয়। হু, তয় চল দুইজনে একলগে দিয়া যাই।

হু, চল। এরপর তারা আমাদের নিয়ে চলল উপল ডাক্তারের দোকানে, ওদের কথা বাত্তারা শুনে বুঝতে পারলাম একজনের নাম সলেমান আর একজনের নাম “মে বাই”। আরো বুঝতে পারলাম আমরা দূর্নিতির স্বিকার হয়েছি। ওরা চুরি করে আমাদের অন্য কারো হাতে তুলে দিতে যাচ্ছে। উপল ডক্তারের হাতে সহোদরদের অন্যান্য ঘরগুলি তারা দিয়ে দিল কিন্তু সলেমান নামের লোকটা আমাদের ঘরটা দিলনা।

ডক্তারের দোকান থেকে ফেরার পথে “মে বাই” নামের লোকটা সলেমানকে জিজ্ঞেস করল “ওই ঠোঙ্গা রাখছত ক্যা?” ক্যা তুমি জাননা, আমি তো বিয়া করতাছি । গদগদ গলায় বলল সলেমান। আরিব্বাস, কামতো কইরালাইতাছস। একরাইতে সব শ্যাষ কইরালাবি, বাঘের মতন কুপাবি। সলেমান আরো গদগদ হয়ে বলল, “আলো ......... হ” সলেমান বাড়ি পৌছানোর পর কাকে যেন বলল, “আরে কিদা! ঘটক চাচা নি?” তারপর কদ্দুর কি? ঘটক চাচা নামের লোকটি বলল, তারপর কিছুই না।

মাইয়ার বাপ রাজি অয়নাই। হ্যায় কইছে কনডম মিলে কাম করা পোলার লগে, মাইয়া দিবনা। আর আমিও তুমার এই কাম আর করবার পারবনা। লোক-জন যহন জিগায় পোলায় কি করে। তহন সত্যি কথা কইতে নিজেরই শরম লাগে।

আমি আর এইর মইদ্যে নাই। সলেমান এইবার দুখি-দুখি গলায় বলল, “এইডা কি কইলেনরে চাচা! আমি আরো, কত আশা কইরা এক বাক্স কনডম নিয়া আইলাম, উপলের কাছে ব্যাচলাম না। এহন আমি এই এক বাক্স কনডম দিয়া কি করুমরে, ওরের, ওরেরে। আমি সলেমানের হামলায় কাদার শব্দ শুনতে পেলাম। বেচারার উপর খুব মায়া হল।

ঘটক চাচা একটু বিরক্ত হয়ে বলল, আরে কান্দ ক্যারে! কাইল যাইয়া উপলরে দিয়া আইও। আমি ওহন গেলাম। সলেমান কাদতে কাদতে বলল, চাচা, আপনে মেলা কষ্ট করছেন কিছুতো দিবার পারলাম না, এই কনডমের বাক্সডা নিয়া যান। চাচা বলল, আমার ওই জিনিষ লাগেনা মিয়া। পলিথিন মাথায় বাইন্ধা পানি ঢাললে মাথা ভিজব ? ভিজবনা।

আর মাথা না ভিজলে মাথা ঠান্ডাও হইবনা। তুমার জিনিষ তুমিই রাহ আরনাইলে উপলরে দিয়া আহো । সলেমান রাগে ক্ষোভে পরেরদিন আমাকে ঊপলের দ্যোকানে বিক্রি করে দিল। সেখানে পড়ে রইলাম দিনের পর দিন। আমাদের ঘর থেকে আমার অন্যান্য সহোদরেরা ক্রমে ক্রমে বিদায় নিতে লাগল।

আমি ছিলাম ঘরের শেষের দিকের কোনায় এইজন্য আমার দিকে হাত আসতে একটু সময় লাগল। অবশেষে একটা ছেলে এসে উপলকে বলল, “আমারে একটা “ই” দ্যান” উপল বলল “ই” কি? ছেলেটি আমাদের ঘরে একটা টোকা দিয়ে বলল এইগুলা। অবশেষে দ্বৈত কারাগারের একটি থেকে মুক্তি পেলাম। ছেলেটি আমাকে নিয়ে নাচতে নাচতে কোথায় যেন চলল। কিছুক্ষন পরে ফিস ফাস আওয়াজ পেলাম।

একটি মেয়ে বলল, প্রোটেকশন আনছ? ছেলেটি বলল আনছি বাট ওইটা ছাড়া মাত্র ২ মিনিট। মেয়েটি বলল এক সেকেন্ডও না। এরপর অনেক অনুনয় বিনয়, জান-জানি-জান্টুস ইত্যাদি। এবং তারপর সম্ভবত মেয়েটি ছেলেটির কথা মেনে নিল। এরপরে অল্প কিছু সময়ের বর্ণনা আমি দিতে পারবনা, শত হলেও “লজ্জা কনডমের ভূষন” বলে একটা কথা আছে।

একটু পরেই, সম্ভবত ৪০-৫০ সেকেন্ড পরেই মেয়েটি চেচিয়ে উঠল, এইটা তুমি কি করলা ? তোমার মত ঢিলা ছেলে আমি আর কোথাও দেখিনাই, লুজার কোথাকার। ছেলেটিও রাগী গলায় বলল, আমি লুজার এইটা মাইনা নিলাম বাট আমার মত আর দেখনাই মানে কি, আর কোথায় ট্রাই করছ ? এই নিয়ে এক-দুই-পাচ কথা এরপর ছেলেটি রাগে ফোস-ফোশ করতে করতে চলে এল। আমি আমার ঘরে আর তার পকেটেই থেকে গেলাম। ছেলেটি বাসায় ফেরার পরে একটা পিচ্চি ছেলে বলল মামা আমার চকলেট কই। মামা ঝাড়ি দিয়ে বলল, ঘ্যান ঘ্যান করিসনা যা, মেজাজ খারাপ।

পিচ্চি তবু চকলেট এর জন্য ঘ্যান ঘ্যান করতেই লাগল। শেষে মামা ছেলেটি উপায়ন্তর না দেখে, পকেট থেকে আমাকে বের করে ওর হাতে দিয়ে বলল, এইটা নিয়া ভাগ যা। পিচ্চি বলল, এইটা কি? মামা বলল, খুলে দ্যাখ কি। পিচ্চি টেনে হিচড়ে আমাকে ঘর থেকে বের করল। বের হয়েই আমি পিচ্চির মুখে শয়তানি হাসি দেখতে পেলাম।

ভাবলাম পোলায় হাসে ক্যান! তখনই পিচ্চিটা আমার মুখে মুখ দিয়ে আমার পেটের ভেতর বাতাস ঢুকাতে লাগল। আমি ফুলে ফেপে উঠতে লাগলাম। এরপর পিচ্চিটা আমাকে নিয়ে বাইরে বেরোলো। আরেকটা পিচ্চি মেয়েকে আমাকে দেখিয়ে বলল এই দ্যাখ ঝুটকুন্নি, আমি কি জিনিষ আনছি ! “ওই তুই আমাকে ইভটিজ করলি ক্যান ?” বলেই আমাকে ছেলেটির হাত থেকে আমাকে কেড়ে নিয়ে এক চিমটিতে ফাটিয়ে ফেলল শয়তানী মেয়েটা। এখন আমি ছিন্ন শরীর নিয়ে পথে পড়ে আছি।

দুঃখ, যে জন্য জন্মেছিলাম, সেই কাজেই লাগতে পারলাম না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.