আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোরাস গাওয়ার শখ

লিখে খাই, সবার ভাল চাই কি নিয়ে লিখবো? হত্যা, গুম, নিখোঁজ, সন্ত্রাস নাকি সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে? ঘুষ, দুর্নীতি, নাকি অনিয়ম নিয়ে? সফলতা, ব্যর্থতা নাকি জবাবদিহি প্রসঙ্গে? টেন্ডারবাজি, দলবাজি, চাপাবাজি নাকি ধান্দাবাজি নিয়ে? সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মন্ত্রিত্ব যাওয়া, আবার ফিরে পাওয়া নাকি, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ নিয়ে? বাংলাদেশে সমুদ্রবিজয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হচ্ছে গণসংবর্ধনা, অন্যদিকে মিয়ানমারে হচ্ছে সমুদ্রবিজয়ের ৭ দিনব্যাপী বিজয় উৎসব। কোনটি ঠিক? কোরাসবাজিও তো এখন চরম আকার ধারণ করেছে। কোরাস হচ্ছে নেতাকে নিয়ে, নেত্রীকে নিয়ে। দলকে নিয়ে, দলের কর্মসূচি নিয়ে। আসলে বিভক্তি সবখানে।

স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র থেকে শুরু করে সমাজ, রাজনীতিÑ কোথায় নেই বিভক্তি? যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তো মুখে মুখে। ঝগড়া, ফ্যাসাদ লেগেই আছে। তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে কথায় কথায়। আসলে কি হতে যাচ্ছে দেশে? পৃথিবীতে? পরিবেশ বদলে যাওয়ার পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে মানুষের মনও। প্রেম, ভালবাসা মানুষের জন্য নেই।

আছে যতটুকু তা প্রেমিকের জন্য, স্ত্রী-সন্তানের জন্য। পিতা মাতার ঠাঁইও নেই সেখানে। এ কোন বিশ্ব আজ দেখছে পৃথিবী। জগৎ-সংসার মুখ্য না হয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে অন্য কিছু। এখানেও স্বার্থ।

লোভ, লালসা মানুষকে ধ্বংস করে জানার পরও সবাই ছুটছে সেদিকে। চোখের সামনে দেখছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ রেখে মানুষকে কবরে যেতে হচ্ছে শূন্য হাতে। তারপরও কেন অর্থের লোভ ছাড়তে পারছে না মানুষ। এর পেছনে কাজ করছে কে? শয়তান? হয়তো তাই। কিন্তু এই শয়তানের হাত থেকে বাঁচার উপায়ও তো আছে।

তারপরও কেন আমরা ছুটছি শয়তানের পেছনেই? কেন বিবেককে জিজ্ঞেস করে পথ চলি না? পৃথিবী সৃষ্টির পেছনেও নাকি শয়তান কাজ করেছে? বেহেস্তে আদম আর হাওয়া তো সুখেই ছিল। মহাসুখে। এটা শয়তানের ভাল লাগেনি। তাই সৃষ্টিকর্তার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা শয়তানের পাল্লায় পড়ে গন্ধম খেয়েছিল। যার পরিণতিতে তাদের বেহেস্ত-ছাড়া হতে হয়েছিল।

এই শয়তান এখনও মানুষের পেছনে লেগে আছে। যে মানুষের মাধ্যমে শয়তানি কাজ করায়। এ সময় বিবেক মজবুত হলে শয়তান পরাস্ত হয়। না হলে শয়তানের জয় হয়। আবার ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে দেয়।

এ অন্ধত্বের সুযোগও নেয় শয়তান। সে গ্রাম্য মোড়ল হোক আর বাহিনী প্রধান হোকÑ সবার একই অবস্থা। সবচেয়ে বড় কথাÑ যুগে যুগে ক্ষমতাবানদের কাছে পছন্দের ছিল কোরাসবাজরা। যারা ক্ষমতাবানদের সব কাজের কোরাস গাইতেন। এখনও গাইছেন।

জি হুজুর নামের এ কোরাসবাজদের দাপট সবখানে। ভাল করলেও ভাল, চরম খারাপ হলেও তারা কোরাস ধরেনÑ ভাল হয়েছে সব ভাল। আর ক্ষমতাবানরাও কোরাসদের এ কোরাস শুনতে ভালবাসেন। সবার আগে তাই কোরাসবাজদের থেকে সাবধান থাকতে হবে সবাইকে। তাহলেই হয়তো অনেকটা নিরাপদে থাকতে পারবে সবাই।

দেশ, জাতিও মুক্ত হবে শয়তানের কবল থেকে। সেদিন কি কখনও আসবে এই বাংলাদেশে? গ্রামের কিছু লোক গেছেন বাজারে। গ্রাম থেকে বেশ ক’মাইল দূরে বাজার। যেতে হয় নৌকায় করে। সেদিন বাজার করতে করতে তাদের সন্ধ্যা হয়ে গেছে।

নৌকায় করে একসঙ্গে রওনা দিয়েছেন তারা। মাঝনদীতে যাওয়ার পর নৌকাতে ডাকাত দল আক্রমণ করেছে। ডাকাতরা বলে, এই নৌকা থামাও। এ নৌকায় গ্রামের এক বয়স্ক লোক ছিলেন। তিনি মনে মনে বললেন, আমাদের সব শেষ।

এখন কি করা? তিনি দাঁড়ালেন। ডাকাতদের উদ্দেশ্য করে বললেন, ভাইয়েরা আমার, তোমরা আমাদের কাছে যা আছে সবই নিয়ে যাও। কিন্তু এর আগে আমার একটা কথা শুনতে হবে তোমাদের। ডাকাত সর্দার বললোÑ তোমার আবার কি কথা? লোকটি বললেন, আমার বড় শখ হয়েছে একটি কোরাস গাওয়ার। ডাকাত সর্দার বললো, তাহলে শোনাও তোমার কোরাস।

এ ফাঁকে গ্রামের লোকটি ডাকাত ক’জন আছে গুনে নিয়েছে। দেখে ডাকাতের চেয়ে তারা সংখ্যায় একজন বেশি। তবে ডাকাত দলে একজন মোটা আছে। বৃদ্ধ কোরাস ধরলেন, এই জনকা জন ধর, মোটকারে দুই জনে ধর। কোরাস যদি এমন হয়, তাহলে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

আর যদি হয়, তালমেলানো তাহলে যা হওয়ার তা-ই হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।