আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবা!!! রাইটার্স ব্লক কে কাটাবে?

সময়ের সমুদ্রের পার--- কালকের ভোরে আর আজকের এই অন্ধকারে বাবা, তুমি জানো না। সাহিত্য নিয়ে তোমার সাথে কথা বলার শক্তি কোনকালেই ছিল না। তবুও বলি... কখনো যদি বই লিখি তার প্রথম উপন্যসটার উৎসর্গে লিখব... "একদিন বাবা আমাকে অবৈজ্ঞানিক কাজটা করতে বাধ্য করল। ছেলের বিপদ-আপদ কাটাতে ছেলের কোমরে একটা কালো রঙের ঘুনসী বাধল। ঘুনসীতে একটা সোনালী রঙের তাবিজ।

কড়া হুঙ্কারে নির্দেশ, ‘তাবিজ খুললেই চামড়া ছিলে লবন লাগানো হবে। ’ আমি বিপদে পড়লাম। চামরা ছিলে লবন লাগানোর বিষয়টাকে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে ঘুনসী খুললাম না। ছেলের বিপদ কাটল না। ঘুনসী লাগানর পরের দিনই তার সর্ব কনিষ্ট ছেলেটি বিপদে পড়ল।

উচু রাস্তার নিচে গড়িয়ে পড়লেই নিশ্চিত মৃত্যু। রাস্তার নিচেই ব্রীজ বানানোর জন্য রড আর ইটের স্তুপ। ছেলেটি পড়ে মরল না। ত্রিশ ফুট উচুতে একটা ছোট আগাছার গাছে আটকে রইল। অবাক বিস্ময়ে দেখল... কোমরের ঘুনসিটা আগাছাটিকে জড়িয়ে আছে।

এরপর বাবা-মার অবৈজ্ঞানিইক বিষয়গুলোকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করলাম। বইটির সাথে সাথে নিজেকেও বাবার জন্য উৎসর্গ করা হল। । " অবশেষে বুক থেকে পাথরটা সরে গেল। কয়েকশ টনের পাথরটা সরানোর জন্য কিনা-ই করলাম।

বাড়ীতে গেলাম। জঙ্গলে ঘুরলাম। নদীর নতুন ঘোলা জলে নাক চুবিয়ে ডুব দিলাম। বিপদ কাটল না। ঘরের দরজা লাগিয়ে কত যে কান্নাকাটি করলাম।

বারবার মনে হচ্ছিল মরে যাচ্ছি। মৃত্যু পথযাত্রীর বুক মনে হয় এমন কয়েকটন ওজনের পাথর বসে। অবশেষে নিঃশব্দে দাড়ালাম অসুস্থ বাবার সামনে। এক্সটেনসিভ হার্ট এটাক অসুস্থ বাবার সামনে দাড়ালাম। প্রতিদিন দুইটা করে ক্লোনাজিপাম খেয়ে বাবা ঘুমাচ্ছিল।

সামনে দাঁড়িয়ে ঝুম মেরে দাড়িয়ে থাকলাম দশ মিনিট। অমনিতেই সরে গেল বুকের পাথরটা। সরে গেল রাইটার্স ব্লক। পাঁচ মাস মাস পাঁচ দিনের ছোট্ট সাহিত্যিক জীবনের প্রথম ব্লকটা কাটিয়ে দিলেন বাবা। ভদ্র লোক জীবনের কত ব্লকই না কাটিয়ে দিয়েছেন।

চোখে মেয়ে মানুষদের মত জল আসছে। বাবা যদি না থাকে... কয়েক বছর পরে যে ব্লকগুলো অপেক্ষা করছে... সেই ব্লকগুলো কে কাটিয়ে দিবে? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.