আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইফ শহীদের গল্প

সাইফ শহীদের ভাল লাগা একটি গল্প দিলাম। উনি প্রথমদিকে শহীদলিপি বানিয়েছিলেন ম্যাকিন্টশের জন্য। তিনি ও আরো কয়েকজন সরকারের সাথে দেন-দরবার করে বাংলাদেশে এমেচার রেডিও লাইসেন্সিং শুরু করার ব্যবস্থা করেন। তিনি বাংলাদেশ এমেচার রেডিও লীগের প্রতিষ্ঠাতা। প্রথম কলসাইনটি তার- S21A (Sierra 21 Alpha)।

ধানন্ডি শঙ্করে ন্যাশনাল কমপিউটার্স তার ছিল, এখন আমেরিকা প্রবাসী। অলখ আমেরিকা - এক জুতা শিল্পীর ভালবাসা লস এঞ্জেলেসের কাছে বেশ কয়েকটা বিমান বন্দর আছে তবে এদের মধ্যে সব চাইতে বড়টি হচ্ছে লস এঞ্জেলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, যাকে সবাই তার এয়ারপোর্ট কোড LAX নামে ডাকে। অনেক স্মৃতি বিজড়িত এই এয়ারপোর্ট আমার কাছে। এবার LAX-এ যখন প্লেন থেকে নামলাম, তখন বিকেল হয়ে গেছে। আগের থেকেই রেন্ট-এ-কার বুক করা ছিল।

এয়ারপোর্ট থেকে সেই গাড়ী নিয়ে সোজা চললাম আমার গন্তব্য সান ফারনান্দো ভ্যালির পথে। এলাকাটা সুন্দর। হাতের ডান দিকে রইল বেভারলি হিলস এবং আর একটু দূরে হলিউড। এবার আমার কাজ পড়েছে একটা জুতা ফ্যাক্টরীতে। বছরে মিলিয়ন ডলারের বেশী আয় এদের জুতা রপ্তানী করে।

আমার কাজ হচ্ছে প্রাথমিক ভাবে সার্ভে করে দেখা এদের ফ্যাক্টরী সম্প্রসারণ করা উচিত কিনা এবং করলে তার ফলাফল কি হতে পারে। মূলত আমার কাজ হচ্ছে ফ্যাক্টরীর মালিককে প্রভাবিত করা যাতে সে সম্প্রসারণ কাজে এগিয়ে যায় এবং আমাদের কোম্পানীকে পরবর্তী কিছু কাজ করার কন্ট্রাক্ট দেয়। আমি কিছু অতিরিক্ত কমিশন পাবো যদি কোম্পানী সেই কাজ গুলি পায়। পুজিবাদী সমাজে সব কিছুই জড়িয়ে আছে স্বার্থ আর টাকার সাথে। সকালে ফ্যাক্টরীতে যেয়ে অনেকটা হতাশ হলাম দেখে।

খুবই ছোট ফ্যাক্টরীটা। মাত্র ৫-৬ জন কর্মচারী নিয়ে এঞ্জেলোর এই প্রতিষ্ঠান। এঞ্জেলো মূলত একজন শিল্পী। সে এখানে বিশেষ 'ডিজাইনার সু' তৈরী করে ইটালীতে রপ্তানী করে। সেগুলি আবার ইটালী ভ্রমণরত আমেরিকানরা কিনে আনে।

এগুলি সবই মেয়েদের জুতা এবং এক জোড়া জুতার মূল্য ৫০০ ডলার থেকে ৩০০০ ডলার হতে পারে। এখানে কয়েকটি ডিজাইনার জুতার মূল্যসহ ছবি দিলাম এক সেলস ক্যাটালগ থেকে। এঞ্জেলোকে আমার ভালই লাগলো। আস্তে করে থেমে থেমে কথা বলে এবং কথার মধ্যে এখনো ইটালিয়ান এক্সেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। সে যখন শুনলো যে আমি মিলানো, জেনোয়া ইত্যাদি ইটালিয়ান শহরে গেছি এবং একটা-দু'টা ইটালিয়ান শব্দ বলতে পারি, তখন সেও যেন আমাকে অন্য চোখে দেখতে লাগলো।

তার যে জিনিসটা আমার সব চাইতে ভাল লাগলো সেটা হল তার মধ্যে মিথ্যা কোন 'শো-অফ' করার চেষ্টা নেই। সে আমাকে জানালো প্রতি জোড়া জুতা তৈরী করতে তার খুব বেশী হলে ১০-২০ ডলারের মালামাল এবং সম পরিমান মজুরী খরচ হয়। তার সাফল্যের মূলে হলো তার সৃজনশীল ডিজাইন। তার ফ্যাক্টরী মূলত একটি বড় হল ঘর। পাশের একটা ছোট ঘরে তার অফিস।

নতুন ডিজাইনের কাজ সাধারনত বাড়ীতে বসেই করে। এখানে সেই সব ডিজাইন অনুসারে মালামাল কেটে আঠা দিয়ে লাগানো হয়। একটা ছোট প্রেসিং মেশিন আছে আর আছে হিট-ট্রিটমেন্ট করার ব্যবস্থা। এছাড়া আছে ঠিক মত রং করা ও পালিসের ব্যবস্থা। দুপুরে কাছের দোকান থেকে আনা স্যান্ডউইচ তার অফিসে বসে খেতে খেতে আমরা কিছু ব্যক্তিগত কথা-বার্তা বলা শুরু করলাম।

এঞ্জেলোর জন্ম এখানেই, যদিও কয়েক পুরুষ আগে আসা তার পুর্বসূরীদের মত ভাল ইটালিয়ান বলতে পারে সে। এর ফলে ইটালিতে তার কয়েকটি বেশ ভাল ডিষ্ট্রিবিউটার জুটে গেছে। তারা মার্কেটিং-এ ভাল এবং যেহেতু প্রতিটি জুতা এখানে হাতে তৈরী তাই বিশেষ কদর তার জুতার। চার বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করেছিল সে। সে সময় এক এক্সিডেন্টের কারণে সপ্তাহ দুয়েক হাসপাতালে কাটাতে হয় এঞ্জেলোকে এবং সেখানেই পরিচয় হয় সেখানকার নার্স ডায়ানার সাথে।

হাসপাতাল ছাড়ার পরও তাদের দেখা সাক্ষাৎ চলতে থাকে। পরে এঞ্জেলোর সাথে থাকার জন্যে তার বাড়ীতে চলে আসে ডায়ানা। বছরখানেক এক সাথে থাকার পর বিয়ে করে ফেলে দু'জনে। খুবই সুখে কাটছিল তাদের দিন গুলি। এরপর প্রথম ধাক্কা আসে যখন তারা জানতে পারে যে ডায়ানার পক্ষে মা হওয়া সম্ভব না।

কিন্তু অন্য আমেরিকান বা ইটালিয়ান ছেলেদের মত ছিল না এঞ্জেলো। ডায়ানা তার জীবনের প্রথম প্রেম এবং বিয়ের রাতে এঞ্জেলো নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল তার বাকী জীবনে ডায়ানা ছাড়া সে অন্য কোন মেয়েকে স্থান দেবে না। এঞ্জেলোর এই প্রচন্ড ভালবাসা ডায়ানাকে সামলে উঠতে সাহায্য করে। কিছুদিন পরে হাসপাতাল থেকে কাজের শেষে ফেরার সময় এক সদ্য প্রসুত বাচ্চাকে সাথে করে নিয়ে আসে ডায়ানা। বাচ্চার মা তার মেয়েকে জন্ম দেবার পর পরই মারা গেছে।

অন্য কোন 'ফষ্টার হোমে' পাঠানোর আগে বিশেষ ব্যবস্থা করে এই বাচ্চাকে তার তদারকিতে নিয়ে এসেছে ডায়ানা এবং একই সাথে চাকরী ছেড়ে এসেছে যাতে বাচ্চার দেখা-শুনা করতে কোন অসুবিধা না হয়। নার্সদের যতেষ্ট ডিমান্ড এদেশে, ফলে ডায়ানা জানতো, যে কোন মুহূর্তে চাইলে আর একটি চাকরি খুঁজে নিতে পারবে সে। খুবই সুন্দর দেখতে বাচ্চাটি। তারা বাচ্চার নাম রাখল 'এডা', দুজনের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে। দু'জনের জীবন এই বাচ্চাকে ঘিরে কেটে যাচ্ছে তখন।

কিন্তু তাদের ভাগ্য নিয়ে নিষ্ঠুর বিধাতা হয়তো খেলছিল। এক বছর বয়েসেও যখন বাচ্চাটা নিজে থেকে উঠে বসতে পারেনা বা হামাগুড়ি দেবার কোন চেষ্টা করেছে না তখন সন্দেহ বসত হাসপাতালে টেষ্ট করতে নিল তারা। ডাক্তাররা কনফার্ম করলো যে তাদের বাচ্চা বেশ গুরুতর ভাবে প্রতিবন্ধী। ডায়ানার পক্ষে এই সত্য সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ল। এর আগে দু'জনের টাকায় সংসার ভালই চলতো, কিন্তু এখন এক জনের আয়ে সংসার চালাতে যেয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে।

ফ্যাক্টরীর এক জন কর্মচারী ছাটাই করে এঞ্জেলো নিজে সেই কাজে লেগে গেল। অধিকাংশ দিন অতিরিক্ত সময় কাজ করে বেশী রাত্রে বাড়ীতে ফিরতে শুরু করলো এঞ্জেলো। ডায়ানার পক্ষে এটা সহ্য করা আরও কঠিন হয়ে পরলো। ছোট খাট ব্যাপার নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হতে লাগলো। এই ঝগড়া শিল্পী এঞ্জেলোর পছন্দ হতো না একেবারে ।

অনেকটা এইসব ঝগড়া থেকে দূরে থাকার জন্যে রাতে বাড়ী ফেরার আগে বারে যেয়ে মদ খেতে শুরু করলো সে। এমন সময় একদিন ডায়ানা তাকে জানালো যে, সে ঠিক করেছে, সে এডাকে 'স্পেশাল হোমে' পাঠিয়ে দেবে এবং তার সাথে আর কোন সংস্পর্শ রাখবে না। এটা মানতে পারল না এঞ্জেলো - কিছু দিনের সময় চাইল চিন্তা করার জন্যে। এই সময় সৌভাগ্যক্রমে এক মেক্সিকান মহিলাকে পেয়ে গেল তারা এডার 'ন্যানি' হিসাবে। এঞ্জেলো মনে করলো এর ফলে ডায়ানার উপর চাপ একটু কমবে এবং তাদের সম্পর্কের উন্নতি হবে।

কিন্তু তা আর হলো না। ডায়ানা চরম ঘোষনা দিল - এই বাড়ীতে হয় এডা থাকবে, না হয় সে। কিন্তু ঐ ভাবে এডাকে ছাড়তে রাজী হল না এঞ্জেলো। ডায়ানা বাড়ী ছেড়ে তার আগের পরিচিত এক বন্ধুর বাড়ীতে উঠলো। এঞ্জেলোর জীবনের এই গল্প শুনে চুপ করে রইলাম আমি অনেকক্ষণ।

আমরা কেউ কোন কথা বলছি না। দু'জনেই যেন নিজেদের জগতে ফিরে গেছি। বেশ অনেকক্ষণ পরে এঞ্জেলো বললোঃ - জানি না, তোমাকে প্রথম পরিচয়ে আজ এত কথা বললাম কেন। আমি সাধারনত আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা অন্যদের সাথে আলাপ করি না। - হয়তো কোন কারণ আছে।

পৃথিবীতে কখন কি হয়, কেন হয় - সব কারণ কি আমরা জানি। - তা বটে। তবে আমার কথা তুমি ঠিক বুঝবে কিনা আমি জানিনা। - হয়তো না। কারও পক্ষে কি পুরাপুরি অন্যের কথা বোঝা সম্ভব? - তুমি আসার কিছু আগে আমি ডায়ানার কাছ থেকে একটা ফোন পেয়েছি - সে ডেকেছে আজ সন্ধ্যায় যেয়ে তার সাথে ডিনার করার জন্যে।

জানি না সে কি বলতে চায়। ফলে সে কথাই মাথায় ঘুরছে শুধু। যদি তার আগের সিদ্ধান্তে সে এখনও অটল থাকে তা'হলে তার প্রতি আমার এত ভালবাসা সত্বেও আমার পক্ষে এডাকে ছেড়ে তাকে ঘরে ফিরতে বলা সম্ভব হবে না। আমরা আবার চুপচাপ হয়ে গেলাম। এবার আমি পকেটা থেকে পার্স বের করে তার থেকে একটা ফটো বের করে এঞ্জেলোর সামনে তুলে ধরলাম।

ছবির দিকে তাকিয়ে এঞ্জেলো প্রশ্ন করলঃ - কার ছবি এটা? তোমার ছেলের? খুব সুন্দর দেখতে। - হ্যাঁ। - কত বয়েস হল? - বয়েস? বিশ পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। - দেখেতো মনে হয় অনেক ছোট। দশ-বারো বছর হবে।

- আমাদের কাছে সে আরও ছোট। এক বছরের এক বাচ্চা। সব সময় তাকে হাতে তুলে খাইয়ে দিতে হয়। তার অন্য সব কাজও আমাদেরকে করে দিতে হয়। যেহেতু সে আমাদের ভাষায় কথা বলা এখনো শেখেনি, আমরাই চেষ্টা করি তার না বলা মনের কথা বুঝতে।

- তোমরা তো তা হলে তোমাদের ছেলের জন্যে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছো। - হ্যাঁ, তবে তার বিনিময়ে অনেক অনেক বেশী পেয়েছি আমরা। - কি ভাবে? - জীবনে কোন জিনিসের মূল্য বেশী, তা নতুন করে শিখেছি আমার ছেলেকে পেয়ে। খানিকটা অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল এঞ্জেলো। সেই রাতে মোটেলে ফিরে এঞ্জেলোর অফিস থেকে আনা বিভিন্ন কাগজ পত্র পড়তে যেয়ে বুঝলাম এক সোনার খনির উপরে বসে আছে এঞ্জেলো।

যে হারে চীন, ভারত ও পূর্ব এশিয়ার দেশ গুলিতে নব্য ধনীরা কেনা কাটা শুরু করেছে - যদি এঞ্জেলো তার ফ্যাক্টরীর সম্প্রসারণ করে তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ১০০ মিলিয়নে পৌছে যাবে তার আয়। তার এই প্রজেক্টে টাকা বিনিয়োগ করার জন্যে 'ভেঞ্চার ক্যাপিটাল'-এর কোন অভাব হবে না। এমন কি আমাদের কোম্পানীও এ ব্যাপারে তাকে যথেষ্ঠ সাহায্য করতে পারবে। আমাদের জন্যেও একটা ভাল ব্যবসার সুযোগ হবে এটি। অনেক রাত জেগে বিভিন্ন 'প্রজেক্ট পেপার' তৈরী করে ফেললাম।

সকালে যখন এঞ্জেলোর সাথে দেখা হলো তখন মনে হোল এ যেন এক নতুন এঞ্জেলো। তার চেহারাতে একটা খুশী খুশী ভাব। আমিও মুখে খুশী খুশী ভাব নিয়ে বললামঃ - খুব ভাল খবর আছে তোমার প্রজেক্টের ব্যাপারে। - আমার কাছেও ভাল খবর আছে। - পৃথিবীর বাজারে এখন ডিজাইনার জুতার যে কদর, তুমি এখনই তোমার সম্প্রসারণ প্রজেক্টে হাত দিতে পারো।

টাকার কোন অভাব হবে না। বাজারে 'আইপিও' ছাড়া মাত্র দেখবে সব শেয়ার বিক্রি তো হবেই, 'ওভার সাবস্ক্রাইব' হয়ে থাকবে। আমার মনে হয় আগামী ৫ বছরের মধ্যে তোমার কোম্পানীর আয় ১০০ গুন বেড়ে যেতে পারে। খুবই আগ্রহভরে আমার রাতে করা প্রজেক্ট পেপার, চার্ট, ডায়াগ্রাম, ইত্যাদি বের করে ধরলাম তার সামনে। - আমি রাতে ডায়ানাকে বলেছি তোমার কথা।

হঠাৎ এই ভিন্ন প্রসঙ্গের কথায় অবাক হলাম। মুখ তুলে তাকালাম তার দিকে। - বিগত দুই বছরে ডায়ানাও নিজের সাথে অনেক বোঝাপড়া করেছে। সে এখন মন থেকে বিশ্বাস করে কোন এক বিশেষ কারণে এডা এসেছে আমাদের জীবনে। আমি শুধু তোমার সাথে দেখা করে তোমাকে ধন্যবাদ দেবার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম।

আমি এখনি যাচ্ছি ডায়ানাকে তার মাল-পত্রসহ উঠিয়ে আনতে। - আর তোমার সম্প্রসারণ প্রজেক্ট? - চাই না। আমি যেমন আছি তাই ভাল। আমার তো এখন আর কোন অভাব নেই। - তবুও চিন্তা করে বলছো? - হ্যাঁ।

তুমিই না কাল আমাকে বললে, জীবনে কোন জিনিসের মূল্য বেশী তা নতুন করে খুঁজে দেখতে। নতুন এক শ্রদ্ধাভরা চোখে এঞ্জেলোর দিকে তাকালাম আমি। - একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি যদি কিছু মনে না করো? - নিশ্চই। - তুমিতো ডায়ানাকে অনেক ভালবেসে বিয়ে করেছিলে এবং আমি যতদূর বুঝেছি তার প্রতি তোমার ভালবাসা কখনো কমেনি। এডা তোমার ঐরসজাত সন্তান নয়, ডায়ানার গর্ভেও সে আসেনি।

তবে ঐ ছোট্ট মেয়েটির কি এমন আকর্ষণ ছিল যার জন্যে তুমি ডায়ানাকে ধরে রাখতে যেয়ে এডাকে ত্যাগ করনি? - কারও মনের গভীরে যাবার অদ্ভুত গুন আছে তোমার। এ প্রশ্ন এর আগে আমাকে কেউ করেনি - এমন কি ডায়ানাও না। - কারণটা বলবে কি? - ঐ সময়টা আমি দো'টানার মধ্যে আছি। ডায়ানা আমাকে সিদ্ধান্ত নেবার জন্যে এক সপ্তাহের সময় দিয়েছে। আমি প্রতিদিনকার মত কাজে আসার আগে অভ্যাস মত এডার ক্রিবের পাশে দাঁড়িয়ে তার কপালে একটা চুমা দিলাম।

একটু হাসি দিয়ে সে হঠাৎ তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমার হাতের একটা আঙ্গুল তার ছোট হাতের মুঠার মধ্যে চেপে ধরলো। এভাবে সে কখনো আগে আমার হাত ধরেনি। একটু অবাক হলাম। ছোট্ট হাত, কিন্তু মনে হলো প্রচন্ড শক্তি দিয়ে ধরে আছে সে আমার আঙ্গুলটা। হঠাৎ করে আমার চোখে চোখ রাখলো এডা এবং এক ভাবে তাকিয়ে রইল।

মনে হল সে যেন আমার চোখের ভাষা পড়ে বুঝতে চাচ্ছে সত্যি কি আমি তাকে ত্যাগ করতে চাই। আস্তে করে তাকে বললাম - "জীবনেও তোমাকে ত্যাগ করবো না আমি। " এবার আবার একটা হাসি দিয়ে আমার আঙ্গুল ছেড়ে দিল এডা। এ কথাটা আমি এতদিন কাউকে বলিনি। কেউ বিশাস করবে না বলে।

- আমি তোমার প্রতিটি কথা বিশ্বাস করলাম। ফেরার পথে ৪০ হাজার ফিট উঁচুতে প্লেন থেকে নীচের সাদা মেঘের দিকে তাকিয়ে মনে হলো আমি যেন দেখতে পারছি মেঘ-পরী এডা তার বাবা-মার হাত ধরে ভেসে চলেছে। সবার মুখে আনন্দ আর প্রশান্তির চিহ্ন। সব সৃষ্টির নিজস্ব ভাষা আছে - দরকার শুধু মুক্ত মন - সেই ভাষা বোঝার জন্য। -------------------------- এদুটিও ভাল লাগলোঃ কার জন্যে বাঁচা, বোমার সাথে বসবাস লিঙ্কঃ Click This Link ব্লগঃ http://www.myspace.com/saif_shahid/blog ওয়েবসাইটঃ http://www.saifshahid.com/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।