আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্পটা কেউ কন্টিনিউ করবেন প্লিজ....

আমরা শুধু আপন মানুষ খুঁজি, আপন মানুষদের খুঁজতে হয় না, তারা পাশেই থাকে !! সকালে না খেয়ে আসার কারনে মাথা ব্যাথা করছে দিনার। সকাল গড়িয়ে দুপুর হল। বকবক করা লেকচার মাথা ব্যাথাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সব বাবা মার মতো দিনার বাবা-মাও চাইতো দিনা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার টাইপের কিছু হোক। তাই ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত যতোবার ভবিষ্যত নিয়ে কেউ প্রশ্ন করেছে, সোজা-সাপ্টা উত্তর-"ডাক্তার হবো"।

মনে মনে কতো স্বপ্ন বুনেছে দিনা। তার গ্রামে একটা হাসপাতাল বানাবে, গরিবদের ফ্রী ফ্রী চিকিৎসা দিবে। তাকে বিয়ে করার জন্য তার বাড়িতে ছেলেরা লাইন ধরবে। ভাবনার পরিধীটা আরও বাড়ালো দিনা। বাংলাদেশের বাবা-মাদের সন্তানের ভবিষ্যত বিষয়ক মানসিকতা পরিবর্তন করা দরকার।

ছোটবেলাতেই সন্তানের মাথার ভেতর "ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার" নামক "একমাত্র মহৎ পেশার" বীজটি ঢুকিয়ে দেয়া হয়। দিনে দিনে বীজ গজিয়ে ডালপালা হয়। নির্মম সত্য হলো টুয়েলভ ক্লাস পেরূলে ৯৫ভাগ ছেলেমেয়েদের গুড়িশুদ্ধ সেই স্বপ্নের গাছটিকে উপরিয়ে ফেলতে হয়। দিনাও সেই দলে। এবছর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সে ভর্তী হয়েছে সে।

ক্লাস শুরু হয়েছে তিনমাস হতে চলল। এর মধ্যে তাদের ব্যাচটি প্রেমিক ব্যাচ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। তার সহপাঠী মেয়েরা কেউ নিজ ব্যাচ কেউবা সিনিয়র বড় ভাইদের ঘারে ঝুলে পরেছে। ঝোলাতো ঝোলা-একদম বাদুঁর ঝোলা। নিজেদের অত্যাধুনিক প্রমাণ করতে অনেকেই বোরকা ছেড়ে স্কার্ফ ধরেছে, কারো বুকের উরনা গলায় এসেছে।

দিনা আগে যেমন ছিল তেমনই। সত্যি কথা বলতে মেয়েটা আহামরি সুন্দরী না। চৌকশ চেহারা, রং মোটামুটি, হরিণীচোখ ঢাকা পরেছে চশমার আড়ালে, হালকা পাতলা দেহের গড়ন। অস্বাভাবিক কোকড়া চুল আর অতিরিক্ত কম সাজগোজ তার সৌণ্দর্য্যে আরও ভাটা এনেছে। "দিনা, এই দিনা" পাশ থেকে ফিসফিসিয়ে ডাকল শাকিল।

"এই ট্যাংরা মাছ!!" কোকড়া চুল আর টিংটঙে শরীরের জন্য ট্যাংরা মাছ নাম দেয়া হয়েছে। "কি হয়েছে?" ভয়ে ভয়ে উত্তর দিল দিনা। "আমার একটা কাজ করে দিবি?"-অনুরোধের সুরে বলল শাকিল। "স্যার ক্লাসে, দেখলে বকবে। পরে কথা বলব।

" "না এখুনি শুনতে হবে, প্লীজ!!" "কি? বল্?" রাজ্যের বিরক্তি দিনার মুখে। "এই নে, ধর্" বলে একটা সাদা খাম দিনার হাতে ধরিয়ে দিল শাকিল। নীল কালিতে সুন্দর করে লিখা-ভালবাসি ! দিনা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। শাকিল তাকে কি ভেবে প্রেম পত্র দিল বুঝে উঠতে পারছে না। প্রেম জিনিসটা ঘৃণা করে সে।

বলতে গেলে বাবা বাদে সমগ্র পুরুষ জাতিটাকেই ঘৃণা করে। ফুলি আপার বিয়েতে তখন মাত্র ক্লাস এইটে পরে সে। দুঃসম্পর্কের এক মামাতো ভাই সুযোগ পেয়ে তাকে জোড় করে জড়িয়ে ধরে। মামাতো ভায়ের চুমু ওর গালে পরা আগেই দিনা তার বাহুতে কামড় দিয়ে পালায়। সেই থেকে সে সমগ্র পুরুষ জাতিকে প্রাণভরে ঘৃণা করে।

শাকিলের প্রেমপত্র হাতে পেয়ে চোখ রাঙিয়ে চায় সে। "এর মানে কি?" রাগের চোটে জুড়ে কথা বলে ফেলেছে দিনা। "এই মেয়ে কিসের এতো কথা"-কোয়ান্টাম ফিজিক্স স্যার দেখে ফেলেছেন। কোন মতে সাদা খামটা লুকাল দিনা। ক্লাশ শেষে শাকিল দিনাকে প্রথমে সরি বলল।

"এটা আসলে তোর জন্য না। কবিতার জন্য। ওকে আমার ভাল লাগে, বলি বলি করে বলতে পারছি না। প্লিজ দোস্ত, কাজটা করে দে। " কবিতা দিনার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী।

ভয়ানক সুন্দরী। বর্তমানে তার ২টা প্রেম চলছে। ৩টা ওয়েটিং লিস্টএ আছে। এখন আর একটা নতুন যোগ হয়েছে-শাকিল। "কিন্তু শাকিল, আমি তো জানি তোর একটা প্রেম আছে।

" "ধুৎ কে বলল, এ কথা" উড়িয়ে দিল শাকিল। দিনা কবিতার মেরিট লিস্ট ও ওয়েটিং লিস্ট নিয়েও শাকিলকে কিছু বলল না। পরদিন দিনাকে ক্লাসের সামনে শাকিল পেল। "দিয়েছিস?" "হুমম" "কি বলল!" "তোকে অপেক্ষা করতে বলেছে। " "তাই!! থ্যাংকস্।

আজ থেকে তুই আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, নে হাত মিলা" বলে সামনে হাত বাড়িয়ে দিল শাকিল। "দরকার নাই, ওসব বন্ধু টন্ধু আমার দরকার নাই। " তাচ্ছিল্যের সাথে বলল দিনা। "হাহহ বেশি ভাব ধরিস না, তোর সাথে প্রেম করব না-ট্যাংরা মাছ কোথাকার" বলে ফুঁ দিয়ে দিনার কোকড়া চুল গুলো সড়িয়ে দিল শাকিল। বাসায় ফিরে কবিতার কাছে এসে দিনা সব বলল।

দুজন কিভাবে শাকিলকে বোকা বানাবে সে পরিকল্পনা করল। হাসাহাসি করে গরাগরি খেল তারা। ঘুমাবার আগে দিনা শাকিলের হাত বাড়ানোর কথা ভাবল। হাতটা ধরলে কি এমন ক্ষতি হতো। তাছাড়া শাকিল তো কবিতাকেই ভালবাসে।

পরদিন সকালে দিনা ক্লাসে এসে তার শকিলের জন্য জায়গা রাখল। শাকিলকে জব্দ করবে-দারূন একটা আইডিয়া কবিতা বের করেছে......... (অতটুকু লিখার পর আমি আর লিখতে পারছি না। কেন জানি কষ্ট করেও ভেতর থেকে কিছু আনতে পারছি না। কেউ কি এ গল্পটা কষ্ট করে ফিনিশিং দিবেন...) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।