আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"লাঠিয়াল" সংস্কৃতি থেকে বেরুতেই পারলো না বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা ...

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি প্রাচীন আমল থেকেই শক্তি দিয়ে ক্ষমতা দখল এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার একটা রেওয়াজ চালু হয়ে আছে পৃথিবীতে। কালের প্রবাহে এখন বিশ্ব এগিয়ে গেছে অনেক - এখন লাঠিয়াল বাহিনী কেউ ব্যবহার করে না ক্ষমতাকে প্রদর্শনের জন্যে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে লাঠিয়াল সংস্কৃতির একটা নতুন রূপ দেখা যাচ্ছে। ৯০ এর পর যদিও দেশে একটা গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে - কিন্তু দেশের রাজনীতি দুই মেরুতে ভাগ হয়ে গেছে। একদলে আছে বাংলাদেশের জন্ম বিরোধী জামায়াত, মুসলীম লীগের আধুনিক সংস্করন বিএনপি আর জঙ্গী মৌলবাদীরা আর একদলে আছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি মুক্তিযুদ্ধে নেতুত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগ আর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।

যেমন তেল আর জল এক সাথে মিশে না - তেমনি এই দুই গোষ্ঠী কখনই এক হয়ে দেশের মুল সমস্যা নিয়ে কো কাজ করতে পারেনি। দেশের অগ্রগতি ব্যহত করা সর্বগ্রাসী দূর্নীতি নিয়ে কোন কথাই বলে না এরা। কোটি টাকার সংসদ ভবনের খরচ হলেও এরা সেখানে যায় না - কিন্তু সদস্যপদ ছাড়ে না - কারন লাল পাসপোর্ট বহন করে প্রচুর সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। আর এই গোষ্ঠী দুইটি সভ্যতার নিদর্শন - আলোচনাকে কোন পথই বিবেচনা করে না। কারনে অকারনে আন্দোলনের নামে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম তৈরী করে মানুষের চলাচল ব্যবহত করে শক্তিপ্রদর্শনকেই মনে করে রাজনীতির একমাত্র ভাষা।

সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে দুই গোষ্ঠিই তৈরী হচ্ছে রাস্তায় লাঠিবাজি করতে। অনেকটা জমিদারী ব্যবস্থায় যেমন প্রচার প্রপাগান্ডা করে লাঠিয়াল দিয়ে চর দখলের আদলে এরা ক্ষমতা দখল করতে বা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সচেষ্টা। এদের নেতারা একই টেবিলে বসে মদ্য পানকরে - সামাজিক ভাবে আত্নীয়তা করে - কিন্তু রাস্তায় লাঠিয়াল নামানোর জন্যে যখন বত্তৃতা দেয় তখন মনে হবে এরা পরষ্পরের জন্মের শত্রু। আর মিডিয়াগুলো তামাশা প্রচারে মতো করে প্রচার অব্যহত রেখেছে। হয়তো সেইদিন কিছু নির্বোধ তাদের প্রানবলি দেবে নেত্রী পদসেবায় - কিন্তু এতে কি দেশে সুশাসন চালু হবে? কোন সভ্যদেশে আয়োজন করে এতো শ্রম আর সময়ের অপচয় ভাবাই যায় না।

যে সমস্যা অতি সহজেই সংসদের বসে সমাধান করা যায় - তা সমাধান করার চেয়ে সমস্যাকে বাঁচিয়ে রেখে লাঠিয়াল সমাবেশ করে শক্তি প্রদর্শন করার পথই এরা বেছে নিয়েছে। একদণ মহাসামবেশ করবে - কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে কিছু লোক - যা ভবিষ্যতে নির্বাচিত হলে সুদাসলে আদায় করবে দূর্নীতির মাধ্যমে আরেক দল নানান কর্মসূচীর মাধ্যমে কোটি টাকার খেলা দেখাবে - তাদের সুবিধা হলো ক্ষমতা ব্যবহার করে এখনই চাঁদাবাজী করে নগদ আদায় করতে পারবে। অসুস্থ এই লাঠিয়াল সংস্কৃতি থেকে দেশকে বের করতে না পারলে এরা বারবার একই খেলায় মত্ত হবে। এরা ক্ষমতায় গিয়ে লটপাট করে বিদেশী ব্যাংকে বিপুল অর্থ জমাবে যাতে ক্ষমতা না থাকলে চিকিৎসার নামে তা ভোগ করা যায় আর নির্বোধদের উসকানী দিয়ে লাঠিয়াল বানানো যায়। গনতন্ত্রের মুল ভিত্তি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান - তাকে পাশ কাটিয়ে লাঠিয়াল কালচার দিয়ে সাময়িক বিজয় হয়তো হয় - কিন্তু তা ধরে রাখা যায় না।

সমস্যা হলো বিএনপি জামায়াত জোট যদিও তত্ত্বাবধায় সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে বলে প্রচার করছে - কিন্তু এরা কোন ধরনের সরকার চায় সেই বিষয়ে কোন কথা বলছে না। কারন এইটা ওদের আসল এজেন্ডা না - তাদের আসল এজেন্ডা হলো সরকারকে মনোযোগ সরিয়ে রাখা ( যা খালেদা জিয়া চাঁদপুরে জনসভায় বলেছেন - সরকারকে ল্যাংড়া লুলা বানিয়ে দেবেন) যাতে তারেক-কোকো-গ্রেনেড হামলার বিচার সহ তাদের মিত্র নিজামী মুজাহিদকে বিচার থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায় - যাতে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমানের মতো একটা আদেশে সব আদালত বাতিল করে এদের পূনর্বাসন করা সহজ হয়। এই ধরনের অন্ধকারের রাজনীতির কারনে বাংলাদেশ এখনও লাঠিয়াল সঙস্কৃতি থেকে বের হতো পারলো না। আরও কিছুকাল হয়তো বাংলাদেশের মানুষকে এই লাঠিয়াল সংস্কৃতির ধারক সামন্ত নেতাদের হাতে জিম্মি থাকতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।