আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাঠিয়াল ও হাজারে হাজার ভূত

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।

যেহেতু এই চলমান বিক্ষোভ এবং সেটির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের মিলিটারী, আধামিলিটারী লাঠিয়াল বাহিনী ও সকল পাতি ও জবরদস্ত আমলাদের কর্মকান্ডের একজন সর্বজ্ঞাত বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে চিহ্ণিত করতে ও করাতে আমার আপত্তি আছে, সেহেতু নিজের সীমিত বিশ্লেষণ ক্ষমতা এবং তারচেয়েও তুচ্ছ প্রজ্ঞার উপর ভর করে কিছু বক্তব্য হাজির করব বলে মনে মনে সাহস সঞ্চয় করে অবশেষে লিখতে বসেছি। আমার যা বয়স তাতে গণমাধ্যম, বই এবং এসবের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাছের ও দূরের মানুষদের মুখে শোনা ইতিহাসই আমার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পাঠ। আর সেই পাঠের সবচেয়ে ভীতিকর অধ্যায়ের শুরুটা নি:সন্দেহে ২৫শে মার্চে রাতের অন্ধকারে পাকি মিলিটারীদের অতর্কিতে অসতর্ক সাধারণ মানুষগুলোর উপর ঝাপিয়ে পড়া।

দূর্ভাগ্যজনকভাবে প্রায় একই ধরণের অনুভূতি আমার হচ্ছে বিগত কয়েকদিন ধরে। যেন সেই একই অন্ধকারের আঁচ আমি অনুভব করলাম যখন বুধবার, বৃহস্পতিবারে, শুক্রে বুটের শব্দ তাড়া করে বেড়ালো সমস্ত রাজধানী জুড়ে। হল্ট, ব্লাডি সিভিলিয়ানের গল্প অনেক পুরোনো এখন, বরং কোন কথা না বলে নামকরণের ব্যাজ লুকিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী ঘরে ঘরে যেয়ে ছাত্রদের, সাধারণ মানুষকে মেরে আসছে, সাংবাদিক ও শিক্ষকদের বন্দী করছে, নির্যাতন করছে এবং সরকার বলছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে হুমকি ধামকি আর সেন্সরের ঘটনা তো রয়েছেই। এর পূর্বের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেছিলেন গণমাধ্যমই হবে এই সরকারের সংসদ।

সংসদের দারুন বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি। বিগত সরকারগুলোতে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া জনগণের একরকম শেষ আশ্রয় হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিল এই সরকার এবং নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল এই নীতি বাক্য গ্রহণ করে আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্যের, বন্যা বিপর্যয়ের এবং দুর্নীতি দমনের এক পাক্ষিক সিদ্ধান্ত সমেত এই সরকারকে তারা সহ্য ও সহযোগীতাও করে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে যারা কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর ম্যানিপুলেশন হিসেবে দেখার চেষ্টা করছেন, তারা একেবারেই ভুলে যেতে চাইছেন এর স্বতস্ফূর্ততা। আপাত শান্তি-শৃঙ্খলার ঘেরাটোপে যে মিলিটারী ঘারানার দমন ও নিয়ন্ত্রণ বলবৎ হচ্ছিল এবং সেটি যে দুর্নীতি ও ক্ষমতাহীন সাধারণ মানুষকে আরো অসহায় করে তুলছিল সে বিষয়টিকে আমলেই আনছিলেন না। খুবই বিষ্ময়কর লাগে যখন রাষ্ট্রে মৌলবাদ বিস্তারের অপরাধে কোন জামাত নেতা কর্মীকে বন্দী করা হয় না।

যেটা সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতা। আবার দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা কোন জামাত নেতার অসৎ আয়কে খুঁজে পায়না। অপ-গণতন্ত্রের ধারক বাহক ও চর্চাকারক দুই প্রধান দলের অনেক বড় বড় শয়তানের এখনো আইনের বাইরে থাকাকে আমার এই সরকারের পক্ষপাত মূলক আচরণ বলেই মনে হয়। এর ফলে যা হয় তা হল সরকার কোন মৌলবাদী অথবা সরাসরি বললে পুঁজিবাদী কর্পোরেটের হাতের পুতুলেই পরিণত হয়। আর এই বিষয়টা সবচেয়ে সফলভাবে ঘটে যখন দেশে সামরিক শাসন বলবৎ থাকে।

আমার দেশে গণতন্ত্রের অভিজ্ঞতা এমন তিক্ত যে জনমানুষ আপাত ভাল মনে হলে সামরিক, মৌলবাদী, কর্পোরেট যে কোন কিছুই প্রথমে গ্রহণ করতে রাজি হবে । কেননা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কোন অপশনই আসলে তার জন্য খোলা থাকেনা। সে নি:শ্বাস নেবার চেষ্টা করে। এ সময়ে অনেকের লেখাতেই বারবার এই সরকারের এবং সামরিক বাহিনীর প্রশস্তি বেশ লক্ষ্যনীয়। তাদের নানাবিধ অবদান নিয়ে বেশ উচ্ছসিত বক্তব্যও ব্লগে চোখে পড়ে।

হয়ত এদের অনেকের বক্তব্য ননক্রিটিক্যাল “দেশপ্রেম” থেকেই উদ্ভুত। কিন্তু বিগত সরকারের বা তার আগের সরকারের দু:শাসনের পরিবর্তে বর্তমান রাষ্ট্রযন্ত্রের নীপিড়ণ, ব্যার্থতা ইত্যাদি খারিজ হয়ে যায়না। যেমন খারিজ হয়ে যায়না এই সরকারের বিশেষ পক্ষপাতিত্ব, দাতাগোষ্ঠীদের চামচামি করা নীতি, মিলিটারী আধিপত্য ও আভ্যন্তরিণ ক্ষমতার লড়াই। এই ননক্রিটিক্যাল “দেশপ্রেম” এর সমস্যা হল তারা এমনকি বিগত জোট সরকারের শক্তিশালী, অর্থশালী এবং আমার মতে সবচেয়ে তীক্ষ্ণ কৌশুলি জামাতের ভূমিকা আর দেখতে পান না। অথবা দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের সমর্থক ও বার্তাবাহক হিসেবে ব্যবহৃত হন।

এক্ষেত্রে বাম দলগুলোর ভূমিকাও পূর্ববৎ, তারা একই রকম জনবিচ্ছিন্ন এবং কার্যত অক্রিয়। এসময় আরেকটি সহানুভূতিশীল গোষ্ঠীকেও আমি চিহ্ণিত করতে পারি যারা দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং সরকারকে সময় দেয়ার কথা বলবেন এবং জগৎ পরিবর্তনের সব ভার সরকারের কাছে ছেড়ে দিয়ে উচ্চমূল্য দিয়ে চাল ডাল কিনেও হাসিমুখে আগামী রমজানের কথা ভাববেন অথবা মিডিয়ার সামনে সেটা নিয়ে বেশ তীব্র অভিযোগ করবেন। তাদের জন্য এক আধটা কারফিউ কোন বিষয় না। তারা প্রায় সবকিছুই হাসের মত গা ঝাড়া দিয়ে আবার শুশ্ক হবার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু আশ্চর্য্যজনক ভাবে রাজশাহীতে মারা যান রিকশাওয়ালা।

বেধরক মার খান হলে আশ্রয় না পাওয়া আজিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটি। অনেকেই এই সময়ে যে বাহাসটি তৈরী করার চেষ্টা করেন তা হল এই সব ছাত্রদের মধ্যে আওয়ামী বিএনপি মাস্তান,দালাল, ক্যাডার অ-ছাত্র নেই। তারা ম্যানিপুলেট করে না? উত্তর সহজ, ঠিক এভাবেই করে যেভাবে জামাতের রুকনটি গা ঢাকা দেয়, বাম নেতাটি লেক্সাসে হাওয়া খায়। কিন্তু এটাতে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের কথা বলার, বেঁচে থাকার জায়গা যদি বন্ধ করা হয়, তাহলে নিশ্চিত করে বলা যায় এটি একটি ব্যার্থ সরকার কেননা এটি হয় আপনাকে মিলিটারীলীগবিএনপিবামজামাতকর্পোরেটএনজিও কোন না কোন দল করতে বাধ্য করে নয়ত সরকারের চামচা হবার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কোন প্রকারেই স্বাধীন মত প্রকাশকে জায়গা দেয়না।

তাই প্রশ্নটা আবারো সহজভাবেই সামনে আসে, এই সরকার কার, জনসাধারনের নাকি অসাধারণের? মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এমনি তীব্র এখানে যে চ্যানেল গুলোতে কোন টক শো করা চলবেনা। এই রাষ্ট্র এমনি নীতি নিষ্ঠ যে ভয়াবহ বন্যার কেবল উন্নতির খবরই পাওয়া যাবে, হকার বস্তিবাসী উচ্ছেদ হবে, দেশের আভ্যন্তরীণ অর্থনীতি দূর্বল থেকে দূর্বলতর হবে, অধিকাংশ মানুষ বাস্তুভিটা হারাবে, ক্রয় ক্ষমতা হারাবে এবং পরিশেষে মারা পড়বে। হয় আন্দোলনে নয়ত দূর্ভিক্ষে। এদিকে লাঠিয়াল আর দারোয়ান অদৃশ্য ২০০০০-৫০০০০ ভূতের বিরূদ্ধে মামলা করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় সরকারের সতর্ক হওয়া উচিৎ যে এদেশের মানুষ মিলিটারীও চায়না খালেদাহাসিনাএরশাদবামও চায়না।

আর যেটা একেবারেই চায়না তা হল জামাত। কিন্তু তারা স্বস্তি চায়। আর এজন্য তারা জামাত, এনজিও, খালেদাহাসিনাএরশাদবাম এমনকি তত্ত্বাবধায়ককেও আঁকড়ে ধরতে চাইতে পারে। কিন্তু সেটা যে বেশিক্ষণের জন্য নয় সেটাও স্পষ্ট হল এই স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদে। আবার হতাশ ও বিভ্রান্ত হল এর নানামুখী ম্যানিপুলেশন দেখে।

কিন্তু এর মধ্য দিয়ে একটি বিষয় আবারো স্পষ্ট হল যে প্রয়োজনে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা মত এই জাতি এখনো হারিয়ে ফেলেনি, এমনকি পরিস্থিতি যতটা হতাশজনকই মনে হোক না কেন। কোন সরকার বা দল রাষ্ট্রকে আদতে পরিচালনা, করেনা করে এর জনগণ, আর সেটি প্রতিষ্ঠিত হয় সচেতন প্রতিবাদের মধ্য দিয়েই । তাই সবকিছুর পরও আমি আশাবাদী যে আগামী কোন না কোন সময়ে এই প্রতিবাদের কার্যকর প্রভাব ছাপিয়ে যাবে সবকিছুকেই এবং লাঠিয়ালদের তাড়া করে বেড়াবে এখনকার ভূতেরাই। পরিশিষ্ট: বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিশ্লেষণে অভিলাস ভাবের একটি অত্যন্ত কার্যকরী বিশ্লেষণ টুল এর সাথে যুক্ত করলাম। When the CareTaker Authority is taking care of the authority, some words must be read carefully. Just a set of tips ... more to come if you take them authoritatively [with agency I mean]. Of course you must not be judgemental to the author of this wordbook. You may misjudge then. [I have no, I repeat NO, empathy for the ruling political parties. @] Shorkar/Government: When used by themselves, or what is called CivilSociety, should be read as an oligarchy actually @] Jonogon/Public Should be read/heard the CivilSociety actually @] Jogoner Support/Consent Should be read as Civil-Military-Society[beurocracy] architecture, media boom [booooooooooommmmm actually] @] Amra When pronounced by the state-body, should be read as the critical militaristic self and global fliers of CivilSociety @] Unnoyon/Development Should be read as master-planning and/or DEVELOPMENT of financial marketing or Globalization of finance groups [corporates] @] Durniti/Corruption Should be read as what the "other" corporates do @] (desh gorar) Shongram/Challenge What the "present" [in driver's seat] corporates do


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।