আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্কুল ছাত্রী চৈতির চলে যাওয়া আমাদের শঙ্কিত করে.....

আমি একজন সাধারন মানুষ। স্কুল ছাত্রী চৈতির চলে যাওয়া আমাদের শঙ্কিত করে..... চৈতি রায় চেয়েছিল নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়বে। কিন্তু জেএসসিতে জিপিএ পয়েন্ট কম থাকায় শেষ পর্যন্ত তাকে ভর্তি হতে হয় বাণিজ্য বিভাগে। বিজ্ঞানে পড়তে না পারার হতাশা নিয়ে গত রবিবার আত্মহত্যা করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই ছাত্রী। গতকাল সোমবার গোপালগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে চৈতির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

চৈতির বাবা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ রায়। রবিবার আত্মহত্যা করলেও গতকাল বিষয়টি জানতে পারে চৈতির শিক্ষক ও সহপাঠীরা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সবার মাঝে। উল্লেখ্য, চৈতি জেএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৬ পেয়েছিল। চৈতির সহপাঠীরা জানিয়েছে, অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি পরীক্ষায় পাস করেও স্কুলের নিয়মের কারণে পছন্দের বিষয় বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ না পাওয়ার হতাশায় আত্মহত্যা করেছে মেধাবী এই ছাত্রী।

জানা গেছে, ২০১১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জেএসসি পরীক্ষায় ভিকারুননিসা স্কুল থেকে উত্তীর্ণ হয় চৈতি। প্রায়ই সে তার বাবা-মাকে বলত, 'আমি নবম শ্রেণীতে উঠে বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি হব। ' জেএসসি পাস করার পর সে অনুযায়ী মানসিক প্রস্তুতিও নেয় সে। কিন্তু ভর্তির সময় কর্তৃপক্ষ জেএসসির ফলাফল তুলে ধরে জানায়, নিয়ম অনুযায়ী সব বিষয়ে জিপিএ ৫ বা গোল্ডেন জিপিএ ৫ ছাড়া কেউই বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে পারবে না। স্কুল থেকে চৈতিকে বলা হয়, 'তোমার জেএসসির ফল কিছুটা খারাপ, তাই তোমাকে মানবিক বা বাণিজ্য বিভাগে পড়তে হবে।

' বিজ্ঞান বিষয়ে সুযোগ না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে চৈতি। একপর্যায়ে সে বাবা-মাকে বলে, 'আমাকে অন্য স্কুলে ভর্তি করে দাও। আমি সেখানে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ব। ' এ অবস্থায় বাবা মেয়েকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। মেয়ের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধও করেন।

চৈতির বাবা জানান, কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তিনি মেয়েকে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি করান। কিন্তু বান্ধবীদের অনেকেই বিজ্ঞান বিভাগে চলে যাওয়ায় ক্লাসে মনমরা হয়ে থাকত চৈতি। শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে ঢাকার মেরাদিয়ায় মামার বাড়িতে গিয়ে অনেক ঘুমের ওষুধ খায় সে। বাসার লোকজন টের পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত চৈতিকে বাঁচানো যায়নি। চৈতির বাবা রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, 'ক্লাসে সারাক্ষণ মনমরা হয়ে থাকত চৈতি।

সে কোনোভাবেই মন থেকে তার কষ্ট দূর করতে পারেনি। অনেক বুঝিয়েও আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারিনি। ' এদিকে চৈতির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কর্তৃপক্ষের নিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন অনেক ছাত্রী ও অভিভাবক। তাঁরা বলছেন, এখানে সবাই মেধাবী।

তার পরেও জোর করে বিষয় চাপিয়ে দেওয়া কেন? চৈতির মৃত্যুতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মঞ্জু আরা বেগম গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, 'সব প্রতিষ্ঠানই একটা নিয়মের মধ্যে চলে। সবার ভালোর জন্যই আমরা একটা নিয়ম করেছি। জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেলেই শুধু বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ পাওয়া যাবে, এটাই স্কুলের নিয়ম। এটা সবারই জানা আছে। কিন্তু এ রকম একটা কারণে কোনো ছাত্রী আত্মহত্যা করবে, এটা ভাবতেও পারিনি।

' ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.