আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্কুল চত্বরে স্কুল চলাকলীন সময়ে অনুষ্ঠান করতে না দেয়ায় ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড এর সদস্যরা লাঞ্চিত করল বগুরা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে !!!!!!!!!!

ইতিহাসের পেছনে ছুটি তার ভেতরটা দেখবার আশায় ক্ষীপ্ত হয়ে স্কুলের ছাত্ররা ডেসটিনির গাছের চারা ট্রাক থেকে ফেলে দিচ্ছে। ক্লাস চলাকালে স্কুল চত্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করতে না দেয়ায় ডেসটিনি-২০০০ লি: এর উচ্ছৃঙ্খল কর্মিরা হামলা চালিয়ে জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী আকন্দকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করেছে। পরে এ ঘটনায় স্কুলের শত শত বিক্ষুব্ধ ছাত্র ডেসটিনির সভা মঞ্চ সহ দু'টি গাড়ি ভাংচুর এবং বেশ কিছু গাছের চারা ছিঁড়ে ফেলে। প্রধান শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় পুলিশ ডেসটিনির তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ আজ বৃহস্পতিবার একদিনের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

জানা গেছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের লিখিত কোন অনুমতি না নিয়েই ডেসটিনি কর্তৃপক্ষ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে স্কুলের মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক দুলাল অডিটোরিয়ামের সামনে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করে আলোচনা সভা ও গাছের চারা বিতরণের আয়োজন করে। মঞ্চে এ সময় উচ্চ স্বরে মাইকও বাজছিল। এতে ক্লাসে ছাত্রদের পড়াশুনায় চরম অসুবিধা হচ্ছিল। ছাত্ররা শিক্ষকদের কথা শুনতে পারছিল না। শিক্ষকরাও ছাত্রদের বোঝাতে পারছিলেন না।

পাঠদানে চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে প্রধান শিক্ষক রমজান আলী আকন্দ অনুষ্ঠানস্থলে ছুটে গিয়ে মাইক বন্ধ করতে বলেন। পাশাপাশি তিনি স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠান করার অনুমতি আছে কিনা জানতে চান। কিন্তু এ সময় ডেসটিনি কর্মিরা কোন লিখিত অনুমতি দেখাতে ব্যর্থ হন এবং প্রধান শিক্ষকের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা তাকে বেদম মারধোর করা ছাড়াও লাঞ্ছিত করে। পরে এ খবর দ্রুত ক্লাসে ছড়িয়ে পড়লে শত শত ছাত্র একজোট হয়ে ডেসটিনি কর্মিদের ধাওয়া করে।

এরপর তারা স্কুল চত্বরে ডেসটিনির সভা মঞ্চ ও প্যান্ডেল ভাংচুর করাসহ কয়েকশ' গাছে চারা ছিঁড়ে ফেলে। চারাগুলো কর্মিদের মধ্যে বিতরণের জন্য আনা হয়েছিল। পরে ছাত্ররা সেখানে থাকা ডেসটিনির দু'টি প্রাইভেট কার ও একটি পিকআপ ভ্যানে ভাংচুর চালায়। ছাত্র ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় ডেসটিনি কর্মিরা স্কুলের পিয়ন বাছেদকে বেদম মারপিট করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

তবে তার আগে পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে ছাত্ররা শহরের মফিজ পাগলার মোড়ে ডেসটিনির আঞ্চলিক অফিসেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। বগুড়া সদর থানার ওসি এ কে এম খালেকুজ্জামান জানান স্কুল চত্বরে সভা অনুষ্ঠানের জন্য ডেসটিনির কোন লিখিত অনুমতি ছিল না। তারা দাবি করেছে তাদের মৌখিক অনুমতি ছিল। প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও মারপিট করার ঘটনায় ডেসটিনির তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরা হলো ডেসটিনির পিএসসি আব্দুল কাদের, ডিস্ট্রিবিউটর এ কে এম আল আমিন ও নাঈম হাসান। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে দুপুরে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আনওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আজ বৃহস্পতিবার একদিনের জন্য বগুড়া জিলা স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে দাপ্তরিক কাজ চলবে। সেই সাথে শনিবার থেকে পুরোদমে স্কুলের সকল কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ডেসটিনি ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ মোঃ মুঞ্জুরুল মোর্শেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, জিলা স্কুলের মাঠের পূর্ব পাশ্র্বে স্কুলের কর্তৃপক্ষের পূর্ব মৌখিক অনুমতি নিয়ে মঞ্চ ও প্যান্ডেলের কাজ হয়েছে এবং সেখানে প্রায় ৫,০০০ ফলদ, বনজ ও ওষধি গাছ ট্রাক দিয়ে স্কুলে নিয়ে আসা হয় এবং ফ্রি চারা বিতরণ অনুষ্ঠান করতে যায়। কিন্তু হঠাৎ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী আকন্দ আমাদের অনুষ্ঠান স্থলে এসে আমাদেরকে বলেন_ এক্ষুনি এখান থেকে চলে যেতে হবে। তার এ আচরণ দেখে আমরা বিস্মিত হই এবং এক সময় তাকে তার অফিসে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। আমাদের পি.এস.ডি আব্দুল কাদের প্রধান শিক্ষককে সাথে নিয়ে তার অফিস কক্ষে পৌছে দেয়ার জন্য গেলে আব্দুল কাদেরকে অন্যান্য ছাত্র এলোপাতারি মারধোর শুরু করে। এ সময় কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই স্কুলের সমস্ত ছাত্র আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং অনুষ্ঠান স্থলে রক্ষিত আমাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান ও টয়োটা কার ১৫টি মোটর সাইকেল সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তারা বগুড়া শহরের ডেসটিনি-২০০০ লি: এর নেট অফিস, টিম সাপোর্ট অফিস ভাংচুর করে। তারা আমাদের তিনজন ডিষ্ট্রিবিউটরকে বেদম মারধোর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। উল্লেখ্য এ ঘটনার কারণে স্কুলের দিবা শাখার কোন ক্লাস হয়নি। সূত্র : দৈনিক করতোয়া  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.