আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র - তবলা তরঙ্গ : মেলোডি অন ড্রামস

শী ওয়াজ বর্ণ ইন স্প্রীঙ, বাট আই ওয়াজ বর্ণ টুউ লেইট; ব্লেইম ইট অন অ্যা সিম্পল টুইস্ট অভ ফেইট! তবলা তরঙ্গ : চিরপরিচিত বাঁয়া-তবলা যুগল থেকে, বাঁয়া বাদ দিয়ে শুধু ১০ থেকে ১৬ টি তবলা'র (ডাঁয়া / ডাহিনা) সমন্বয়ে গড়া হয় 'তবলা তরঙ্গ'। এভাবেই চেনা বাদ্যের সমাহার যেন হয়ে ওঠে একটি একক ও সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের অনন্যসাধারণ বাদ্যযন্ত্র! এই বাদন ধারায়, একজন বাদক ১০ থেকে ১৬ টি তবলা চক্রাকারে তাঁর পাশে সাজান; বাদকের প্রয়োজনমত একেকটি তবলা একেকভাবে বাঁধা (টিউন করা) হয়। তারপর শুরু হয় তাল, লয়, বোল ও ছন্দের খেলা। বাদকের হাত ও আঙ্গুলগুলো এক অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় তবলাগুলোর উপরে যেন প্রজাপতির ছন্দে উড়ে বেড়ায় - বহুর সমন্বয়ে গড়া একক বাদ্য, তবলা তরঙ্গে তখন বোল ফোটে, এক দল তবলা তখন যেন গায়কী অঙ্গে কথা বলে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে তবলা তরঙ্গের কথা প্রথম শোনা যায়।

তখন ভারতের মহারাষ্ট্রের সঙ্গীতজ্ঞ পণ্ডিত বিষ্ণু দিগম্বর, তাঁর শিক্ষার্থীদের তালিম দিতে একসাথে অনেক তবলা ব্যবহার করতেন, যা পরে 'তবলা তরঙ্গ' নাম ধারন করে। পণ্ডিত দিগম্বরের এক ছাত্র, পণ্ডিত বিষ্ণুদাস শিরালী, এই বাদন ধারায় চর্চা করতে থাকেন। তিনি পরবর্তীকালে যোগ দেন নৃত্যরাজ পণ্ডিত উদয় শঙ্করের বিশ্বজয়ী ব্যালে দলে। পণ্ডিত উদয় শঙ্কর, তাঁর নাট্যগীতিতে তবলা তরঙ্গ ব্যবহার করতে থাকেন। পণ্ডিত উদয় শঙ্করের ব্যালে দলের সাথে তবলা তরঙ্গও বিশ্বময় পরিচিতি পায়।

তবলা তরঙ্গ বাদন ও ধারন বোধগম্য কারনেই সুকঠিন, ফলে এর সাধকও হাতেগোনা। পণ্ডিত বিষ্ণুদাস শিরালীর পর, তবলা তরঙ্গের প্রখ্যাত সাধক / শিল্পীরা হলেন, পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুরের সহোদর পণ্ডিত রমেশ ঠাকুর, পণ্ডিত লালমণি মিশ্র, পণ্ডিত জনার্দন অভয়ঙ্কর, পণ্ডিত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষ ও এই ধারার শেষ প্রতিভূ হিসেবে পরিচিত, পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র। পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র (১৯২৮ - ) : তবলা তরঙ্গের শেষ স্বীকৃত সাধক, পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র ১৯২৮ সালে অধুনা বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের এক চিকিৎসক পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। কৈশোর থেকেই তিনি ছিলেন সঙ্গীত, তাল, ছন্দ, তথা তবলার ভক্ত। ১৯৪০ এ তাঁর পরিবার কোলকাতায় স্থায়ী হয় ও পরিবারের ঘর অমতেও তিনি তবলা শিখতে ও সঙ্গত করতে শুরু করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোলকাতায় ব্যপক বোমাবর্ষণ শুরু হলে তাঁর পরিবার কোলকাতার পাট চুকিয়ে বেনারসে চলে যায়। বেনারসে পৌঁছে, বেনারস ঘরানার তবলা জাদুকর, পণ্ডিত কণ্ঠে মহারাজের আশ্রমে তিনি তবলায় তালিম নিতে শুরু করেন। কিন্তু পরিবার তাঁকে চিকিৎসক বানাতে বদ্ধপরিকর। অগত্যা তরুন কমলেশ তখন সাময়িক ভাবে পরিবার ত্যাগ করে লখনউ চলে যান। সেখানে লখনউ ঘরানার সুবিখ্যাত উস্তাদ ওয়াজিদ হুসেন খাঁ সাহিবের আশ্রয়ে তবলায় তালিম নেন।

একসময় উস্তাদ আলী আকবর খাঁ সাহিবের সাথে তাঁর পরিচয় হয় ও সেই সুবাদে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে তিনি তবলা সঙ্গতের সুযোগ পান। পরবর্তীকালে তিনি আবার কোলকাতায় ফিরে আসেন ও এক আসরে ফারুখাবাদ ঘরানার উস্তাদ কেরামতুল্লাহ খাঁ সাহিবের তবলা বাদন শুনে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহন করেন। ১৯৪৮ এর মধ্যেই তিনি তবলা বাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান ও এক পরিসরে পণ্ডিত রবি শঙ্করের বাদক দলে যোগ দিতে সমর্থ হন। তারপর অবধারিত ভাবেই পণ্ডিত রবি শঙ্করের অগ্রজ, পণ্ডিত উদয় শঙ্করের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। পণ্ডিত উদয় শঙ্কর তখন তাঁর ব্যালে দলের জন্য একজন তবলা তরঙ্গ বাদক খুঁজছিলেন।

অত্যন্ত আগ্রহী হলেও, কমলেশ তখন তবলা তরঙ্গ বাদন জানতেন না। কিন্তু নিয়তি আর অধ্যাবসায় কমলেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মাত্র ছয় মাসে তবলা তরঙ্গ শিখে, পণ্ডিত উদয় শঙ্করের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমলেশ মৈত্র ব্যালে দলে স্থান করে নেন। তারপর আর পিছু ফিরতে হয়নি তাঁকে, ১৯৭৭ সালে পণ্ডিত উদয় শঙ্করের মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন ব্যালে দলের তথা পণ্ডিত উদয় শঙ্করের ছায়াসঙ্গী। পণ্ডিত উদয় শঙ্করের মৃত্যু একটি সাময়িক যতিচিহ্ন আনলেও, কমলেশ তাঁর সাধনায় আর বিরতি দেননি।

সঙ্গীতে তিনি আরও মনোনিবেশ করেন, উস্তাদ আলী আকবর খাঁ সাহিবের কাছে সরোদ বাদন শেখেন এক অবসরে। সর্বোপরি, তবলা তরঙ্গের ধারাকে একক প্রয়াসে এগিয়ে নিতে থাকেন, যা আজও অব্যাহত আছে। পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র - তবলা তরঙ্গ : মেলোডি অন ড্রামস জার্মানি নিবাসী, পণ্ডিত কমলেশ মৈত্রের প্রায় সব রেকর্ড ও অনুষ্ঠান জার্মানি থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত। ১৯৯৬ সালে জার্মানির বাইরে ও অ্যামেরিকায় তাঁর প্রথম অ্যালবাম, তবলা তরঙ্গ : মেলোডি অন ড্রামস, প্রকাশিত হয়। এই অসাধারণ অ্যালবামটি ধারন ও প্রকাশ করেছে, বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় সঙ্গীত সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান, স্মিথসনিয়ান ফোকওয়েজ।

অ্যালবামটিতে পণ্ডিত কমলেশ মৈত্রকে তানপুরা সঙ্গত করেছেন লরা প্যাচেন ও চিরায়ত বাঁয়া-তবলা দিয়ে সঙ্গত করেছেন, ঠুমরীর রানী শোভা গুর্তুর পুত্র, জ্যাজ সঙ্গীতের বিশ্বখ্যাত পারকাশনিস্ট, ত্রিলোক গুর্তু। ১ রাগ দীন টোড়ি (৯:১৮) ২ রাগ বিলাসখানি টোড়ি (১২:১৩) ৩ রাগ ভূপাল টোড়ি (৯:৪৪) ৪ রাগ মিয়াঁ কি টোড়ি (৪৫:২৫) কোয়ালিটি : ১৯০ কেবিপিএস ভিবিআর এমপি৩ ফাইল সাইজ : ১০৫ মেগাবাইটস ডাউনলোড : তবলা তরঙ্গ : মেলোডি অন ড্রামস পাসওয়ার্ড : samu পূর্বশর্ত : ডাউনলোড করতে হলে ফোরশেয়ারড -এ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। অত্যন্ত সহজেই এই অ্যাকাউন্ট করা যায়।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.