আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় মা

নেট রবীন্দ্রনাথের জন্মের সময় সারদা দেবীর বয়স ৩৪-এর মত৷ রবীন্দ্রনাথের রচনায়, রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিতে মায়ের উপস্থিতি অবিশ্বাস্য রকম কম৷ রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন তেরো বছর দশ মাস, তখন তিনি মাকে হারান৷রবীন্দ্রনাথের রচনায় মা বা জননীর উল্লেখ যে নেই, তা নয়৷ তবে সেই মা হলেন দেশ জননী, জগজ্জননী অথবা নিজের সৃষ্ট চরিত্রের মা ।তবে মাকে উদ্দেশ্যকে কালজয়ী কবিতা লেখেন, যেখানে অনেকই ছোটবেলার নিজ মাকে খুঁজে পাবেনঃ মনে করো, যেন বিদেশ ঘুরে মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে তুমি যাচ্ছ পাল্কিতে মা চড়ে দরজাদুটো একটু ফাঁক করে আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ‘পরে টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে৷ যদিও মা তাঁকে কেমন স্নেহ করতেন, আদর করতেন, তার স্মৃতিমেদুর প্রতিফলন রবীন্দ্রনাথের রচনায় খুঁজে পাওয়া যায় না৷ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ঘরোয়া’-তে রবীন্দ্রনাথের মাতৃস্মৃতি উদ্ধৃত করেছেন রবীন্দ্রনাথের জবানিতে, ‘‘মাকে আমরা পাইনি কখনো, তিনি থাকতেন তাঁর ঘরে তক্তাপোশে বসে, খুড়ির সঙ্গে তাস খেলতেন৷ আমরা যদি দৈবাৎ গিয়ে পড়তুম সেখানে, চাকররা তাড়াতাড়ি আমাদের সরিয়ে আনতেন যেন আমরা একটা উৎপাত৷ মা যে কী জিনিস তা জানলুম কই আর৷ তাইতো তিনি আমার সাহিত্যে স্থান পেলেন না৷” সরলা দেবী চৌধুরানী নিজের মা স্বর্ণকুমারী দেবী সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘মায়ের আদর কী তা জানিনে, মা কখনো চুমু খাননি, গায়ে হাত বোলাননি৷ মাসিদের ধাতেও এ সব ছিল না৷ শুনেছি কর্তাদিদিমার কাছ থেকেই তাঁরা এই উদাসীন্য উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন৷ বলাবাহুল্য, এই কর্তাদিদিমা হলেন রবীন্দ্রনাথের মা সারদা দেবী আর স্বর্ণকুমারী দেবী হলেন রবীন্দ্রনাথের বড়ো বোন৷ বস্তুত পক্ষে, সন্তানদের ব্যাপারে সারদা দেবীর এই উদাসীন্য তাঁর মন থেকে ছিলো না, তা ছিলো বনেদী বাড়ির প্রতিষ্ঠিত প্রথা৷ সেই প্রথা অনুযায়ী শিশুরা মাতৃস্তন্যের পরিবর্তে ধাত্রীস্তন্যে পালিত ও পুষ্ট হত৷ ভূমিষ্ট হওয়ামাত্র মায়ের কোল ছাড়া হয়ে তারা এক একটি দুগ্ধদাত্রী দাই ও এক একটি পর্যবেক্ষণকারী পরিচারিকার হস্তে ন্যস্ত হত, মায়ের সঙ্গে তাদের আর সম্পর্ক থাকত না৷ ঠাকুরবাড়ির রীতি অনুযায়ী শিশু রবীন্দ্রনাথকে মায়ের কোল থেকে স্থানান্তরিত হতে হয় ধাত্রীমাতার কোলে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথের ধাত্রীমাতার নাম ছিলো দিগম্বরী, সবাই ডাকতেন ‘দিগমী’ নামে৷ পনেরো সন্তানের জননী সারদা দেবীর সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন রবীন্দ্রনাথ৷ সন্তানদের প্রতি মায়ের যে স্নেহ ও মমতা, চৌদ্দ সন্তানের পর রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত তা কতোটা পৌঁছেছিলো তা অবশ্য বিবেচনার বিষয়৷ রবীন্দ্রনাথের প্রথম বোন সৌদামিনী দেবী লিখেছেন, ‘‘আমার মা বহু সন্তানবতী ছিলেন এই জন্য তিনি আমাদের সকলকে তেমন করিয়া দেখিতে পারিতেন না…৷”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.