আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবীর ৫ মহাদেশের উচ্চতম ৫টি শৃঙ্গ

জ্ঞানের সাগরের এক ফোঁটা জল এখনো গ্রহণ করতে পারিনি। তবুও নিজেকে সবজান্তা বলি। সকলকে কিছু জানাতে পারার জন্যই লিখে থাকি। মাউন্ট এভারেস্ট(এশিয়া) ১-মাউন্ট এভারেস্টঃ মাউন্ট এভারেষ্ট হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে শীর্ষবিন্দুর উচ্চতার হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফুট) ।

এটি হিমালয় পর্বতমালার একটি অংশ, এশিয়ার নেপাল এবং চীনের সীমানার মধ্যে এর অবস্থান। ১৮৫৬ সালে ভারতের বৃহৎ ত্রিকোণমিতিক জরিপ (Great Trigonometric Survey) প্রকল্প সর্বপ্রথম এভারেস্টের উচ্চতা পরিমাপ করে ৯,০০২ ফুট (৮,৮৪০ মি), যদিও এ সময় এভারেস্ট পরিচিত ছিল Peak-XV (১৫ নং চূড়া) নামে। এভারেস্ট পর্বতচূড়ার আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি কর্তৃক, ভারতে তৎকালীন ব্রিটিশ জরিপ পরিচালক (British Surveyor General) এন্ড্রু ওয়াহ্'র সুপারিশক্রমে। ওয়াহ্ কোনো প্রচলিত আঞ্চলিক নাম প্রস্তাব করতে পারেননি, কারণ সে সময় নেপাল ও তিব্বত বিদেশীদের জন্যে নিষিদ্ধ ছিল, যদিও তিব্বতীরা একে বহু শত বছর ধরে চোমোলুংমা বলে আসছিল। এভারেস্টে আরোহণ পর্বতারোহণের কারিগরী দিক দিয়ে অতোটা কঠিন না হলেও (যেখানে আট-হাজারী অন্যান্য পর্বতশৃঙ্গ যেমন কে২ বা নাঙ্গা পর্বতে আরোহণ অনেক বেশি দুঃসাধ্য) উচ্চতা-পীড়া, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বাতাস ইত্যাদি কারণে এ চূড়ায় আরোহণ বেশ বিপদজনক।

২০০৮ সালের শেষ পর্যন্ত ২,৭০০ জন পর্বতারোহী সর্বমোট ৪,১০২ বার এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন। পর্বতারোহীরা নেপালের পরযটন আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস, কারণ এভারেষ্ট পর্বতশৃঙ্গ আরোহণে ইচ্ছুক প্রত্যেকপর্বতারোহীকে নেপাল সরকারের কাছ থেকে ২৫,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি ব্যয়বহুল পারমিট সংগ্রহ করতে হয়। এতে আরোহণ করতে গিয়ে এ পরজন্ত ২১০ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জন ১৯৯৬ সালে পর্বতের অত্যন্ত উঁচুতে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রাণ হারান। বিশেষত ডেথ জোন এ আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশিরভাগ সময় হতভাগ্য পর্বতারোহীর মৃতদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভবপর হয় না। এরকম কিছু দৃশ্য আদর্শ পর্বতারোহণ রুট থেকে লক্ষ্য করা যায়।

আকোনকাগুয়া (দক্ষিণ আমেরিকা) ২-আকোনকাগুয়াঃ আকোনকাগুয়া (Aconcagua) এশিয়ার বাইরে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিন্দু। এটি পশ্চিম আর্জেন্টিনাতে, আর্জেন্টিনা-চিলি সীমান্তে আন্দেস পর্বতমালাতে অবস্থিত একটি পর্বত। এটি একটি মৃত আগ্নেয়গিরি, যার উচ্চতা ৬,৯৬২ মিটার। ১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডের পর্বতারোহী মাটিয়াস যুরব্রিজ্ঞেন (Matthias Zurbriggen) প্রথম এর শীর্ষে আরোহণ করেন। দেনালি পর্বত (উত্তর আমেরিকা) ৩-দেনালি পর্বতঃ ম্যাকিন্‌লি পর্বত (ইংরেজি ভাষায়: Mount McKinley), দেনালি (Denali) পর্বত নামেও পরিচিত, দক্ষিণ-মধ্য আলাস্কার আলাস্কা পর্বতমালায় দেনালি জাতীয় পার্ক ও সংরক্ষণস্থলে অবস্থিত একটি পর্বত।

সমুদ্রতল থেকে এটির উচ্চতা ৬,১৯৪ মিটার এবং এটিই উত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত। স্থানীয় আদিবাসী আমেরিকানরা একে দেনালি (অর্থাৎ "সবচেয়ে উঁচুটা") বলে ডাকে। পর্বতটি ১৮৯৬ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম ম্যাকিন্‌লির নামে নামকরণ করা হয়। ১৯১৩ সালে ইংরেজ-মার্কিন ধর্মযাজক ও পর্যটক হাডসন স্টাক তিনজন সহযাত্রীসহ সর্বপ্রথম পর্বতটির শীর্ষে আরোহণ করেন। কিলিমানজারো (আফ্রিকা) ৪-কিলিমানজারোঃ কিলিমানজারো (বা কিলিমান্‌জারো, সোয়াহিলি ভাষায় যার অর্থ "উজ্জ্বল পর্বত") আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত।

এটি উত্তর-পূর্ব তানজানিয়াতে কেনিয়ার সাথে সীমান্তে অবস্থিত। কিলিমানজারো একটি মৃত আগ্নেয়গিরি। এর দুইটি শৃঙ্গ ১১ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এবং একটি খাড়া ঢালের মাধ্যমে যুক্ত। উচ্চতর শৃঙ্গটির নাম কিবো এবং এটি সমুদ্র সমতল থেকে ৫,৮৯৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। মাওয়েসি নামের অপর শৃঙ্গটি ৫,১৪৯ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।

যদিও কিলিমানজারো বিষুবরেখার মাত্র ৩ ডিগ্রী দক্ষিণ অক্ষাংশে অবস্থিত, কিবোর জ্বালামুখ সর্বদাই বরফে আবৃত থাকে। মার্কিন লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বিখ্যাত গল্প "দ্য স্নোজ অফ কিলিমানজারো" (১৯৩৮) এই অঞ্চলের পটভূমিতে রচিত হয়েছে। কিলিমানজারোর খাড়া ঢালে বেশ কয়েকটি ভিন্ন প্রকৃতির উদ্ভিজ্জ অঞ্চল আছে। ঢালের নিম্ন অংশে কফি ও প্ল্যান্টেন চাষ করা হয়। ১৮৮৯ সালে জার্মান ভূবিজ্ঞানী হান্স মেয়ার এবং অস্ট্রীয় পর্বতারোহী লুডভিগ পুর্টশেলার প্রথম পর্বতটির শীর্ষে আরোহণে সক্ষম হন।

এলব্রুস পর্বত (ইউরুপ) ৫-এলব্রুস পর্বতঃ এলব্রুস পর্বত রাশিয়ার ইউরোপীয় অংশের দক্ষিণাংশে, জর্জিয়ার সাথে রাশিয়ার সীমান্তের ঠিক উত্তরে অবস্থিত একটি পর্বত। পর্বতটি ককেশাস পর্বতমালার সর্বোচ্চ এবং গোটা ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। আজ থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে আগ্নেয় বিস্ফোরণের ফলে পর্বতটির জন্ম হয়। আগ্নেয়গিরিটি বর্তমানে বিলুপ্ত, তবে বৃহত্তর ককেশাস অঞ্চলের ভৌগলিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ অঞ্চলে কিছুদিন পর পরই বড় আকারের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। এলব্রুস পর্বতের দুইটি জ্বালামুখ আছে।

একটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৬৪২ মিটার এবং অপরটি ৫,৫৯৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। পর্বতের উপরে বেশকিছু বিশালাকার হিমবাহ আছে যেগুলি থেকে পানি গলে কুবান ও অন্যান্য নদীতে পড়েছে। পর্যটক ও পর্বতারোহীদের জন্য পর্বতটি ককেশাস অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। উৎসঃ উয়িকিপিডিয়া, ৭ সামিট ইটিসি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.