আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট, ১৯৯৭”

আমি একজন বাঙ্গালি রমনী.......  অর্থনৈতিক সঙ্কট কী : অর্থনৈতিক সঙ্কট হলো মূলত এমন এক পরিস্থিতি যেখানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সম্পদের দ্রুত অবমূল্যায়ন ঘটে। ১৯শতক ও ২০ শতকের শুরুতে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সঙ্কট, শেয়ারমার্কেট সঙ্কট, মুদ্রা সঙ্কট ইত্যাদি নানা কারণে সঙ্কটের সূচনা হয়। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে যদিও সম্পদের দ্রুত অবমূল্যায়ন ঘটে থাকে কিন্তু এটি মূলত মন্দা কিংবা মহামন্দা সৃষ্টির পূর্বাভাস। যার কারণে থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সঙ্কট পুরো দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটিয়েছিল।  শুরু কথা: ১৯৫০ সালের পূর্ব এশিয়া ছিল যুদ্ধ বিদ্ধস্ত একটি অঞ্চল; যা কখনো উচ্চ প্রবৃদ্ধি সম্পন্ন অঞ্চলে পরিণত হবে এটা কেউই আশা করেনি।

। এমনকি ভবিষ্যৎ বানীও করতে পারেনি। কিন্তু এই অকল্পনীয় ঘটনাটির সূচনা হয় ষাটের দশকের শুরুর দিকে। ১৯৬০ সালে পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাফাল্য ছিল নজিরবিহীন। ধীরে ধীরে পূর্ব এশিয়া অর্থনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং পশ্চিমাদের উপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৬০ এর দশকে পূর্ব এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১ শতাংশ। ৭০ এর দশকে তা হতে বেড়ে হয় ৭.৯ শতাংশ। এমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে পূর্ব এশিয়ার মানুষের জীবনযাত্রার মানেরও উন্নয়ন ঘটে। ক্রয় ক্ষমতার মানদণ্ডে পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনীতি ১৯৯২ সালে পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাকে ধরে ফেলে। এ অঞ্চলের এমন আকর্ষণীয় উন্নয়নকে তখন ‘এশিয়ান মিরাকেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো।

আর পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘এশিয়ান টাইগার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। মজার বিষয় হলো, বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান এশিয়ান মিরাকেল ধারনাটির সমালোচনা করলে তিনিই ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হন। কিন্তু উন্নয়নের সেই চরম মুহূর্তে ১৯৯৭ সালের জুলাইয়ে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় এশিয়ার সব অর্জন, রহস্য চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে দাঁড়ালো। একইসাথে গোটা পূর্ব এশিয়া জুড়ে নামলো অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রবল থাবা, যা পরবর্তীতে “পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট, ১৯৯৭” নামে পরিচিত।

একদল অর্থনীতিবিদ যারা এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ‘মিরাকেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন তারাই আবার এ অঞ্চলের উন্নয়নকে অবাস্তব, ক্ষতিকর ঋণ, দুর্নীতি দ্বারা ভেসে যাওয়া এবং স্বজনপ্রীতি দ্বারা ফাপানো হিসেবে বলে বেরান। অর্থাৎ এশিয়ানরা কেবন নিঃস্ব হলো না; নিজেদের নিঃস্ব করার দোষেও অভিযুক্ত হলো। তবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিজ এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কারণ হিসেবে আইএমএফ এর নীতিমালাকেই দায়ী করেছেন । কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের আসল কারণ ছিলোঃ  অর্থনৈতিক সংকটের কারণ... ১. বেসরকারি খাতের দূরদর্শিতার অভাব ২. বৈদেশিক পুজির উপর অতি নির্ভরশীলতা ৩. অন্যান্য খাত বাদ দিয়ে শুধুমাত্র শিল্প খাতে বিনিয়োগ করায়। ৪. বিদেশী বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেবার কারনে।

৫. বৈদেশিক রিজার্ভ কম থাকার কারণে। ৬. আইএমএফের সুপারিশ অনুযায়ি চলার কারণে। ৭. দেশের পন্য বাজারে অধিক হরে মুদ্রস্ফিতি বাড়ার কারণে। ৮. ব্যবসা ÿেত্রকে সম্প্রসারনের অভাবে ৯. দেশের মুদ্রার মান কমে যাওয়ার করনে ১০. বৈদেশিক ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ১১. আর্থিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর নজরদারির অভাবে। ১২. ব্যংক গুলোর তরাল্য সংকটের কারণে।

১৩. বেসরকারি খাতের দূরদর্শিতার অভাব ১৪. আমদানি নির্ভর অর্থনীতি ১৫. পুঁজি ও মুদ্রাবাজার উদারীকরণ  ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ার বিস্ময় যে রাতারাতি এশিয়ার অর্থনৈতিক অস্থিরতায় পরিণত হলো তার ইতিহাস প্রতিটি রাষ্ট্রভেদে নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হলোঃ থাইল্যান্ড  বর্তমানে থাইল্যান্ড : থাইল্যান্ড বর্তমানে পূর্ব এশিয়ার সর্বাধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসম্পন্ন দেশ। এদেশের বর্তমান জিডিপি প্রায় ৭.৮ শতাংশ (২০১০)। বর্তমানে থাই অর্থনীতি মূলত রপ্তানি নির্ভর এবং এর বৈদেশিক মুদ্রা লাভের প্রধান মাধ্যম হলো পর্যটন শিল্প। এই দেশে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৯ শতাংশ।  ইতিহাস : ১৯৯৭ সালের মধ্যভাবে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল তার সূত্রপাত ঘটে থাইল্যান্ডে।

থাইল্যান্ডের অর্থনীতির কাঠামোগত দূর্বলতার কারণেই মূলত এ সঙ্কটের সূচনা। মূলত ৯৭ এর ২ জুলাই ভয়ঙ্কর এ অর্থনৈতিক সঙ্কট থাইল্যান্ডে আঘাত করে।  সঙ্কট সূচনার কারণ : ১৯৮৭-১৯৯৩ সালে থাইল্যান্ড এক নতুন অর্থনৈতিক শক্তির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ’৮০ এর দশকে এর রিয়েল জিডিপি ছিল প্রায় ৮ শতাংশ। আর এমন উন্নয়নের পেছনে যে বিষয়গুলো অবদান রেখেছিল তা হলো কেপিটল মার্কেট উদারীকরণ, সরকারি ব্যায় বাড়িয়ে দেওয়া, শেয়ার মার্কেট উদারীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ তরান্বিতকরণ।

যেখানে অন্যান্য দেশের উন্নয়ন ঘটেছে মূল শিল্প বাণিজ্যের প্রসারের কারণে। আর থাইল্যান্ডের এমন তড়িৎ উন্নয়নের ভেতরেই অর্থনৈতিক সঙ্কটের বীজ বপন ঘটে। কারণ অর্থনৈতিক উদারীকরণের কারণে থাইল্যান্ডে স্বল্পমেয়াদি পুঁজির পরিমাণ বেড়ে যায়। আর দ্রুত মুনাফা উপার্যনের লক্ষে থাইল্যান্ডে গৃহনির্মাণ শিল্প ফুলে ফেপে ওঠে। এ কারণে ব্যাংকক ও তার আশপাশের শহরগুলোর ভূমির মূল্যও আকস্মিকভাবে বেড়ে যায়।

অন্যদিকে পুঁজির সহজলভ্যতার কারণে ঋণগ্রহীতারাও কম সুদের হারে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ নিতে পারতো। আর সহজভাবে অর্জিত ঋণের সহায়তায় দ্রুত লাভ করার আশায় শেয়ারবাজার কিংবা গৃহনির্মাণ শিল্পে তা বিনিয়োগ করতো। এসব কারণে ৯০ এর দশকে থাইল্যান্ড যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বীকৃতি পেল তা সত্যিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছিল না বরং সুডো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আর এমন উন্নয়নে পুঁজির আগমন যত বেশি দ্রুততার সাথে ঘটে তেমনি আকস্মিকভাবে এর প্রস্থানও ঘটে। এ ধরণের স্বল্পকালীন পুঁজির চলাচল সাংঘাতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে।

যা ঘটেছিল ১৯৯৭ সালের ২ জুলাই।  থাই মুদ্রার উপর প্রথম আঘাত : চিত্র ঃ মুদ্রার অবস্থা এশিয়ান অর্থনৈতিক সঙ্কটের শুরুতে প্রথম জর্জরিত হয় থাই বাথ। মুদ্রা ব্যবসায়ীদের চাপে থাই সরকার বাথকে ডলারের বিপরীতে ছেড়ে দিলে মুদ্রার অবমূল্যায়ণ শুরু হয়। ১ ডলারের বিপরীতে যেখানে ১৯৯৬ এর জুলাইয়ে ছিল ২৫ বাথ সেখানে ১৯৯৭ এর জুলাইয়ে তা হয় ৫৪। আর ১৯৯৮ এর জানুয়ারিতে ১ ডলারের বিপরীতে থাই বাথ হয় ৫৮।

থাই বাথের এমন অবমূল্যায়ণ ঠেকাতে থাই সরকার উদ্যোগী হয়ে ওঠে। তৎকালীন থাই প্রধানমন্ত্রী চাভালীঠের নির্দেশে সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে থাই বাথ রক্ষার জন্য। আর অন্য দিকে জনগণ ও বিনিয়োগকারীরা থাই বাথের অবমূল্যায়ণ দেখে বাথের বিপরীতে ডলার কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। যে কারণে থাই বাথের অবমূল্যায়ণ হতেই থাকে। সরকারের বিবিধ পরিকল্পনার জন্য যে খরচ হয় তা থাইল্যান্ডের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ৩৩.৮ বিলিয়নে নেমে আসে।

 শেয়ার বাজারে আঘাত : চিত্র ঃ শেয়ার বাজার ১৯৮৮-১৯৯৯ সালে থাই স্টক মার্কেটের সূচক থাই অর্থনৈতিক উন্নয়নেরই প্রতিফলন ঘটায়। ১৯৯০ সালে থাই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক প্রায় ৪০০ হতে ৬০০ তে গিয়ে পৌছায়। কিন্তু ৯০ পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাজারের উদারীকরণের প্রতিকূল প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়ে। ফলে কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারীরাই শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং দেশের বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে ১৯৯৩ সালে যেখানে শেয়ার বাজারের সূচক ১৭০০ তে গিয়ে পৌছায় তা ১৯৯৮ সালে কেবল ৩৫০ এ এসে দাড়ায়।

শেয়ারবাজারের এমন ধ্বসের পেছনে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যেমন ভূমিকা রেখেছিল তেমনি ফটকা ব্যবসায়ীরাও প্রভাব ফেলে। কারণ তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থাকে সঠিকভাবে তুলে ধরত না। এমনকি শেয়ার বাজারের নীতিমালা অনুসরণ না করে ব্যবসা করতো। এভাবে তারা শেয়ার বাজার হতে বিশাল অঙ্কের অর্থ তুলে নিয়ে যায়।  অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রভাব : ১৯৯৭ সালের এই অর্থনৈতিক সঙ্কট অন্যান্য দেশের অর্থনীতির উক্ত দুই ক্ষেত্রে প্রভাব ফেললেও থাইল্যান্ডের ক্ষেত্রে আরো কিছু দিকে এর প্রভাব প্রতিফলিত হয়।

যেমন : বৈদেশিক মুদ্রার রির্জার্ভ কমে যাওয়ায় থাইল্যান্ডের আমদানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ফলে মূল আঘাতটা পড়ে থাই আমদানি নির্ভর অর্থনীতির উপর। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে গৃহ নির্মাণ শিল্পও বাধাগ্রস্থ হয়। ফলে বেকার হয়ে যায় প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক এবং অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। যার মধ্যে ফিনেন্স ওয়ান নামক বড় থাই আর্থিক প্রতিষ্ঠাও বন্ধ হয়ে যায়।  আইএমএফ - এর উদ্যোগ : থাইল্যান্ডকে এমন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই থাই সরকার আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) এর শরণাপন্ন হয়।

আর আইএমএফ ৫ আগস্ট ১৭.২ বিলিয়ন ডলারের ‘উদ্ধার প্যাকেজ’ শর্তসহ ঘোষণা করলো। শর্তগুলো ছিল  ট্যাক্স বৃদ্ধি  ব্যাংক হার বৃদ্ধি  সরকারি ব্যয় হ্রাস  বেসরকারিকরণ সরকারের এমন মিতব্যয়িতা নীতি আর উচ্চ সুদের হার অর্থনৈতিক সঙ্কটকে আরও ভয়াবহ করে তুললো। যার ফলশ্র“তিতে নতুন করে ১৬ হাজার মানুষ বেকার হয়ে গেল আর ৫৬ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল। পরে ২০০১ সাল নাগাদ থাইল্যান্ড এই চরম সঙ্কট হতে বের হয়ে এলো। আর ২০০৩ সালে আইএমএফ এর সকল ঋণ শোধ করে দিল।

ফলে ২০১০ সালে প্রতি ডলারে ২৯ থাই বাথ নির্ধারিত হলো।  সমাধান : থাইল্যান্ডে সঙ্কট ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছিল জনগণের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অবদান। স্বচ্ছল জনগণ প্রতিবেশিদের ঘরে খাবার সরবরাহ ও শিশুদের স্কুলে পাঠানোতে অবদান রাখে। ফলে ভবিষ্যত জনসাধারণ আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায়। পরে ২০০১ সালের ফেব্র“য়ারিতে থাকসিন সরকার নতুন অর্থনৈতিক পলিসি গ্রহণ করে যা থাই অর্থনীতি বৈদেশিক পুঁজির উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করে।

 অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে থাই অর্থনীতির উপর প্রভাব : অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে থাই অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আট শতাংশের জিডিপি হতে তাদের জিডিপি ৬ শতাংশে নেমে আসে। বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগ করতে ভীত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ তুলে নিয়ে যায়। ফলে থাই যে অর্থনীতি এতদিন বিদেশী পুঁজির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেছিল তাতে আঘাত আসে।

অর্থনৈতিকভাবে আহত থাইল্যান্ড এমন হতাশা হতে মুক্ত হবার লক্ষ্যে প্রথমেই আইএমএফ এর শরনাপন্ন হয়। তবে তাদের নানা শর্ত বরং অর্থনৈতিক সঙ্কটকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। কিন্তু ২০০১ সালে থাকসিন সরকার নতুন অর্থনৈতিক পলিসি গ্রহণ করে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ায়, দেশের অভ্যন্তরে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে এ সঙ্কট হতে বের হয়ে আসে। মূলত অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর থাই সরকার যে কোনো অর্থনৈতিক পলিসি গ্রহণের পূর্বে অধিক সচেতন ও স্বচ্ছতা অনুসরণ করে। যার ফলশ্র“তিতে বর্তমানে আবার থাইল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

মালয়েশিয়া  শুরু কথা : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি মালয়েশিয়া। স্বাধীনতার পর হতে ক্রমবর্ধমান ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশটি মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। বর্তমানে মলয়েশিয়া নব্য শিল্পায়িত বাজার অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত। ৪১৪ বিলিয়ন ডলার জিডিপি ও ৭.২% প্রবৃদ্ধি নিয়ে ১৪৮৩ ফুট উচুঁ পেট্রোনাস টাওয়ারের মত সগৌরবে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়ে আছে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি। অধিকন্তু বিশ্বের বৃহত্তম ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অনগ্রসর দারিদ্রপিড়ীত মুসলিম বিশ্বের সামনে মালয়েশিয়া রোল মডেলের আসনে সমাসীন ।

তবে অগ্রগতির এ যাত্রাপথে বড় ধরনের হোচট খেতে হয় মালয় জাতিকে ১৯৯৭ সালে। সে সময়ের প্রলয়ংকারী আর্থিক বিপর্যয় মহা বিপর্যস্ত করে তোলে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি। ভূমিকম্প সৃষ্টি করে তার অর্থনৈতিক বুনিয়াদে। সেই কৃষ্ণ-গহবর থেকে বের হয়ে এলেও তার প্রেতাত্মা তাড়া করে ফিরেছে বহু বছর। এখনও অর্থনীতি সে ক্ষতির কিছুটা রেশ বয়ে যাচ্ছে।

 এসেছে কালবৈশাখী সাদা হাতির পিঠে চড়ে সময়টা ১৯৯৭ এর গ্রীষ্মকাল। কাল বৈশাখীর সময়। সাদা হাতির দেশ থাইল্যান্ডের সরকার মুদ্রা ব্যবসায়ীদের চাপে মার্কিন ডলারের সাথে পেগ বন্ধ করে দেয়। ফলে ২ জুলাই থাই বাথে ধ্বস নামে। সংক্রামক ব্যাধির মত আক্রান্ত হয় প্রতিবেশীর দেশগুলোর অর্থনীতিও।

সীমান্তবর্তী মালয়েশিয়া নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও স্বীকার হয় ভয়াবহ আর্থিক ধ্বসের। অনাকাঙ্খত এ আর্থিক বিপর্যয় কিংকর্তব্যব্মিূঢ় করে দেয় সবাইকে।  ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শেয়ার বাজার : কুয়ালালামপুর শেয়ার বাজার তখন এশিয়ার সর্ববৃহৎ শেয়ার বাজার। মাত্র এক বছরে তা ৬৩% মূল্য হারায়। ১৯৯৭ সালের ৫ জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জর সূচক প্রায় রেকর্ড সংখ্যক ১৯৩২.৪ পয়েন্টে পৌছেছিল।

এক বছর পর ১২ জানুয়ারি ১৯৯৮ এ এটি ৪৯১ এ এসে ঠেকে। যা পরবর্তী মাসগুলোতে আরো পরে যায়। স্টক মার্কেট থেকে হাওয়া হয়ে যায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। এমনকি ২৭০ পয়েন্টের নীচে চলে যায় সূচক। রিংগীতের সংগীন অবস্থা: থাই বাথ পড়ে যাওয়ায় পর হঠাৎ রিংগীতের মানও পরে যায়।

রিংগীতের মান ধ্বংসাত্মক ভাবে ৪০% কমে যায়। ডলারের সাথে যার বিনিময় হার ৪.৫৭ থেকে ২.৫০ এ নেমে আসে মোট জিডিপি থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে যায়। কেউ জানে না কি ঘটছে, ঘটবে : সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এশিয়ার দিকে যে প্রলয়ংকরী অর্থনৈতিক সুনামি এগিয়ে এসেছে তার পূর্বাভাস দিতে পারেনি বিশ্বের কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অর্থনীতিবিদ। এমনকি ১৯৯৭ সালে আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইকেল ক্যামডেসাস মালয়েশিয়ার উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সুস্থ আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রসংশা করেন। অজ্ঞদের মধ্যে কম অজ্ঞ : ব্যতিক্রম হিসেবে শুধু এমআইটি এর অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান ভিন্ন মত পোষণ করতেন।

তিনি বলেছিলেন, পূর্ব এশিয়ার মিরাকল আদৌ মিরাকল ছিল না এবং তা ইটের দেয়ালে আঘাত করতে বাধ্য। ১৯৯৮ সালে হংকং সম্মেলনে তিনিও স্বীকার করেন এশিয়ার ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি ৯০% ভ্রান্তির মধ্যে ছিলেন, তবে তার শান্তনা ছিল অন্যরা এ ব্যাপারে ১৫০% ভ্রন্তিতে ছিল।  সমাধান ধ্বসের বন্যা নিয়ন্ত্রণে মাহাথিরের বাধ :আইএমএফ এর অসৎ পরামর্শ : মুদ্রা বিপর্যয়ের প্রাথমিক স্তরে আর্থিক মোড়ল আইএমএফ মুদ্রাগুলোকে স্থিতিশীল রাখার কোনো পরামর্শ দেয়নি। বিপর্যয়ের পর তারা পরামর্শ দেয় সরকারি ব্যায় সংকোচন ও উচ্চ সুদের হার প্রবর্তনই এ আর্থিক ব্যধির টোটকা ঔষধ। এ ঔষধ একাধারে তিতা অন্যভাবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা দিল।

এটা বিপর্যয় কে আরো বাড়িয়ে দিল। লাগাম শক্ত করল মাহাথির : বিচক্ষণ নেতা মাহাথির বুঝতে পারল আইএমএফ এর পরামর্শে বিপদ কমবে না বরং আরো বাড়বে। তাই তিনি ত্বড়িত আইএমএফ এর পরামর্শ বাতিল করল। আইএমএফ এর ১৭ বিলিয়ন ডলারের টোপ প্রত্যাখ্যান করে নিজস্ব পলিসি নিল। তার অন্যতম ক্স সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও সুদের হার কমানো ক্স মার্কিন ডলারের বিপরীতে রিংগিতের মান ৩.৪০ পেজ করা ক্স কঠোর মুদ্রানীতি প্রবর্তন ও বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণ ক্স বিভিন্ন আর্থিক টাস্কফোর্স গঠন ক্স মুদ্রা সংকট মোকাবেলায় জাতীয় অর্থনৈতিক একশান কাউন্সিল গঠন  অর্থনীতি বিপর্যয়ের প্রভাব রাজনৈতিক প্রভাব : আর্থিক বিপর্যয় ঘটিয়ে ওঠার পদ্ধতি নিয়ে মাহাথিরের দীর্ঘদিনের সহকর্মী তৎকালিন অর্থমন্ত্রী ও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীমের সাথে তীব্র মত বিরোধের সৃষ্টি হয়।

আনোয়ার ইব্রাহীম আইএমএফ এর পরামর্শ মতো সরকারি ব্যয় কর্তন ও উচ্চ সুদের পক্ষে অবস্থান নেয়। ১৯৯৮ সালের ‘নিউজ উইক’ পত্রিকায় আনোয়র ইব্রাহীম ‘ইয়ার অব দ্যা এশিয়ান’ ঘোষণা দেন। আনোয়ারের জনপ্রিয়তা ও ভিন্নমত হুমকি হয়ে দাড়ায় মাহাথিরের জন্য। ফলশ্র“তিতে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই আনোয়ারকে ক্ষমতাচ্যুত ও দেশ হতে বহিষ্কার করা হয়। এমনকি জঘন্য অভিযোগে তাকে ছয় বছরের জন্য কারাবন্দী করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় আনোয়ারের সমর্থনে মালয়েশিয়া জুড়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে এমন অস্থিরতা পূর্বে দেখা যায়নি। অর্থনৈতিক প্রভাব : রিংগিতের ধ্বসে ভেঙ্গে পড়ে মালয়দের মনোবল। মাহাথির ঘোষিত ভিশন-২০২০ বাধাগ্রস্থ হয়। মানুষের জীবন যাত্রার মান নিচে নেমে যায়।

অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভয়ানক রকম কমে যায়। মাথাপিছু আয় ৫ হাজার থেকে ৩ হাজার ডলারে নেমে আসে। সর্বত্র এক অনিশ্চয়তার আতঙ্ক দেখা দেয়। এশিয়ার অর্থনৈতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় মাহাথিরের পদক্ষেপগুলোর অনেক সমালোচনা করা হয়েছে।

বলা হয়েছে মাহাথির কথা বললেই শেয়ারের দাম কমে। কিন্তু মাহাথিরের বিচক্ষণ ও কঠোর আর্থিক নীতি এবং তার দৃঢ়তা দ্রুত মালয়েশিয়াকে এ সঙ্কট হতে বের করে আনে। অন্য সব প্রতিবেশি দেশের আগেই মালয়েশিয়া বিপদ কাটিয়ে ওঠে। বিশ্লেষকরা অবাক হয়ে যায় মাহাথিরের সাফাল্যে। আজকেরে মালয়েশিয়া আর্থিক বিপর্যয়ের ক্ষতকে ছাড়িয়ে আবার স্বাস্থবান অর্থনীতি উপহার দিয়েছে জাতিকে।

মালয়েশিয়া দ্রুতবেগে ধাবিত হচ্ছে তার দীর্ঘ আকাঙ্খিত ভিশন-২০২০ এর দিকে। ইন্দোনেশিয়া ১৯৯৭ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট ইন্দোনেশিয়ার আর্থ-সামাজিক ÿেত্রে অকল্পনীয় ÿতি বয়ে আনে। সংকট পূর্ববর্তী ২৫ বছরে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছিল লÿণীয়। কৃষি ÿেত্রে ইন্দোনেশিয়া স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এবং ১৯৭০ থেকে ১৯৯৬ মধ্যবর্তী সময়ে গড়ে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭%। আর মুদ্রাস্ফিতি ছিল ১০% এর নিচে।

শ্রম নির্ভর রপ্তানি খাতে সত্যিকার অর্থে বিস্ফোরন ঘটে। কিন্তু সবচেয়ে লÿণীয় অগ্রগতি ঘটে দারিদ্রতা হ্রাসের ÿেত্রে। ১৯৭০ সালে যেখানে ৬০% মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করত সেখানে ১৯৯৬ সালে এই সংখ্যা কমে এসে দাড়ায় ১১% এ। কিন্তু ১৯৯৭ সালের অর্থনৈতিক সংকটে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। ১৯৯৮ সালে মুদ্রাস্ফিতি অনেক বেড়ে গেলে দ্রব্যমূল্য প্রায় ৮০% বৃদ্ধি পায়।

ডলারের বিপরীতে ইন্দোনেশিয়ান মুদ্রা রুপিয়ার মূল্য ১৯৯৭ সালের জুন মাসে হয় ২৪০০। কিন্তু ১৯৯৮ সালের জুন মাসে তা বেড়ে ১৬০০০ এ দাড়ায়। এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয় প্রধানত রপ্তানী কমে যাওয়ার কারণে। ডলারের বিপরীতে থাই মুদ্রা বাথ এর অবমূল্যায়নের প্রভাব ইন্দোনেশিয়াতেও এসে পড়ে। কারণ রুপিয়াও ডলারের সাথে সংযুক্ত ছিল।

পাশাপাশি গৃহ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সমূহের অধিক পরিমাণে ঋণ গ্রহণের বিষয়টিও সংকটকে ত্বরান্বিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের রিজার্ভ সিস্টেম ঠিক রাখার জন্য সংশিøষ্ট কর্তৃপÿ কতগুলো পদÿেপ গ্রহণ করে। রুপিয়ার অবমূল্যায় রোধকল্পে ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া (বিআই) ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে ১.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। কিন্তু এই পদÿেপ কার্যকর না হওয়ায় সরকার একই বছরেরর ১৪ আগস্ট রুপিয়ার বিনিময় হার অবমুক্ত করে দেয়। সেই সাথে সুদের হার বৃদ্ধি করে।

এক সপ্তাহ মেয়াদী সার্টিফিকেটে সুদের হার ১০.৫% থেকে বৃদ্ধি করে ২০% করা হয়। তিন মাস মেয়াদী সার্টিফিকেটে এই হার ১১.৫% থেকে বৃদ্ধি করে ২৮% করা হয়। অর্থ মন্ত্রনালয় তার ব্যয় হ্রাস করে ঝইখ সার্টিফিকেটে ৩.৫ ট্রিলিয়ন রুপিয়া জমা রাখে। আন্ত:ব্যাংকিং লেনদেনের ÿেত্রে সুদের হার বেড়ে দাড়ায় ২২% থেকে ৮০% পর্যন্ত। রুপিয়ার দাম যখন ডলার প্রতি ২৪০০ থেকে ৩৬০০ তে নেমে আসে তখন ৮ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়া অন্তর্জাতিক অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইএমএফ) এর দ্বারস্থ হয়।

অক্টোবরের শেষে উভয় পÿ একটি চুক্তি স্বাÿর করে। এর ফলে আইএমএফ ও অন্যান্য দাতা গোষ্ঠী ইন্দোনেশিয়াকে ৪০ বিলিয়ন ডলার ঋণ মঞ্জুর করে। এর বিপরীতে শর্ত দেয় যে, ব্যাংকগুলোতে সুদের যে উচ্চ হার রয়েছে তা বজায় রাখতে হবে এবং ১৫টি রুগ্ন ব্যাংক বন্ধ করে দিতে হবে। এই শর্ত ব্যাংকিং সেক্টরকে অস্থির করে তোলে। চলমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো অধিক পরিমাণে ঋণ প্রদাণ ও উচ্চ সুদের কারণে ÿতিগ্রস্থ ছিল।

যখন গ্রাহকরা জানতে পারল যে, কিছু ব্যাংক বন্ধ করে দেওয়া হবে তখন তাদের মাধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ল। ১৯৯৭ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক স্থানীয় ব্যাংকগুলো থেকে তাদের ডিপোজিট তুলে নিল। ব্যাংক ব্যবস্থার অস্বচ্ছতা এই পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। সঠিক তথ্যের অভাবে গ্রাহকরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য করতে না পেরে সব ধরণের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। ডিপোজিটের হার হ্রাস পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলোকেও গ্রাহকদেরকে ঋণ প্রদাণের পরিমাণ হ্রাস করতে হয়েছে।

এর ফলে নভেম্বর, বিশেষ করে ডিসেম্বর মাসে সবরাহের তুলনায় ইন্দোনেশিয়ান ফার্মগুলোর আবেদন করা ঋণের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। এই সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলে। গুজব হয়ে পড়ে রুপিয়ার চালিকা শক্তি। ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে হঠাৎ করে একদিন রুপিয়ার মূল্য কমে যায় ১১%। ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে রুপিয়ার ২৬% অবমূল্যায়ন হয়।

গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ইন্দোনেশিয়া ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করার জন্য আইনী পদÿেপ নিচ্ছে। পরবর্তীতে একই বছরের জানুয়ারি মাসে ইন্দোনেশিয়া আইএমএফ-এর সাথে আরেকটি চুক্তি করে। এতে ব্যাংকগুলোর মূলধন বাড়ানো এবং মনোপলি ভাঙার কথা বলা হয়। এই চুক্তির অর্থ দিয়ে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ভর্তুকী দেওয়ার ব্যবস্থা করে। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১৯৯৮ সালের মে মাসে জ্বালানী , বিদ্যুৎ এবং পাবলিক পরিবহণের ভর্তুকী প্রত্যাহার করা হয়।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট নানাবিধ সমস্যার কারণে চাইনিজরা শারীরিক ও আর্থিক ÿতির সম্মুখীন হয়। ফলে তারা সহায়-সম্পদ নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন। বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। ডলারেরা বিপরীতে রুপিয়ার দাম ১১০০০ এ নেমে আসে। এমন সংকটময় মুহূর্তে ২১ মে প্রেসিডেন্ট সুহার্তো পদত্যাগ করে তাঁরই ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউসুফ হাবিবির নিকট ÿমতা হ¯Íান্তর করেন।

 অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট সামাজিক-রাজনৈতিক সংকট: অর্থনৈতিক সংকটকালীন মুহূর্তে দেশে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। বিরোধী দলীয় নেতা আমিয়েন রেইস প্রেসিডেন্ট সুহার্তু ও তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদÿেপের সমালোচনা শুরু করেন। ‘সামরিক বাহিনী ÿমতা দখল করবে, ফলশ্রæতিতে একটি রক্তপাতপূর্ণ অভ্যুত্থান আসন্ন’ এমন গুজব চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৭ এবং ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি রায়ট সংগঠিত হয়েছিল। এগুলোর কোন কোনটি ছিল স্বত:স্ফূর্ত আবার কোন কোনটি ছিল পরিকল্পিত।

মাঝে মধ্যে রায়টগুলোর লÿ্য ছিল চীনা-ইন্দোনেশিয়ান নাগরিকরা। সুহার্তো-পরবর্তী জেনারেলরা এর (রায়ট) মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি দুর্বল করার পাশাপাশি সুতার্তোকে ÿমতা থেকে অপসারণ করতে চেয়েছিল। ১৯৯৮ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিÿার্থীরা সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে বিÿোভ অব্যাহত রাখে। তাদের মূল দাবি ছিল জ্বালানী তেল ও বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করা এবং প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পদত্যাগ। ১২ মে জাকার্তর ত্রিসাকতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিÿার্থীদের একটি দল , যাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত পরিবারের অনেক সন্তান ছিল; সরকারের মধ্যে সংস্কারের দাবিতে পার্লামেন্ট অভিমুখে মার্চ করার সিদ্ধান্ত নিল।

ছাত্রদের মার্চে পুলিশ বাঁধা দেয়। বিকেল ৫টার কিছু সময় পর ফ্লাইওভারের উপর থেকে সাদা পোষাকের এক ব্যক্তি শিÿার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলে করলে ৪ শিÿার্থী নিহত হয়। ১৩ ও ১৪ মে জাকার্তায় রায়ট ছড়িয়ে পড়লে অনেক কমার্সিয়াল সেন্টার ÿতিগ্রস্থ হয় এবং ১০০০ নাগরিক মারা যায়। রায়টের বিশেষ টার্গেটে পরিণত হয় চীনা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠির সদস্যরা। অভিযোগ রয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাদা পোষাকে রায়টে অংশ নেয়।

ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং অনেক মানবাধিকার গ্রæপ অভিযোগ করে থাকে যে, দেশটির পুলিশ ও সেনা সদস্যরা রায়ট,সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। জাকার্তা ও আশেপাশের এলাকায় রায়টের ঘটনায় মোট ৫০০০ লোক মারা যায়। মৃতদের মধ্যে কেউ আগুনে পুড়ে, কেউ গুলি বিদ্ধ এবং কেউ প্রহারের কারণে প্রাণ হারায়। দেশটির এক সরকারি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, রায়টে ১০২৬টি বাড়ি, ১৬০৪ টি দোকান, ৩৮৩ টি ব্যক্তিগত অফিস, ৬৫ টি ব্যাংক অফিস, ৪৬টি ওয়ার্কসপ,৪০টি শপিংমল, ১৩টি মার্কেট এবং ১২ টি হোটেল ÿতিগ্রস্থ হয়। ফাদার সান্দাওয়ান সুমারদির স্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বিভিন্ন ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

 সুহার্তো পরবর্তী ইন্দোনেশিয়া: ২০০৫ সালে বিশ্ব বাজারে তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ছোট-খাট অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। ভর্তুকী হিসেবে প্রদত্ত বিপুল অংকের অর্থ কমানোর জন্য সরকার বাধ্য হয়। এর ফলে ২০০৫ সালে মুদ্রাস্ফিতি বেড়ে গিয়ে দাড়ায় ১৭%। ২০০৬ সালে দেশটির অর্থনৈতিক চেহার পূর্বের চেয়ে উজ্জ্বল হতে থাকে। রিয়েল পার কেপিটা ইনকাম ১৯৯৬/১৯৯৭ অর্থ বছরের সমান হয়।

তবে দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা কিছুটা হলেও বাঁধা প্রাপ্ত হয়। ২০০৭ সালে বেকারত্বের হার ছিল ৯.৭৫% এবং ২০০৮ সালে ৮.৪৬%। ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্থবিরতা স্বত্ত্বেও দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিগত ১০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে এবং প্রবৃদ্ধির হার দাড়ায় ৬.৩%। দারিদ্রতার ১৭.৮% থেকে কমে হয় ১৬.৬%। জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ভারত ও চিনের পরই ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান।

 বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা বাজারের দিক থেকে দÿিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার রয়েছে অন্যতম বৃহৎ বাজার। সরকার জ্বালানী, চাল এবং ইলেক্ট্রিক সামগ্রীর সাথে সংশিøষ্ট ১৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং এর মাধ্যমে সরকার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে বেশ ভালভাবেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ইন্দোনেশিয়া জি-২০ এর একটি সদস্য দেশ। ১৯৯৭ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর ২০০৪ সালে দেশটির অর্থনীতি পুনরায় ঘুরে দাড়ায় এবং প্রবৃদ্ধিও আ¯েÍ আ¯েÍ বাড়তে থাকে। বর্তমানে দেশটির পর্যটন শিল্প বিদেশী পর্যটকদের বেশ আকৃষ্ট করছে।

২০১০ সালের হিসাব অনুসারে জিডিপি (পিপিপি অনুযায়ী) অর্জিত হয়েছে ১.০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.১% এবং মুদ্রাস্ফিতি ছিল ৫.১%। মোট জনসাধারণের মধ্যে দারিদ্র্য সীমার নীচে রয়েছে ১৩.৩% এবং বেকার রয়েছে ৭.১%। রপ্তানী করে দেশের জন্য অর্জিত আয় ১৫৮.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোট রপ্তানীর ১৬.৩% জাপান, ৯.৯% চীন, ৯.১% আমেরিকা, ৮.৭% সিঙ্গাপুর, ৮% দÿিণ কোরিয়া, ৬.৩% ভারত , ৫.৯% মালয়শিয়ার সাথে সম্পন্ন হয়েছে।

আমদানী করার জন্য ব্যয় হয়েছে ১২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোট আমদানীর ১৫.১% চীন, ১৪.৯% সিঙ্গাপুর, ১২.৫% জাপান, ৬.৯% আমেরিকা, ৬.৪% মালয়শিয়া, ৫.৭% দÿিণ কোরিয়া এবং ৫.৫% থাইল্যান্ডের সাথে সম্পন্ন হয়েছে। ২০১১ সালের মার্চ পর্যন্ত বৈদেশিক রিজার্ভ রয়েছে ১০৫.৭০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোরিয়ার  কারিয়ার বর্তমান অবস্থা..... বর্তমানে অর্থনৈতিক পরাশক্তির এই দেশটির অবস্থার অনেক সুসংহত। দেশটি বিশ্বের ১৫তম অর্থনৈতিক ÿমতা সম্পন্ন দেশ।

ঢ়বৎ পধঢ়রঃধ ঢ়ঁৎপযধংরহম ঢ়ড়বিৎ (ঢ়ঢ়ঢ়) অনুযায়ী বিশ্বের মধ্যে ১২তম। এশিয়ার টাইগার বা বাঘ নামে খেত দেশটি বর্তমানে অচঊঈ, ডঞঙ, ঙঊঈউ ধহফ এ-২০ এর সদস্য। দেশটির ঢ়বৎ পধঢ়রঃধ ঢ়ঁৎপযধংরহম ঢ়ড়বিৎ (ঢ়ঢ়ঢ়) হলো ১.৪২৩ ট্রিলিয়ণ ডলার। ঘড়সরহধষ ১.০০৭ ট্রিলিয়ণ (২০১০ শেষে)। এউচ প্রবৃদ্ধি হলো ৬.১ শতাংশ।

এউচ ঢ়বৎ পধঢ়রঃধ ৩০২০০ এবং এউচ ঘড়সরহধষ ২০২৬৫ ডলার। আয়ের ÿেত্র গুলো হলো কৃষি থেকে ৩ শতাংশ, শিল্প খাত থেকে ৩৯.৪ শতাংশ এবং সেবা থেকে ৫৭.৬ শতাংশ (২০০৮ অনুযায়ী)। দেশটির মুদ্রাস্ফিতি হলো ৩ শতাংশ (২০১০ )। দারিদ্র লাইনের নিচে আছে ২ শতাংশ (২০০৪)। সেক্টর অনুযায়ী শ্রমিক কাজ করে ... কৃষিতে ৭.৩ শতাংশ, শিল্পতে আছে ২৪.৩ শতাংশ এবং সেবাতে আছে ৬৮.৪ শতাংশ।

দেশটির বেকারত্বের হার হলো ৩.৩ শতাংশ। বিশ্বে বর্তমান ব্যবসার র‌্যাংক হলো অষ্টম। দেশটির রপ্তানি আয় হলো ৪৬৬.৩ বিলিয়ণ ডলার (বার্ষিক)। বিশ্বে এর অবস্থান হলো ৬ষ্ঠ। ওই দেশের প্রধাণ রপ্তানি দ্রব্য হলো টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি, মোটর গাড়ি, কম্পিউটার, ইস্পাত, জাহাজ এবং তেল জাতীয় পন্য।

কোন কোন দেশে রপ্তানি করে.. চীনে (২৩.২%), আমেরিকায় (১০.১%), জাপানে ( ৫.৮%), এবং হংকং এ (৫.৩%)। দেশটির বর্তমান আমদানী করে ৪১৭ ট্রিলিয়ার ডলার। আমদানী কৃত দ্রব্য হলো মেশিনারী, ইলেকট্রনিক এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, তেল, ইস্পাত, ট্রান্সপোর্ট যন্ত্রপাতি, ক্যামিকেল এবং প্লাস্টিক। কোন কোন দেশ থেকে আমদানী করে.... চীন (১৬.৮%), জাপান থেকে (১৫.৩%), আমেরিকা থেকে (৯%), সৌদি আরব থেকে (৬.১%), এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে (৪.৬%)। এফডিআর শেয়ার হলো বিদেশে ১১৫.৬ বিলিয়ণ ডলার।

বহিরাগত ঋণ হলো ৩৮০.৬ বিলিয়ণ ডলার। পাবলিক ঋণ হলো জিডিপির ২৩.৭ শতাংশ। রাজস্ব আয় হলো ২৪৮.৩ বিলিয়ণ ডলার। সরকারী ব্যায় হলো ২৬৭.৩ বিলিয়ণ ডলার। অর্থনৈতিক সাহায্য ওডিএ ৯০০ মিলিয়ণ ডলার।

স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’স এর রেটিং অনুযায়ী দেশটির স্থানীয় মান হলো এ+। মুডিস এর ঋণ মানে এ ১ । বৈদেশিক রিজার্ভ হলো ২৯৮.৮০৬ বিলিয়ণ ডলার। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হলো ২.৩ শতাংশ। এছাড়া ২০০৮ এবং ২০০৯ সালের মধ্যে দেশটি অন্যান্য দেশকে ১.৭ বিলিয়ণ ডলার সাহায্য করেছে ।

 অর্থনৈতিক মন্দা ও ঘটনা পুঞ্জ প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে, এশিয়া অঞ্চলের চলমান অর্থনৈতিক সংকট দÿিণ কোরিয়ার উপর পড়বেনা। কেননা দেশটি পৃথিবির ১১তম বৃহৎ অর্থনৈতেক দেশ। এবং ড়ৎমধহরুধঃরড়হ ড়ভ বপড়হড়সরপ পড়ড়ঢ়বৎধঃরড়হ অহফ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ এর সদস্য। এছাড়া দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থান ও পেÿাপট অন্যান্য দেশ তথা থাইল্যান্ড, ইন্দোনিশিয়া এবং মালয়শিয়া থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন ছিল। ৯০ এর দশকে বিদেশী ব্যাংক গুলো কোরিয়া সরকার ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলোকে ধার দিতে আগ্রহী ছিল।

যা এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হয়। ধার কৃত অর্থ কোরিয়ানরা আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী শিলাপখাতে ব্যায় করে। এছাড়া কোরিয় সরকারও এই ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করে। কিন্তু ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে শিল্পখাতে অধিক পরিমান বিনিয়োগের কুপ্রভাব পড়ে অন্যান্য খাতে। অধিক পরিমান শিল্প খাতের উৎপাদিত পন্য নিয়ে বিপদে পড়ে তারা।

ক্রমবর্ধ্যমান উৎপদিত শিল্প পন্যের দাম আশংকা জনক ভাবে কমে যায়। যাতে অর্থনৈতিক প্রবিদ্ধির হার কমে যায়। এবং অন্যান্য পণ্যের আমদানী বেড়ে যায়। ( ফলে ৯৬ সালে অর্থনৈতিক ঘাটতি দেখা দেয় ২৩.৭ বিলিয়ন ডলার। ) দÿিণ কোরিয়ার সমস্যা আরো বৃদ্ধি পায় ৯৭ সালের জানুয়ারী মাসে।

যখন হ্যানবো নামক স্টিল বিক্রয় কারী প্রতিষ্ঠাণ ঋণ সংকটে পড়ে। তার ঋণের পরিমান ছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। কেননা তার বার্ষিক ব্যায় ২৭০০ বিলিয়ণ থেকে বেড়ে দাড়ায় ৫৭০০ বিলিয়ণ ডলারে। অন্যদিকে, কোরিয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।