আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অচেনা আমি, রহস্যময় অন্দর

আকাশ ভরা গাঙচিল অচেনা আমি, রহস্যময় অন্দর ১ প্রিয় সেই চোখের ভাষা বুঝতে বুঝতে কতো অজস্র সময় হারিয়ে গেছে, বুঝতে পারিনি। রাগে, বিক্ষোভে জ্বলন্ত দু চোখে কখনো কখনো ভালবাসার অশ্রু শ্রাবণ ধারায় ঝরে। চাপা এক কষ্ট খুব সহজে ভেসে ওঠে দু’চোখের নিস্পলক, নির্বাক দৃষ্টিতে। অনুমান করতে পারিনি আমার জন্য রক্ষিত ভালবাসার পরিমান। দুঃখ দিয়েছি অনেক তাই তো সেই দু’চোখ একবার দেখার জন্য দীর্ঘ দীর্ঘ সময় নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছি।

দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছি গভীর রহস্যময় ঐ দু’চোখে নিজেকে হারিয়ে ফেলার আশায়। ঐ হাসি দেখার জন্য নিজেকে তুচ্ছ করে দিতে পাড়ি, তুমি যদি জানতে! আমার সকাল হয় ঠিকই, ভোরের সোনালি আলোয় ভরে ওঠে মন। সব ভুলে নিজেকে ভাসিয়ে দেই গতিশীল দিবসে। কিন্তু পরক্ষনেই কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। রোদ্রোজ্জল ভোর কখনো দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয় না।

অদ্ভুত এক অস্থিরতা নিয়ে বেঁচে থাকি। ভাল লাগে না মানুষ, প্রকৃতি, সবুজ ভালবাসা কিন্তু তারপরও ভাল থাকতে হয়। ব্যস্ত চৌরাস্তার পাশে চায়ের দোকান। এক কাপ রঙ চা আর হাতে একটা সিগারেট নিয়ে ব্যস্ত রাস্তার যান্ত্রিক মানুষগুলোর অবিরাম আনাগোনা দেখতে দেখতে বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। সিগারেটে টান দিতে ভুলে যাই।

জ্বলন্ত অগ্নি তার প্রচন্ডতা শেষে ছাই হয়ে যায় আমার অজান্তেই। হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন, জনতার মাঝেই আছে নির্জনতা। কথাটা ছুঁয়ে যায় আমাকে। এই বিষণ্ণতা অসাধারণ এক বিরহ গাঁথার জন্ম দেয়। বিষণ্ণতা লেগে থাকে শরীরে, মনে।

পরাজিত মনে হয় নিজেকে। ২ সেদিন গিটার ক্লাসে যাবার জন্য ভার্সিটি গেটে নেমেছি। ভার্সিটি গেত থেকে ক্যাম্পাস প্রায় এক কিলোমিটার। গেটে রিক্সা ছিল না। ভাবলাম হেঁটেই যাই।

কিছুদুর যেতেই পেছন থেকে কেউ একজন ডাকল। চমকে তাকালাম। কোন পরিচিত মুখ নয়, সম্পূর্ণ অচেনা একজন অল্প বয়সী ছেলে। ছেলেটি তার রিক্সায় আমাকে উঠতে অনুরোধ করলো। না বলাতে সে আরও বেশি অনুরোধ করতে লাগলো।

শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে রিক্সায় উঠলাম। কথা বলল ছেলেটি। ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছে। কিছু চেনে না তাই আমাকে ডেকেছে। অবিরাম কথা বলছিল ছেলেটা।

ভাবলাম সেও কি আমার মতো কারো সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করে? ক্যাম্পাসের বিবরণ তো দিলাম কিন্তু তারপরও ছেলেটির থামার নাম নেই। কথা বলেই যাচ্ছে। দেশের কথা থেকে শুরু করে তার নিজের কথা পর্যন্ত, সব বলল। ছেলেটি জানালো সে সব কিছুতেই হেরে যায়। কোন কাজে নিজেকে যুক্ত করতে ভয় পায় হেরে যাওয়ার ভয়ে।

কাউকে ভালবাসতে চায় না যদি সেও তাকে কষ্ট দিয়ে দূরে হারিয়ে যায়! অবাক হয়ে শুনছিলাম। কি আশ্চর্য! রহস্যময় এই পৃথিবী। গতকাল রাতেই ঠিক এই কথাগুলোই আমাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করছিল। ছেলেটিকে রহস্যময় কোন এক অশরীরী মনে হছিল। একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম।

পৃথিবীর কোন বস্তু সেই নীরবতা ভেদ করে আমাকে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পারছিল না। ঘোরের মধ্যেই ছেলেটিকে বিদায় জানালাম। হাঁটছিলাম ফাঁকা ক্যাম্পাসে। দু একজনের সাথে দেখা হল। কথা বললাম।

লেকের পাড়ে কদমতলায় বসে গল্পে বিভোর কপোত কপোতী। নির্জন বিকেলে শীতের শেষের হালকা শীতল বাতাস উদাস হয়ে পড়ছিল ক্ষণে ক্ষণে। খুব অচেনা মনে হচ্ছিল এই মানুষগুলোকে। এই পৃথিবীর রহস্যময়তা খুব বেশি ভেঙ্গে দিচ্ছিল আমাকে। যে কথা স্বীকার করে নিতে নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি, শূণ্য ফলাফল নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি ঠিক সেই কথাই ছেলেটি কি অনায়াসে বলে ফেললো।

এখন আমি নিজেকেও চিনতে পাড়ছি না। ছেলেটিকে খুব আপন মনে হচ্ছে। যেন বহু দূরে, তবুও কাছে। আমার আমির মাঝে। আমার অজান্তে।

নোটঃ ভেবেছিলাম এই হাস্যকর কাঁদুনে লেখা আর লিখবো না কখনো। আর কখনো পোস্টও দিবো না। কিন্তু নিজেকে চিনতে পাড়ি না বলেই বারেবারে সে একই ভুল করি। ছবিঃ নেট থেকে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।